এক রাতের ব্যবধানেই আপত্তিকর দৃশ্য গায়েব! শুক্রবার রাজধানীর বনানীর 'পারসোনা' শাখা থেকে উদ্ধারকৃত হার্ডডিক্সটিতে কোনো দৃশ্যই ছিল না বলে দাবি করছে পুলিশ। তবে ভিকটিম চিকিৎসকের স্বামী জানিয়েছেন, তার স্ত্রীর আপত্তিকর দৃশ্য রেকর্ড করা হয়েছিল। আর তা পারসোনার স্টাফরাও দেখেছেন। তিনি আরও জানান, দুঃখ প্রকাশ করার কোনো কারণই নেই। কোনটা সত্য এটি পরিষ্কার।
তবে সামাজিকতার কথা ভেবে কোনো মামলা-মোকাদ্দমায় যাইনি। তবে এটাকে দুর্বলতা ভাবলে ভুল হবে। তবে তার স্ত্রী মানসিকভাবে বিধ্বস্ত।
এদিকে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজধানীর অভিজাত বিউটি পারলার পারসোনার বনানী শাখায় দীর্ঘদিন ধরেই সুন্দরী নারীদের নগ্ন দৃশ্য গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা হতো। স্পা কক্ষ ছাড়াও বেশ কয়েকটি কক্ষেই গোপন ক্যামেরা লাগানো ছিল।
আর ধারণ করা দৃশ্যগুলো ইন্টারনেটে আপলোড করা ছাড়াও মোটা অংকের টাকায় বিক্রি করা হতো বলে ধারণা করছেন গোয়েন্দারা। জানা গেছে, শুক্রবার রাতে পারসোনার বনানী কার্যালয় থেকে উদ্ধারকৃত গোপন ক্যামেরার হার্ডডিক্সটিতে অসংখ্য নগ্ন দৃশ্য দেখে হতবিম্ব হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা। তবে এ বিষয়টির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মেহেদী মাসুদ কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়াই ওই হার্ডডিক্সটি ভিকটিমের স্বামীর কাছে দিয়ে দেন। পরে ওই হার্ডডিক্সটিতে কোনো কিছুই নেই বলে অবহিত করেন তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের।
এ বিষয়টি জানতে অসংখ্যবার মেহেদী মাসুদের সেলফোনে ফোন করার পরও তিনি তা রিসিভ করেননি।
অন্যদিকে, গতকাল অনেক ব্যক্তি বিভিন্ন মিডিয়ায় ফোন করে নিজেদের উদ্বেগের বিষয়টি অবহিত করেছেন। তাদের অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাদের আশঙ্কা তারাও বিভিন্ন সময় পারসোনায় স্পা করার জন্য গিয়েছিলেন। সৌন্দর্য বর্ধন করতে গিয়ে অনেক নারী নিজের অজান্তে নিজেকেই হারিয়েছেন। তাদের ওই সব দৃশ্য দিয়ে যদি পারসোনা ব্ল্যাকমেইল করে! তাই এ বিষয়টি বিশেষভাবে খতিয়ে দেখার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
পারসোনার স্বত্বাধিকারী কানিজ আলমাস খান দাবি করছেন, সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় 'স্পা' কক্ষ ছিল না। আমরা অভিযোগকারীকে পুরো হার্ডডিক্স দিয়ে দিয়েছি। আপত্তিকর কিছু তো তারা পাননি। তারা পরে আমার কাছে দুঃখও প্রকাশ করেছেন। পারসোনার সুনাম নষ্ট করার জন্য একটি চক্রান্ত এটি।
রাজধানীতে পারসোনাসহ শতাধিক বিশেষায়িত পারলার রয়েছে। এর মধ্যে এক পারসোনারই ঢাকায় উত্তরা, গুলশান, মিরপুর ও বনানীতে মোট ৪টি শাখা রয়েছে। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামেও একটি শাখা রয়েছে পারসোনার। অধিকাংশ পারলারই স্পা সেবা দিয়ে থাকে। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর বনানীতে পারসোনার স্পা সেন্টার যাত্রা শুরু করে।
পারলারের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ প্রসঙ্গে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মনিরুল ইসলাম বলেন, পারলারগুলোর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। যারা এসব জায়গা থেকে সেবা গ্রহণ করেন তাদেরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন। এ ব্যাপারে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহআলম জানান, অভিযোগকারী পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ না করায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার লুৎফুল কবীর জানান, হার্ডডিক্সটি ভিকটিমের স্বামীকে দেওয়ার বিষয়টি তিনি শুনেছেন।
বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। প্রসঙ্গত, শুক্রবার বনানীর ১১নং রোডের পারসোনার শাখায় স্পা করতে আসা এক নারী চিকিৎসকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ ওই কক্ষ থেকে গোপন ক্যামেরা ও হার্ডডিক্স উদ্ধার করে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।