আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমি দেখলাম পাকিস্তানিরা পালাচ্ছে।

সোনার হরিনের পেছনে ছুটছি। আমরা তাড়াশ থানার অধিবাসিরা দুটি নওগার সাথে ভালভাবে পরিচিত। এদের মধ্যে একটি হলো টাউন নওগা যেটি বগুড়ার উত্তরে অবস্তিত। আর একটি নওগা হলো তাড়াশ থানার একটি ইউনিয়ন যেটি তাড়াশ থানার দক্ষিণে পাঁচ কিলোমিটার দুরে অবস্তিত। সেদিন ছিল ফাল্গুন মাসের কোন এক দিবসের প্রথম প্রহর।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনি সেদিন নাম বিভ্রাটে তাড়াশ থানায় প্রবেশ করেছিল। পাকিস্তানি হানাদাররা তাড়াশ থানার বিভিন্ন গ্রাম ঢুকে আগুন দিতে শুরু করল। পাকিস্তানি হানাদাররা তাড়াশ থানার গ্রামে গ্রামে ঢুকে রাজাকারদের সহযোগিতায় বাড়িতে বাড়িতে জ্বালাওপোড়াও চালিয়ে যেতে লাগলো। পাকিস্তানি সেনারা নওগার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এদিকে মুক্তিসেনারা নওগায় যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।

তাড়াশের আকাশে পাকিস্তানি যুদ্ধ বিমানের চক্কর সাধারণ মানুষের মনে চরম ভৃতির সৃষ্টি করছে। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের যুদ্ধের প্রস্তুতি শেষ করে নওগার মাজার এলাকায় অবস্তান নিলো। মুক্তিযোদ্ধারা পরিকল্পনা করল তারা পাকিস্তানি সেনাদের মাজার এলাকায় ঢুকতে দিবে না। হটাৎ একদিন পাকিস্তানি হানাদাররা নওগার দিকে অগ্রসর হতে শুরু করল। মুক্তিযোদ্ধরা পাকিস্তানি সেনাদের বাধা দিল।

শুরু হলো তুমুল যুদ্ধ। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনি পরাজিত হলো । নওগার সেই যুদ্ধে বেশির ভাগ পাকিস্তানি সেনা নিহত হলো। সাত আটজন পাকিস্তানি সেনার একটি দল সেদিন সুযোগ বুঝে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালাতে বাধ্য হয়। সেই সাত আটজন পাকিস্তানি সেনা আমাদের গ্রাম দিয়ে নাটোরের দিকে যাওয়া শুরু করে।

তারা আমাদের গ্রামে আসার পর বিভিন্ন বাড়িতে ভাত খেতে চায়। কিন্তু গ্রামের মানুষ তাদের ভাষা বুঝতে না পারায় কেউই তাদের খেতে দিতে পারে না। অবশেষে তারা আমাদের গ্রামের পাশের ক্ষেতের মুলা তুলে খেতে শুরু করে। আমাদের গ্রামের মানুষ তখন ঝুজতে পারে তারা আসলে ভাত খেতে চাইছিল। অবশেষে তারা মুলা খেতে খেতে আমাদের গ্রামের পাশ দিয়ে পালিয়ে যায়।

(গ্রামে এক চাচার কাছে শুনা গল্পটি আমার ভাষায় বল্লাম) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।