অ্যাশেজের প্রথম টেস্টের একাদশে তাঁর নাম অনেকের জন্যই ছিল একটা চমক। সিরিজের আগে কজনই বা চিনত তাঁকে! অচেনা-অখ্যাত সেই অ্যাশটন অ্যাগারকে দলে নিয়ে অস্ট্রেলিয়াও একটা চমক দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। অ্যাগার শেষ পর্যন্ত চমকে দিলেন ঠিকই, যদিও আসল ভূমিকা বল হাতে নয়; ব্যাটে!
মাত্র ১০টি ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা ছিল বলেই হয়তো সবার শেষে ব্যাটিংয়ে আসেন। আর সেই ১১ নম্বরে নেমেই বিশ্বরেকর্ড করে ফেললেন এই ১৯ বছর বয়সী তরুণ। টেস্ট ক্রিকেটের এই দীর্ঘ ইতিহাসে আর কেউই যা করতে পারেননি, সেটাই করে বসেছিলেন প্রায়।
কিন্তু মাত্র দুই রানের জন্য সেঞ্চুরি হলো না। তবে যা হলো, সেটাই বা কম কিসে! ১১ নম্বরে নেমে ৯৮ রানও বিশ্বরেকর্ড। আর সেই কীর্তিও কিনা গড়লেন অ্যাশেজের মতো উত্তাপ ছড়ানো একটা সিরিজে অভিষেকেই। অ্যাগার সত্যিই অন্য ধাতুতে গড়া!
আরও একটি বিশ্বরেকর্ডে লেখা হয়েছে তাঁর নাম। এটি অবশ্য যৌথভাবে।
শেষ উইকেট জুটিতে ফিলিপ হিউজের সঙ্গে ১৬৩ রান যোগ করেছেন। দশম জুটিতে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ডও এটি। আর এই জুটির কল্যাণে ভয়াবহ বিপদে পড়ে যাওয়া অস্ট্রেলিয়াই শেষ পর্যন্ত ৬৫ রানের লিড নিয়েছে প্রথম ইনিংসে।
৪ উইকেটে ৭৫ রান নিয়ে দিন শুরু করা অস্ট্রেলিয়া আজ আরও ৩৩ রান যোগ করার পরই ভয়াবহ বিপদে পড়ে। ১০৮ রানে পঞ্চম উইকেটের পতন ‘ডমিনো এফেক্ট’-এর ধাক্কাই যেন এনে দেয়।
দেখতে দেখতে অস্ট্রেলিয়া ১১৭/৯। মাত্র ৯ রানের মধ্যে ৫ উইকেট নেই! সেখান থেকেই অ্যাগারের বীরত্বগাথা শুরু।
ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররা যখন শেষ উইকেটটাও তুলে নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামার মানসিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন, তখন থেকেই একের পর এক চমক দেখিয়েছেন এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে প্রথমেই ভেঙে দিয়েছেন ১১১ বছর পুরোনো একটি রেকর্ড। ১৯০২ সালে আরেক অস্ট্রেলিয়ান ওয়ারউইক আর্মস্ট্রংয়ের করা ৪৫ রানই এত দিন ধরে ছিল অভিষেকে ১১ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে করা সর্বোচ্চ ইনিংস।
মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার আগেই তাঁর নামের পাশে যোগ হয়েছিল ৬৯ রান।
এখানেই থামেনি অ্যাগারের স্বপ্নযাত্রা। একসময় এগারোতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের করা টিনো বেস্টের ৯৫ রানের রেকর্ডটিও পেরিয়ে যান। সেঞ্চুরিটা মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার। পুরো ট্রেন্টব্রিজ সেই সেঞ্চুরির জন্য অপেক্ষা করছিল।
কিন্তু স্টুয়ার্ট ব্রডকে পুল করতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে গ্রায়েম সোয়ানের তালুবন্দী হন।
অ্যান্ডারসন-সোয়ানদের খেলতে প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যানরাই যেখানে খাবি খাচ্ছিলেন, সেখানে অ্যাগারের রান সংগ্রহের গতিটাও ছিল তাক লাগানোর মতো। ১২টি চার ও দুটি ছয় দিয়ে সাজানো ৯৮ রানের ইনিংসটা তিনি খেলেছেন মাত্র ১০২ বলে। এমন নয় চোখ বন্ধ করে মেরেছেন। বরং পুরো ইনিংসে এই একটিই ভুল সাজঘরে পাঠিয়েছে তাঁকে।
বাকিটা একেবারেই নিষ্কলঙ্ক। পুরোদস্তুর ব্যাটসম্যানের মতো। কিন্তু একটা বলেই সর্বনাশ হলো। শুধু নিজে নয়, সেঞ্চুরি বঞ্চিত করেছেন সঙ্গী হিউজকেও। ৮১ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।
সেঞ্চুরিবঞ্চিত হলেও ফেরার সময় পুরো গ্যালারি দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানিয়েছে অ্যাগারকে। ব্যাট হাতে দুই রানের এই আক্ষেপটা অবশ্য বল হাতে পুষিয়ে দেওয়ার সুযোগ তাঁর হাতে থাকলই। অবশ্য সতীর্থ মিচেল স্টার্ক এরই মধ্যে ২ উইকেট তুলে নিয়ে ভীষণ অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে ইংল্যান্ডকে। ২ উইকেটে ১১ রান নিয়ে চা বিরতিতে গেছে ইংল্যান্ড।
অ্যাশেজ এবং ভারত-শ্রীলঙ্কা ম্যাচের সর্বশেষ স্কোর পেতে C লিখে এসএমএস করুন 2221 নম্বরে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।