আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রথম প্রেম | ফার্স্ট লাভ | পেহলি পেয়ার

পাগলাটে ... ধোঁয়াশাপুর্ণ এক চরিত্র ... নিজেকে চেনার ব্যস্ততায় সর্বদা ব্যস্ত ... ক্লাস ফোর ফাইভের কথা সম্ভবত । সময় মত জাগরুক না হওয়ায় অথবা জাগরুক হবার মত যথেস্ট ইচ্ছার অভাব বোধ করায় স্কুলে গেলাম ফোর্থ পিরিয়ডে, বাংলা ক্লাসে । তখন আমাদের বাংলা ক্লাস নিতেন ফাতিমা ম্যাম । উনি আমাকে বিশেষ স্নেহ করতেন । তার ক্লাসে আমাকে তেমন পড়া পারতে হতো না, তাই বাংলা’র থেকে ঘুমের দিকেই আমি বিশেষ মনোযোগ দিতাম ।

ওইদিন ক্লাসের সাবজেক্ট ছিল “লিঙ্গ’ । খাস বাংলায় বললে “সোনা” । এই সোনা কিন্তু আবার গোল্ড সোনা না । এই সোনা হৈলো গিয়া ওইটা । সুতরাং বলা যায়, “যাহাই লিঙ্গ তাহাই সোনা” (প্রুভড) ।

ফোর্থ পিরিয়ডে কারো ক্লাসে ঢোকা যেকোন ক্লাসের জন্যই উত্তেজনাকর বিষয় । “আরেহ দুস্ত, এত্ত পরে আইলি ক্যা ? কি হইসিল ?” টাইপের একটা এক্সপ্রেশন সবার চোখে মুখে খেলা করে, নিজে ক্লাসে বসে উপলব্ধি করেছি এটা । কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, আমার ক্ষেত্রে এটা প্রায় হয় নাই বললেই চলে । প্রাইমারি’তে থাকতে স্কুলে যাওয়ার অভিজ্ঞতা একদমই কম (পূর্ববর্তী ব্লগ “কিড in ন্যাপ” দ্রষ্টব্য) । সেখানে আমি স্কুলে গেলেই দেখতাম সবাই অবাক, দেরীতে যাওয়া আর টাইমে যাওয়া; এসব আমলেই আসতো না ।

হাই স্কুল মানেই বিন্দুবাসিনী, দেরীতে গেলে গেইট বন্ধ । এখানে দেরিতে যাওয়ার এক্সপেরিয়েন্স কম । মাইলস্টোন কলেজে মাশাআল্লাহ ডেইলী লেট যাওয়াতে কিছুদিনের মধ্যেই সবাই অভ্যস্ত হয়ে যায়; ভাবটা এমন “এইডা তো এমুনি” । পোলাপাইন চিল্লানী দিত “সঙ্গীঈইঈইঈ”, আর ফর্ম টিচার মাঈন স্যার হাসিমুখে বলতেন, “মির্জা সাহেব, আপনি এসেছেন ?” :@ [ কয়দিন আর বেত মারা যায় বেলেহাইজ পোলাপাইন’রে; যেহেতু কোন টাইপ রি-একশন নাই ] যা হোক, ফাতিমা ম্যাম’র ওইদিন কি হইলো বুঝলাম না । আমি ক্লাসে এসে বসার সাথে সাথে প্রশ্নে জর্জরিত হতে থাকলাম ।

কোনটা কি লিঙ্গ, বিপরীত লিঙ্গ কি, হ্যান ত্যান ব্লা ব্লা ব্লা । আমার আর সহ্য হচ্ছিল না, এম্নেই ঘুম থেকে উঠে ডাইরেক্ট দৌড় দিসি, তার মধ্যে আসার সাথে সাথেই “লিঙ্গ” অত্যাচার । একটু পর রক্ষা পেলাম, অন্যদের দিকেও তার নজর গেল । আমার তখন খিচ্চা ঘুম আসতেসে । আমি ঝিমাইতেসি আর ম্যাম সবার লিঙ্গ নিয়া টানাটানি করতেসে ।

আমি বললাম, “ম্যাডাম, লিঙ্গ’টা একটু আস্তে ধরেন; আমার ঘুম আসতেসে” । ম্যাম ফার্স্ট’এ একটা লুক দিলো, তারপর দেখি কাছে আইস্যা আমারে জোরসে একটা থাপ্পড় মাইরা ক্লাস থেকে চলে গেলো বেল পড়ে যাওয়ায় । আমি গাল মালিশ করতে করতে ভাবতে থাকলাম, “কি হৈলো হৈলো কি. এমন কি বললাম :S” । [ আমি তখন ক্লাস ফোর’এ পড়ি ; ওই কথার মাজেজা বোঝার কথা না; ম্যাম’এরও এটা বোঝা উচিত ছিল ] । যেহেতু টিফিন বেল পড়লো, অত চিন্তা না করে আমিও ঘুমাই পড়লাম ।

এত গীত গাওয়ার কারন কিন্তু আমার প্রথম প্রেম, ফার্স্ট লাভ “ঘুম পরী” । ওরে যে আমি কত লাভ করসি তার কোন ইয়ত্তা নাই । রাতের পর রাত, দিনের পর দিন ওরে নিয়া কাটাইসি । এইচ এস সি’র আগে আমার বাসার সবাই ওর সাথে ব্রেক আপের কথা বলে । আমি যেন ওর প্রতি পাগল হয়ে যাই আরও ।

ওকে ছাড়া আমি কিভাবে বাচঁবো বলো তোমরা ? আমি ওকে ছাড়িনী । যেখানে শ্রদ্ধেয় টিচার’দের নির্দেশ ছিল দিনে ওর সাথে ৩ ৪ ঘন্টার বেশি না কাটানোর, সেখানে আমি ওকে ১৪ ১৫ ঘন্টা করে সময় দিসি ডেইলী । এর জন্য কেউ আমাকে “রোমিও, প্রেমিক” এইসব রোমান্টিক নাম না দিয়া নাম দিসে “আইলস্যা, ঘুমরাজ etc etc :@ :@ ” তারপরও কিন্তু আমি ওর হাত ছাড়িনী । এইচ এস সি শেষ হলো । ওর ব্যবহার’ও দিন দিন বদলে যেতে থাকলো ।

আগের মত আমাকে সময় দেয় না । কেমন ছাড়া ছাড়া ভাব । আর কোন উপায় না দেখে আমি ‘ঘুম পরী’র ঘনিস্ষ্ঠ বান্ধবী মিস ‘আলাট্রল’ (Alatrol) এর সাহায্য নিলাম । প্রথমে কয়েকদিন আবার আগের মত সব ঠিক ঠাক মনে হলেও ক্রমেই দেখলাম আমার ধারণা ভুল । মিস ‘আলাট্রল’ও দেখি আমাকে পাগল বানানোর চেস্টা করছে ।

ওর সাথে কনটাক্ট অফ করে দিলাম । ‘ঘুম পরী’ আস্তে আস্তে আমাকে ছেড়ে যেতে থাকলো । ঢাকা ইউনিভার্সিটি’র ‘ক’ ইউনিটে পরীক্ষা ছিল গত ১৪ অক্টোবর । সারারাত ‘ঘুম পরী’কে ফোন দিতেই থাকলাম । দিতেই থাকলাম ।

কিন্তু ও ধরলে তো ! সে আসলো ভোর ৫.৫০ এর পর । ৬.১৫’তে এক ফ্রেন্ড ফোন দিল, কিরে যাবিনা ? আমি অনেক কস্টে বললাম, কেমনে যামু? তোর ভাবী কেবল আইলো । ওরে টাইম না দিলে ও’ও আমারে ছাড়বোনা, খাতায় কিছু লিখতেও দিবো না। তোরাই যা । ” ‘ঘুম পরী’ এইভাবে আমার ঢাকা ইউনিভার্সিটি’র স্বপ্ন চুরমার করলো ।

করলো তো ভালো, এইবার মানুষ হ, কিন্তু না পরদিন; আই মিন রাতেও এক’ই কান্ড । আমার সাথে সে ধোকা করেই যাচ্ছে । গত ৪৮ ঘন্টায় সে আমার সাথে ছিল ৪ থেকে ৫ ঘন্টা । এইটা কোন কথা ? “প্রেমের নাম বেদনা”, এই সিনেমা তো আর এমনিতেই হিট করে নাই; কথা সত্য । K গানটাও কি সুন্দর _ “প্রেমের নাম বেদনা, সে কথা বুঝিনি আগে” (আগে বুঝস নাই ক্যান? ঘাস খাইতি ওই টাইম?) “দুটি প্রাণের সাধনা, সে কথা জানিনি আগে” (জানসোস ভালা হইসে, আঁটি বান্ধ গিয়া এখন :@ ) ঢাবি’তে পরীক্ষা দিই’ই নাই, এটা অনেক’কেই বলি নাই ।

সরি । মাজবুরি’টা বুইঝো ... এত কিছুর মধ্যে কিছুটা ভালো খবর, মেরিন একাডেমী থেকে চিঠি আসছে । আগামী মাসের ১৫ তারিখ হবে নেক্সট স্টেপ টুওয়ার্ডস মাই ফিউচার । ওইদিন ‘ঘুম পরী’ আমাকে আর কোন ঝামেলায় ফেলবে না আশা করি । ১৯ বছরের রিলেশন আমাদের, আর কত জালাইবা মোরে ওগো সোনা ?’ লাস্টে একটা জোক ।

একটু এডাল্ট টাইপ মে বি । পুরান চাল নাকি ভাতে বাড়ে ! একটা পোলা আর ইংরেজি লেটার Q এর মাঝে মিল কি বলতে পারো? দুইটাই মূল্যহীন বা জিরো(0) হয়ে যায়, নিচের ওইটা ছাড়া । : এখন শেষ করতেই হচ্ছে । রাজশাহী যাচ্ছি ঘুরতে । প্যাকিং শ্যাকিং করতে হৈবো ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.