Sometimes distance is required to feel the person more intensely.. গল্পটি অনেক আগে ইংরেজীতে পড়েছিলাম।
ইদানীং গল্পটি সম্পর্কে বিভিন্ন ভারতীয় এবং পাকিস্তানি পেইজগুলোতে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। তাই গুগল এবং ইউ টিউব এর সাহায্যে বেশ কয়েকটি ওয়েব সাইট থেকে তথ্য নিয়ে লেখাটি অনুবাদ করার চেষ্টা করলাম।
গল্পটি একটু বড় তাই দয়া করে মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
কথা দিলাম আপনার কষ্ট বিফলে যাবে না।
__________________________________________________
একজন দর্শণ বিষয়ের ইহুদি প্রফেসর গিয়েছেন
“সৃষ্টিকর্তাকে নিয়ে বিজ্ঞানের যত সমস্যা” - এই বিষয়ে আলোচনা করতে।
প্রফেসর এক ছাত্রকে জিজ্ঞেস করলেন…
প্রফেসরঃ তুমি কি সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস কর?
ছাত্রঃ জ্বি, অবশ্যই স্যার।
প্রফেসরঃ আচ্ছা, সৃষ্টিকর্তা কি ভাল?
ছাত্রঃ অবশ্যই!!
প্রফেসরঃ সকল ক্ষমতার উৎসই কি সৃষ্টিকর্তা?
ছাত্রঃ অবশ্যই…
প্রফেসরঃ আমার ভাই ক্যান্সার হয়ে মারা গেছেন।
সে বাঁচার জন্য নিজে সৃষ্টিকর্তার নিকট অনেক প্রার্থনা করেছে।
অনেকেই তাকে বাঁচানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছে।
কিন্তু সৃষ্টিকর্তা কোন চেষ্টা/সাহায্যই করেননি।
তহলে কিভাবে সৃষ্টিকর্তা ভাল হন?
ছাত্রটি নিশ্চুপ…
প্রফেসরঃ আমি জানি তোমার কাছে কোন সঠিক উত্তর নেই।
তারপরেও আবার জিজ্ঞস করছি, সৃষ্টিকর্তা কি ভাল?
ছাত্রঃ জ্বি, অবশ্যই সৃষ্টিকর্তা ভাল।
প্রফেসরঃ আচ্ছা, শয়তানও কি তাহলে ভাল?
ছাত্রঃ না।
প্রফেসরঃ শয়তানের সৃষ্টিকর্তা কে?
ছাত্রঃ সৃষ্টিকর্তা নিজেই।
প্রফেসরঃ তাহলে বলো, শয়তান কি এই পৃথিবীতে আছে?
ছাত্রঃ হ্যাঁ।
প্রফেসরঃ শয়তান তো সর্বত্রই এবং সৃষ্টিকর্তা সবকিছুই ঠিকভাবে চালাচ্ছেন। তাই না?
ছাত্রঃ হ্যাঁ।
প্রফেসরঃ সবকিছুই তো সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি করেছেন।
আচ্ছা, শয়তানকে কে যেনো সৃষ্টি করেছিল?
ছাত্রটি আবার নিশ্চুপ…
প্রফেসরঃ অসুস্থতা, ব্যভিচার, ঘৃণা, কদর্যতা, মৃত্যু, পাপ -এইসব ভয়ংকর জিনিস কে সৃষ্টি করেছেন??
ছাত্রটি আবারও নিশ্চুপ…
প্রফেসরঃ বিজ্ঞান বলে,
আমাদের কোন কিছু স্বীকার করে তা মেনে নেওয়ার জন্য নিজস্ব ৫টি ইন্দ্রিয় রয়েছে।
আচ্ছা, সৃষ্টিকর্তাকে কি কখনো
দেখেছো/সৃষ্টিকর্তার কন্ঠস্বর শুনেছো/ সৃষ্টিকর্তার স্বাদ নিয়েছো/ শরীরের চামড়া দিয়ে অনুভব করেছো/ সৃষ্টিকর্তার ঘ্রান পেয়েছো?
ছাত্রঃ না স্যার।
প্রফেসরঃ তারপরেও তুমি সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস কর?
ছাত্রঃ হ্যাঁ।
প্রফেসরঃ গবেষণা, পরীক্ষা, প্রমাণযোগ্য প্রোটোকল অনুযায়ী বিজ্ঞান বলে, তোমার সৃষ্টিকর্তার কোন অস্তিত্ব নেই।
এখন তুমি কি বলবে?
ছাত্রঃ আমার বিশ্বাস সৃষ্টিকর্তা আছেন।
প্রফেসরঃ সেটাই তো সমস্যা!
বিজ্ঞান বিশ্বাসে বিশ্বাস করে না।
বিজ্ঞান প্রমানে বিশ্বাসী।
ছাত্রঃ আচ্ছা, স্যার। “তাপ” বলে কি কোন কিছু আছে?
প্রফেসরঃ হ্যাঁ আছে।
ছাত্রঃ তাহলে “ঠান্ডা” বলে কি কোন কিছু আছে?
প্রফেসরঃ হ্যাঁ অবশ্যই আছে।
ছাত্রঃ না স্যার, নেই!
(শেনীকক্ষে স্তব্ধতা নেমে এলো)
ছাত্রটি এবার বললো,
ছাত্রঃ স্যার, বিজ্ঞান বলে…
আপনি অনেক ধরনের তাপ পেতে পারেন।
উচ্চতাপ, নিম্নতাপ ইত্যদি।
কিন্তু কখনোই ঠান্ডা নামক কোন কিছুই পাবেন না!
আমরা শূন্য ডিগ্রীর নিচে ৪৫৮ ডিগ্রী পর্যন্তই তাপ গননা করতে পারি … এরপর আর তাপ গননা অসম্ভব।
কিন্তু ঠাণ্ডা বলতে কোন কিছুই নেই,
ঠাণ্ডা হলো একটি শব্দমাত্র যা তাপের অনুপস্থিতিকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ নিম্ন তাপমাত্রা বোঝাতে আমরা “ঠাণ্ডা” শব্দটি ব্যবহার করে থাকি। অপরদিকে “তাপ” একটি শক্তির উৎস।
সুতারং ঠান্ডা তাপ এর বিপরীত নয়।
ঠান্ডা শুধুমাত্র তাপ এর অনুপস্থিতি মাত্র।
ছাত্রঃ স্যার, অন্ধকার বলে কি কোন কিছুর অস্তিত্ব আছে?
প্রফেসরঃ হ্যাঁ অবশ্যই আছে। এর দৃঢ় প্রমান হলো রাত!
ছাত্রঃ আপনি আবারও ভুল করছেন স্যার।
বিজ্ঞানের ভাষায়,
আলোর অনুপস্থিতিকেই অন্ধকার বলা হয়।
আলো একটি শক্তির উৎস কিন্তু অন্ধকার কোন শক্তির উৎস নয়।
আলোকে পরিমাপ করতে পারবেন কিন্তু কখনো কি অন্ধকার কে পরিমাপ করতে পারবেন?
আলোর তীব্রতা বাড়াতে কমাতে পারবেন।
কিন্তু অন্ধকারের তীব্রতা বাড়াতে কমাতে পারবেন কি?
যার কোন অস্তিত্ব নেই তাকে কিভাবে পরিমাপ করবেন?
প্রফেসরঃ তুমি কি বলতে চাচ্ছ?
ছাত্রঃ আমি বলতে চাই আপনার আপনার দার্শনিক ত্বত্ত ভ্রান্ত।
প্রফেসরঃ প্রমান করো।
ছাত্রঃ স্যার,
আপনার তর্কের ত্বত্ত সমূহে দ্বৈত প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
জীবন হলো শক্তির উৎস। মৃত্যু কিন্তু কোন শক্তির উৎস নয়।
জীবনের অনুপস্থিতিকেই মৃত্যু বলা হয়।
জীবন এবং মৃত্যু নিয়ে আপনি যে কথাগুলো বললেন…
তা হয়তো বিজ্ঞান দ্বারা বিশ্লেষন সম্ভব কিন্তু প্রকৃতার্থে জীবন এবং মৃত্যু সম্পর্কিত সকল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সৃষ্টিকর্তার, আমাদের নয়।
বিজ্ঞান ত্বত্ত প্রদানে সক্ষম কিন্তু বিজ্ঞানের নিজের কোন প্রকার অনুভূতি নেই।
আমাদের মস্তিষ্কের এই ক্ষুদ্র পরিসরে সৃষ্টিকর্তার মতো এত বিশাল অনুভূতির অনেক কিছুই আমাদের বোধগম্যের বাইরে।
কাউকে কি কখনো শুনেছেন বৈজ্ঞানিক উপায়ে ধর্ম চর্চা করতে?
এখন বলুন,
আপনি বিবর্তনবাদে বিশ্বসী?
অর্থাৎ ডারউইনের “বানর থেকে মানুষে বিবর্তন” এই ত্বত্তে বিশ্বাসী?
প্রফেসরঃ প্রাকৃতিক অভিব্যক্তিমূলক বিচারে বিশ্বাসী!
ছাত্রঃ আপনি কি বিবর্তন নিজের চোখে দেখেছেন?
প্রফেসর মাথা নাড়ল এবং বুঝতে পারলো যে প্রসঙ্গটি কোথায় যাচ্ছে...
ছাত্রঃ যেহেতু কেউই এই বিবর্তন নিজের চোখে দেখেনি এবং
বিজ্ঞান নিজেও এটি প্রমানে ব্যর্থ।
তার মানে কি এই নয় যে,
আপনি আপনার মনগড়া ত্বত্ত প্রমানে মত্ত?
আপনার পেশা কি শিক্ষকতা নাকি নিজ ত্বত্তীয় ধর্ম প্রচার?
আচ্ছা, এই শ্রেনীকক্ষে এমন কেউ কি আছো যে কখনো মাননীয় প্রফেসরের “মস্তিষ্ক” কখনো দেখেছো/মস্তিষ্কের কন্ঠস্বর শুনেছো/ মস্তিষ্কের স্বাদ নিয়েছো/শরীরের চামড়া দিয়ে প্রফেসরের “মস্তিষ্ক” অনুভব করেছো/মস্তিষ্কের ঘ্রান পেয়েছো?
(শ্রেনীকক্ষে হাসির রোল পড়ে গেল)
ছাত্রটি এবার বললো,
মাননীয় প্রফেসর কিছু মনে করবেন না।
গবেষণা, পরীক্ষা, প্রমাণযোগ্য প্রোটোকল অনুযায়ী বিজ্ঞান বলে, আপনার মস্তিষ্কের কোন অস্তিত্ব নেই।
সতরাং আপনার ত্বত্ত কিভাবে সত্য হয়?
আমরা আপনার কথায় আস্থা কিভাবে রাখি?
প্রফেসরঃ আস্থা রাখার জন্য বিশ্বাস থাকাও প্রয়োজন!
ছাত্রঃ এটা প্রথমেই বলতে চাচ্ছিলাম স্যার!!
সৃষ্টিকর্তার সাথে আমাদের সম্পর্কের ভিত্তি হলো “বিশ্বাস”।
কোন বিজ্ঞান/ত্বত্ত/প্রমান দিয়ে এই সম্পর্ক নিরূপন করা অসম্ভব।
__________________________________________________
যেটা বলছিলাম,
বিভিন্ন ভারতীয় পেইজগুলোতে বলা হচ্ছে এইটি একটি সত্য ঘটনা এবং ছাত্রটি হলো সাবেক ভারতীয় প্রেসিডেন্ট এ.জে.পি আবুল কালাম। এবং পাকিস্তানি পেইজগুলোতে বলা হচ্ছে ছাত্রটি হলো এলবার্ট আইনস্টাইন
এখানে দেখুন
এই ভিডিও লিঙ্কটিতে এই ঘটনা অবলম্বনে এলবার্ট আইনস্টাইন কে নিয়ে একটি ভিডিও রয়েছে।
ইন্টারনেট সার্চ করে দেখলাম বিভিন্নভাবে এই একই গল্প উপস্থাপন করা হয়েছে।
ক্লিক
এই লিঙ্কটিতে “Malice Of Absence” শিরোনামে গল্পটি রয়েছে।
যেখানে বলা হয়েছে এলবার্ট আইনস্টাইন সেই ছাত্রটি নন।
ক্লিক প্লিজ
এই লিঙ্কটিতে “Science Vs. Christianity” শিরোনামে গল্পটি রয়েছে।
ক্লিক
এই লিঙ্কটিতে
“Why Science fails to explain God.
A dialog between a Muslim student and a Philosophy professor” শিরোনামে গল্পটি রয়েছে।
ইন্টারনেট সার্চ করে যেটা বুঝলাম,
এইটি একটি মনস্তাত্বিক গল্প।
তবে মানতেই হবে গল্পটি অসাধারন।
বেশ কয়েকটি জায়গায় আইনস্টাইনের নাম দেখতে পেলাম কিন্তু এর সত্যতা পুরোপুরি পাইনি।
সাবেক ভারতীয় প্রেসিডেন্ট এ.জে.পি আবুল কালাম এ গল্পটির সাথে মোটেও সম্পৃক্ত নন।
উনারা দুজনই এত বড় মাপের মানুষ যে উনাদেরকে এর সাথে মিথ্যেভাবে জড়ানো উনাদের অপমান করা ছাড়া আর কিছুই নয়।
কি বুঝলেন? ধর্ম নাকি বিজ্ঞান?
এখানে ধর্মের ব্যাপারে একটি যৌক্তিক গল্প উপস্থাপন ও সেই সাথে একটি মিথ্যার অবসান ঘটানোর চেষ্টা করা হয়েছে মাত্র ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।