ব্লগার না পাঠক হওয়ার চেষ্টায় আছি শিক্ষা অপরিহার্য, কিন্তু যে শিক্ষা ব্যবস্থা বাংলাদেশে আজ প্রচলিত সেটা কি আসলেই অপরিহার্য! শিক্ষার উদ্দেশ্য মানুষের মনুষত্ব জাগ্রত করা। কিন্তু শিক্ষার উদ্দেশ্য এখন প্রতিযোগিতা হয়ে উঠছে। প্রতিযোগিতাটা সুস্থ হলে তাও মানা যেত। একটি শিশু যখন স্কুলে যায় তখনই তার মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় যে তাকে সব সময়ই প্রথম হতে হবে। সব বাবা মা চায় সন্তানকে প্রথম দেখতে! সব পড়া লিখাই যেন প্রথম হওয়ার জন্য।
শিক্ষা যে অতি আনন্দের তা অনেকেই জানে না। অবশ্য জানার কথাও না। আনন্দের কথা বাদ দিই। নিদেনপক্ষে আমাদের বিবেক বোধ তো জাগ্রত করবে। বিবেক বোধ জাগ্রত করা মানে দেশের জন্য জীবন দিয়ে দেওয়া না।
তাই তো এত “Higher education” শেষ করেও আমদের মানুষিকতা রয়ে গেছে পশুর মত। যার টাকা আছে তার সব আছে। টাকা দিয়ে সে সব কিনে। তাই তো দেখা যায়, অফিসের বস বিনা দ্বিধায় তার নারী কর্মীর দেহ চায়। দেহের বিনিময়ে প্রমোশন!
অবশ্য তাদের আর কি দোষ দিব।
পরিমলের মত শিক্ষকরা যখন তাদের ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন করে তখন আর কিছু বলার থাকে না! যিনি মহান শিক্ষক, যিনি শিক্ষা দিবেন তিনি আজ ধর্ষক! পড়ানোর বিনিময়ে টাকা নিতেই তো একজন আদর্শ শিক্ষকের কষ্ট লাগার কথা, আর তিনি কিনা নিচ্ছেন নারী দেহ!!
গার্মেন্টেসের পুরুষ কর্মীটি যখন তারই নারী সহকর্মীটিকে ইচ্ছে করে ধাক্কা দেয়, বাসের হেল্পার বাসে উঠার সময় মেয়েদের গায়ে অযাচিত ভাবে হাত দেয় অথবা বাসে জায়গা না পায়ে দাড়িয়ে থাকা মেয়েটির বুকে ইচ্ছে করেই হাত দিয়ে পুরুষ যাত্রীরা মজা পায় কিংবা আনন্দের সাথে শপিং করতে থাকা মেয়েটিকে দেখে কেউ শিষ দেয় বা মেয়েটির গায়ে ইচ্ছে করে কাউ হাত দেয় তখন আমাদের আর খারাপ লাগে না! লাগবেই বা কেন! এগুলো তো এখন অনেকটাই স্বাভাবিক ঘটনা!! কিন্তু একজন তথাকথিত উচ্চ শিক্ষিত ছেলে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় মেয়েদের শিষ দেয়, কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাই(!) শিট নেওয়ার জন্য তার জুনিয়র ছাত্রীটিকে রাতে দেখা করতে বলে সেগুলো কিভাবে মানা যায়। গার্মেন্টসের কর্মী বা বাসের হেল্পাররা না হয় অশিক্ষিত, কিন্তু ছেলেটি!!
বিংশ শতাব্দী হল প্রযূক্তির শতাব্দী। আর আমরা এই প্রযুক্তির সবচেয়ে খারাপ দিকগুলো কি সুন্দর গ্রহন করছি। রাস্তাঘাটে কোন সুন্দর মেয়ে দেখলে আমরা লুকিয়ে তার ছবি তুলি। কিন্তু যে ছেলেটি এ কাজ করছে, সে কি জানে এমনি ভাবে তার বোনের ছবিও যে কেও তুলতে পারে! প্রযুক্তির উন্নতির সাথে বদলে যাচ্ছে নির্যাতনের ধরণ।
এখন মেয়েদের ওয়াশ রুমে রাখা হচ্ছে গোপন ক্যামেরা। এমনকি দোকানদাররা ট্রায়াল রুমে রেখে দিচ্ছে গোপন ক্যামেরা। যে মেয়েটা কিছুই জানল না, কিছুই বুঝল না তাকে দিয়েই তৈরী হচ্ছে পর্ণগ্রাফি।
প্রেম করা অপরাধ না। কিন্তু একটি ছেলে কি করে পারে তার প্রেমিকার ঘনিষ্ঠ ভিডিও আপলোড করতে? হয়ত মেয়েটির সাথে ঝগড়া হয়েছে, কিন্তু তাই বলে মেয়েটির মান সম্মান পানিতে মিশানো লাগবে কেন? কি করে একটি ছেলে এ জঘন্য কাজ করতে পারে! মেয়েটি তো তাকে বিশ্বাস করেই ভালোবেসেছিল।
অবাক লাগে যখন একটি শিক্ষিত ছেলে এসব কাজ করে।
আসলে আমরা কতটুকু শিক্ষিত হয়েছি সেটা বলা মুশকিল হলেও সুশিক্ষা যে আজও আমরা গ্রহন করতে পারি নি তা নিশ্চিত। সমাজ বদলের জন্য অবশ্যই শিক্ষা দরকার। তবে পরিমলের মত স্যাররা যে শিক্ষা দেন সেটা না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।