মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা শান্তির ধর্ম ইসলামের নাম ব্যবহার করে প্রত্যক্ষভাবে গণহত্যায় অংশ নিয়েছিল, তাদেরই একজন হলেন জামাতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোঃ কামারুজ্জামান।
ওই সময় বৃহত্তর জামালপুরে কুখ্যাত আল বদর বাহিনীর যে সাতটি ক্যাম্প ছিল, তারমধ্যে শেরপুরে সুরেন্দ্র মোহন সাহার বাড়ির ক্যাম্পটি ছিল সবচেয়ে বিভীষিকাময়। অন্তত ৮০-৯০ জন মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় এই ক্যাম্পে। দিনের পর দিন ক্যাম্পের অন্ধকার কুঠুরিতে আটকে নির্যাতন করা হয় মুক্তিকামী অসংখ্য বাঙালিকে। ক্যাম্পটির তত্ত্বাবধায়নে ছিলেন আল বদর বাহিনীর ডেপুটি চিফ অব কমান্ড মোঃ কামারুজ্জামান।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, ওয়্যার ক্রাইম ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির একাধিক গবেষণায় উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধের সেই নির্মম সত্য ঘটনার বাস্তব চিত্র।
সাপ্তাহিক সোনার বাংলার সম্পাদক এবং জামাতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামের সাবেক নির্বাহী সম্পাদক মোঃ কামারুজ্জামান ছিলেন বৃহত্তর ময়মনসিংহে আল বদর বাহিনীর প্রধান সংগঠক। শেরপুরের বাজিতখিলা ইউনিয়নের কুমরি মুদিপাড়া ইনসান আলীর ছেলে কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে শেরপুরসহ বৃহত্তর ময়মনসিংহে স্বাধীনতাকামী বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর চালানো গণহত্যায় প্রত্যক্ষ সহযোগিতা, নির্যাতন, তাদের সম্পদ লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে শেরপুরের সূর্যদি গণহত্যাকা- এবং নকলার মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। বৃহত্তর ময়মনসিংহ, জামালপুর ও শেরপুর অঞ্চলে কামারুজ্জামানের হত্যা, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ লুটপাটের প্রত্যক্ষদর্শীরা স্মৃতি রোমন্থনে এখনো শিউরে ওঠেন।
শেরপুরের সাধারণ মানুষ এখনো তাকে আল বদর কমান্ডার হিসেবে জানেন।
বাঙালি বরণ্যে বুদ্ধিজীবীদের হত্যার জন্য গঠিত ‘আল বদর বাহিনী’ সংগঠিত করাসহ কামারুজ্জামানের দুষ্কর্মের বর্ণনা ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল ও যুদ্ধাপরাধীদের সম্পর্কে গঠিত জাতীয় গণতদন্ত কমিশনের রিপোর্ট’-এ বিশদভাবে তুলে ধরা হয়েছে। রাজধানীতে তার আবাস মিরপুর সাংবাদিক আবাসিক এলাকার ৪ নম্বর সড়কের ১০৫ নম্বর বাড়িতে। তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময় এ প্লটটি বরাদ্দ পান।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক সেনাদের আত্মসমর্পণের অন্যান্য সহযোগীর মতো কামারুজ্জামানও নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে আত্মগোপনে যান।
এক পর্যায়ে তিনি সিলেটের দরগামহল্লায় ছিলেন। ১৯৭৭ সালে জামাতের সাবেক আমির গোলাম আযম পাকিস্তানি পাসপোর্টে লন্ডন থেকে বাংলাদেশে ফিরে এলে মতিউর রহমান নিজামী ও অন্যদের সঙ্গে কামারুজ্জামান প্রকাশ্যে বের হয়। ১৯৭৭ সালে জামাতের বর্তমান আমির মওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আহজারুল ইসলাম, কাদের মোল্লা, মীর কাশেম আলী ও আবু তাহেরের নেতৃত্বে ঢাকার ইডেন হোটেলে ইসলামী ছাত্র সংঘের নাম পরিবর্তন করে ছাত্রশিবির নামে আবির্ভূত হয়। ছাত্রশিবিরের প্রথম কমিটির সভাপতি ছিলেন মীর কাশেম আলী।
আর সাধারণ সম্পাদক ছিল কামারুজ্জামান।
পরে তিনি ছাত্রশিবিরের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। কামারুজ্জামানের আমলনামা : একাত্তরে কামারুজ্জামান ছিলেন ইসলামী ছাত্রসংঘের ময়মনসিংহ জেলার প্রধান। সেখানে আল বদর বাহিনীর প্রধান সংগঠকও ছিলেন তিনি। ওই অঞ্চলে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা হত্যার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, পরে দেশে শিবিরের রগকাটা রাজনীতি-সংস্কৃতিরও প্রবর্তক এই কুখ্যাত কামারুজ্জামান।
আল বদর বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার ইন চিফ হিসেবে কামারুজ্জামানের দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকাগুলো ছিল ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ ও শেরপুর।
এপ্রিল মাসের শেষ দিকে প্রথম বদর বাহিনী গঠিত হয় জামালপুরে। মোঃ কামারুজ্জামান ছিলেন বদর বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা। পরবর্তীতে এই সংগঠন সারা দেশে সম্প্রসারণ করা হয়। বদর বাহিনীর প্রধান কাজ ছিল সারা দেশে স্বাধীনতাকর্মীদের খুঁজে বের করা, হিন্দুদের বলপূর্বক মুসলমান বানানো, সেমিনার সিম্পোজিয়াম ও প্রচারপত্রের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী প্রচার প্রপাগান্ডা এবং প্রয়োজনে মুক্তিযোদ্ধাদের সশস্ত্রভাবে মোকাবেলা করা।
বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ঠা-া মাথায় বদর বাহিনীর নৃশংসতা মুক্তিযুদ্ধের শেষ পাঁচটি মাসে জনমনে ভয়াবহ আতঙ্কের সৃষ্টি করেছিল।
কামারুজ্জামানকে ময়মনসিংহ জেলা আল বদর বাহিনীর প্রধান সংগঠক হিসেবে উল্লেখ করে ১৯৭১ সালের ১৬ আগস্ট জামাতে ইসলামীর মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামে একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানে ২৫তম আজাদী দিবস উপলক্ষে গত শনিবার মোমেনশাহী আল বদর বাহিনীর উদ্যোগে মিছিল ও সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় মুসলিম ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এই সিম্পোজিয়ামে সভাপতিত্ব করে আল বদর বাহিনীর প্রধান সংগঠক কামারুজ্জামান। ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত দৈনিক সংগ্রামের খবরে বলা হয়, জেলা ছাত্রসংঘের নেতৃত্বে আল বদর বাহিনী জামালপুরে মোট ৫০০ দুষ্কৃতকারীকে (নিরীহ গ্রামবাসী ও মুক্তিযোদ্ধা) হত্যা করেছে। সেই সঙ্গে চার ভারতীয় চরকে আটক করেছে।
৭০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে আটক করার খবরও প্রকাশ করা হয়। আল বদরবাহিনীর পাকিস্তান প্রেমের প্রশংসা করে আল বদর শিরোনামে এক প্রতিবেদনে লেখা হয়, আলবদর একটি নাম! একটি বিস্ময়! আলবদর একটি প্রতিজ্ঞা! যেখানে তথাকথিত মুক্তিবাহিনী, আলবদর সেখানেই। যেখানেই দুষ্কৃতকারী, আলবদর সেখানেই। ভারতীয় চর কিংবা দুষ্কৃতকারীদের কাছে আলবদর সাক্ষাৎ আজরাইল। (দৈনিক সংগ্রাম ১৪ সেপ্টেম্বর ’৭১)
জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় জামালপুরের আশেক মাহমুদ কলেজ ছিল আল বদর বাহিনীর অন্যতম দপ্তর।
শহরটির মেডিকেল রোডেও ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও আল বদর বাহিনীর আরেকটি দপ্তর। একাত্তরে তার সহযোগী ছিল মোঃ আশরাফ, আবদুল মান্নান, আবদুল বারী প্রমুখ। কামারুজ্জামান শেরপুরে তার সহচর হিসেবে আরো কয়েক কুখ্যাত ঘাতককে বেছে নিয়েছিল। এরা হলোÑ কামরান (মুক্তিযুদ্ধ চলাকালেই অবস্থা বুঝে পাকিস্তানে পালিয়ে যায়), জয়নাল আবদীন (প্রথমে দৈনিক মিল্লাত, বর্তমানে সাপ্তাহিক সোনার বাংলার বার্তা সম্পাদক), সুজা তালুকদার, হযরত আলী (বর্তমানে কাজী), আব্দুল বাকের (বর্তমানে স্বঘোষিত পীর অর্থাৎ ভ-পীর), হবিবুর রহমান (হবি হাজি), সুরুজ্জামান (ঝিনাইগাতী মালিঝিকান্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের মৌলভী শিক্ষক)। কামারুজ্জামান বাহিনীর প্রধান কাজ ছিল ৩১ বেলুচ রেজিমেন্টের প্রধান সুলতান মাহমুদকে বাঙালি নিধনে সহযোগিতা করা।
স্বাধীনতার পরপরই মুক্তিযোদ্ধারা আবদুল বারীর একটি রোজনামচা পান। ওই রোজনামচায় হিন্দু নারীদের ধর্ষণ ও মুক্তিকামী মানুষ হত্যার বিশদ বিবরণ ছিল। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ওই রোজনামচার কিছু অংশ অধুনালুপ্ত দৈনিক বাংলায় প্রকাশিত হয়েছিল।
হত্যা, নির্যাতনে সহযোগিতার পাশাপাশি ওই সময় কামারুজ্জামান ও তার সহযোগীরা লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছিল। মুক্তিবাহিনীর সদস্য ও সমর্থকদের প্রতিহত এবং বিভ্রান্ত করতে স্বাধীন বাংলা চেকপোস্ট নামে একটি চেকপোস্ট খুলেছিল।
ওই চেকপোস্টে মূলত ভারতগামী সাধারণ মানুষকে নাজেহাল করা হতো। কোনো কোনো ক্ষেত্রে চেকপোস্ট থেকে অনেককে ধরে নিয়ে হত্যাও করা হয়েছে। এছাড়া কামারুজ্জামানের নেতৃত্বে আল বদররা সাধারণ মানুষের গরু, ছাগল ধরে নিয়ে আসতো এবং পরিত্যক্ত সম্পত্তিসহ অন্যান্য জমি সম্পত্তি জোর করে দখল করে নিতো। আর ডাকাতি তো ছিল নিত্য দিনকার ঘটনা।
গণতদন্ত কমিশনের রিপোর্ট : একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল যুদ্ধাপরাধীদের যে তালিকা তৈরি করেছে, তার সব কটিতেই এই কুখ্যাত রাজাকারের নাম রয়েছে।
জানা গেছে, একাত্তরের ২৫ জুলাই কামারুজ্জামানের নির্দেশে শেরপুরের সোহাগপুর গ্রামে ১৮৬ জন নিরীহ পুরুষকে হত্যা করা হয়। তখন গ্রামটি পুরুষশূন্য হয়ে পড়ে। এরপর থেকে গ্রামটি সোহাগপুর বিধবাপল্লী হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির গণতদন্ত কমিশনের কাছে শেরপুরের ফজলুল হক তার ছেলে বদিউজ্জামানকে হত্যার জন্য কামারুজ্জামানকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আষাঢ় মাসের একদিন তার বেয়াইয়ের বাড়ি শেরপুরের আহমদনগর থেকে তাকে ও তার ছেলেকে কামারুজ্জামানের নেতৃত্বে ১১ জন লোকের একটি দল ধরে নিয়ে যায়।
পরে ফজলুল হককে ছেড়ে দিলেও বদিউজ্জামানকে আহমদনগর পাকিস্তানি ক্যাম্পে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ২ মে বড় ভাই হাসানুজ্জামান বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা করেন। এই মামলায় ১৮ জন আসামির অন্যতম ছিল কামারুজ্জামান। মামলাটির নম্বর ২(৫) ৭২ ও জিআর নম্বর ২৫০ (২) ৭২।
ঘাতকদের হাতে নিহত শেরপুর জেলার গোলাম মোস্তফার চাচাতো ভাই শাহজাহান তালুকদার গণতদন্ত কমিশনের কাছে জানিয়েছেন, ১৯৭১ সালের ২৪ আগস্ট আল বদররা গোলাম মোস্তফাকে শেরপুর শহরের সড়ক থেকে ধরে জোর করে তাদের ক্যাম্পে নিয়ে যায়।
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধাদের দমন করতে শেরপুর শহরের সুরেন্দ্র মোহন সাহার বাড়িতে তখন আল বদর বাহিনীর একটি ক্যাম্প তৈরি করে কামারুজ্জামান। ক্যাম্পে একটি টর্চার সেলও ছিল। সেখানে নিয়ে গোলাম মোস্তফার রগ কেটে দেয়া হয়। এরপর শেরী ব্রিজের নিচে কামারুজ্জামানের নির্দেশেই তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শেরপুর জেলা শাখার সাবেক সভাপতি তাপস সাহা গণতদন্ত কমিশনকে জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় কামারুজ্জামান ও তার সহযোগীরা শেরপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাঙালি নারী-পুরুষকে আল বদর ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যেতো।
সেখানে তারা চাবুক দিয়ে পেটাতো। কামারুজ্জামানের বাহিনী শেরপুর পৌরসভার সাবেক কমিশনার মজিদকে ধরে নিয়ে গিয়েছিলো সেই টর্চার ক্যাম্পে। সকালে ধরে নিয়ে পুরো দিন তাকে টর্চার ক্যাম্পের ‘অন্ধকার কূপ’-এ আটকে রাখে। মে মাসের মাঝামাঝি এক দুপুরে তারা শেরপুর কলেজের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ আবদুল হান্নানকে খালি গায়ে, মাথা ন্যাড়া করে, গায়ে-মুখে চুনকালি মাখিয়ে, গলায় জুতার মালা পরিয়ে উলঙ্গ অবস্থায় চাবুক দিয়ে পেটাতে পেটাতে কামারুজ্জামান ও তার সহযোগীরা শেরপুর শহর প্রদক্ষিণ করে।
একাত্তরের ঘাতক দালালরা কে কোথায় বইয়ে উল্লেখ রয়েছে, কামারুজ্জামানের লোকজন শেরপুর শহরের নয়ানী বাজারের একটি দ্বিতল ভবন দখল করে আল বদর বাহিনীর ক্যাম্প গড়ে তোলে।
এই ভবনের ওপর তলায় কমান্ডার কামারুজ্জামান ও তার সহচররা বসতো। নিচতলায় করা হয়েছিল নির্যাতনের কেন্দ্র। প্রতিদিন সেখানে গারদখানা ভরা হতো বৃহত্তর ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকার নিরীহ মানুষদের ধরে এনে। তারপর রাতের আঁধারে ঘাতকরা চোখ বেঁধে তাদের ঝিনাইগাতীর আহম্মদনগর, কয়েরি রোড এসব বধ্যভূমিতে নিয়ে হত্যা করা হতো। শেরপুর শহরের উপকণ্ঠে শেরী ব্রিজ এবং ঝিনাইগাতীর বগাডুবি ব্রিজ ওই ঘাতকদের মানুষ খুন করার দুটি স্পট ছিল।
নিরীহ মানুষজনকে ধরে আনার সময় বলা হতো কামারুজ্জামান সাহেব আপনাকে ক্যাম্পে নিয়ে যেতে বলেছেন। দিনের বেলা আল বদররা ঐ ক্যাম্পে পবিত্র ইসলামের নামে পাকিস্তানিদের জয়গান গাইতো। উচ্চ কন্ঠে সুর তুলতো ‘পাকিস্তানের উৎস কি লাইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ইত্যাদি। আর গ্রামের নিরীহ কৃষকদের কাছ থেকে জোর করে গবাদিপশু ছিনিয়ে এনে ক্যাম্পে জবাই করে খেতো। নারীদের ধরে এনে অত্যাচার করতো।
আর রাতে চলতো তাদের মানুষ খুন করার পালা। আর এসব কারণে নালিতাবাড়ি থানায় ১৯৭২ সালে ১৮ জনের বিরুদ্ধে যে মামলা হয় তার অন্যতম আসামি ছিলেন মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত এই জামাত নেতা।
ভোরের কাগজ / প্রথম পাতা : ১১/১২/২০১১ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।