শরতের মেঘ মৃত্যু একটি ভয়ংকর ব্যাপার। মানুষ কখনো মরতে চায় না। সবারই বেচে থাকার আকুতি থাকে শেষ পর্যন্ত। যতই প্রলোভনই দেখানো হোক না কেন, মানুষ এই পৃথিবীর মাঝেই থাকতে চায়। মৃত্যুকে উপেক্ষা করার চেষ্টা মানুষ সেই প্রথম থেকেই করে আসছে, যদিও মানুষের মধ্যে একটা আত্মবিধ্বংশী প্রবণতা আছে, এই প্রবণতাটি অনেক সময় একক ভাবে নিজেকে না বুঝিয়ে নিজেদেরকে বুঝায়।
আমরা অনেক সময় নিজেদেরকে ধ্বংস করে ফেলি। আমরা মানুষ, সমগ্র মানব জাতি মিলেই তো আমরা একটা প্রজাতি, আমরা কেও আলাদা না। আমরা যখন একজন অন্যজনকে হত্যা করি, এতে তো আসলে আমরা নিজেদেরকেই হত্যা করি। আমার মাঝে মাঝে খুব খারাপ লাগে দেখে আমরা কিভাবে নিজেদেরকে নিজেরাই ধ্বংস করে ফেলছি। পৃথিবীতে আমরা একসময় আমি থাকবো না, এইটা স্বাভাবিক, প্রকৃতির একটি নিজস্ব গারবেজ কালেক্টর আছে, অবজেক্ট এর লাইফটাইম শেষ হয়ে গেলে তাকে ধুয়ে মুছে ফেলতে হয়, এর থেকে আমরা হয়তবা বের হতে পারবো না, কিন্তু আমাদের লাইফ টাইম যতক্ষণ থাকবে,ততক্ষণ আমরা কেন নিজেরা নিজেদের বাঁচিয়ে রাখবো না? মানুষ হত্যা প্রক্রিয়াটি কতনা নিষ্ঠর এবং কুৎসিত।
আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, আমাদের পৃথিবীতে মৃত্যুদণ্ড নামক কুৎসিত ব্যাপারটি এখনো কিভাবে আছে, আমরা অনেক সভ্য হয়েছি, দিনকে দিন হচ্ছি তবুও কেন আমাদের অতীতের ভুল গুলো মুছে ফেলতে পারিনি। ভয়ংকর অপরাধীর মৃত্যুদণ্ডও আমার কাছে খারাপ লাগে। আমি জিনিসটা মেনে নিতে পারিনা, শাস্তি হিসেবে কেন তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে, আর কোন কি পথ নেই। অপরাধীর শাস্তি নিয়ে আমার মনে মাঝে মাঝেই কিছু প্রশ্ন তৈরি হয়, এগুলো উত্তর ঠিক আমার জানা নেই, কিন্তু প্রশ্ন গুলো মাঝে মাঝেই মনের মধ্যে ধূলিঝড় তৈরি করে। মনে করা যাক, একটি মানুষ, সে ভয়ঙ্কর রকম কোন অপরাধ করে বসেছে, তাকে শাস্তি দেওয়া হবে।
মানুষটির একটি ফ্যামিলি আছে, তাতে তার ছেলে মেয়ে আছে, বাবা মা আছে। যে মানুষটি অপরাধ করেছে সে শাস্তি পাক, আমার কোনই আপত্তি নেই। আমার আপত্তি হলো, এই লোকটিকে শাস্তি দিতে গিয়ে কিন্তু অন্যদের শাস্তি দেওয়াটি কি ঠিক হবে, মানুষটির ছেলে মেয়ে কেন তাকে হারাবে, তার আত্মীয় স্বজনকে কেন তার অপরাধের জন্য কষ্ট পাবে? এইভাবে হয়তবা কি কেও চিন্তা করে নি ? এর চেয়ে কি ভাল কোন উপায় নেই? আমি মাঝে মাঝে চিন্তা করি, আজ বিজ্ঞান আজ অনেক উন্নত হয়েছে, হচ্ছে, মানুষ সিংগুলারিটির দিকে ধাবিত হচ্ছে, মানুষ জরার মূল কারণ বের করে ফেলেছে (টেলোমারস নামক কণিকা, এরা ডিএনএ’র এক অংশ, যখনই জৈব কোষ ভাঙে, এই কণিকগুচ্ছের দৈর্ঘ্য ছোট হতে থাকে, তখন ছোট হতে হতে শেষ হয়ে যায়, তখনই শুরু হয় জরা) এখন কেন আমরা সেই আদিম ভুল গুলো থেকে বের হয়ে আসতে পারবো না। আমি মাঝে মাঝে চিন্তুা করি, মানুষের মস্তিষ্ক থেকে অপরাধের স্মৃতি গুলোকে সরিয়ে দিতে পারলে কেমন হতো, কিংবা এমন কোন প্রক্রিয়ায় প্রত্যেকটি মানুষকে নিয়ে আসা হতো, যাতে করে তারা কখনোই অপরাধ নামক বস্তুটির সংস্পর্শে আসতে না পারে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।