আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঃঃঃ অনলাইন ডেটিং আর মিথ্যাচার ঃঃঃঃ

ঃঃঃঃ চল বহুদূরে...নির্জনে আড়ালে লুকোই...ঃঃঃ সারা পৃথিবীতো বটেই আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েরাও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন অনেক বন্ধু-বান্ধবী জুটাচ্ছে অন-লাইন ডেটিং (চ্যাটিং) এর মাধ্যমে। কিন্তু তারা কি একে অপরের সঠিক তথ্য আদান প্রদান করছে? আমার ধারণা মতে ২০০৩ সাল থেকে বাংলাদেশে এই চ্যাটিং প্রবনতা মাঝারী আকারে শুরু হয়, যা বর্তমানে মোবাইল ফোনের কল্যাণে ব্যপক হারে ব্যবহার হয়। অন-লাইন চ্যাটিং এর মাধ্যমে বন্ধুত্ব গড়ার আগে আমাদের দেশেও পেন-ফ্রেন্ড এর প্রচলন ছিল। দৈবক্রমে গ্র্যাজুয়েশন এর পর আমিও পেন-ফ্রেন্ড এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ছেলে-মেয়েদের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলি। আমার সর্বমোট ২৮ জন পেন-ফ্রেন্ড ছিলো আর প্রায় প্রতি মাসে আমি ১০-১২ টা চিঠি পেতাম তাদের কাছ থেকে।

আমিও সচেষ্ট থাকতাম তাদের চিঠির জবাব দিতে। এভাবে কেটে যায় অনেক বছর। আর সুযোগ করে সাভারে কর্মরত এক আর্মি অফিসার পেন-ফ্রেন্ড এর সাথে দেখা করতে যাই। প্রায় ২ ঘন্টা সাভারের এক চায়ের দোকানে আমরা আড্ডা দেই। বিদায় লগনে তিনি আমাকে একটি আর্মি ক্যাপ গিফট করেন।

আমি তাকে একটি কলম উপহার দিয়েছিলাম। তিনি আমাকে প্রায়ই ফোন করতেন। আমার অনুপস্থিতিতে কখনো কখনো আমার এক খালাতো বোন, যে কিছু দিনের জন্য বেড়াতে এসেছিলেন, ফোন রিসিভ করতো। আর একদিন জানতে পারলাম ওরা দু'জনে ছুটিয়ে প্রেম করছে। আর সেটা জানার পর আমি বন্ধুর সাথে সম্পর্কটা হলকা করে ফেললাম, এক সময় আর যোগাযোগ রাখিনি।

তাদের প্রেম ও আর বেশী দিন টেকেনি। ন্যুখাই প্রু মারমা নামের আমার আর এক মেয়ে পেন ফ্রেন্ড ছিলো যে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে পড়তো। সে আমার খুব ভালো বন্ধু ছিল। একদিন তার আমন্ত্রনে আমি তার সাথে কুমিল্লাতে দেখা করতে যাই। বেশী সময় ব্যয করিনি।

আমাদের সাক্ষাতের মেয়াদকাল ছিলো মাত্র ১৫ মিনিট। আরা উভয় উভয়কে ভালোভাবেই জানতাম আর আমাদের সম্পর্ক উভয় ফ্যামিলি জ্ঞাত ছিলো। আরা মূলতঃ যার যার বাসার ঠিকানাতেই চিঠি পাঠাতাম। ওর ডিগ্রী পরীক্ষার পর বিয়ে হয়ে যায় আর আমাদের সম্পর্কের ইতি ঘটে। আমাদের সম্পর্কের মাঝে কোন মিথ্যাচার ছিলো না আর গোপনীতা রেখে চলতে হয়নি।

আমরা দীর্ঘ ৪ বছর ভালো বন্ধু ছিলাম। ডাকপিয়নের ছুটি হয়ে যায় এক সময়। আকাশ সংস্কৃতি ইতোমধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আর বিস্তার ঘটে বন্ধুত্বের পরিধি। ২০০৪ সাল থেকে আমি চ্যাটিংএ অভ্যস্ত হয়ে পরি।

এম এন এ্যাভোয়েড করে ইয়াহু কে বেঁছে নেই। ভাষা শিক্ষা নেয়ার সহজ উপায় হিসেবে আমি বিদেশী বন্ধুদের বেশী প্রাধান্য দিয়েছিলাম। তাই দেশী তেমন একটা বন্ধু আমার হয়ে ওঠেনি। আমি স্প্যানিশ, জার্মানী আর ভিয়েতনামকে প্রাধান্য দিয়ে ছিলাম। এই ৩ জাতি সহসা ইংরেজী ব্যবহার করেনা।

আর ভিয়েতনামী বন্ধুরা এমনিতেই ইংরেজীতে বেশ দূর্বল। স্প্যানিশ, জার্মানীদের সাথে আমার বেশী দিন বন্ধুত্ব রাখা সম্ভব হয়নি। সত্যিকার অর্থে এই দুই ভাষা রপ্ত করা খুবই কঠিন। এদিকে আমি ভিয়েতনামীজ অল্প অল্প রপ্ত করতে পেরেছিলাম আর আমার বেশ অনেক ভিয়েতনামী বন্ধুও জুটেছিলো। এখনো আছে যদিও আমি বিগত ৩ বছর আর চ্যাটিং করছিনা, তথাপি মাঝে মাঝে ৩ বন্ধুর সাথে মোবাইলে কথা বলি।

ভিয়েতনামী এক মেয়ে 'ন'গুয়েন হিয়ংটন', ডাক নাম মিমি। আমার সাথে বেশ বন্ধুত্ব ঘরে ওঠে। একসময় বেশ ঘনিষ্ট হয়ে উঠি আমরা। মেয়েটি হোচিমিং সিটির এক স্কুলের টিচার ছিলো। একদিন সন্ধ্যায় খুব বিষন্ন মন নিয়ে আমার সাথে চ্যাট করছিল।

আমি এর কারণ জানতে চেয়ে যা উত্তর পেলাম, আমার আকাশ থেকে পড়ার যোগাড় হলো। সেদিন সন্ধ্যায় তাকে দেখতে ছেলে পক্ষের আসার কথা, আর সে কাওকে কিছু না জানিয়ে ক্যাফেতে এসে বসে আছে আর আমার সাথে চ্যাট করছে। কিন্তু কেন সে এমন করলো? জিজ্ঞেস করতে বলে আমার সাথে ওর নাকি বোঝা পড়া আছে। আমাকে সে ভালোবাসে আর আমি যদি রাজি থাকি তো সে বাংলাদেশে চলে আসবে! ....চলবে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।