একজন নারী পুরোপুরি নগ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন হলভর্তি দর্শকের সামনে।
স্পট লাইটের বীম সম্পূর্ণ ঝুলে আছে নগ্ন নারীদেহের পর।
মূর্তির মতো নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে মেয়েটি।
তার পাশেই সামান্য আলোতে মুখোমুখি বসে দুজন পুরুষ হোস্ট।
তারা আলাপের ছলে একের পর এক মন্তব্য করতে থাকেন চোখের সামনে থাকা নারীদেহের প্রলেপ, খাঁজ এবং শৈল্পিক ঢেউ নিয়ে!
সেই বর্ণনা শুনে হলভর্তি দর্শক হাত তালি দিয়ে অভিনন্দন জানান সেই নগ্ন নারীকে।
আর এই পুরো দৃশ্য ক্যামেরায় বন্দি করে সেটা টেলিভিশনে প্রচার করা হচ্ছে।
‘আহ, মেয়েটি তার শরীরের খাঁজগুলোতে মনে হয় একটু মোমের পরশ বুলিয়েছে। এতো মসৃন যে ওর শরীর থেকে আলো পিছলে পড়ছে,’ একজন হোস্টের মন্তব্য।
জবাবে আরেক হোস্ট বললেন, ‘ওহ, তাইতো। খেয়াল করে দেখ, মেয়েরা সবসময় শুধু নিজেদের প্রশংসা নিজেরাই করে।
এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দর্শক জানতে পারছে একজন পুরুষ তার সামনের নারীকে নিয়ে কি ভাবছে। তাইনা?’
‘আরে ধুর, এটা স্রেফ আমার ভাষায় রাবিশ টাইপ সেক্সি!’
আলো আঁধারের খেলায় এভাবেই চলতে থাকে আলাপচারিতা।
ডেনমার্কের একটি টেলিভিশনে প্রচারিত হচ্ছে এই নতুন টিভি রিয়েলিটি শো। ইতোমধ্যেই দেশটিতে অনুষ্ঠানটিকে ঘিরে চলছে উত্তেজনা আর তুমুল বিতর্ক।
এই অনুষ্ঠানকে ডেনমার্কে বলা হচ্ছে স্রেফ একটি রিয়েলিটি শো।
নির্মাতারা দাবি করছেন, ‘এটি একটি কাব্য, নগ্নতা নয়। ’
উদ্যোক্তারা এই শো-কে শিল্পকলা হিসেবে দেখাতে চাইলেও, নারী শরীর যে আজও পুরুষের কাছে নেহাতই পণ্য ছাড়া কিছু নয় তাই চোখে আঙুল দিয়ে প্রমাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন অনেকে।
শো’র জন্য মেয়েটিকে আড়াইশো ইউরো দেওয়া হয়। মজার ব্যাপার, প্রত্যেকটি শো’তেই মেয়েটির ‘পারিশ্রমিক’ এর টাকা দর্শকদের সামনে নগ্ন অবস্থায় মঞ্চের ওপরই দিয়ে দেওয়া হয়।
বিতর্কের একটি অংশে যারা আছেন, তাদের দাবি হলো শরীরের অধিকার তত্ত্ব মেনে নিলে, জনসমক্ষে একটি মেয়ে স্বেচ্ছায় নগ্ন হতেই পারে।
কিন্তু তার শরীর নিয়ে প্রকাশ্যে টিভি ক্যামেরার সামনে দু’জন পুরুষ খুঁটিনাটি ব্যাখ্যা দিয়ে চলেছে, কিন্তু তার কোনও বক্তব্য নেই। এক্ষেত্রে তাকে জড়বস্তু ছাড়া আর কিছুই ভাবা হচ্ছে না বলে অভিযোগ অন্যপক্ষের।
এ ধরনের একটি শো কিভাবে সরকারি ছাড়পত্র পেলো, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
নারীকে এভাবে উপস্থাপনের জন্য বিশ্ব গণমাধ্যমে এখন বিতর্কের ঝড়।
নারী অধিকার নিয়ে যারা কাজ করেন, তাদের অভিযোগ, এভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে নারীর সম্মানহানি করা হচ্ছে।
তবে দেশটির মানবাধিকার কর্মীরা এধরনের রিয়েলিটি শো বন্ধের দাবি তুলেছেন। তারা দাবি করেন, মানবদেহকে ‘জড়বস্তুর’ মতো উপস্থাপন করা একটি গুরুতর মানবতা বিরোধী অপরাধ।
View this link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।