বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ মনি (২১৬-২৭৬ খ্রিস্টাব্দ)। ইনি Manichaeism (উচ্চারণ: ম্যানিকিইজম) ধর্মমতের প্রবর্তক। ধর্মটি ইসলাম এবং খ্রিস্টান ধর্মের অভ্যূদয়ের মধ্যবর্তী সময়ে উত্তর আফ্রিকা থেকে চিন অবধি বিস্তৃত ছিল।
অর্থাৎ ধর্মটির উদ্ভবের পর কয়েক শতাব্দী ধরে ম্যানিকিইজম বা মনিবাদ অপ্রতিরোধ্য ছিল; এবং খ্রিস্টান ধর্মের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছিল । আত্মবিশ্বাসী মনি রোমান শাসকদের কাছেও তাঁর ধর্মের মূলকথা ব্যাখ্যা করে দূত পাঠিয়েছিলেন। অর্থাৎ রোমান পৌত্তলিকদের সত্যপথের দাওয়াত দিয়েছিলেন। তখনও রোমান শাসকগণ খ্রিষ্টান ধর্মকে রাষ্ট্রীয় ধর্ম ঘোষনা করেনি। সেটি আরও পরের ব্যাপার।
ব্যাবিলন। মনি ২১৬ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন দক্ষিণ ব্যাবিলনে, (বর্তমান ইরাক) জন্মগ্রহন করেছিলেন । সেই সময়টায় ব্যাবিলন ছিল পারসিক (বর্তমান ইরান) সাম্রাজের অন্তর্গত ।
মনির পরিবারটি ছিল পারসিক । ‘মনি’ শব্দটি অবশ্য ‘আরামিয়’ ভাষার একটি শব্দ।
আরামিয় ভাষা? অর্থাৎ যে ভাষায় ফিলিস্তিনের যিশু কথা বলতেন। মনি যে সময়ে জন্মেছিলেন সে সময়ে পারস্যের প্রধান ধর্ম ছিল জরথুশত্রবাদ। তবে এর পাশাপাশি পারস্যে নানা ধর্মসম্প্রদায় প্রচলিত ছিল। ইহুদি এবং খ্রিস্টানধর্ম বহু তরিকায় (সম্প্রদায়) বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। মনির বাবাও সেরকম একটি মিশ্র উপধর্ম পালন করতেন।
পন্ডিতদের মতে সে ধর্মটি ছিল প্রচলিত জরথুশত্রবাদী বিশ্বাসের বিরুদ্ধে এবং তাতে ইহুদি মতবাদের আধিক্য ছিল ।
মনি নামে একজন ব্যাবিলনিয় তরুণ ধ্যনস্থ হয়েছিলেন বিশ্বজগতের স্বরূপ উপলব্দির জন্য
অনুমান করা যায় যে প্রাথমিক ধর্মীয় শিক্ষাটি মনি বাবার কাছ থেকেই লাভ করেছিলেন। তবে বিশ্বাসীরা বলে ... ১২ এবং ২৪ বছর বয়েসে মনির নাকি দিব্যদর্শন হয়েছিল। স্বর্গীয় এক দেবদূত মনিকে নতুন একটি ধর্মমত প্রতিষ্ঠার প্রত্যাদেশ দেয়। আসলে ব্যাবিনের নগরের অলিগলিতে ঘুরছিল এক ঘোরলাগা তরুণ ।
কে আমি ? কে আমি ? আমি এখানে কেন? আমি কোথা হতে এলাম? যাবই বা কোথায়? অনুমান করি ব্যাবিলনের এক সরাইখানায় বসে একটি শুনলেন ভারতবর্ষের কথা ... সে দেশে নাকি বুদ্ধ নামে এক মহামানব জন্মেছেন, যিনি বলেন: যা দেখছ এসবই শূন্যতা ...
পারস্যের সাসানিয় সাম্রাজ্যের মানচিত্র। ভারত ও পারস্যের যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছিল সেই খ্রিস্টপূর্ব যুগেই। বিশ্বের আধ্যাত্মিক চেতনার তীর্থস্থান ভারতবর্ষ। তরুণ বয়েসে মনি ভারতে এসেছিলেন। পরিচিত হয়েছিলেন উচ্চতর ভারতীয় দর্শন ও নৈতিকতার সঙ্গে।
মনি ভারতবর্ষে পৌঁছে, অনুমান করি, তীর্থে-তীর্থে ঘুরে বেড়ালেন। মুগ্ধ হয়ে দেখলেন মন্দিরের শিল্পসৌকর্য; সাধুর বিশ্বাসী চোখ, যমুনা নদীতে সূর্যাস্ত। এ যেন অন্য কথা বলে। এ দেশের বাঁশীর সুরে হৃদয়-মর্মমূলের ব্যথা মুচড়ে ওঠে; ... সম্ভবত যমুনা নদীর ঘাটে বসেই এক ভারতীয় আচার্য তাঁকে বৌদ্ধদর্শন সম্বন্ধে বললেন: বৌদ্ধধর্মের অন্তর্গত চেতনা মানুষের দুঃখ। বুদ্ধ বলেছেন,‘সমুদ্রের যেমন একটি মাত্র স্বাদ এবং সেই স্বাদ লবনের, সেই রকম আমার ধর্মমতেরও একটি মাত্র স্বাদ, সেই স্বাদ দুঃখের হাত থেকে মুক্তি অর্জনের।
’ এই ধর্মমত অনুসারে যথাযথ জীবনযাপন এবং নির্ভুল চিন্তার দ্বারা মানুষ দুঃখকে এড়াতে পারে। এ ধরণের ঘোষনাপত্র সাধারণ মানুষকে আকর্ষন করার কথা নয়। তাছাড়া, বুদ্ধ মনে করতেন, ইন্দ্রিয়গোচর এই বিশ্বের কোনও অস্তিত্ব নেই। যারা অজ্ঞ, কোনও কোনও কারণ ও কার্য তাদের মনে ভুল ধারণা সৃষ্টি করে। তারা সমুদ্রের ওপর তরঙ্গকে সমুদ্র থেকে আলাদা করে দেখেন।
এই দেখা যেমন মিথ্যা, সমুদ্র থেকে স্বতন্ত্রভাবে তরঙ্গের সত্যিই যেমন কোন অস্তিত্ব নেই, কোনও ব্যক্তি বা বস্তুরও তেমন কোনও অস্তিত্ব নেই। চিন্তাশীল মানুষ ব্যতীত এ ধরণের বক্তব্যে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াবে। বুদ্ধ আরও মনে করতেন, জীব পাঁচটি উপাদান দ্বারা গঠিত। এগুলি হল রূপ, বেদনা, সংজ্ঞা, সংস্কার এবং বিজ্ঞান। এই পাঁচটি উপাদান অনাত্ম, অনিত্য এবং অকাম্য।
অর্থাৎ এগুলির আত্মা নেই, চিরকালীন নয় এবং উপাদানগুলি দুঃখের সৃষ্টি করে । কাজেই আত্মার অনুপস্থিতি যিনি উপলব্দি করেন তিনি জানেন যে ব্যক্তি হিসেবে তার কোনও অস্তিত্ব নেই, তাই পরিবেশের সঙ্গে তার কোনও সর্ম্পক নেই। তিনি মুক্ত স্বাধীন। প্রতি মুহূর্তে এই উপাদানগুলির পরির্তন ঘটে। প্রতি মুহূর্তে পুরনো মানুষের মৃত্যু ঘটে, নতুন মানুষের জন্ম হয়।
বুদ্ধ। যুগে যুগে মানুষের মনকে প্রভাবিত করে চলেছেন ... মনিও তাঁর গভীর উপলব্দিতে মুগ্ধ হয়েছিলেন।
মনি ভারতীয় বৌদ্ধিক ভাবধারায় স্নাত হয়ে ভারতবর্ষ থেকে ফিরে এলেন জন্মভূমি পারস্যে । দুচোখে পারস্যের জনগনের ধর্মীয় চেতনাটি বদলে দেওয়ার স্বপ্ন। পারসিক তখতে তখন আসীন সাসানিয় শাসক প্রথম শাহপুর (খ্রিস্টাব্দ ২৪১-৭২) ... তিনি মনির মতবাদ ধৈর্য ধরে শুনলেন।
(ষোড়শ শতকের বাংলায় যেন আলাউদ্দীন হোসেন শাহ শুনছেন শ্রীচৈতন্যদেবের বৈষ্ণবমত ...) সব শুনে সম্রাট প্রথম শাহপুর বললেন, আপনি এদেশে ধর্ম প্রচার করুন। আমি সব দেখছি।
আপনার কল্যাণ হোক, মহারাজ। বললেন মনি কৃতজ্ঞ।
মনি দেখতে ঠিক কেমন ছিলেন? এমন কি?
তারপর?
তারপর পারস্যের পথে পথে ঘুরলেন মনি।
অসংখ্য পারস্যবাসী তাঁর কথায় আকৃষ্ট হল। বেশির ভাগই সমাজের কোণঠাসা, দীনহীন, আর দরিদ্র। সংসারে সুবিধে করতে পারছে না। পারস্যের মেইনস্ট্রিম ধর্মটিও মনে শান্তি দিতে পারছে না। এদিকে মনি বলছেন যে বস্তু অপবিত্র।
পবিত্র আত্মা। এসব কথায় কি শান্তি মিলবে? দেখা যাক। মানুষের মন বলে কথা ...
জরথুশত্র। মনি যখন পারস্যে ধর্ম প্রচার করছিলেন তখন পারস্যে জরথুশত্রবাদের প্রবল প্রতাপ।
আমি আগেই বলেছি যে মনির ধর্মটি ম্যানিকিইজম নামে পরিচিত।
পারস্যে ধর্মটির দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছিল। এতে জরথুশত্রবাদী পুরোহিতগণ রুষ্ট হচ্ছিলেন। মনিরও ভাগ্যাকাশে ঘনিয়ে উঠছিল দুর্যোগ । কেননা, তখন পারস্যের রাজনৈতিক পটটির পরিবর্তন হচ্ছিল। পারস্যের তখতে আসীন হলেন স¤্রাট প্রথম বাহরাম (খ্রিস্টাব্দ ২৭৪-৭৭) ।
জরথুশত্রবাদী পুরোহিতগণ প্রথম বাহরামকে যা বলার বললেন। সম্রাট ধর্মদ্রোহী মনিকে আটক করার জন্য নির্দেশ দিলেন। এর পরই চলে ভূগর্ভস্থ জিন্দানখানায় মনির ওপর অমানুষিক নির্যাতন। তারপর মৃত্যু। মনির মৃত্যুর সালটি ২৭৬ খ্রিস্টাব্দ।
আর, সম্রাট প্রথম বাহরাম পারস্যের সম্রাট হন ২৭৪ খ্রিস্টাব্দে । অর্থাৎ এক ঘোরলাগা কবির খুনের পরিকল্পনা সফল করতে জরথুশত্রবাদী পুরোহিতগণের মাত্র এক বছর লেগেছিল।
একুশ শতকে দাঁড়িয়ে এই বিচার বর্হিভূত নির্মম হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ করি!
মনি প্রসঙ্গে আমার ইতালিও দার্শনিক নিকোলো ম্যাকিয়াভ্যালির একটি উক্তি মনে পড়ে যায়। ম্যাকিয়াভ্যালি একবার বলেছিলেন, Hence it comes about that all armed Prophets have been victorious, and all unarmed Prophets have been destroyed. অর্থাৎ, ইতিহাসে সশস্ত্র পয়গম্বরগণ বিজয়ী; এবং নিরস্ত্র পয়গম্বরগণ পরাজিত। মনিও নিজেকে সর্বশেষ পয়গম্বর দাবি করেছিলেন; তাঁর সহচর থাকলেও ঠিক অস্ত্রশস্ত্র ছিল না।
মনির কাছে অস্ত্র থাকবেই-বা কেন? তিনি ভারতবর্ষে এসেছিলেন । বুদ্ধের অহিংস মত উপলব্দি করেছিলেন। কাজেই নিরস্ত্র মনিকে বিরুদ্ধবাদীদের হাতে প্রাণ দিতে হয়েছিল।
কার হাতে রক্ত লেগে নেই?
বন্দি হওয়ার আগে মনি তাঁর অনুসারীদের কি বলেছিলেন?
ভারতবর্ষ থেকে ফিরে পারস্যের পথে পথে মনি পারস্যবাসীকে ঠিক কি বলেছিলেন?
মনি বলেছিলেন তাঁর পূর্বে তিনজন পয়গম্বর ছিলেন। জরথুশত্র, বুদ্ধ এবং যিশু।
মনি বলতেন, এঁদের প্রত্যেকেরই উপলব্দিই আমার ধর্মমতে রয়েছে। তবে আমিই সর্বশেষ পয়গম্বর। পন্ডিতেরা অবশ্য বলেন যে মনির ধর্মমতের ওপর ভারতীয় প্রভাব ছাড়াও Gnosticism এর প্রভাব ও রয়েছে।
তাহলে Gnosticism কি?
Gnosticism হল ... a pre-Christian and early Christian religious movement teaching that salvation comes by learning esoteric spiritual truths that free humanity from the material world. অর্থাৎ Gnosticism হল আদিধর্ম। এবং এটি খ্রিস্টপূর্ব এবং আদিখ্রিস্টান একটি ধর্মীয় আন্দোলন।
Gnosticism শিক্ষা দেয় যে নিগূঢ় আধ্যাত্মিক সত্য উপলব্দির মাধ্যমেই জগৎ সংসারের বন্ধন থেকে মুক্তি লাভ সম্ভব। তার মানে Gnosticism এর ওপরও ভারতীয় দর্শনের (বুদ্ধের?) প্রভাব পড়েছিল?
ম্যানিকিইজম-এর ইতিহাস চিত্তাকর্ষক বলেই এ নিয়ে বইটইও কম লেখা হয়নি।
মনি বলতেন,বিশ্বজগতের শাসক ঈশ্বর। তবে জরথুশত্রর মতোই মনিও জগতের দ্বৈতরূপ অর্থাৎ জগতের শুভ অশুভের দ্বন্দের কথা বলেছেন। একদিকে রয়েছে আত্মা বা আলোর জগৎ; অন্যদিকে অন্ধকার।
বস্তু মাত্রই অশুভ। এ কারণে বস্তুর জগৎ শাসন করে শয়তান। মনি এও বলতেন যে, একদা আলো ও আঁধারের জগৎ দুটি পৃথক ছিল। আদি এক সংঘর্ষের পর অন্ধকারের জগৎটি আলোর জগতে আগ্রাসন চালায়। দুটি জগতের মিশ্রণ হওয়ার পর থেকে তারা এক শাশ্বত দ্বন্দে লিপ্ত হয়।
The human race is a result and a microcosm of this struggle.
এর বাংলা কি হবে?
যাই হোক। মানবদেহটিও বস্তুগত। সুতরাং অশুভ। আত্মা অবশ্য আধ্যাত্মিক-যা ঐশ্বরিক আলোর ভগ্নাংশ। আত্মাকে শরীর ও জগতের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেতেই হবে।
মুক্তি সহজ নয়। কেননা,
মাটির পিঞ্জিরার মাঝে বন্দির হইয়া রে/ কান্দে হাসন রাজা র মন-মনিয়ায় রে
প্রশ্ন: তাহলে মুক্তির কি পথ গুরু?
মনি: জ্ঞান।
প্রশ্ন: কিসের জ্ঞান গুরু?
মনি: আলোর জগতের জ্ঞান
আলো আমার, আলো ওগো, আলো ভুবন-ভরা,/
আলো নয়ন-ধোওয়া আমার, আলো হৃদয়-হরা।
(যাই হোক। রবীন্দ্রনাথনকে আরও একবার বোঝা গেল ...)
এই সেই আলোর জ্ঞান ... যা ধারাবাহিক ভাবে দৈব বার্তাবাহকের (পয়গম্বর) দ্বারা বাহিত হয়।
আলোকের জ্ঞানের আরম্ভ বুদ্ধ, জরথুশত্র এবং যিশুতে-শেষ মনিতে! শাঁইজী বলিছেন, মানবের এই জ্ঞান হলি পর মানবাত্মা ইন্দ্রিয় আসক্তি জয় কইরে জিতেন্দ্রিয় হয়ে উঠতি পারে।
এই ইন্দ্রিয় আসক্তিই আত্মার বন্দিদশার কারণ। আত্মার মুক্তি হলেই সেটি স্বর্গীয় স্তরে পৌঁছতে পারবে।
আলোয় ভরা রহস্যময় ভুবন
মনির মৃত্যুর পর ম্যানিকিইজম দুটি সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। প্রথম দলটির নাম ইলেক্ট (elect); এরা কৌমার্য পালন করত, নিরামিষ খেত, মদ্য পান করত না, পরিশ্রম করত না এবং মৃত্যুর পর এরা আলোর জগৎ লাভ করত-এমন একটি ধারণা ইলেক্টদের সম্বন্ধে প্রচলিত ছিল।
মনির ধর্মীয় ভাবনাটি পুবে-পশ্চিমে ছড়িয়ে পড়েছিল ...মানচিত্রে তারই ইঙ্গিত
দ্বিতীয় দলটির নাম অডিটর (auditor) এরা মূলত গৃহী। এবং এরাই ছিল সংখ্যাগরিষ্ট। অডিটরদের আধ্যাত্বিক অর্জন নিম্নস্তরের। এরা বিবাহ করত (যদিও মনিবাদে যৌনাচারকে প্রবলভাবে নিরুৎসাহিত করা হত) অডিটরগণ সপ্তাহান্তে উপবাস করত এবং ইলেক্ট দের সেবা করত। অডিটররা অবশ্য ইলেক্টরূপে পুর্নজন্ম নেওয়ার আশা রাখত।
(ম্যানিকিইজম ধর্মটি আর আজ যথাযথরূপে নেই বলে ক্রিয়াপদের অতীতরূপটি ব্যবহার করছি। ) ম্যানিকিইজম ধর্মমতে অবশ্য ইলেক্ট এবং অডিটর উভয়ই স্বর্গীয় আলোর টুকরো; এবং তারা একদিন না একদিন মুক্তি লাভ করবেই। একদিন জগৎ ধ্বংস হবে। আলো আর অন্ধকার আবার চিরস্থায়ী ভাবেই পৃথক হয়ে যাবে। ...একদা আলো ও আঁধারের জগৎ দুটি পৃথক ছিল।
আদি এক সংঘর্ষের পর অন্ধকারের জগৎটি আলোর জগতে আগ্রাসন চালায়। দুটি জগতের মিশ্রণ হওয়ার পর থেকে তারা এক শাশ্বত দ্বন্দে লিপ্ত হয়।
এই মতবাদ প্রচার করার জন্যেই মনিকে হত্যা করেছিল তারা।
চিনের উইঘুরে মনিবাদী পুরোহিত
মনির মৃত্যুর পর ম্যানিকিইজম চিন অবধি ছড়িয়ে পড়েছিল। এমন কী রোমান সাম্রাজ্যেও মনির অনুসারী ছিল।
এবং অনুসারী ছিল উত্তর আফ্রিকায়। (জনগন আসলে মুক্তি পেতে চেয়েছিল। নতুন জীবনের আশায় তারা ম্যানিকিইজম গ্রহন করেছিল। যেখানে পরিশ্রম কম, কর কম, এবং সুখ বেশি) ... চতুর্থ শতকের বিখ্যাত খ্রিস্টান ধর্মতাত্ত্বিক সেন্ট অগাস্টিন ৯ বছর ম্যানিকিইজম-এর অনুসারী ছিলেন। এরপর খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত হন।
পরে ম্যানিকিইজম-এর কট্টর সমালোচনা করেন।
সেন্ট অগাস্টিন এর সমালোচনা
উদ্ভবের কয়েক 'শ বছর পর ম্যানিকিইজম বিলীন হয়ে গেলেও পরবর্তী ধর্মসম্প্রদায় ও দার্শনিক চিন্তায় প্রভাব বিস্তার করেছিল। এমন কী ইউরোপের আধুনিক যুগের দার্শনিক চিন্তায় মনিপ্রচারিত ধর্মমতটির প্রভাব অনুভূত হয়। অস্ট্রিয় দার্শনিক Rudolf Steiner (১৮৬১-১৯২৫) এদের মধ্যে অন্যতম। স্টেইনার যে দর্শন প্রচার করেন তা Anthroposophy নামে পরিচিত।
মূলকথা হল: ... the existence of an objective, intellectually comprehensible spiritual world accessible to direct experience through inner development. More specifically, it aims to develop faculties of perceptive imagination, inspiration and intuition through cultivating a form of thinking independent of sensory experience, and to present the results thus derived in a manner subject to rational verification. In its investigations of the spiritual world, anthroposophy aims to attain the precision and clarity attained by the natural sciences in their investigations of the physical world.
ছবি: ইন্টারনেট।
তথ্যসূত্র:
http://i-cias.com/e.o/manichae.htm
http://i-cias.com/e.o/mani.htm
http://www.newadvent.org/cathen/09591a.htm
http://www.crystalinks.com/manichaeism.html
Click This Link
http://www.tecmalta.org/tft323.htm
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।