আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রকৃত আহলে সুন্নাত কারা?

আসুন আমরা ২টি ভারী বস্তু আল্লাহর কুরান ও রাসুলের(সাঃ) পরিবারকে(আঃ) অনুসরন করি। মূল : ডঃ মুহাম্মদ তিজানী আল সামাভী অনুবাদ : ইরশাদ আহম্মেদ ভূমিকা আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন ওয়াস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলা আশরাফিল আম্বিয়ায়ে ওয়াল মুরসালীন সৈয়্যেদানা ওয়া মাওলানা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আলেহিত্ তৈয়্যেবীনাত্ তাবহেরীন ওয়া বাদাহু মেদাদাল ওলামাউ আফযালু ইন্দাল্লাহি মিন দেমাউশ শুহাদা। “ওলামাদের (কলমের) কালি আল্লাহর নিকট শহীদদের রক্তের চেয়েও উত্তম”। প্রত্যেক আলেম ও প্রত্যেক লেখকের দায়ীত্ব ও কর্তব্য হল, তারা যেন মানুষের জন্য এমন বিষয় লেখেন যা তাদের হিদায়েত করার যোগ্যতা রাখে এবং তাদের সংশোধন করতে পারে, তাদেরকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোয় নিয়ে আসতে পারে এবং সঙ্গবদ্ধ করতে পারে। কেননা আল্লাহর পথে শাহাদাত বরণকারী অর্থাৎ আদল (ন্যায়) প্রতিষ্ঠা করার আহ্বানে প্রাণ উৎসর্গকারীর কুরবানী ও শাহাদাত দ্বারা সে ব্যক্তিই প্রভাবিত হয় যে সেই মুহুর্তে উপস্থিত ছিল।

কিন্তু মানুষকে শিক্ষা দানকারী এবং তাদের জন্য লেখনী উপস্থাপনকারীগণ দ্বারা জাতির যুবকশ্রেণী এবং অনেক অধ্যয়নকারীও প্রভাবিত হয়ে থাকেন। আর আগামী প্রজন্মের জন্য তার বই হিদায়েতের স্তম্ভ হয়ে যায়। আবার প্রত্যেক জিনিস খরচ করলে কমে যায়, কিন্তু জ্ঞান খরচ করলে আরো বৃদ্ধি পায়। সুতরাং খরচ করে তাতে বৃদ্ধি কর। আবার রাসুলে আকরাম (সা.)-এর বাণি আছে যে : “লাইঁ ইয়াহদিল্লাহে বিকা রুজুলাওঁ ওয়াহেদান খায়রুল্লাকা মিম্মা তুলেয়াতুশ শামসু আও খায়রুল্লাকা মিনাদ দুনিয়া ওয়ামা ফিহা”।

অর্থ: “তোমার মাধ্যমে আল্লাহ যদি একজনকে হিদায়েত করে দেন, তাহলে তা তোমার জন্য সেই সকল জিনিসের চেয়েও উত্তম, যেগুলির প্রতি সূর্য আলো ছড়িয়েছে অথবা দুনিয়া ও তার মধ্যে যাকিছু আছে, তার সবকিছুর চেয়েও উত্তম”। শতাধিককাল ব্যাপী কতই না লেখক মন্ডলী মৃত্যুর কোলে নিদ্রাগেছেন, তাদের হাড়গোড়ও পঁচে গেছে। কিন্তু তাদের চিন্তা-চেতনা ও জ্ঞান-বিজ্ঞান বই আকারে মওজুদ আছে। আর সেই বই বংশের পর বংশ অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি শত শতবার মুদ্রণের অলংকার দ্বারা সজ্জিত হয়েছে এবং মানুষ তাদ্বারা হিদায়েত অর্জন করে থাকে। যেরূপ শহীদ তার রবের নিকট জীবিত আছে ও রিযিক প্রাপ্ত হয়, সেরূপ সেই আলেমও আল্লাহর নিকট এবং মানুষের মাঝে জীবিত আছে, যে মানুষের জন্য হিদায়েতের কারণ ছিল।

মানুষ তার জন্য ইস্তিগফার করে এবং তাকে উত্তমরূপে স্মরণ করে। কিন্তু আমি ওলামাদের অন্তর্ভূক্ত নই, আর না নিজের জন্য সেটির দাবী জানাই। আমিত্ব থেকে আমি আল্লাহর পানাহ চাই। আমি হলাম ওলামা ও অনুসন্ধানকারীদের খাদেম মাত্র। তাদের পথ সেভাবেই অনুসরণ করি যেভাবে ভৃত্য তার মুনিবকে অনুসরণ করে থাকে।

আল্লাহ আমাকে “সুম্মা ইহতেদায়তু” (বাংলায়- আমি সত্য পেয়েলাম) লেখার তাওফিক দান করেছেন, আর পাঠকমন্ডলী আমাকে সাহস যুগিয়েছেন, তারপর দ্বিতীয় বই “লাকুনা মায়াস্ সাদেকীন” (বাংলায়- সত্যবাদীদের সঙ্গী হয়েগেলাম) লিখেছি এবং সেটিও গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে, আর ব্যাপারটি আমাকে আরো আলোচনা ও অনুসন্ধানের প্রতি উৎসাহিত করেছে। তখন আমি ইসলাম এবং ইসলামের নবী (সা.)-এর প্রতিরক্ষা এবং তাঁর প্রতি আরোপিত অপবাদ, বাস্তবতার প্রকাশ এবং তাঁর আহলে বাইতগণের বিরুদ্ধে রচিত ষড়যন্ত্রের রহস্য উন্মোচন করার জন্য তৃতীয় বই “ফাস আলু আহলুয যিকির” (বাংলায়- আহলে যিকিরকে জিজ্ঞাসা করুন) লিখেছি। আরব বিশ্ব ও ইসলামী দেশসমূহ ছাড়াও পৃথিবীর সব জায়গা থেকেই আমার কাছে সহানুভূতিপূর্ণ এবং ভালবাসাযুক্ত পত্র এসেছে। অনুরূপ পৃথিবীর আনাচে-কানাচে আয়োজিত বিভিন্ন গবেষনামুলক সম্মেলনগুলিতে আমাকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। বিধায় এ ব্যাপারে আমি যুক্তরাষ্ট্র, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান, যুক্তরাজ্য, হিন্দুস্তান, পাকিস্তান, কেনিয়া, পশ্চিম আফ্রিকা ও সুইডে-ও ভ্রমণ করেছি।

সবজায়গাতেই আলোকিত চিন্তা-চেতনার মানুষ এবং মেধাবী ও আধুনিক চিন্তা-চেতনার যুবকদের সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়েছে। আমি তাদের মাঝে আরো অধিক জানার তৃষ্ণা অনুভব করলাম। তারা প্রশ্ন করত যে, এ ছাড়াও কি আরো কিছু আছে? কোন নুতন বই কি লিখেছেন? আমি এই সৌভাগ্যের জন্য আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করলাম এবং আরো তাওফিক ও অনুগ্রহর জন্য দোয়া করলাম এবং অত্র বই লেখার বিষয়ে সাহায্য প্রার্থণা করলাম, যা আমি মুসলমান পাঠকমন্ডলীর সম্মুখে উপস্থাপন করছি। যে সমস্ত সত্য-সন্ধানী ব্যক্তিবর্গ প্রথম তিনটি বই অধ্যয়ন করেছেন, আশা করি তারা যদি অত্র বইটি অধ্যয়ন করেন তাহলে তারা অবগত হবেন যে, আহলে বাইতের অনুসারীদের ‘ইমামিয়া ফেরকা’-ই হল নাজাতপ্রাপ্ত ফেরকা এবং আহলে ‘বাইতের অনুসারীগণই’ হলেন ‘প্রকৃত আহলে সুন্নাত’। এখানে ‘সুন্নাত’ দ্বারা আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে সুন্নাতে হাকীকী এবং সুন্নাতে মুহাম্মদী, যা নবী (সা.) আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অহি অনুসারে উপস্থাপন করেছিলেন।

নবী (সা.) তো কেবল তাই বলতেন যা তাঁর প্রতি অহি করা হত। শীঘ্রই আমি পাঠকমন্ডলীর সম্মুখে পরিভাষার সেই বিশেষ রূপ উপস্থাপন করব, যার প্রতি আহলে বাইতের অনুসারী-নেতৃবৃন্দ এবং তাঁদের বিপক্ষীয় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের মাঝে মতৈক্য আছে। বাস্তবে ইহা তাদের আত্মগর্বের দৃষ্টিতে সুন্নাত, অথচ আল্লাহ এ ব্যাপারে কোন দলিল নাযিল করেননি এবং রাসুল (সা.)-ও এটি থেকে মুক্ত। কতই না মিথ্যা কথা রাসুল (সা.)-এর সাথে সম্পৃক্ত করে দেয়া হয়েছে। আবার তাঁর অনেক কথা ও কর্ম এবং হাদীসসমূহকে এই দলিলের ভিত্তিতে পৌছাতে দেয়া হয়নি যে, “যেন আল্লাহর কিতাব এবং নবীর হাদীস সংমিশ্রিত না হয়ে যায়”।

যদিও উক্ত দলিলে কোন প্রাণ ও শক্তি নেই, ঠিক মাকড়সার জালের মতই। অনেক হাদীস আবর্জনার ঝুড়িতে ফেলে দেয়া হয়েছে এবং সেগুলোকে গুরুত্ব দেয়া হয় না। আবার কতই না মনগড়া বিষয়াবলী নবী (সা.)-এর পরবর্তীতে দ্বীনের আহ্কাম হয়েগেছ এবং তাঁর সাথেই সম্পৃক্ত হয়েগেছে। আবার এমন কত মানুষ, ভদ্রলোক সেজে বসেছে, যাদের ঘৃনা-বিদ্বেষ ও ভূমিকা আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন ওয়াস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলা আশরাফিল আম্বিয়ায়ে ওয়াল মুরসালীন সৈয়্যেদানা ওয়া মাওলানা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আলেহিত্ তৈয়্যেবীনাত্ তাবহেরীন ওয়া বাদাহু মেদাদাল ওলামাউ আফযালু ইন্দাল্লাহি মিন দেমাউশ শুহাদা। “ওলামাদের (কলমের) কালি আল্লাহর নিকট শহীদদের রক্তের চেয়েও উত্তম”।

প্রত্যেক আলেম ও প্রত্যেক লেখকের দায়ীত্ব ও কর্তব্য হল, তারা যেন মানুষের জন্য এমন বিষয় লেখেন যা তাদের হিদায়েত করার যোগ্যতা রাখে এবং তাদের সংশোধন করতে পারে, তাদেরকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোয় নিয়ে আসতে পারে এবং সঙ্গবদ্ধ করতে পারে। কেননা আল্লাহর পথে শাহাদাত বরণকারী অর্থাৎ আদল (ন্যায়) প্রতিষ্ঠা করার আহ্বানে প্রাণ উৎসর্গকারীর কুরবানী ও শাহাদাত দ্বারা সে ব্যক্তিই প্রভাবিত হয় যে সেই মুহুর্তে উপস্থিত ছিল। কিন্তু মানুষকে শিক্ষা দানকারী এবং তাদের জন্য লেখনী উপস্থাপনকারীগণ দ্বারা জাতির যুবকশ্রেণী এবং অনেক অধ্যয়নকারীও প্রভাবিত হয়ে থাকেন। আর আগামী প্রজন্মের জন্য তার বই হিদায়েতের স্তম্ভ হয়ে যায়। আবার প্রত্যেক জিনিস খরচ করলে কমে যায়, কিন্তু জ্ঞান খরচ করলে আরো বৃদ্ধি পায়।

সুতরাং খরচ করে তাতে বৃদ্ধি কর। আবার রাসুলে আকরাম (সা.)-এর বাণি আছে যে : “লাইঁ ইয়াহদিল্লাহে বিকা রুজুলাওঁ ওয়াহেদান খায়রুল্লাকা মিম্মা তুলেয়াতুশ শামসু আও খায়রুল্লাকা মিনাদ দুনিয়া ওয়ামা ফিহা”। অর্থ: “তোমার মাধ্যমে আল্লাহ যদি একজনকে হিদায়েত করে দেন, তাহলে তা তোমার জন্য সেই সকল জিনিসের চেয়েও উত্তম, যেগুলির প্রতি সূর্য আলো ছড়িয়েছে অথবা দুনিয়া ও তার মধ্যে যাকিছু আছে, তার সবকিছুর চেয়েও উত্তম”। শতাধিককাল ব্যাপী কতই না লেখক মন্ডলী মৃত্যুর কোলে নিদ্রাগেছেন, তাদের হাড়গোড়ও পঁচে গেছে। কিন্তু তাদের চিন্তা-চেতনা ও জ্ঞান-বিজ্ঞান বই আকারে মওজুদ আছে।

আর সেই বই বংশের পর বংশ অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি শত শতবার মুদ্রণের অলংকার দ্বারা সজ্জিত হয়েছে এবং মানুষ তাদ্বারা হিদায়েত অর্জন করে থাকে। যেরূপ শহীদ তার রবের নিকট জীবিত আছে ও রিযিক প্রাপ্ত হয়, সেরূপ সেই আলেমও আল্লাহর নিকট এবং মানুষের মাঝে জীবিত আছে, যে মানুষের জন্য হিদায়েতের কারণ ছিল। মানুষ তার জন্য ইস্তিগফার করে এবং তাকে উত্তমরূপে স্মরণ করে। কিন্তু আমি ওলামাদের অন্তর্ভূক্ত নই, আর না নিজের জন্য সেটির দাবী জানাই। আমিত্ব থেকে আমি আল্লাহর পানাহ চাই।

আমি হলাম ওলামা ও অনুসন্ধানকারীদের খাদেম মাত্র। তাদের পথ সেভাবেই অনুসরণ করি যেভাবে ভৃত্য তার মুনিবকে অনুসরণ করে থাকে। আল্লাহ আমাকে “সুম্মা ইহতেদায়তু” (বাংলায়- আমি সত্য পেয়েলাম) লেখার তাওফিক দান করেছেন, আর পাঠকমন্ডলী আমাকে সাহস যুগিয়েছেন, তারপর দ্বিতীয় বই “লাকুনা মায়াস্ সাদেকীন” (বাংলায়- সত্যবাদীদের সঙ্গী হয়েগেলাম) লিখেছি এবং সেটিও গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে, আর ব্যাপারটি আমাকে আরো আলোচনা ও অনুসন্ধানের প্রতি উৎসাহিত করেছে। তখন আমি ইসলাম এবং ইসলামের নবী (সা.)-এর প্রতিরক্ষা এবং তাঁর প্রতি আরোপিত অপবাদ, বাস্তবতার প্রকাশ এবং তাঁর আহলে বাইতগণের বিরুদ্ধে রচিত ষড়যন্ত্রের রহস্য উন্মোচন করার জন্য তৃতীয় বই “ফাস আলু আহলুয যিকির” (বাংলায়- আহলে যিকিরকে জিজ্ঞাসা করুন) লিখেছি। আরব বিশ্ব ও ইসলামী দেশসমূহ ছাড়াও পৃথিবীর সব জায়গা থেকেই আমার কাছে সহানুভূতিপূর্ণ এবং ভালবাসাযুক্ত পত্র এসেছে।

অনুরূপ পৃথিবীর আনাচে-কানাচে আয়োজিত বিভিন্ন গবেষনামুলক সম্মেলনগুলিতে আমাকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। বিধায় এ ব্যাপারে আমি যুক্তরাষ্ট্র, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান, যুক্তরাজ্য, হিন্দুস্তান, পাকিস্তান, কেনিয়া, পশ্চিম আফ্রিকা ও সুইডে-ও ভ্রমণ করেছি। সবজায়গাতেই আলোকিত চিন্তা-চেতনার মানুষ এবং মেধাবী ও আধুনিক চিন্তা-চেতনার যুবকদের সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়েছে। আমি তাদের মাঝে আরো অধিক জানার তৃষ্ণা অনুভব করলাম। তারা প্রশ্ন করত যে, এ ছাড়াও কি আরো কিছু আছে? কোন নুতন বই কি লিখেছেন? আমি এই সৌভাগ্যের জন্য আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করলাম এবং আরো তাওফিক ও অনুগ্রহর জন্য দোয়া করলাম এবং অত্র বই লেখার বিষয়ে সাহায্য প্রার্থণা করলাম, যা আমি মুসলমান পাঠকমন্ডলীর সম্মুখে উপস্থাপন করছি।

যে সমস্ত সত্য-সন্ধানী ব্যক্তিবর্গ প্রথম তিনটি বই অধ্যয়ন করেছেন, আশা করি তারা যদি অত্র বইটি অধ্যয়ন করেন তাহলে তারা অবগত হবেন যে, আহলে বাইতের অনুসারীদের ‘ইমামিয়া ফেরকা’-ই হল নাজাতপ্রাপ্ত ফেরকা এবং আহলে ‘বাইতের অনুসারীগণই’ হলেন ‘প্রকৃত আহলে সুন্নাত’। এখানে ‘সুন্নাত’ দ্বারা আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে সুন্নাতে হাকীকী এবং সুন্নাতে মুহাম্মদী, যা নবী (সা.) আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অহি অনুসারে উপস্থাপন করেছিলেন। নবী (সা.) তো কেবল তাই বলতেন যা তাঁর প্রতি অহি করা হত। শীঘ্রই আমি পাঠকমন্ডলীর সম্মুখে পরিভাষার সেই বিশেষ রূপ উপস্থাপন করব, যার প্রতি আহলে বাইতের অনুসারী-নেতৃবৃন্দ এবং তাঁদের বিপক্ষীয় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের মাঝে মতৈক্য আছে। বাস্তবে ইহা তাদের আত্মগর্বের দৃষ্টিতে সুন্নাত, অথচ আল্লাহ এ ব্যাপারে কোন দলিল নাযিল করেননি এবং রাসুল (সা.)-ও এটি থেকে মুক্ত।

কতই না মিথ্যা কথা রাসুল (সা.)-এর সাথে সম্পৃক্ত করে দেয়া হয়েছে। আবার তাঁর অনেক কথা ও কর্ম এবং হাদীসসমূহকে এই দলিলের ভিত্তিতে পৌছাতে দেয়া হয়নি যে, “যেন আল্লাহর কিতাব এবং নবীর হাদীস সংমিশ্রিত না হয়ে যায়”। যদিও উক্ত দলিলে কোন প্রাণ ও শক্তি নেই, ঠিক মাকড়সার জালের মতই। অনেক হাদীস আবর্জনার ঝুড়িতে ফেলে দেয়া হয়েছে এবং সেগুলোকে গুরুত্ব দেয়া হয় না। আবার কতই না মনগড়া বিষয়াবলী নবী (সা.)-এর পরবর্তীতে দ্বীনের আহ্কাম হয়েগেছ এবং তাঁর সাথেই সম্পৃক্ত হয়েগেছে।

আবার এমন কত মানুষ, ভদ্রলোক সেজে বসেছে, যাদের ঘৃনা-বিদ্বেষ ও লাঞ্ছনার ব্যাপারে ইতিহাস স্বাক্ষ্য বহণ করছে। তারাই নবী (সা.)-এর পরে উম্মতের নেতা ও পথপ্রদর্শক হয়ে গেল এবং আজ তাদের ভুল-ভ্রান্ত্রির পক্ষে যতসব জটিল ব্যাখ্যা করা হয়ে থাকে। আর কতই না বড় বড় ব্যক্তিত্ব, যাদের ভদ্রতা ও উচ্চ মর্যাদার ইতিহাস স্বাক্ষ বহণ করছে, তারা আজ ঘর-কুনো হয়ে গেছেন। তাঁদের দিকে কেউ ফিরেও তাকায় না। বরং তাঁদের মহান নীতির কারণে উল্টা মানুষ তাঁদের প্রতি লানত করে এবং তাঁদেরকে কাফের বলে থাকে।

আবার এমন অনেক আকর্ষণীয় ও চমকদার নাম আছে যাদের পিছনে কুফুর ও পথভ্রষ্টতা লুকিয়ে আছে, আর এমন কত কবর আছে যেগুলির জিয়ারত করা হচ্ছে অথচ সেই মুরদাগুলো হল জাহান্নামী। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বিষয়টিকে উত্তম ব্যাখ্যাসহ উপস্থাপন করেছেন, “হে রাসুল! মানুষের মধ্যে সে ব্যক্তিও আছে, যার কথা তোমার অনেক ভাল লাগে এবং সে তার আন্তরিক ভালবাসার প্রতি আল্লাহকে স্বাক্ষী বানায়। অথচ সে শত্রুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝগড়াটে। আর (তোমার থেকে) যখন পৃথক হল, তখন দেশে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করার জন্য এদিক সেদিক দৌড় ঝাপ করতে লাগল, যেন ফসল ও পশুর সর্বনাস করে। আর আল্লাহ ফ্যাসাদকে ভাল গণ্য করেন না।

আবার যখন বলা হয় যে, আল্লাাহকে ভয় কর, তখন অহংকার তাকে গোনাহের প্রতি উসকানি দেয়। অতএব এমন মানুষের জন্য জাহান্নামই যথেষ্ট, আর সেটি হল অনেক নিকৃষ্ট ঠিকানা”। [সূত্র : আমি সম্ভবতঃ এই হিকমতের (প্রজ্ঞার) উপর আমল করে ভুল করেনি যে, “এর বিপরীতও দেখেছি”, “লাও আকসাতা লা হাব্বাতা” এবং অনুসন্ধানকারীর জন্য জরুরী হল যে, সে ঐসমস্ত বিষয়াবলীকে যা তার কাছে আছে, যথেষ্ট এবং যথার্থ যেন না ভাবে। বরং তার বিপরীত বিষয়াবলীর প্রতিও দৃষ্টিপাত করুক এবং বিবেচনা করুক, যাতে সে মুছে যাওয়া বাস্তবাতা এবং তার আবছা/অ-স্পষ্ট ছবিগুলি সম্পর্কে অবগত হয়ে যায়। কেননা উহা প্রত্যেক যুগে রাজনৈতিক আখড়ার লক্ষ্যবস্তু হয়ে আসছে।

আর এর জন্য জরুরী হচ্ছে, সে যেন কোন বিষয়ের প্রকাশ্য দিক থেকে ধোকা না খায়, আর না সেটির আধিক্য দ্বারা প্রভাবিত হয়। এ ব্যাপারে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেন : “আর যদি তুমি যারা যমীনে আছে তাদের অধিকাংশের আনুগত্য কর, তবে তারা তোমাকে আল্ল¬াহর পথ থেকে বিচ্যুত করবে। তারা শুধু ধারণারই অনুসরণ করে এবং তারা শুধু অনুমানই করে। ” [সূরা আনয়াম, আয়াত-১১৬] মানুষকে পথভ্রষ্ট করা এবং ধোকা দেয়ার জন্য বাতিল, হকের মুখোশ পরিধান করে এবং প্রায়শঃই অল্প বিবেক-বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের উপর সফলতাও অর্জন করে নেয়। কখনো হকের বিরুদ্ধে বাতিলের সাহায্য করা হয় এবং হকপন্থীদের কাছে আল্লাহর এই বাণীর প্রতি যে, “বাতিল তো মুছে যাবে এবং তা তো মুছবেই” অপেক্ষা করা এবং ধৈর্য ধারণ করা ছাড়া কোন উপায় থাকে না।

এর জন্য উত্তম উদাহরণ হল তাই যা হযরত ইয়াকুব (আ.) এবং তাঁর সস্তানদের সম্বন্ধে বয়ান হয়েছে : “আর তারা রাতের প্রথম ভাগে কাঁদতে কাঁদতে তাদের পিতার নিকট আসল। তারা বলল, ‘হে আমাদের পিতা, আমরা প্রতিযোগিতা করতে গিয়েছিলাম আর ইউসুফকে রেখে গিয়েছিলাম আমাদের মালপত্রের নিকট, অতঃপর নেকড়ে তাকে খেয়ে ফেলেছে। আর আপনি আমাদেরকে বিশ্বাস করবেন না, যদিও আমরা সত্যবাদী হই’। ” [সূরা ইউসুফ, আয়াত ১৬-১৭] যদি তারা (ইউসুফের ভ্রাতাগণ) সত্যবাদী হত, তাহলে তাদের এই কথা বলা উচিৎ ছিল যে, “আপনি আমাদের কথা বিশ্বাস করবেন না, কারণ আমরা হলাম মিথ্যাবাদী”। আমাদের সৈয়দ ও সরদার আল্লাহর নবী হযরত ইয়াকুব (আ.)-এর কাছে নিরবতা ব্যতীত অন্য কোন পথ ছিল না।

তিনি উত্তম ধৈর্যের জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করলেন। যদিও তিনি তাদের মিথ্যা থেকে অবগত ছিলেন, তবুও বললেন, “আর তারা তার জামায় মিথ্যা রক্ত লাগিয়ে নিয়ে এসেছিল। সে বলল, ‘বরং তোমাদের নফস তোমাদের জন্য একটি গল্প সাজিয়েছে। সুতরাং (আমার করণীয় হচ্ছে) সুন্দর ধৈর্য। আর তোমরা যা বর্ণনা করছ সে বিষয়ে আল্লাহই সাহায্যস্থল’।

” [সূরা ইউসুফ, আয়াত-১৮] এর চেয়ে অধিক আর কিই বা করতে পারতেন। তার বিরুদ্ধে এগারোজন মানুষ একটি কথার উপর ঐক্য/ইজমা করে নিয়েছিল। তারা রক্তে ভেজা জামা নিয়ে ছিল এবং নিজের হারানো ভাইয়ের জন্য কাঁদতে ছিল। হযরত ইয়াকুব (আ.) তাদের মিথ্যাকে প্রকাশ করে এবং বাতিলের পরদা ছিন্ন করে নিজের অন্তরের ফলকে কুপের মধ্য থেকে বের করে কি আনতে পারতেন এবং তাদের কৃতকর্মের জন্য কি শাস্তি দিতে পারতেন? কষ্মিনকালেও নয়, ইহা তো মূর্খদের কাজ, যারা আল্লাহর প্রজ্ঞা সম্পর্কে জ্ঞাত নয়। হযরত ইয়াকুব (আ.) তো আল্লাহর নবী ছিলেন।

তিনি তো বিবেকসম্পন্ন ওলামার কর্তব্য পালন করছিলেন। তাঁর সম্পর্কে আল্লাহ পাকের বাণি আছে যে, “আর সে ছিল জ্ঞানী, কারণ আমি তাকে শিখিয়েছিলাম। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না। ” [সূরা ইউসুফ, আয়াত-৬৮] হযরত ইয়াকুব (আ.) যদি তাঁর পুত্রদের সাথে তেমনই ব্যবহার করতেন যেমনটি আমি বয়ান করেছি, অর্থাৎ নিজের কলিজার টুকরাকে কুপ থেকে তুলে আনতেন এবং তাদেরকে তাদের মিথ্যার মজা দেখাতেন এবং তাদের কৃতকর্মের শাস্তি দিতেন তাহলে হযরত ইউসুফের প্রতি তাদের শত্রুতা এবং হিংসা-বিদ্বেষ আরো বৃদ্ধি পেত। তারা তাদের পিতাকে ধোকা দিয়েছিল, সেজন্যই তারা প্রায়ই এ কথা বলত, ‘আল্লাহর কসম, আপনি তো ইউসুফকে স্মরণ করতেই থাকবেন, যতক্ষণ না আপনি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছবেন অথবা ধ্বংস হয়ে যাবেন’।

[সূরা ইউসুফ, আয়াত-৮৫] এই সমস্ত বিষয়াবলী দ্বারা এই ফলাফলই বেরিয়ে আসে যে, কিছু কিছু পরিস্থিতিতে নিরবতা অবলম্বন করা মুস্তাহাব। বিশেষ করে বাতিলের সাথে বিরোধিতার ক্ষেত্রে যখন ফ্যাসাদ অথবা বিপদ থাকে অথবা নিরবতা অবলম্বনে হকের মুসলেহাত থাকে। এ স্থানে নবী (সা.)-এর এই হদী অবলম্বণকারী হল বোবা শয়তান। তার মাদলোল (প্রকৃত অর্থ) হল ঠিক বিবেক ও আল্লাহর কিতাব অনুপাতেই”। কিন্তু রাসুল (সা.)-এর পবিত্র জীবনী অধ্যয়ন করলে জানা যাবে যে তিনি (সা.)-ও ইসলাম ও মুসলমানদের মুসলেহাতের খাতিরে কোন কোন সময়ে নিরবতা অবলম্বন করেছিলেন।

যেমন সিহাহ সিত্তা এবং নবীর সীরাতগুলিতে লিপিবদ্ধ আছে এবং হুদায়বিয়্যাহ সন্ধি হল এর স্পষ্ট উদাহরণ। আমীরুল মুমেনীন হযরত আলীর প্রতি আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক যে, তিনি তাঁর চাচাতো ভাইয়ের পরবর্তীতে ধৈর্য্য ধারণ করেছিলেন। এ বিষয়ে তাঁর এই বক্তব্যটি খুবই বিখ্যাত যে, “আমি চিন্তা করতে লাগলাম যে এই দুই পথের মধ্যে কোন পথটি অবলম্বন করব? নিজের কর্তিত হাত দ্বারা কি হামলা করব অথবা এই ভয়ানক অন্ধকারে ধৈর্য্য ধারণ করব, যেখানে বয়োজ্যেষ্ঠরা দূর্বল এবং বাচ্চারা বুড়ো হয়ে যায় এবং মুমিন জীবন যুদ্ধ করতে করতে নিজের প্রতিপালকের সাথে যেয়ে মিলিত হয়। এমন অন্ধকারে ধৈর্য্য ধারণ করাটাই আমার নিকট বিবেক সম্পন্ন মনে হয়েছে। সুতরাং আমি ধৈর্য ধারণ করলাম, যদিও আমার চোখে কাঁটা এবং গলায় হাড় বিদ্ধ ছিল”।

[সূত্র : নাহাজ আল বালাগা, . . . ] আবুল হাসান আলী যদি নিজের খেলাফতের অধিকার থেকে চোখ ফিরিয়ে না নিতেন এবং এ বিষয়ে ইসলাম ও মুসলমানদেরকে প্রাধান্য না দিতেন, তাহলে এমতাবস্থায় দ্বীনে ইসলাম রক্ষা পেত না যেটাকে আল্লাহ ও রাসুল (সা.) উপস্থাপন করেছিলেন। এই বাস্তবতা থেকে অধিকাংশ ঐসমস্ত মানুষ অবগত নয়, যারা হযরত আবু বকর ও উমরের খেলাফতকে সঠিক প্রমান করার জন্য আমাদের প্রতি হযরত আলীর নিরবতাকে দলিল হিসাবে ব্যবহার করে থাকেন এবং বলেন যে, “রাসুল (সা.) তাঁর পরবর্তীতে যদি হযরত আলীকে তাঁর খলিফা নিযুক্ত করেছিলেন, তাহলে তাঁর নিরব থাকাটা জায়েজ ছিল না। কেননা খেলাফত তাঁর অধিকার ছিল, আর অধিকারের দাবী যে করে না সে হল বোবা শয়তান”। কসম আমার প্রাণের, ইহা হল তাদের আকলের দোষ। তারা হকের প্রতি ততটুকুই অগ্রসর হয় যতটা তাদের সটি বুঝা জরুরী যে, “আস সাকিতু আনিল হাক্কে শায়ত্বানু আখরাস” অর্থাৎ “হকের বিষয়ে নিরবতা ইচ্ছা অনুমতি দেয়।

তারা সেই নিরবতার হিকমত ও মুসলেহাতকে বুঝতে পারে না যার ফলাফল ছিল বিলম্বিত। আবার হুদায়বিয়্যাহতে রাসুল (সা.)-এর নিরবতাও সঠিক ছিল, যেখানে তিনি মুশরেকীন ও বাতিলের শর্তাবলীকে স্বীকার করে নিয়েছিলেন। উক্ত সন্ধির কারণে উমর ইবনে খাত্তাব রাসুল (সা.)-এর প্রতি রাগান্বিত হয়েছিলেন এবং তাঁকে বলেছিলেন, “আপনি কি আল্লাহর সত্য নবী নন”? আমি বলি, রাসুল (সা.)-এর নিরবতাও তো উমর ইবনে খাত্তাব এবং অধিকাংশ সাহাবার দৃষ্টিতে সঠিক ছিল না। অথচ সেটি শতকরা একশত ভাগই ইসলাম ও মুসলমানদের মুসলেহাত অনুপাতেই ছিল। যদিও সেই মুসলেহাতের ফলাফল এক বছর পর প্রকাশ পেয়েছিল এবং রাসুল (সা.) বিনা যুদ্ধ-বিগ্রহেই মক্কা বিজয় করে নিলেন।

আর যখন মানুষ দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করছিল তখন রাসুল (সা.) উমর ইবনে খাত্তাবকে উক্ত নিরবতার গুপ্ত ভেদ বলেছিলেন। আমরা যখন উক্ত বাস্তবতার ব্যাখ্যার জন্য যার দ্বারা কোন ক্ষতি নাই, এমন যুক্তি বা দলিল উপস্থাপন করি যেখানে হকের বিরুদ্ধে বাতিল পন্থিদের সংখ্যাগরিষ্ঠতারই সাহায্য করা হয়। যদিও “আলী হকের সাথে আর হক হল আলীর সাথে এবং আলী যেদিকে ঘুরেন হকও সেদিকেই ঘুরে যায়” তা সত্বেও মোয়াবিয়ার সাথে মোকাবেলা করার জন্য তাঁর পাশে সাহায্যকারী ছিল না। আর আজ এই শেষ জামানাতে তো হকের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণকারীদেরই সংখ্যা অধিক। আসলে মানুষ হল দুনিয়ার দাস, দ্বীন তো কেবল তাদের জিহ্বার আগায় আছে।

হকের প্রতি তাদের ভালবাসা নেই, তারা তো বাতিলের পুজারী। হক হল তিক্ত ও কঠিন, বাতিল হল সহজলভ্য, আল্লাহর এই কথাটি সত্য যে, “বরং তাদের নিকট হক পৌছাল, অথচ তাদের অধিকাংশই হক পছন্দ করে না” (সূরা বাকারা, আয়াত-২৪৯)। এসমস্ত কারণেই হক বা সত্যের উপাসনাকারী ইমাম হুসাইনের বিরুদ্ধে বাতিল বা মিথ্যার উপাসনাকারী ইয়াজিদের সাহায্য করা হল। আর অনুরূপভাবে অন্যান্য মাসুম ইমামগণের হকের ব্যাপারে বনী উমাইয়া ও বনী আব্বাসের শাসকগোষ্ঠীকে সাহায্য করা হল। আর মহান ইমামগণ ইসলাম ও মুসলমানদের মুসলেহাতের লক্ষ্যে শাহাদাত কবুল করে নিলেন।

সুতরাং বাতিলের ভয়ে দ্বাদশ ইমাম, ইমাম মাহ্দী (আ.) গায়বাত (অদৃশ্য) অবলম্বন করেছেন। যখন সাহায্যকারী পাওয়া যাবে, তখন আল্লাহ তাঁকে প্রকাশ করবেন, যাতে বিশ্বব্যাপী হক বাতিলের বিরুদ্ধে পতাকা উত্তোলন করে। ইমাম মাহ্দী (আ.) এমনভাবে জমিনকে ন্যায় বিচার দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিবেন, যেমনটি তা জুলুম ও অত্যাচারে পরিপূর্ণ হয়েছিল। অপর ভাষায় এমনও বলা যেতে পারে যে, এমনভাবে জমিনকে হক দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিবেন, যেমনটি তা বাতিল দ্বারা উপচে পড়ছিল। যদিও অধিকাংশ মানুষ হককে এড়িয়ে চলবে, তারা বাতিলের পক্ষালম্বী হবে এবং হকের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপনকারীর সংখ্যা অতি নগণ্য হবে।

কিন্তু সেই নগণ্য সংখ্যাই আল্লাহর মোজেজা রূপি সাহায্য দ্বারা বাতিলের উপর বিজয়ী হবে। আর এই কথা তো সকল সংঘর্ষ ও যুদ্ধে স্পষ্ট হয়েই আছে, যেখানে হক পন্থীগণ বাতিলের বিরুদ্ধে রণাঙ্গণে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কতই না ক্ষুদ্র সংখ্যা বৃহৎ সংখ্যার প্রতি বিজয় অর্জন করেছিল এবং আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন। যারা হকের জন্য ধৈর্যধারণ করেন, যদিও তাঁদের সংখ্যা নগণ্য হয় তবুও আল্লাহ তায়ালা মোজেজার মাধ্যমে তাঁদের সাহায্য করেন এবং ফেরেশতাদের প্রেরণ করে থাকেন, যারা তাঁদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে। আর যদি সাথে সাথেই আল্লাহ হস্তক্ষেপ করতেন তাহলে বাতিলের প্রতি হক কখনোই বিজয়ী হতে পরতো না।

এই তিক্ত বাস্তবতাকে তো আমরা আজ আমাদের জীবনেও দেখতে পাই যে, সত্য মুমিন ও হকপন্থী বিজিত হয়ে আছেন। অথচ আল্লাহকে অস্বীকারকারী বাতিলপন্থীরা শাসক হয়ে বসেছে। কাফের ও খোদা দ্রোহীদের বিরুদ্ধে সর্বহারা ও মুমিনগণ আল্লাহর সাহায্যেই সফলকাম হতে পারেন। আমার বক্তব্যের প্রমান হিসাবে সেই সমস্ত রেওয়ায়াত মজুদ আছে, যা ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর আবির্ভাবের সাথে মোজেজা প্রকাশ হওয়ার উপর দলিল প্রমান দিচ্ছে। কিন্তু প্রকাশ থাকে যে, এই সমস্ত বিষয়াবলী হাতের উপর হাত রেখে বসে থাকার নিমন্ত্রণ নয়।

আর এখন কেমন করেই বা হতে পারে কেননা আমি এখনই বয়ান করেছি যে, তিনি (ইমাম মাহ্দী) তখনই আবির্ভূত হবেন যখন বন্ধু-বান্ধব ও সাহায্যকারীগণ উপস্থিত থাকবেন। সত্যিকারের মুমিনের জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, তাঁদের মধ্যে ইসলামের চিন্তা-চেতনা ও রূহ বাসা বাঁধবে এবং তারা মহান আহলে বাইতের বেলায়েতকে স্বীকার করে নিবেন। অর্থাৎ ‘সাকালাইন’ তথা আল্লাহর কিতাব ও নবী (সা.)-এর ইতরাতের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যাবেন, যেন তারা ইমাম মাহ্দীয়-এ মুন্তাজির (আ.)-এর বন্ধু ও সাহায্যকারী বলে স্বীকৃত পান। আমার এই কথা যদি অধিকাংশ মানুষের রায়ের দৃষ্টিকোণ থেকে ভুল হয় এবং সংখ্যালঘুদের বিবেচনায় সঠিক হয়, তাহলে সংখ্যাগরিষ্টদের নিন্দার জন্য আমার কোন পরোওয়াহ নেই এবং সংখ্যালঘুদের প্রশংসারও কোন আকাঙ্খ্যা নেই। আমার তো কেবল আল্লাহ, তাঁর রাসুল (সা.) এবং মাসুমীনগণের সন্তুষ্টি-ই প্রিয়।

“আর যদি সত্য তাদের কামনা-বাসনার অনুগামী হত, তবে আসমানসমূহ, যমীন ও এতদোভয়ের মধ্যস্থিত সব কিছু বিপর্যস্ত হয়ে যেত; বরং আমি তাদেরকে দিয়েছি তাদের উপদেশবাণী (কুরআন)। অথচ তারা তাদের উপদেশ হতে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে । [সূরা মুমেনুন, আয়াত-৭১] আর এমনিতেই অধিকাংশ মানুষ হকের বিদ্রোহী। ইহা তো সীমা ছাড়িয়ে গেছে যে, তারা হকের প্রতি শত্রুতার কারণে নিজেদের প্রবৃত্তির আকাংখ্যাসহ পথ অতিক্রম করতে পারতো না, বিধায় নিজেদের রাসুলগণকে হত্যা করেছে। “তোমরা কি এত পরিমানে বিকৃত মনা হয়ে গেলে যে, যখনই কোন পয়গম্বর তোমাদের নিকট তোমাদের প্রবৃত্তির আকাংখ্যার বিপরীত কোন নির্দেশ নিয়ে এলো তখন তোমরা অটল হয়ে গেলে।

অতঃপর তোমরা কিছু পয়গম্বরকে মিথ্যাবাদী বললে আর কিছুকে হত্যা করে ফেললে”। সূত্র ??? (সূরা : আয়াত- ) অতএব সেই সমস্ত লোক যারা হককে বরদাশ্ত করে না, যেমনটি পূর্ববর্তী কিতাবগুলির মাধ্যমে আমি হক উপস্থাপন করেছিলাম। তাদের তো এই কথার অধিকার ছিল যে তারা জ্ঞানগত দলিল ও প্রমান দ্বারা আমার কথাকে খন্ডন করত, কিন্তু তারা আমার প্রতি গালি-গালাজ করেছে, যা হচ্ছে মূর্খদের স্বাভাব। এখন আমার কোন ভয় নেই, আর না কেউ আমাকে হুমকী ও লোভ দেখাতে পারে। আমি আমার কলম ও জিহ্বার মাধ্যমে মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্ (সা.) এবং তাঁর আহলে বাইত সালাওয়াতুল্লহ আলাইহিম আজমায়ীনগণের প্রতিরক্ষা করতে থাকব।

আশা করি তাঁদের দরবারে আমার এই প্রচেষ্টা অবশ্যই কবুল হবে এবং আমি সফলকাম হয়ে যাব। ওয়ামা তাওফিকী ইল্লা বিল্লাহি আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া ইলাইহি উনীব। -মুহাম্মাদ তিজানি সামাভী তিউনিসী চলবে........ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।