*****
আমার গুরুজনেরা, আমার জন্যে নিত্য অনুসরণীয়। আমি অনুসরণ করি জন্যেই, ওনাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞানগুলো আমি পাই। ত্যাগের মহিমার কথাও জেনেছি আমি তাদেরই কাছ থেকে।
ওনারাই শিখিয়েছেন যেকোনো ত্যাগ যথাস্থানেই করতে হয়, তবেই ত্যাগের মহিমা জানা যায়।
শুধু শিক্ষাই নয়, বিভিন্ন প্রসঙ্গে আমাকে বাস্তব প্রশিক্ষণও দিয়েছেন, ওনারা কার্পণ্য করেননি।
এই যেমন, সেদিনের ভোগের পরিমান বাড়াবাড়ি রকমের বেশি ছিল। আমার গুরুরা কোনো কিছুতেই যেন শান্তি পাচ্ছিলেন না, চোখেমুখে হাবভাবে অস্বস্তি নিয়ে পরস্পরের উপর দোষ চাপাচ্ছিলেন, আর আমি কেবল ভক্ত শিষ্য নীরবে দেখেই যাচ্ছিলাম।
যথাস্থানে পরিত্যাগ করে করে একে একে ফিরে এসে এসে ওনারা যখন আবারও গুরুর আসনগুলোতে বসলেন,--কী আর বলবো! আমার দারুণ সে অভিজ্ঞতার কথা অন্যকে বলে বোঝানো যাবে না। সম্ভবত, সেই থেকে ফ্লাশের বোতাম টেপার কাজটা আমার দায়িত্বের মধ্যে ঢুকে গিয়েছিল।
পরিত্যাজ্যকে পরিত্যাগ করে আসা গুরুবৃন্দের সে কী দারুণ আনন্দোজ্জল দেহভাষা! ওনাদের প্রশান্ত দেহভঙ্গি যারা দেখেছেন, কেবল তারাই বুঝেছেন।
সেদিন না-দেখলে, ‘ভোগে নয়, বরং ত্যাগেই শান্তি’-এ আমি কখনোই বুঝতাম না।
গুরুবৃন্দের অনুসরণে ত্যাগ করতে চেয়ে যথাস্থানে গিয়ে দেখি, --এ কী! নানাবিধ বর্ণের বর্ণনায় ওনাদের বর্জ্যগুলো দৃশ্যমান, বিবিধ বিকৃতি নিয়ে ভেসে আছে কমোডের জলে! --ওগুলোর উপর ত্যাগ করলে গুরুবৃন্দকে নিচে নামানো হবে ভেবে, ঐ অবস্থায় ত্যাগানন্দ উপভোগ করা সম্ভব হলো না আমার। ত্যাগের প্রতিজ্ঞাটি আপাত-অবাস্তবায়িত রেখেই, ফ্লাশের বোতামটা চেপে দিয়ে ফিরে গিয়ে আবারও বসলাম আমি শিষ্যের আসনে।
আজও যেন এখানে বর্জ্যগুলোর অদৃশ্যমান হবার সেই শব্দই শোনা যাচ্ছে। ‘ঘড় ঘড় ঘড়ঘড় শোঁ শোঁ ঘড় ঘড় চোঁ-ওঁ-শ্--’-মিশ্ররাগের সেই আওয়াজ কখন যে থামে, আর থামলেই ত্যাগানন্দ উপভোগ করবো, এখানেও আমি যেন সেই সুযোগেরই প্রতীক্ষায় ..
রঙ্গপুর : ১৯/১০/২০১১
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।