আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঘুরে আসুন সাগরদ্বীপ সোনাদিয়া ও মহেশখালী

কাল রাতে - ফাল্গুনের রাতের আঁধারে যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ মরিবার হল তার সাধ । দূর থেকে দেখতে প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনের মতো। কিন্তু কাছে গেলেই বোঝা যাবে রূপটাই আলাদা। নাম তার সোনাদিয়া। পাহাড়, সবুজঘন প্যারাবন পেছনে ফেলে বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে যেতে হয় মুক্তার দ্বীপ এই সোনাদিয়ায়।

আবাসিক হোটেল-মোটেল, রেস্তোরাঁ গড়ে ওঠেনি বলে সোনাদিয়া এখনো পর্যটকদের তেমন পরিচিতি পায়নি। কিন্তু যাঁরা একবার এই দ্বীপের ছোঁয়া পেয়েছেন, তাঁদের বারবার ছুটে যেতে ইচ্ছে করবে ওই দ্বীপে। কক্সবাজার শহর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত সোনাদিয়া মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ড। প্রায় ছয় হাজার জনসংখ্যা অধ্যুষিত দ্বীপের আয়তন দুই বর্গকিলোমিটার। উত্তর-দক্ষিণে লম্বা প্রায় পাঁচ কিলোমিটার।

এই দ্বীপেই স্থাপিত হতে যাচ্ছে দেশের অন্যতম গভীর সমুদ্রবন্দর। ঈদের ছুটিতে যে কেউ কক্সবাজারে বেড়াতে এলে মনটাকে একটু ফুরফুরে করে তোলার জন্য স্পিডবোট নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন সোনাদিয়ায়। শহরের কস্তুরাঘাট থেকে আট-নয়জন মিলে একটি স্পিডবোট ভাড়া করে মাত্র ১০ মিনিটে পৌঁছানো যাবে দ্বীপে। দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় থাকলে ঘুরে আসা যায় পুরো দ্বীপ। সাগরের বুক চিরে স্পিডবোট ছুটে চলার সময় গভীর সাগর থেকে উপকূলের দিকে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ ধরার ট্রলার ছুটে আসার দৃশ্য নজরে পড়বে।

দেখা যাবে সাগরে জেলেদের মাছ ধরার দুর্লভ দৃশ্য। পানির ওপরে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি বাটা মাছ ওড়ার অপরূপ দৃশ্য সোনাদিয়া চ্যানেল ছাড়া অন্য কোথাও দেখা যায় না। মহেশখালী থেকে সোনাদিয়াকে আলাদা করে রেখেছে একটি নদী ‘বহদ্দারকাটা’। ট্রলার-মালিকদের স্থানীয় ভাষায় বলা হয় ‘বহদ্দার’। জনশ্রুতি আছে, কোনো এক সময় এই নদীতে জলদস্যুরা এক বহদ্দারকে কেটে হত্যা করেছিল।

সেই থেকে নদীর নাম বহদ্দারকাটা। এই নদীর দুই তীরে সৃজিত সবুজ প্যারাবনের সারি যেন মন ছুঁয়ে যায়। মহেশখালীর কুতুবজোম থেকে সোনাদিয়া যাতায়াতের জন্য নদীর ওপর তৈরি দৃষ্টিনন্দন সেতুর ওপর উঠে দ্বীপের সবুজ দৃশ্য দেখে মনটা জুড়িয়ে যায়। এই নদীতে মাছ ধরে বেঁচে আছেন এলাকার শত শত মানুষ। সোনাদিয়ার নরম বালুচরে দাঁড়িয়ে দেখা যায় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য।

সারা দিন সৈকতের বালুচর ভরপুর থাকে রাজকাঁকড়ার সমাহারে। রকমারি পরিযায়ী পাখি তো আছেই। তরতাজা মাছ বালুচরে কেটেকুটে শুঁটকি করার দৃশ্য দেখা, কম দামে লাক্ষ্যা, কোরাল, মাইট্যা, লইট্যা শুঁটকি কেনার সুযোগ তো থাকছেই। জীবনে যাঁরা ডলফিনের লাফালাফি দেখেননি, তাঁরা একবার এই সোনাদিয়া সাগর চ্যানেল ভ্রমণ করে দেখতে পারেন। যেতে পারেন মহেশখালীও ইচ্ছে করলে সোনাদিয়া থেকে স্পিডবোটে করে ঘুরে আসতে পারেন মহেশখালী।

মহেশখালী চ্যানেলের তীরে মৈনাক পর্বতের ২৮৮ ফুট ওপরে রয়েছে আদিনাথ মন্দির। একটু দূরে পাহাড়চূড়ায় রাখাইন সম্প্রদায়ের জাদি। রয়েছে গৌতম বুদ্ধের মূর্তি। পাহাড়ের নিচে রাখাইন পল্লি ঘুরে বিচিত্র ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন। রাখাইন তরুণীদের কাপড় তৈরি, বিক্রি, কুটির শিল্প, আচার তৈরির প্রক্রিয়া দেখে আনন্দ পাবেন।

ইচ্ছে করলে মহেশখালীর বিখ্যাত মিষ্টি পানের একটা খিলি খেয়ে মুখটাও লাল করে নিতে পারেন। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।