কবে যাবো পাহাড়ে... কবে শাল মহুয়া কণকচাঁপার মালা দেব তাহারে.... কানিজ আলমাসের বিউটি পার্লার পারসোনায় (যেখান থেকে আমার বোন-ভাবীরা বিয়ের সাজ সেজে আসে, কিংবা স্পেশাল অকেশনে সাজতে যায়) চেঞ্জিং রুমে হিডেন ক্যামেরা পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারটা যখন প্রথমবারের মত জানতে পারি ব্লগার অগ্নিলার কাছ থেকে; আমি ওই মহিলাকে বেনিফিট অফ ডাউট দিতে আগ্রহী ছিলাম- হয়তো ব্যাপারটা কোনো নিম্নরুচির কোনো পুরুষ কর্মী করেছে, তিনি হয়তো বিষয়টা সম্পর্কে জানতেন না। আর একজন নারী হয়ে তিনি এভাবে শত-সহস্র নারীকে এক নিমেষে বাজারের পণ্য করবেন কিভাবে? আমার মনে হয়েছিলো সেটা সম্ভব না।
(কেউ যদি এখনো এই ঘটনা সম্পর্কে অজ্ঞ থেকে থাকেন, তাহলে ব্লগার অগ্নিলার পোস্ট ঘুরে আসেন। Click This Link)
আমি আশা করছিলাম এই ঘটনা যখন আলমাস সাহেবানের কানে পৌঁছাবে, তিনি রাগে ফেটে পড়ে তাৎক্ষণিকভাবে দোষীকে খুঁজে বের করে তাকে পুলিশে সোপর্দ করবেন।
আর সেটা করলে তাঁর ইমেজ বিন্দুমাত্র কমতো না, আর পারসোনারও নামডাকের কোনো ঘাটতি হোতো না। বরং, মিডিয়ায় কয়েকদিন এ নিয়ে চর্চার ফলে আরো বেশ কিছু মানুষ পারসোনার নাম জানতো; আর এবার নারীরা নির্ভয়ে সেখানে যেতে পারতো, কারণ চেঞ্জিং রুমে হিডেন ক্যামেরা যাতে কেউ লাগাতে না পারে- সে ব্যাপারে যথেষ্ট সাবধানতা কর্তৃপক্ষ নিচ্ছে.......
কিন্তু তিনি সেটা করেননি। বরং, তিনি সবক’টা প্রতিবাদীর গলা টিপে ধরেছেন। পুলিশ পুরো ঘটনাটা জেনেও মামলা করতে নারাজ, তারা চায় যে ভদ্রমহিলার চেঞ্জিং রুমে কাপড় পাল্টানোর ভিডিও কয়েকজন পুরুষ কম্পিউটারের সামনে বসে তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করেছে- তিনি পুলিশের কাছে এসে লিখিত কম্প্লেইন করবেন। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পুলিশ যে বাদী হয়ে মামলা দিতে পারে, কিংবা রাষ্ট্র নিজেই বাদী হয়ে মামলা করতে পারে- এই ব্যাপারগুলো হঠাৎ আমাদের পুলিশ প্রশাসন আর সরকার বেমালুম ভুলে গেছে।
কে জানে! হয়তো ওই হিডেন ক্যামেরায় তোলা কিছু ভিডিও গুলশান থানার পুলিশ অফিসারদেরকে সাপ্লাই করা হয়েছে ঘুষ হিসাবে!
এরপর মানুষ তাঁর কাছে জবাব চায় পারসোনার ফেসবুক পেইজে (https://www.facebook.com/yourpersona)। প্রথম দিকের সব কমেন্টই ভদ্র এবং নম্র ছিলো, কারণ কেউ পারসোনা কর্তৃপক্ষকে এই ঘটনার নেপথ্যে কল্পনা করেনি তখনও। কিন্তু পারসোনা এসব প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে সব কমেন্ট মুছে দিতে থাকলো। বেশি বেশি কমেন্ট করলে ব্যান করতে থাকলো। এক পর্যায়ে কুলাতে না পেরে পেইজ বন্ধ করে দিলো।
তারপর সব জঞ্জাল সাফ করে এখন ওরা আবার খুলেছে এবং বহাল তবিয়তেই আছে।
মিডিয়াও এই খবর ছাপেনি। বলা বাহুল্য, তিনি নিজে মিডিয়া ব্যাক্তিত্ব হয়ে মিডিয়া তো পকেটে নিয়েই ঘোরেন। কাজেই, আমার অনুমান- একটা দুইটা ফোনকল করেই তিনি ব্যাপারটা সামাল দিয়েছেন। পুরা দেশের মানুষ এই ঘটনার ব্যাপারে কিছুই জানবেনা; ফেসবুক আর সামুতে আর কয়জন মানুষ ঢোকে?
কানিজ আলমাসের মত ক্ষমতার দম্ভে অন্ধ নারীকে সম্মান দেখানোর কোনো কারণ নাই।
তার কর্মকান্ড থেকে এটা পরিষ্কার যে পারসোনা কর্তৃপক্ষ জেনেশুনেই এই হিডেন ক্যামেরাগুলো বসিয়েছিলো এবং এগুলো থেকে তাদের প্রচুর কাঁচা টাকার উপরি আয় হয়, যে কারণেই তারা এই ব্যাপারটা ধামাচাপা দেয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এই উপলব্ধির পরে আমি ফেসবুক স্ট্যাটাস দিই: “পারসোনার মত বড় বড় বিউটি পার্লার চেঞ্জিং রুমে হিডেন ক্যামেরা রেখে পর্নোগ্রাফির ব্যবসা করছে। কানিজ আলমাসের মত রাঘব-বোয়াল ক্ষমতার দাপটে সব মিডিয়ার মুখে তালা ঝুলিয়েছে; কোনো পত্রিকা বা টিভি চ্যানেল এই খবরটাকে ছাপার/দেখানোর যোগ্য বলে মনে করেনি। ধন্য আমার মগের মুল্লুক। দেশের লাখো মা-বোনকে ডিজিটাল পতিতা বানিয়ে ফেলেও মানুষ দু-একটা ফোনকল করে পার পেয়ে যায়!”
এবার একটু ভিন্ন প্রসঙ্গ।
এটা কানিজ আলমাস সম্পর্কে না, আপনার সম্পর্কে। হ্যাঁ, আপনাকে বলছি। আপনি- যিনি এতক্ষণ ধরে কষ্ট করে আমার পোস্ট পড়েছেন, এবং পুরো পোস্টের কোণায় কোণায় অনুসন্ধানী দৃষ্টিতে যৌনতা খুঁজে বেরিয়েছেন। আপনি, যিনি আশা করছিলেন- এই পোস্টে আমি ওই নারী গ্রাহকের কাপড় পাল্টানোর দৃশ্যের একটা রসালো বর্ণনা দেবো। হ্যাঁ, আপনাকেই বলছি।
আপনারই কোনো জাতভাই বিকল্প মিডিয়ার পেইজে এই ভিডিওর ইউটিউব লিংক প্রকাশের দাবি জানিয়েছে। আপনারই আরেক জাতভাই লিখেছে- ‘যেমন কর্ম তেমন ফল’। অর্থাৎ, কোনো মেয়ে বিউটি পার্লারে সাজতে গেলে তাকে লেংটা করে ভিডিও তুলে বাজারে বিক্রি করে দেয়াই যথার্থ। হ্যাঁ, আপনাকে এবং আপনার দোসরদেরকেই উৎসর্গ করছি আমার শেষ প্যারা।
হিডেন ক্যামেরা ভিডিওর বাংলাদেশে এত গ্রাহক বলেই আজকাল রোকেয়া হলের বাথরুম থেকে কানিজ আলমাসের পিন্ডির ভেতর পর্যন্ত হিডেন ক্যামেরা পাওয়া যায়।
আর সেগুলো নীলক্ষেত থেকে কিনে নিয়ে বাসায় গিয়ে বসে যান তেলের শিশি নিয়ে। ধরুন, হঠাৎ যদি কখনো সেখানে আপনার MILF মায়ের ভিডিও চলে আসে তখন কি করবেন? বীর্যস্খলনের অন্তিম মুহুর্তে কি হাত সরিয়ে নেবেন আপনার লিঙ্গ থেকে- নাকি করেই যাবেন যা করছিলেন? প্রশ্ন রেখে গেলাম আপনার কাছে। উত্তর প্রত্যাশী নই; প্রশ্নটা নিজেকে একবার করে দেখুন শুধু।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।