এইসব ভালো লাগে... প্রথম যখন তোমার কথা শুনলাম ভ্রু কুঁচকিয়েছিলাম। আমার মুখ দিয়ে বেরিয়েছিলো,
“বলিস কি! লাভ কি এতে!?”
আজ পাঁচ বছর পর এসে আমি নিশ্চিত হয়েছি যে সব কিছুতে লাভ লোকসান এর হিসেব কষতে নেই। বন্ধুবর হিমালয়, তোমার সাথে আমার পরিচয় আমার জীবন-সই তাজুল ইসলাম মারফত। ভ্রু কুঁচকানোর ঘটনাটা সেই ১/১ এর, যখন সবাই টিচার ফাইটার ভাবে নিজেকে। প্রসংগ স্বভাবতই পাই নিয়ে।
দশমিকের পর হাজার ঘর অবধি পাই এর মান যে কবিতায় ধরে রেখেছে সে ইন্টারেস্টিং ক্যারেক্টার না হয়ে যায় না! যদিও তোমার সাথে আমার দেখা হয়েছিলো অনেক পরে।
বহু প্রতীক্ষার পর তোমার কাংক্ষিত বই প্রযত্নে হন্তা বের হলো। আমি খুবই অসামাজিক মানুষ, তার উপর খুলনা থাকায় প্রকাশনা উৎসবে যেতে ব্যর্থ হলাম। যাইহোক একটা রিভিউ লেখার ইচ্ছা আমার ছিলো। সেটার জন্য এখন কীবোর্ড টিপতেছি।
পাঠক হিসেবে আমি খুব কূপমন্ডুক টাইপের। অনেক পড়াশোনা করা হয়নি। দৌড় বলতে সেই ক্ল্যাসিকাল সাহিত্য। কিন্তু নতুনত্ব আমাকে বরাবরই টানে। একারণেই তোমার লেখার ফ্যান ছিলাম।
তবে তোমার সংখ্যাপ্রীতির প্রতি আমি বরাবরই উদাসীন। সামুতে তোমার ব্লগেই সম্ভবত কোন একটা ছোটগল্প পড়েছিলাম। কিছু অদ্ভুত শর্ত ছিলো। শহীদ মিনারে চা বিক্রেতাকে নিয়ে। আমি পড়ে বিরক্ত হয়েছিলাম, শর্তের বেড়াজালে লেখাটা কেমন যেন খাপছাড়া লেগেছিলো।
যাই হোক রিভিউ তে আমি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সিরিয়ালি যেতে চাইবো। শুরু করা যাক।
বইয়ের ফ্লাপে বই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে প্রচলিত রীতি ভেঙ্গেছো। যেটা ভালো লেগেছে। শেষেও নিজেকে নিয়ে কিছু বলো নাই।
যেটা ইম্প্রেসিভ! একই সাথে বইটা সম্পর্কে কৌতূহলী করে তুলবার জন্য যথেষ্ট। বইটা উৎসর্গ করেছো আমাদের শ্রদ্ধেয় অগ্রজ সোহাগ ভাইকে। এবং এটা উনারই প্রাপ্য। ওয়েল ডান বন্ধু।
প্রথম গল্প ৪১।
তুমি জিজ্ঞাসা করেছিলে কেনো শেষ করতে পারছিনা বইটা। ডিলের আসল কারণটা এখন বলি, সংখ্যা নিয়ে আমার আগ্রহ খুব কম। নিজের জন্মসংখ্যা ছাড়া আর কোন সংখ্যাতে আমার তেমন আগ্রহ নেই। আর ভালো না লাগলে আমি এগুতে পারিনা। যাই হোক শুরুতে যে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছো তা হুবহু আমার জীবন জীবন-সই তাজ এর মত।
ওর একবার এরকম হয়েছিলো, বাস থেকে নামতে গিয়ে এবং এই ঘটনার পরই আমরা খুব ভালো বন্ধু হয়ে যাই।
৪১ নিয়ে এরপরই তুমি শুরু করে দিলে আর আমি শংকিত হতে থাকলাম। ১৩ পৃষ্ঠার পর ক্ষান্ত দিলাম পায় ১৫ দিন। তারপর তোমার ভয়ে আমার কুলীন ও কয়েদীদের জোর করে আবার মনোনিবেশ এ বাধ্য করলাম। বন্দীরা পালিয়ে কেন গেলো না এই ভাবনা আমাকে ভাবালো, মানসুর মাজিদ কেনই বা অপরিচিত কে এভাবে সব বলে দিলেন এটাতেও আমার কেমন যেন আপত্তি ঠেকলো।
কিন্তু সবকিছুকে এক নিমিষে ত্রুটির উর্ধে দেখলাম যখন দেখলাম আরমান মোবাইল টা অন করে এসএমএস এর প্লাবনে মুগ্ধ হলো। জীবনের একটা মানে যেন সে পেলো! আসলেই প্রতিদিনের জীবন থেকে একটু দূরে যেতে পারলে বুঝতে পারা যায় আমরা যে জীবনটা লীড করছি তা মোটেও ফেলনা নয়। এখানেই গল্পটি স্বার্থকতা পেলো। বিশ্বাস করো হিমালয়! একটা বাক্যেই পুরো গল্পটা আমার ভালো লেগে গেলো! এরপর থেকে যেন দিকভ্রান্ত আমি হঠাৎ নতুন দ্বীপের দেখা পেলাম। পরের পৃষ্ঠাগুলো ঝড়ের মত শেষ হলো!
এই গল্পের প্রিয় আরেকটি বাক্যঃ নিজের বলে সত্যিই কি কিছু আছে? ঈশ্বর বলে যিনি আছেন, তিনিও তো প্রতি সেকেন্ডে আমাদের ফলো করছেন, তিনি নাকি অন্তর্যামীও।
গল্পের গল্পটাও দারুণ।
মনীষী সিন্ড্রোম বইয়ের দ্বিতীয় গল্প। অসাধারণ থি্ম! আমার সবচে প্রিয় এটা। একজন ক্লেপ্টোমেনিয়াকের একটি ডায়েরী উঠিয়ে নেওয়ার গল্প। পরে সে দেখলো এটা উদ্দেশ্যমূলক ভাবেই রেখে যাওয়া হচ্ছে।
যে পাচ্ছে সেও কিছুনা কিছু লিখছে। মূলত একজন উচ্চাকাংক্ষি ব্যর্থ লেখক মৃন্ময় আকাশ ওরফে মোনায়েম ইসলাম এর ডায়েরী এটা। যিনি পরে রেজিস্ট্রি অফিসের সামান্য দলিল লেখক হন। সোহেল সুপান্থ নামে যিনি মৃন্ময় আকাশের ভক্ত ছিলেন তিনি এই ডায়েরীর পরবর্তী লেখক। অর্থ বিত্তের দেখা পেলেও তার কবি মানস গুমরে কাঁদে।
তার প্রমাণঃ “ তবুও লাঞ্চ করতে গেলে অথবা মাঝে মাঝে ঘুমুতে যাবার আগে বুকের ভেতর শূন্যতা টের পাই; কান্না পায়, হয়তোবা মনে মনে কাঁদিও অনেক। আমি একজন কবিই হতে চেয়েছিলাম। “ ভেবে দেখলাম আমাদের অনেক বন্ধুই তো জব লাইফে ঢুকে পড়েছে। কিন্তু অনেকের মনেই জব স্যাটিস্ফিকশন নেই। যাই হোক, অসাধারণ হিমালয়।
স্যালুট টু ইউ ডিয়ার! শেষ যে ব্যক্তির হাতে ডায়েরীটা পড়েছিলো তার জবানীতেই গল্পটা লেখা। সে একটা মজার ক্যারেক্টার! বই টই পড়েনি। কিন্তু এই ডায়েরীটা তাকেও লিখতে উদ্বুদ্ধ করেছে। ডায়েরীটা যাতে কেউ ছিঁড়ে না ফেলে সেজন্য সে আগেভাগেই গাল দিয়ে রাখে লেখায়! হা হা! ব্যাপক!
মজার কিছু ডায়লগ এই গল্পেরঃ “ আমার মতে বাংলা অভিধানের সবচেয়ে জঘন্য শব্দ হল বুদ্ধিজীবী”
“প্রকাশকগুলোও একেকটা খাটাশের নাতি। টাকা পেলে কামসূত্র ছাপাতেও এরা আপত্তি করেনা, কিন্তু নতুন লেখক মহাকাব্য লিখলেও বিনা পয়সায় নো এন্ট্রি”
“সাহিত্য আড্ডায় একেকজন চা-সিগারেট খেতে খেতে মুখে মুখে অনেক রাজা-উজির মেরে ফেলে, কিন্তু ভালমানের একটা কবিতা লিখবার বেলায় সবার কলম পশ্চাদ্দেশে
ঢুকিঢুকি অবস্থা।
“
“ওর শরীরের সমস্ত ভাঁজে এখনো সতেজ আমার চুম্বনচিহ্ন, অথচ আমি ‘মৃন্ময় ভাই’ হয়ে গেছি! তবু ভাল, ‘মৃন্ময় আংকেল’ ও তো হতে পারতাম!
আর লিখছিনা। এরকম অনেক পাওয়া যাবে!
গল্পের ভিতর গল্পের কন্সেপ্টে লেখা হয়েছে তৃতীয় গল্পটি। যদিও আমার জীগরী দোস্ত তাজুল ইসলাম এই গপ্পে ভিলেন মার্কা চরিত্রে এসেছে। যার ইচ্ছে খুব কাউকে নিজ হাতে খুন করার। ওদিকে ছন্নছাড়া তানভীর বদলাতে থাকে চাকরী।
কিন্তু গল্পের ভেতরে গল্প এসে যাওয়ায় কোন গল্পই আর পরিণতি পায় না। পরিনত হয় গল্পেরই সুমাইয়ার পড়তে থাকা একটি উপন্যাসের চরিত্রে। এই গল্পটিতে এবসার্ডিটির কোন ছাপ পেলাম না। এবসার্ডিটির কথা চিন্তা করলে এটি মোটেও স্বার্থক নয়। তবে লেখকের ইচ্ছেবন্দীত্বে গল্পটা পাঠক কে ভাবাবে, প্রতিটি পাঠকই নিজের মতো করে গল্পটির শেষ ভাবতে পারেন।
এখানেই তো গল্পের মজা মামু!
সেরা বাক্য এই গল্পেরঃ “ তার মানে জীবনের অনিশ্চয়তাটুকু মানুষ উপভোগ করে, মৃত্যু হবেনা জানলে তা আর হয়ে উঠেনা। “
৭দশ১’ একাত্তর বইটার আরেকটি প্রিয় গল্প আমার কাছে। ১২ বর্গফুটের ব্যাপারটা নিয়ে তোমার সাথে আলোচনা হওয়ায় সেই প্রসংগ এখানে অবান্তর। তোমার চিন্তাধারা আমাকে মুগ্ধ করেছে। সবচে ভালো লেগেছে কি জানো? প্রতি মুহুর্তে চরিত্র গুলোকে তাদের সম্ভাব্য পরিণতি থেকে মুক্তি দিয়েছো।
যুদ্ধ নিয়ে বাণিজ্য হচ্ছে দেদারসে। সেটা খুব উপভোগ্য ভাবে তুলে ধরেছ। সেই সাথে মানব মনের ধূর্ততা, কাউকে যে আজকাল বিশ্বাসের জো নেই এইটা ফুটিয়েছ অসাধারণভাবে। খুব ভালো লেগেছে সবেদ মুক্তিযোদ্ধার চরিত্রটি। বাঘা সিদ্দীকির কথা মনে করিয়ে দিলো।
গল্পের গল্পে বলেছ তুমি পরিণতি জেনে গেলে লিখতে ক্লান্ত বোধ কর। সত্যি বলতে কি পরিণতি না থাকাতেই ভালো হয়েছে। কিছু লেখা মানুষকে ভাবাতে শেখাক! বাণিজ্য করতে করতে নিজেদের মা বোন কেই তো আসলে বেঁচে ফেলছি আমরা।
গল্পের প্রায় ৯৯.৯৯% ডায়লগই অসাধারণ। আর এইটাতেই প্রথম দেখলাম ডায়লগের মধ্যে দিয়ে তুমি চমৎকার ভাবে গল্পকে এগিয়ে নিয়ে গেছ।
জোরে হাততালি বন্ধু!
গল্পের গল্প না পড়া পর্যন্ত ...র্দাপ গল্পটা ঠিক বুঝে উঠতে পারতাম না। এখনো যে বুঝেছি বলছি না। এবসার্ডিটি এই গল্পে সার্থকতা পেয়েছে বলে মনে হলো। নিজের সম্পর্কে দ্বিধাগ্রস্থ লাবণি একদিন হঠাৎ পর্দাতে, দেওয়ালে দেখে একটি ছায়া কথা বলছে। ছায়াটি তাকে ইঙ্গিত করছে যা সে হয়নি হতে পারেনি তাই নিয়ে।
আড়ালে মানুষ কি বলে সেটা দেখে লাবণির খুব ঘৃণা হয়। চিন্তা করে দেখলাম আমার পিছনেও নিশ্চয় মানূষ এরকম বলছে। আমাকে ধুয়ে দিচ্ছে। তাড়াতাড়ি চিন্তার গিয়ার চেঞ্জ করলাম। তবে গল্পটি সাধারণ পাঠকদের ভালো লাগার কথা না।
সব গল্প কেনই বা তাদের জন্যই লিখতে হবে! তাই না?
সেরাঃ “মানূষ এই রকমই, পরচর্চা- পরনিন্দা না করলে সুখ পায় না। “
প্রযত্নে-হন্তা গল্পে শুরুতেই খটকা লাগলো সাড়ে সাত মণ ওজন আসলে কত!? এত ভারী শরীর! গল্পটা অভারওল ভালোই। কিশোরীদের বুকের ওপর বই রাখার ব্যাখ্যা সেইরকম! আগে সত্যিই ভাবিনি দোস্ত এভাবে! কিছু কিছু উপমা অদ্ভুত লেগেছে। ভয় ডর শশ্মানের ভূত কে উইল করে দেওয়া ঠিক কেমন উপমা হলো! শেয়ার বাজারকে সালমান এফ রহমানের কাছে দেওয়ার মত না?
গল্পের শেষ প্যারাটি আমাকে নষ্টালজিক করে দেয়। দাউদের জীবন তো তার বাপের সাথেই কবরস্থ হয়েছে।
আমার তো একটা দারুণ শৈশব ছিলো। সেই শৈশব কখন যে সময় খেয়ে নিলো...
পরের গল্প সুপার্ব! ‘লিখি চলো’ আসলে সবাইকে লিখতে শেখানোর একটা গল্প! এইটাই একমাত্র গল্প যেটির শিরোনাম পড়ে আঁচ করা যায় বিষয়বস্তু। প্রেমিক প্রেমিকার মধ্যে অদ্ভুত বাজী ধরাধরি হতো রিক্সা নিয়ে। প্রেমিকা রোজ জিতে হবু জামাইটাকে ধুয়ে দিত। একদিন আমাদের হিরো জিতে যায়।
একা ফ্লাটে ডাকে একদিন। লুলু মনটা নড়ে চড়ে বসে কি? জ্বী না। জানি হিমালয় তুমি অপেক্ষা করছো এক বিস্ময় নিয়ে। খাতা কলম নিয়ে বসিয়ে দিলে প্রেমিকা কে। আস্তে আস্তে শেখালে গল্প কিভাবে লেখা যেতে পারে।
মনে পড়লো বিখ্যাত র্যাটাটুলির একটা ডায়লগঃ “ এনিওয়ান ক্যান কুক”। আসলেই কি সবাই লিখতেও পারে? মানুষ আসলে একটা প্রোগ্রাম করা জীব। সে সব কিছুই পারে। তবে সবাই জানেনা রিকয়ার্ড অপারেটিং সিস্টেমে আপগ্রেড হয়ে নিতে যেন নির্দিষ্ট প্রোগ্রামটি চলে।
গল্পের গল্পে জানতে পারা যায় লন্ডন প্রবাসী কবি শামীম আজাদের চিন্তাগুলো তোমাকে এই গল্পের থিমে আসতে প্রেরণা দিয়েছে।
আমি এর মধ্যেও রোমান্টিকতা খুঁজে নিয়েছি আমার মত করেঃ “তোমার এই অজ্যামিতিক মুখখানি আমার আজীবনের ক্যানভাস---- এখানে আমি তোমার নানা ভঙ্গিমায় হাসির ছবি আঁকবো শুধু; কখনো যদি অভিমানী-দুঃখবিলাসী ছবি আঁকার প্রয়োজন হয়, জেনে রাখো আমি নিঃসংকোচে নিজের হাত-চোখ বিসর্জন দিয়ে দেব। “
দারুন বন্ধু! দারুন!!
পরের গল্প গ,ল,হ তবুও গলগ্রহ গল্পটা শুরু করলে হিন্দু – মুসলিম আবহ আছে মনে হবে যেন। আসলে তার ধার দিয়েও যায়নি। মজা লাগে এখানেই। সর্বত্রই পাঠকের চিন্তাশক্তিকে সুচতুর ভাবে ধোঁকা দেওয়ার এই চেষ্টা ও সফলতা আমাকে খুবই আকৃষ্ট করেছে।
মজার কিছু উপমার ভালো প্রয়োগ করেছ এখানে। যেমন ট্রাউজারের গায়ে ইলশে গুড়ি বৃষ্টি। সিনিয়রদের সাথে এফেয়ারের থিওরীটা বেশ চিত্তাকর্ষক। গল্পটি শেষ করে বিশ্বাস করবে কিনা জানিনা আমি চিন্তা করেছি পাঁচ বছর পরের আমাকে। একজন লেখকের সার্থকতা কোথায় তুমি জানো আশা রাখি!
ঈশিতাকে তুমি খুব ইন্নোসেন্ট করে এঁকেছো।
এতটাই যে প্রেমপত্র তাকে তেমন পুলকিত করতে পারেনা। ১১৯ পাতায় নানা মুনির নানা মতের মত নানা পশুরও যে নানান ডাক বলতে কি সবাইকে পশু বলেছ? বুঝিনি। মাও বা কিভাবে ‘হর্লিক্স মাল্টা খেয়ে’ নামতে পারেন? মনে হলো হরলিক্স মাল্টা খাইয়ে নামাতে পারেন হলে ভালো হত। প্রবাদ প্রবচন কে ক্লিসে মনে করা অনুচিত বলে মনে করি আমি। ইফতেখার আর প্রীতির মধ্যে দিয়ে এই সমাজের তরুণ-তরুণীদের একাংশের ছবি ভালোই এঁকেছ তুমি।
১২৩ পাতায় এসে আমার চোখও ভারী হয়ে এলো। আবার বাহবা পেলে আমার।
শেষটুকু এর চে ভাল আর হতে পারেনা। মনে হলো দারুন এক মিউজিক ভিডিও দেখে গেলাম কোন মিউজিক ছাড়াই! যেখানে ক্যামেরা রোল আউট করলো ঈশিতা থেকে অনেক দূরে ঐ অনাদি অনন্তে...
প্রিয় বাক্যঃ “...সে কেঁদেছিলো অন্তরে অন্তরে; অন্তরের চক্ষু কি আর সাদা চক্ষু, যে বর্ষণ হলেই দর্শনও হবে?”
“...একমাত্র সময় সাহেবই বলতে পারেন মানুষ কি খুঁজে পায়, আর কি সে না খুঁজে হারায়। আমরা কেবল চোখে সম্পর্কের রোদ মেখে বসে থাকতে জানি।
“
পাঠক সমীপেষু তোমার এই গল্পের বইয়ের একমাত্র লেখা যেটা আমি ব্লগে পড়েছি। আমার কাছে এটা দ্বিতীয় অদ্বিতীয় লেখা এই বইয়ের। বক্তব্যনির্ভর স্যাটায়ার ধর্মী এ লেখায় তুমি মোটামুটি ধুয়ে দিয়েছ তথাকথিত ধারা উপধারার সব ধরনের লেখাকে! শুধু কি তাই? ধুয়েছ মিডিয়া কেও। সবচে মজা লেগেছে কি জানো? কদিন আগে গুপ্তহত্যা নিয়ে সাহারা খাতুন বলেছেন, “ আমি এ ব্যাপারে কিছু জানতাম না, পত্রিকা পড়ে জেনেছি”। আমি হাসতে হাসতে শেষ।
উনাকে এই লেখাটা দেখানো উচিৎ! কারণ ১৪০ পাতায় দেখি হুবহু এই কথাটিই! অসাধারণ হিমালয়। দাঁড়িয়ে গেলাম তোমার সম্মানে! গল্পের ফ্লোটা অসাধারণ লেগেছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি একমত সাহিত্যতে মানূষ জটিলতা চায়না এই কথাতে। এইজন্যই দেবদাস আমার কখনোই ভালো লাগেনি। আমার প্রিয় দত্তা! গল্পের শেষের দিকে তোমার আক্ষেপ যে জারিফ নামের ছেলেটা বই কিনতে এসেছিলো লেখকদের দলাদলি দেখে সে তো কিনলো একটা টিশার্ট।
আসলেই এসব তর্কাতর্কির কোন মানে নেই। লেখা ভালো হলে মানুষ পড়বেই। যদিও ডিজিটাল এ যুগে বইয়ের পাঠক কমে যাচ্ছে আশংকাজনক ভাবে।
মহান আল্লাহর কাছে তোমার সর্বোচ্চ সাফল্য কামনা করে আমি লেখা থামাচ্ছি। ভালো থেকো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।