আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাচ্চাকাচ্চারা শ্রদ্ধেয়,তাদের শ্রদ্ধা করুন ৪

আমার ভিতরে আমি স্বতন্ত্র জীবন যাপন করি। ভাবছিলাম বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে আর লিখবো না। কিন্তু আমার ভাতিজারা আমাকে বাধ্য করাল লিখতে। ঈদে গ্রামের বাড়ী যাব। চট্টগ্রাম শহর থেকে মিরসরাই বেশ কাছেই।

ঘন্টাখানেক লাগে। সেখানেই আমার বাড়ী। অসুস্থতার জন্য ভাবী বাড়ীতে যাবে না, ভাইয়্যা বিকালে আসবে। সকালে আমি আমার মা এবং আমার ভাতিজা রওনা দিলাম বাড়ীর উদ্দেশ্যে আমাদের কারে করে। পথে আমার এক বন্ধু উঠল গাড়ীতে।

সামনে ড্রাইভারের সিটের পাশে আমার ভাতিজা পিছনে আমরা তিনজন। সীতাকুন্ডে এসে গাড়ীতে সিএনজি নেয়ার জন্য এক সিএনজি ষ্টেশনে দাড়াল। সামনে আরও দুটি গাড়ী আছে । আমি আর আমার বন্ধু নামলাম। ভাবলাম একটু দেরী হবে একটা সিগারেট ধরাই।

কোনার দিকে একটা দোকানে আড়াল হয়ে সিগারেট ধরলাম। মাত্র ধরালাম আর আমার ভাতিজা এসে হাজির,ওকে দেখে আমি সিগারেট ফেলে দিলাম। আমাকে দেখে ভাতিজা বলতে লাগল “চাচ্চু তুমি সিগারেট খাচ্ছ, সিগারেট খাচ্ছ” আমি কিচ্ছু না জানার ভান করে বললাম “কই নাতো” ভাইস্তা আমার দমে যাবার পাত্র নয় সে বলল “না আমি দেখছি খাচ্ছ” এই বলতে বলতে আমার কাছে এসে নীচ থেকে জ্বলন্ত সিগারেট হাতে নিয়ে বলল “এই যে খাচ্ছ এটা, আমাকে দেখে ফেলে দিছ” আমি কোন উপায়ন্ত না দেখে সামনে বসা এক মুরব্বীকে দেখিয়ে বললাম “এটাতো উনি খাচ্ছিল” -না আমি দেখছি তুমি খাইছ আমার বন্ধু রফিক এসে ভাতিজা আহনাফকে বুঝানোর চেষ্টা করল যে আমি সিগারেট খাইনি। কিন্তু আহনাফের এক কথা সে দেখছে। আমাদের দুজনের বুঝনোতে একটু কনফিউজড হল আহনাফ।

পাশে বসা দুজন মুরব্বীকে গিয়ে জিজ্ঞেস করল “ আচ্ছা উনি (আমাকে দেখিয়ে) না সিগারেট খাচ্ছিল? ওই মুরব্বীকে একটু আগে আমি ফাঁসানোর চেষ্টা করেছি। সে মুরব্বী প্রতিশোধ হিসাবে নাক চোখ বাঁকা করে বলল “ না আমি জানি না” মুরব্বীর কথা শুনে আহনাফ বলল “আমি জানি খাইছে, আমি দাদুকে (আমার মা) বলে দিব” আমার বন্ধু খুব বিগলিত গলায় আহনাফকে জিজ্ঞেস করল “ আহনাফ বাবা চিপস খাবা? আহনাফ বলল “ আমি বুঝিনা চিপস দিয়ে যাতে আমি সিগারেটের কথা না বলি” (ভাইস্তা আমার সৎ,গর্বে বুক এক হাত বড় হওয়ার বদলে ভয়ে তিনহাত ভিতরে ঢুকে গেছে) গাড়ীতে গ্যাস নেয়া শেষ। আমরা গাড়ীতে উঠে বসছি। আহনাফ পিছনে ফিরে আমার মা কে বলল “দাদু জান চাচ্চু সিগারেট খাইছে” কিন্তু কথাটা আমার মা ঠিকমত শুনতে পেল না। ড্রাইভার তার কন্ঠস্বর দিয়ে আমাকে বাঁচানোর প্রাণপন চেষ্টা করে যাচ্ছে।

কিন্তু আহনাফ বলেই যাচ্ছে। আমার মা শুনলেন। মা নিজেই একটু বিব্রত হলেন । আহানাফকে বললেন “ এক কথা এতবার বলতে হয় না দাদু শুনছি” আহনাফ তার দায়ীত্ব সচেষ্ট “ না আপনি শুনেন নাই” আমার মা আবার বললেন “ আমি শুনছি” আহনাফ এবার সর্বোচ্চ কাজটি করল। বলল “তাহলে বলেন কি শুনছেন” আমার মা হাসি দিলেন।

আমার মাকে আহনাফ বলল “ বলতে পারছেন না কি বলছি,তারমানে আপনি ভাল করে শুনেননি” তারপর আহনাফ আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে বলল “চাচ্চু একটু সিগারেট খাচ্ছিল আমি দেখছি, এখন ধরা খেয়ে কিছু বলতেছে না” তখন আমার কি অবস্থা হচ্ছিল সেটা না হয় অনুমান করে নেন। আমার আরেক ভাতিজা আহরার। সে আবার সবসময় মারমুখী। তার একটা ভাই হয়েছে। সবাইকে সে নতুন বাবু দেখতে দেয় না।

কেবল তারাই নতুন বাবু দেখার অনুমতি পায় যারা আহরারকে ধমক দেয় না। আমার বাবা দুবাই থাকে। আহরার একদিন পাশের বাসার পিচ্চি আদিবার সাথে গল্প করছে “ আমার দাদুর বাড়ী মিরসরাই আর দাদার বাড়ী দুবাই বিদেছে (বিদেশে) চেখানে বিমানে যেতে হয়” বুঝেন ঠ্যালা। গপ্প কাহাকে বলে। আমার দুই ভাইয়ের সর্বমোট তিনজন ছেলে আছে।

গত মাসে আরেকজন ভাতিজা পৃথিবীতে এসেছে। সেদিন আমি ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম “ আমার কাঁধে উঠার পাবলিক আরেকজন বাড়ল” এই মাসে আমার আরেক ভাবীর মেয়ে হয়েছে। প্রথমবারের মত আমি ভাতিজি পেলাম। এবার অন্তত রেহায় পাব। মেয়েরা এত বদমাশ হয় না।

আপনারা তাদের জন্য দোয়া করবেন। বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে আমার আগের লেখাগুলো নিচে বাচ্চাকাচ্চারা শ্রদ্ধেয় ,তাদের শ্রদ্ধা করুন। বাচ্চাকাচ্চারা শ্রদ্ধেয় ,তাদের শ্রদ্ধা করুন ২ বাচ্চাকাচ্চারা শ্রদ্ধেয় কিঞ্চিত ১৮+ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।