আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাওকে বিকৃত নামে ডেকো না।

i m lost সূরা হুজুরাতে বলা হয়েছে, হে ইমানদারগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোনো মহিলা অপর কোনো মহিলাকেও যেন উপহাস না করে। কেননা সে উপহাসকারিনী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরকে দোষারোপ করো না এবং পরস্পরকে বিকৃত নামে ডেকো না। (হুজুরাতঃ ১১) ছোটবেলায় আব্বুর সাথে রিক্সায় করে কোথায় যেন যচ্ছিলাম।

পথিমধ্যে আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সাথে দেখা। দেখার সাথে সাথে প্রিয় বন্ধুটি আমাকে ডাক দিয়েছিল তবে বিকৃত নামে। বন্ধুটি সেদিন বিকৃত নামে ডাকলেও আমি কিছু মনে করি নি কিন্তু আব্বু মনে মনে কষ্ট পয়েছিলেন। আব্বু সেদিন আমার কাছে বন্ধুটির নাম,বাবা কি করে,রোল কত আরও অনেক কিছু জিঙ্গেস করেছিলেন। আমি আব্বুকে বুঝাতে চেষ্টা করছিলাম আমার বন্ধুটি অনেক ভাল হয়ত এটা মিসটেক।

বিকৃত অনেক কিছুই হতে পারে। বিকৃত ইতিহাস,বিকৃত নাম,বিকৃত জন্ম তারিখ,বিকৃত সমাজ ইত্যাদি। আমাদের সমাজে সাধারনত একজন রিক্সাচালক তার বন্ধুকে,এক রখাল আর এক রাখালকে বিকৃত নামে ডাকে। এরা অশিক্ষিত হয়ত অনেক কিছু এরা জানে না কন্তু আমাদের অনেক জাতীয় নেতৃবৃন্দের মুখে এমনকি অনেক মন্ত্রীদের মুখেও অন্যকে বিকৃত নামে ডাকতে শুনি। মন্ত্রীর মুখে যখন বিকৃত নাম ডাকতে শুনি তখন ঐ মন্ত্রী আর রিক্সা চালকটির মধ্য পার্থক্য খুঁজতে আমার খুবই কষ্ট হয়।

আমাদের সমাজে এমন অনেক কুলঙ্গার রয়েছে যারা আমাদের জাতীয় নেতৃবৃন্দের ছবি বিকৃত করে ইন্টারনেটে প্রকাশ করছে। যারা এই কাজগুলো করছে তারা অভিশপ্ত। এদের জন্ম পরিচয় সম্পর্কে আমার সন্দেহ হয়। বিকৃত ছবি আকার মধ্যদিয়ে এরা নিজেদের পশুত্বকে ফুঁটিয়ে তুলে। কিছুদিন আগে কিছু নরপশু আমাদের পবিত্র কাব ঘরকে বিকৃত করে ফেইসবুকে প্রচার করে।

যারা এই কাজগুলো করে তারা কোন ধর্মে বিশ্বাস করে না। এরা না মুসলিম,না হিন্দু,না বৌদ্ধ,না খ্রিষ্টান। আসলে এরা হিজড়াসম্প্রদায়ভুক্ত। তবে আশার কথা হল চিকিৎসার মাধ্যমে হিজড়াদের ভাল করা যায়। হিজড়াদের মত এদেরও সুচিকিতসা প্রয়োজন “মানুষের গর্ভে এমন অনেক শিশু জন্মগ্রহণ করছে যারা—না ছেলে, না মেয়ে।

সন্তান ধারণ বা জন্ম দেয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। ডাক্তারি ভাষায় এদেরকে বলা হয় ‘ইন্টারসেক্স ডিস্অর্ডার’ রোগী। প্রচলিত সমাজে এরা হিজড়া নাম নিয়ে অবহেলিত, বঞ্চিত ও মানবেতর জীবনযাপন করছে। এমনকি লিঙ্গ সমস্যার কারণে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত এসব শিশুরা। চিরদুখী এসব মানব সন্তানের দুঃখ মোচনের দ্বার উদ্ঘাটন করেছে চিকিত্সা বিজ্ঞান।

গতকাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শুরু হয়েছে ‘ইন্টারসেক্স ডিস্অর্ডার’ রোগে আক্রান্ত শিশুদের অপারেশনের মাধ্যমে ছেলে অথবা মেয়ে শিশুতে রূপান্তরিত করার প্রক্রিয়া। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বখ্যাত শিশু সার্জন মেলবোর্ন চিলড্রেনস্ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান প্রফেসর জন এম হার্টসন এসব শিশুর অপারেশন করছেন। একই সঙ্গে এই অপারেশনের মাধ্যমে হাতেকলমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন দেশ এবং বিদেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের প্রায় পঞ্চাশজন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক এবং সমপরিমাণ পোস্ট গ্রাজুয়েট স্টুডেন্ট। মানুষের গর্ভে জন্ম, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সবই আছে শুধুমাত্র লিঙ্গ সমস্যার কারণে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় সব সুযোগ-সুবিধা থেকে এরা বঞ্চিত। বিশ্বে প্রতি ১৫ হাজার নবজাতকের মধ্যে অন্তত একজন (ইন্টারসেক্স ডিস্অর্ডার) এ রোগে আক্রান্ত হয়ে জন্মগ্রহণ করছে।

অনেক পিতামাতা লোকলজ্জা ও সামাজিকতার ভয়ে এসব শিশুকে ঘরে বন্দি করে রাখছে। এমনকি নির্মম হত্যাকাণ্ডেরও শিকার হতে হয়েছে এসব নিষ্পাপ শিশুকে। শিশু অবস্থায় লিঙ্গ সমস্যা বুঝতে না পারলেও একটু বড় হতেই বুঝতে পারে সৃষ্টিকর্তা পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে তাদের গড়েনি। ধীরে ধীরে সমাজ থেকে ছিটকে পড়তে থাকে তারা। ঠাঁই হয় কোনো হিজড়াপল্লীতে।

তারপর শুরু হয় মানবেতর জীবন। জীবন ধারণের তাগিদে ভিক্ষাবৃত্তি বা প্রতারণাসহ নানান ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়তে বাধ্য হয় এসব মানুষ। অবশেষে চিকিত্সা বিজ্ঞান এসব চিরদুখী মানবসন্তানের দুঃখের অবসান ঘটানোর আয়োজন করেছে। এখন থেকে হিজড়া নামে পরিচিত এসব শিশুও মুক্ত আকাশে ছুটে বেড়াবে, খেলবে নিজের মতো করে, সমাজের অন্য দশজনের মতো বেড়ে উঠবে—এ প্রত্যাশা নিয়ে বুধবার থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগে ‘লাইভ অপারেটিভ ওয়ার্কশপ অন ইন্টারসেক্স ডিস্অর্ডার’ নামে দু’দিনব্যাপী কর্মশালা শুরু হয়েছে। এই কর্মশালায় ১৯ জন ইন্টারসেক্স ডিস্অর্ডার শিশুকে অপারেশনের মাধ্যমে ছেলে অথবা মেয়ে শিশুতে পরিণত করা হবে।

অপারেশনে নেতৃত্ব দেবেন বিশ্বখ্যাত শিশু সার্জন অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন চিলড্রেনস্ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান প্রফেসর জন এম হার্টসন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপিকা তাহমিনা বানুর আমন্ত্রণে তিনি চট্টগ্রামে এসেছেন। ৭ ও ৮ ডিসেম্বর অপারেশন শেষে ৯ ডিসেম্বর তিনি অস্ট্রেলিয়া ফিরে যাবেন। এরপর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডাক্তাররা অপারেশন কার্যক্রম অব্যাহত রাখবেন। অপারেশনের একপর্যায়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডা. জন এম হার্টসন জানান, নিষ্পাপ শিশুগুলোর মাঝে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা।

এ শিশুগুলোর অনেক বাবা-মা জানে না তাদের সন্তানটি ছেলে না মেয়ে। অনেকের শরীরের নিচের অংশে রয়েছে ছেলের বৈশিষ্ট্য কিন্তু উপরে একজন মেয়ে, আবার অনেকের নিচের অংশ মেয়ের বৈশিষ্ট্য কিন্তু উপরে ছেলে। আবার অনেকে ছেলেও না মেয়েও না। এ শিশুদের কারও কারও মধ্যে ছেলে এবং মেয়ের দুটোই বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। এদের যে কোনো লিঙ্গে রূপান্তরিত করা যাবে।

“ “সূত্র:আমার দেশ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।