আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এমডিজির সব লক্ষ্য অর্জিত হবে না

২০১৫ সালের মধ্যে অনেক দেশের মতো বাংলাদেশও সহস্রাব্দের লক্ষ্যসমূহের (এমডিজি) সব কটি অর্জন করতে পারবে না। এমন অবস্থায় জাতিসংঘের পরবর্তী উন্নয়ন-ভাবনায় সুশাসন প্রতিষ্ঠা, পরিবেশগত বিপর্যয় ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থা, খাদ্য নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ।
গতকাল রোববার এমডিজির বাংলাদেশ অগ্রগতি প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনে অনুষ্ঠিত প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার, খাদ্যমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, পল্লী-কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) আবাসিক প্রতিনিধি নেইল ওয়াকার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য শামসুল আলম।


প্রতিবেদন: প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে। এগুলো হলো দারিদ্র্য ব্যবধান কমানো, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় নারী-পুরুষ সমতা আনয়ন, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার কমানো, এইচআইভি সংক্রমণ রোধ, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের কীটনাশক থেকে রক্ষায় মশারির নিচে ঘুমানো, যক্ষ্মা রোধ চিহ্নিতকরণ ও নিরাময় ইত্যাদি।
অপরদিকে দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিশুদের অপর্যাপ্ত ওজনের প্রকোপ, শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষায় ভর্তির হার, মাতৃমৃত্যুর হার, শিশুদের টীকা প্রদানের আওতা বৃদ্ধি এবং সংক্রামক রোগের বিস্তার কমিয়ে আনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখিয়েছে বাংলাদেশ। ২০১০ সালের খানা ব্যয় জরিপ অনুযায়ী, ১৯৯১-৯২ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বছরে গড়ে দারিদ্র্য কমেছে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় ২০১২ সালেই বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার অর্ধেকে নেমে এসে এমডিজির লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।


তবে যেসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অধিক মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেগুলো হলো ক্ষুধাজনিত দারিদ্র্য কমানো ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্তির হার ও বয়স্ক শিক্ষার হার বৃদ্ধি, মহিলাদের জন্য আরও অধিক পরিমাণে মানসম্মত কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রসূতিকালীন প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীর উপস্থিতি বৃদ্ধি, এইচআইভি বা এইডস-সংক্রান্ত সঠিক ও অধিক তথ্য জানানো, বনাঞ্চল বৃদ্ধি এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি খাতের সম্প্রসারণ।
এর আগে ২০০৫, ২০০৭, ২০০৮, ২০০৯ ও ২০১১ সালে এমডিজি অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল বাংলাদেশ।
আলোচনা: অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘ভঙ্গুর দেশ হিসেবে চিহ্নিত করতে সূচক হিসেবে বাজারসুবিধা, জনসংখ্যা, দারিদ্র্য ও জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বিষয়গুলোর ওপর নজর দিতে হবে। তাই ২০১৫ সালের নতুন উন্নয়ন ভাবনায় এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য সুশাসনের অভাব ও দুর্নীতিই সমস্যা হিসেবে মনে করেন অর্থমন্ত্রী।


খাদ্যমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ভবিষ্যতে পুষ্টি, খাদ্যবৈচিত্র্য ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলাই বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি মনে করেন, এমডিজি অর্জনে দাতাদের যে পরিমাণ সহায়তা দেওয়ার কথা ছিল, তারা তা দেয়নি। এই বিষয়ে দাতাদের আরও উদার হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, বিশ্বমন্দা, সম্পদের সীমাবদ্ধতা, জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সাফল্য সারা বিশ্বে ‘স্টার পারফর্মার’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এমডিজি অর্জিত হওয়ার কথা ছিল বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহযোগিতায়, কিন্তু সেটা হয়নি।

তবে প্রধান সূচকগুলোকে বাংলাদেশ লক্ষ্য অর্জন করেছে।
নেইল ওয়াকার বলেন, এমডিজি অর্জনে বাংলাদেশের অর্জন উল্লেখযোগ্য। এমডিজি অর্জনে দাতাদের সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু বাংলাদেশ নিজস্ব সম্পদেই তা অর্জন করেছে। তাঁর মতে, পুষ্টি ও পর্যাপ্ত খাদ্য নিরাপত্তাই আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।