এই গোপন বিদ্যা শিখতে আপনার যে যোগ্যতা লাগবেঃ আপনার থাকতে হবে চতুর একটা মাল , মানে চামচা । আপনি যে ধর্মের অনুসরন করেন সেই ধর্মের লেবাস । সাথে আমার লেখাটা ভালো করে বোঝা । আপনার লেখাপরা কততুকু এটা ফ্যাক্টর না । আপনি কতটুকু ধান্ধাবাজ ও চালাক এটাই ফ্যাক্টর ।
আসুন শুরু করি “ডিপ্লোমা ইন ধান্ধাবাজি সাইন্স এন্ড তদবির” >>>>
আপনি ওই চামচাটা দিয়ে এলাকায় প্রচার করান যে স্বপ্নে/কোনো এক গুরুর কাছ থেকে দিক্ষা পেয়েছেন এবং সবরোগ /বিপদ / সমস্যা আপনার তদবিরে ভালো হয় । অথবা আপনি জ্বিন হাসিল করেছেন , জ্বিন আপনার অনুগত। আপনি যত বিশ্বাস যোগ্যভাবে প্রচার চালাবেন তত বেশি রোগী আসবে ও ভালো হবে । হ্যা, ভালো হবে সাময়িক সময়ের জন্য , কিভাবে ? বলব একটু পরেই । আপনি শিক্ষিত হলে আরো ভালো তাহলে শিক্ষিত ছাগলদের পটাতে সুবিধা হবে ।
প্রথম অবস্থায় টাকা পয়সা চাইবেন না , বলবেন যার যা খুশি তা দিতে , এটা বিশ্বাস আর্জনের একটা সহজ উপায়। চোখ বন্ধ করে ফু / পানি পড়া / তেল পড়া দিন। ভয় পাবেননা , রোগ ভালো হবেই, আর এই ভালো হবার বৈজ্ঞানিক সত্য হল রোগীর “অন্ধবিশ্বাস” চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় “প্লাসিবো” চিকিৎসার ফল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা সাময়িক উপশম দেয় । আর রোগী মনে করে বাবারে পাইছি , এভাবে চলে প্রচার ।
সর্পরাজ,গুরু সম্রাট, স্বপ্নে পাওয়া, সংকটমোচন ইত্যাদি আধ্যাত্মিক বাবারা, মা-এরা এই সব ভাওতাবাজি করে পেট চালাচ্ছে। রোগ সৃষ্টি ও নিরাময়ের ক্ষেত্রে আমাদের বিশ্বাসবোধের গুরুত্ব অপরিসীম আমাদের বহুরোগের উৎপত্তি হয় - ভয়,ভাবনা,উদ্বেগ,উৎকন্ঠা ইত্যাদি থেকে। মানসিক কারনে বহু অসুখই হতে পারে , যেমন- মাথা ধরা, হাড়ে ব্যাথা, বুক ধড়ফড়, ব্লাডপ্রেসার, কাশি, এজমা,পেটের গোলমাল, আলসার, কামশীলতা, পুরুষত্বহীনতা, শরীরের কোন অঙ্গের অসারতা, কৃশতা, এমনি আরো অসংখ্য রোগ মানসিক কারনে হতে পারে। এই সব রোগের ক্ষেত্রে অনেক সময় চিকিৎসকরা মূল্যহীন ঔষধ (ট্যাবলেট,ক্যাপসুল,সিরাপ,ইনজেকশন) প্রয়োগ করে রোগীকে এটা বিশ্বাস করান যে, তাকে আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে রোগ মুক্ত করা হচ্ছে। এই ধারনা রোগীর মনে সৃষ্টি করে রোগীকে আরোগ্যের পথে নিয়ে যান।
রোগীর মনে বিশ্বাস নির্ভর এই চিকিৎসাই হল প্ল্যাসিবো। আর এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে আপনি ধান্ধাবাজি শুরু করবেন । রোগীকে বলবেন - তোমার কোন শত্রু তোমাকে বান মেরেছে , বা খারাপ জ্বিনের নজর লেগেছে । তন্ত্র-মন্ত্র (তন্ত্র-মন্ত্র বলতে কিছু নাই ,সব ভুয়া) , দিয়ে তোমার জ্বিন ছাড়াবো বা বান কাটাবো । না হয় এই সমস্যার ফলে মুখে রক্ত উঠে তোমার কেল্লাফতে হয়ে যাবে।
দেখবেন রোগী ভয়তে কাপড় নষ্টের অবস্থা হয়ে যাবে । আর আপনি তাকে বিশাল অংকের টাকা দাবি করলেও , রোগী জীবন বাঁচাতে আপনার কথা মেনে নেবে ।
বেশি চালাক ও পয়সা ওয়ালা রোগী হলে পাথর বিক্রির চেষ্ঠা করতে পারেন । ১ পাথর কিনবেন ১০/২০ টাকা বেচবেন ২০০০০/= থেকে ১০০০০০/= টাকা । আহ এত্ত টাকা কি করবেন ? আমারে মাঝে মাঝে দাওয়াত দিয়েন।
পাথর- মাদুলী , তাবিজ- কবজ, পানি/ তেল/ ফুল পড়া সব ভন্ডামী । শরীরের উপর ধাতুর কোনো প্রভাব নাই (অনেকে অষ্ট ধাতুর আংটি ব্যবহার করে )। বাবাজীর কৃপা পাওয়া অন্ধবিশ্বাসীদের দ্বারা বাবার মাহাত্ম ছড়িয়ে পড়ে। আপনার ও মাহাত্ম ছড়িয়ে পড়বে , আর চলতে থাকবে বংশের পর বংশ .........।
দু’ একটা ম্যাজিক জানা থাকলে লোকদের কে আধ্যাত্মিক ক্ষমতা বলে চালিয়ে দেবেন (ধরা খাইলে কিন্তু খবর আছে) একটা ম্যাজিক বলে দিচ্ছি -
মুখের মধ্যে খাটি গ্লিসারিন নিন বেশ খানিকটা , লোকদের সামনে থুথুর মত কিছুতে(যেমনঃকাপড়) ফালান, হাতের আঙ্গুলে গোপনে “পটাসিয়াম পারমাঙ্গানেট” রাখুন, এবার আপনার ফালানো থুতুর উপর হাত নাড়ানোর ভঙ্গি করে পটাসিয়াম পারমাঙ্গানেট ফেলুন , কিছুক্ষনের মধ্যে দেখবেন আগুন জলে উঠছে ।
এটা খোদার কুদরত বলে চালিয়ে দিন। বোকা দেখে কিছু মুরিদ বানান । গোপোন বিদ্যা কাউকেও বলবেননা। বউকেওনা। কেউ শিখতে চাইলে বলবেন এসব সাধনার বিষয়।
১২ বছর সাধনা করা লাগবে। মুরিদরাই দান খয়রাতের মাধ্যমে আপনাকে কোটিপতি করে ফেলবে । এবার আপনাকে ঠেকায় কে ।
(মেডিকেল তথ্য সহ একটি ফান পোস্ট, কাউকে ছোটো করার জন্য নয় । কারো সাথে মিলে গেলে লেখক দায়ি নয়।
)
প্রিয় পাঠক, এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ... ভাল থাকুন সবসময়।
ফেইসবুকঃ http://www.facebook.com/dr.faijulhuq
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।