যে মুখ নিয়ত পালায়......। ।
প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাক
১। প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাক একবার শেরে বাংলা একে ফজলুল হক কে গিয়ে বললেন, আমি আপনের জীবনীটা লেখবার চাই। আপনে যদি দয়া কইরা পারমিশন টা দেন, কাজ শুরু করবার পারি।
শেরে বাংলা বললেন,আমার জীবনী লেখতে চাও। নিশ্চয়ই তোমার কোন মতলব আছে।
আব্দুর রাজ্জাক বললেন, মতলব ত একটা অবশ্যই আছে।
হক সাহেব বললেন, আগে হেইড্যা কও?
আব্দুর রাজ্জাক বললেন, আপনে যখন গাঁও গেরামে যান,মাইনষের লগে এমন ব্যবহার করেন, তারা মনে করে জনম ভইরা আপনে গাঁও গেরামে কাটাইয়া তাগো সুখদুঃখের অংশ লইতাছেন। তারপর গাঁও গেরাম থেইক্যা ঢাহা শহরে আইস্যা আহসান মঞ্জিলে উইঠ্যা নওয়াব হাবিবুল্লাহর লগে যখন ঘুড্ডি উড়ান, লোকজন দেইখ্যা আপনেরে নওয়াব বাড়ির ফরজন্দ মনে করে।
তারপরে আবার কলিকাতায় যাইয়া শ্যামাপ্রসাদের লগে গলা মিলাইয়া শ্যামাপ্রসাদরে যখন ভাই বইল্যা ডাক দেন কলিকাতার মানুষ চিন্তা করে আপনে শ্যামাপ্রসাদের আরেকটা ভাই। বাংলার বাইরে লখনৌ কিংবা এলাহাবাদে গিয়া মুসলিম নাইট নবাবগো লগে যখন বয়েন, দেখলে মনে অইব আপনে তাগো একজন। এই এতগুলো ভূমিকায় আপনে এত সুন্দর সাকসেসফুল অভিনয় করতে পারেন,এইডা ত মস্ত ক্ষমতা। এই ক্ষমতা স্যার অলিভার লরেন্সের ও নাই। এই অভিনয়ক্ষমতার একটা এনকোয়ারি আমি করবার চাই।
আর নাইলে আপনের আসল গুণপনা কোথায় হেইডা ত আমাগো অজানা নাই।
হক সাহেব হুংকার ছেড়ে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি আমার সম্পর্কে কি জান?
আব্দুর রাজ্জাক বললেন, আপনে সুন্দর বিশ্বাসযোগ্য মিছা কথা কইবার পারেন।
এই কথা শোনার পর হক সাহেব হ হ করে হেসে উঠেছিলেন।
(তথ্যসুত্রঃআহমদ ছফার যদ্যপি আমার গুরু)
২। সিলেটে প্রাচীন কালে কুকি নামে এক জাতীয় লোক থাকত।
এরা বাঁশ পূজা করত। তাদের পূজার সময় নাকী বাশঁ এর অগ্রভাগ মন্ত্রবলে ভূমি স্পর্শ করত।
পাহাড়ের উপর বাঁশনির্মিত মাচায় বাস করত এরা। এদের পূজার মন্ত্রটি ছিল এরকম,
আ খালে কানূয়ই সাং যোয়ঙর কানূয়ই যেই চেকো যেই মা লয়ঙ্গ-অর্থ-হে শ্বেতবর্না দেবী মাই, শূন্যপথে পিচ্ছিল গতিতে আসিয়া এ স্থান পূর্ন কর।
৩।
ইতিহাসে দেখা যায়, ভালো ভালো নারীদের অনেকেই খুব খারাপ জায়গায় জন্মগ্রহন করে সমাজ ও সভ্যতার ইতিহাসে বড় বড় দাগ রেখে গেছেন। সীতা লাঙলের ফলায় জন্মেছেন, শকুন্তলাকে শকুন পাখি আশ্রয় দিয়েছিল, মোগল সুন্দরী নুরজাহান কে সাপ নাকী উত্তাপ থেকে বাচিঁয়ে রেখেছিল অন্তত কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত সেকথা কবুল করে গেছেন।
আহমদ ছফা।
৪। ইতিহাস তাদেরকেই আপন প্রশস্ত বুকে নাম খোদাই করে রাখতে দেয় যারা মরতে জানে, মারতে জানে।
(জাগ্রত বাংলাদেশ- আহমদ ছফা)
৫। প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসে শিক্ষক দেখাচ্ছিলেন শুয়োপোকা কীভাবে গুটি থেকে বের হয়। এবং প্রজাপতি হয়ে উড়ে যায়।
তিনি ছাত্রদের বললেন, পরবর্তী দু ঘন্টা তোমরা কেবল দেখবে কীভাবে গুটি থেকে প্রজাপতি বের হয়।
শিক্ষক বাইরে চলে গেলেন।
এক ছাত্র দেখল গুটি থেকে বের হতে প্রজাপতির কষ্ঠ হচ্ছে। তাই সে গুটি টা ভেংগে দিল। প্রজাপতি টি সহজেই বাইরে আসল এবং কিছুক্ষন পর ই মারা গেল।
শিক্ষক ফিরে এলে তাকে ঘটনাটি জানানো হল। তিনি বললেন,ঐ ছাত্রটি প্রজাপতিকে মেরে ফেলেছে।
গুটি থেকে বের হওয়ার চেষ্টার সময় প্রজাপতির ডানা শক্ত হয়। তাহলেই সে বেঁচে থাকে। বাঁচবার শক্তি সংগ্রহের জন্য সংগ্রাম দরকার। মানুষের ক্ষেত্রেও কথাটি প্রযোজ্য।
৬।
ডাক্তার সাহেব এক পাত্রে মদ নিলেন। তার সামনে একদল মাদকাসক্ত লোক। তিনি মদ এর পাত্রে কয়েকটা কেঁচো ছেড়ে দিলেন। কেঁচো গুলো টুকরো টুকরো হয়ে মদের সাথে মিশে গেল। তিনি প্রমান করতে চাইলেন মদ দেহের জন্য কতটা ক্ষতিকর।
তিনি সবাইকে জিঙ্গেশ করলেন, এই পরীক্ষার দ্বারা কি প্রমান হল?
পেছন থেকে এক মাদকাসক্ত লোক বলে উঠল, মদ খেলে পাকস্থলিতে কেঁচো হয় না।
৭। মানুষ ও কুকুর দুটি প্রানী ই একা থাকতে পারে। আর কোন প্রানী একা থাকতে পারে না। একটা শালিক দেখা যায় না।
যেখানেই একটা শালিক থাকবে তার আশেপাশেই থাকবে আরেকটা শালিক। একটা বাঘ থাকলে আশপাশেই থাকবে আরেকটা বাঘিনী। শুধু মানুষ আর কুকুরের বেলায় নিয়ম আলাদা। একটা মানুষ যেমন প্রচুর দেখা যায় তেমনি একটা কুকুর ও প্রচুর দেখা যায়। মানুষের সাথে কুকুরের আরেকটা মিল হল মানুষ জোছনা পছন্দ করে , কুকুর ও করে।
ভরা জোছনায় কুকুরদের তাই দেখা যায় থাবা মেলে চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছে। --(হুমায়ুন আহমেদের একটা গল্পে)।
৮। ওয়াল্ট ডিজনী কার্টুন আকঁতেন। পত্রিকার সম্পাদকেরা সেই কার্টুন ছাপতেন না কখনো।
ডিজনী কে তারা উপদেশের সুরে বলতেন, কার্টুন আকাঁ তোমার কর্ম না। তোমার এই ব্যাপারে কোন প্রতিভাই নেই।
একবার গির্জার এক পাদ্রী কিছু কার্টুন একে দেয়ার জন্য বললেন তাকে। ডিজনী সেই কার্টুনগুলো আকঁতে গির্জার পাশের এক কুড়ে ঘরে থাকতে লাগলেন।
কুড়ে ঘরে বসে বসে একমনে কার্টুন আঁকতেন।
ঘরটিতে ছিল ইঁদুরের আনাগোনা। এক ইঁদুরকে ডিজনী সাহেবের খুব পছন্দ হল। একে দেখেই তিনি সৃষ্টি করলেন তার অমর কার্টুন চরিত্র মিকি মাউস।
৮। ব্যাকুল হয়ে শেষ মুহূর্তে সে ঈশ্বরকে ডাকছিল।
ঈশ্বর মানুষের কাতর আহবানে সাধারনত বিচলিত হন না। (হুমায়ুন আহমেদের গুইজা বোর্ড গল্পের শেষ দুই লাইন)।
৯। সে ও তখন হাসছিল/
মহাশূন্যে ভাসছিল/
চোখের কাচে ঘুম পাতানো/
প্রিয়জনের লাশ ছিল/ (সোমিত্র দেব)
শময়িতাদের বাড়ি কাব্যগ্রন্থ থেকে নেয়া। এ বইয়ের প্রতিটি কবিতাই ভাল।
১০। শ্রীচৈতন্যদেব ছোটবেলায় একবার নোংরা ময়লা অপরিস্কার জায়গায় গিয়েছিলেন বলে তার মা শচীদেবী খুব বকেন।
চৈতন্যদেব উত্তরে বলেন, মা ঈশ্বর ত সর্বত্রই আছেন। ওই ময়লা অপরিস্কার জায়গাতেও আছেন। যে জায়গায় ইশ্বর আছেন সে জায়গা অপবিত্র হয় কি করে!( দৃষ্টি প্রদীপ-বিভূতিভূষন)।
এগুলো এই পেজ। এর স্ট্যাটাস। মাঝে মাঝে এরকম বাঁছাই করা স্ট্যাটাস নিয়ে পোস্ট দেই।
অতীতে দেয়া দুইটা-
১। পোস্ট টা ভাল লাগতে পারে, নাও লাগতে পারে
2.পাচঁটা স্ট্যাটাস গল্প +রুশ জোকস+ কিছু তথ্য+মারিও বার্গাস ইয়োসার ঘুষি খাওয়া গার্সিয়া মার্কেজ
দুটো পোস্ট ই অনেকের ভালো লেগেছে।
চালিয়ে যেতে উৎসাহ দিয়েছেন ও অনেকে। সে জন্য আজ আবার পুরনো স্ট্যাটাস গুলো জড় করে পোস্টে জোড়ে দিলাম।
এরকম পোস্টের সুবিধা আছে। লেখা প্রায় তৈরী করাই থাকে। :।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।