আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

Hang Out in জাকার্তা

আমার এমন কিছু দুঃক্ষ আছে যার নাম... তিলক কামোদ এমন কিছু স্মৃতি যা... সিন্ধু ভৈরবী জয় জয়ন্তীর মত বহু ক্ষত রয়ে গেছে ভিতর দেয়ালে কিছু কিছু অভিমান , ইমন কল্যাণ শরদ বাজাতে জানলে বড় ভালো হত.....!!!!!! গত বছর সাংহাই যাবার কথা ছিল নানা কারনে যাওয়া হয়ে উঠেনি বছরে একবার ই হয় এই summit তাই এবারের যাওয়া টা must do ছিল। আমার ট্যুরটা টা পুর্ব নির্ধারিত ছিল কোরবানির ঈদের পরপরই। ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় আমি আগেও গিয়েছিলাম ২০০১ সালে, প্রায় ১০ বছর পর আবার জাকার্তায়। রাত ১১:৫৫ তে Singapore Airlines এর flight। যথারিতী বাঙ্গালি ভাই বোনেরা অনেক কেতা দুরস্ত পোশাকে এসেছে সেই তুলনায় আমার কাপড় চোপড়ের অবস্হা খুব একটা সুবিধার না।

Airport e আসাবার আগেও presentation এর টুকি টাকি ঠিক করে নিতে হল। সাজবার টাইম পেলাম না। কপাল খারাপ airlines এর ছেলেটা বললো কোনো window seat নাই, electropnic boarding করেন নাই কেন ? আমি আস্তে করে বললাম সময় পাইনি। মনে মনে বললাম বাবাজি তুমি তো আর জানো না সারাদিন office করে বাসায় ১০ দিনের জন্য সব গুছিয়ে তালা তুলা দিয়ে ৩ /৪ টা কাপড় কোনমতে ব্যাগে ভরে আসছি। aisle সিট পেলাম ,বসে বসে সৃষ্টিকর্তাকে ডাকলাম যেন আমার পাশে কোন বাঙ্গালি কেউ না বসে নাইলে সারা পথ কথা বলে আমার মেজাজ পুরা আউলা করে দিবে।

প্রার্থনায় কাজ হয়েছে একজন thai বয়স্ক লোক পাশে বসলেন যিনি সারা পথ নিঃশব্দে ঘুমিয়ে কাটালেন। কিনত্ত আমার এত সুখ সইলোনা । পিছনের সিটে ছিলেন এক বাঙ্গালী রমনী আর একজন যুবক। দুজনেই Austrelia ফিরে যাচ্ছেন, মহিলা থাকেন স্বামীর সাথে আর যুবকটি গেছেন মাত্র ৬ মাস হলো। প্রায় সাড়ে ৪ ঘন্টা ধরে আমি সামনের সিটে বসে উভয়ের পরিবার, নিজেদের স্বপ্ন ,আশা- হতাশা ,সংস্কার, কৃষ্টি, কর্মক্ষেত্র সব জেনে ফেলছি।

খুব ভোরে singapore changi Airport এ পৌছালাম , Terminal 2 পৌছে ফ্রেশ হয়ে কফি নিলাম। এই জায়গাটা আমার অনেক পরিচিত অনেকটা নিজের বাড়ীর মত, প্রতিটি কোনার দোকান চেনা। সকাল ৭ টায় আমার connecting flight । খুব একটা বদলায়নি জাকার্তা, আগের চেয়ে ট্রাফিক বেড়েছে বাংলাদেশের মত ,বিল্ডিং বেড়েছে , রাস্তা-ঘাট ফ্লাইওভার হয়েছে বেশি। হোটেল নিয়ে আমার শুচিবাই আছে।

বুটিক হোটেল হলেও আপত্তি নাই কিনত্ত হোটেল এর সাজ সজ্জায় সেই দেশের ঐতিহ্য থাকতে হবে যেটা দেশটির সংস্কৃতি তুলে ধরে । দুপুর ১২ টায় পৌছে হোটেল দেখে অনেক ভালো লাগলো। পথের ক্লান্তি সব নিমেশেই হাওয়া। লবিতে একটা আলোর ঝাড় সাথে ৩ টা হাতের মুর্তি, ১,২,৩ এর হাত দিয়ে প্রকাশ ! যত্র তত্র ছরিয়ে ছিটিয়ে আছে painting। বিশাল একটা সিড়ি অনেকটা টাইটানিক সিনেমার মত।

কর্মক্ষেত্রেরে শিডিউল ছিল খুব টাইট খুব বেশি ঘুরা ফিরা করতে পারিনি। প্রতিদিন ভোর ৫:৩০ উঠে ৭ টায় রওনা দেয়া আর ফিরতে ফিরতে রাত ৮ টা । প্রোগ্রাম যেদিন শেষ হলো রাতে আমরা ৪ জন মিলে ঠিক করলাম হোটেলে ফিরে প্রথমে শপিং এ যাব,এরপর বুফে ডিনার করবো বড় কনো restaurant এ, অবশেষে একটা ব্যান্ড show দেখে ফিরব। অবশ্যই ফিলিপিনো ব্যান্ড show দেখতে হবে কারন একমাত্র ওদের ইংরেজী গানগুলো original এর কাছাকাছি যায়। ৪ জন নারী ভিন্ন তাদের দেশ, ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, লাইফ স্টাইল কিনত্ত একই সুঁতায় গাথা জীবন।

একই আবহমান কালের এশিয়ান নারী। অনেক হাসি আর আনন্দের মধ্যে একটা ট্যাক্সি ডেকে আমরা রওনা হলাম। এর মাঝে আধো আধো বাহাসা ভাষায় জেনে নেয়া হলো মাংগা ডুয়া ( ২টি আম) shopping mall কত দুর । হোটেল থেকে জানান হলো মাত্র আধা ঘন্টার পথ। প্রায় ১ ঘন্টা পেড়িয়ে গেল আমরা পৌছালাম না।

নিয়ন বাতির ঝলমল কমে আসতে লাগল যতই সামনে এগোচ্ছি রাস্তা কেমন অন্ধকার হয়ে এলো, লোকজনের চলাফেরা কমে যাচ্ছে রাত বাজে ৯:৩০। অবশেষে পৌছে দেখি বন্ধ হয়েছে সন্ধ্যা ৬ টায়, এতদুর এসে বোকা বনে গেলাম আমরা। প্রথম প্ল্যান সুপার ডুপার ফ্লপ। এবার পালা ২য় টি বাস্তবায়নের , বুফে ডিনার। বিশাল restaurant লোকজনের ভিড়।

জাপানি, কোরিয়ান,ভিয়েতনামিজ, ইন্ডিয়ান কোন কিছুই বাদ নাই। সাড়ি সাড়ি খাবার সজানো, পুরা একটা হল রুম ডেসার্ট ভর্তি । আমি সর্বভুক এর মত অক্টোপাস,শামুক, কিমচি,সুশি কোন কিছুই বাদ রাখিনি খেতে । কিছুক্ষন বিরতি নিয়ে হাটাহাটি, ছবি তোলা, তারপর আবার ডেসার্টের উপর ঝাপিয়ে পরলাম। ১১ বাজে, গান শুনতে শুনতে লাউঞ্চে বসলাম ।

অপূর্ব সব গানের মূর্ছনায় অভিভূত । হালকা পানীয় আর নরম সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে গান শোনা । মনে হলো কে জানি পাশে নেই, হয়তো খুব প্রিয় কেউ পাশে থাকলে রাতটি তার পূর্নতা পেত । মাঝে মাঝে আমার এমন হয় ভীড়ের মধ্যেও একলা হয়ে পড়ি, চোখ দুটো কাকে যেন খুঁজে বেড়ায় ! হয়তো সে আমার ফেলে আসা দিনগুলোকে । রাত ১ টা বাজে, ফিরতে হবে, কাল সবাই ফিরে যাবে যার যার নিজের ঠিকনায়।

রুমে এসেই গোছল সেরে সফেদ বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম । ইছ্ছে করছিলোনা ব্যাগ গুছাতে , কাল সকাল ১০ :৩০ এ check out , ফিরে যাব ১০ দিন পর সেই চিরচেনা ধুলো ওড়ান ঢাকা শহরে ।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।