একজন নির্বোধের বয়ান শ্যাম সুন্দর তুমি হ্যামলেট চেনো?
শ্যাম সুন্দর ছেলেটা দিন-রাত শুধু কম্পিউটারের প্রোগ্রাম বানানো নিয়া ব্যস্ত থাকে। মাথার মধ্যে দুনিয়ার আর কোন কিছুর সহিত তাহার যোগাযোগ নাই। সে তাহার অফিসের সিওও কে তাহা জানে না, ‘সিও’কে অফিসের সিড়িতে দেখে কলিগের কাছে জানতে চায়,‘লোকটা কে?’ কলিগ বলে, ‘মিয়া তুমি যার অফিসের চাকরী কর তাকে চেনো না? উনি আমাদের সিওও। ’ শ্যাম সন্দর ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। শেষে দাঁত কেলিয়ে বলে,‘ভাই, আমি মাথা থেকে সব ডিলিট করে দেই।
মাথায় কিছু রাখি না। ’ শ্যাম সুন্দরের একথার জবাব অন্যজন কিভাবে যে দিয়েছিল তা আমাদের জানা নাই। তো সেদিন অফিসে শ্যাম সুন্দরের বস্ আরিফ খান হঠাৎ করে শ্যামের কাছে জানতে চাইলেন,
‘শ্যাম তুমি হ্যামলেট চিনো?
‘হুম না ভাইয়া....হুম কমপ্রিহেনশন -এ পড়েছিলাম...মনে হয় একটা চরিত্র... (শ্যাম মনিটর থেকে চোখ না সরিয়ে কথাটা বলে...সে ব্যস্ত কোড লেখায়)।
‘হ্যামলেট সম্পর্কে আর কিছু জানো না তুমি?’
‘না ভাই আর কিছু বলে নেই। ’ শ্যাম তার ম্যানেজারকে ভাই বলে থাকে।
যদিও অন্যরা আরিফ ভাই বলে ডাকে।
‘তাও ভালো, ‘হ্যামলেট যে একটা চরিত্র’ তুমি অন্তত তা জানো...কিন্তু আমাদের মাননীয় মন্ত্রী হেলমেট’কে ‘হ্যামলেট’ বলে জানেন, বলেন...।
একজন নির্বোধের বয়ান...
ওহ ভালো কথা আপনারাও হেলমেট চেনেন তো? ঐ যে গুন্ডারা থুক্কু হুন্ডা মানে মটর সাইকেলের চালক মাথার মধ্যে কী একটা পড়ে থাকে, শরীর ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না। দেখতে রোবট রোবট লাগে। মাঝে মাঝে আপনাদের প্রিয় স্থান ‘ফেসবুকে’ এমন হেলমেট পরিহিত বাংলার রোবটকে আপনাদের চোখে পড়ে থাকতে পারে।
যে কিনা মাথার মধ্যে হেলমেট পড়ে একটা মেয়ের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েটাকে সেভ করতে। নাকি মেয়েটার হাতে চড় খাওয়ার হাত থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য এমন বুদ্ধি বের করেছে? আবার পাওনাদারের চোখ ফাঁকি দিতেও এমন বুদ্ধি কাজে লাগাতে পারে। আসল কথা হল, মিছিল চলাকালীন কোন এক পুলিশ কর্মকর্তাকে পিকেটাররা লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে, পুলিশের মাথায় হেলমেট পরা ছিল কারণ তার একটা মটর সাইকেল ছিল। হেলমেট পরেও পুলিশ লাঠি আঘাত থেকে নাকি তার মাথাকে বাঁচাতে পারেননি।
হেলমেটের উপরই লাঠি বাড়ি পড়েছে। এই দৃশ্য বিভিন্ন পত্রিকার পাতায় ছাপা হয়েছে, টিভির পর্দায়ও দেখা গেছে। মিডিয়া কর্মীদের সামনে মাননীয় মন্ত্রী গলা ফাটিয়ে বারবার বলছেন, ‘হ্যামলেটের উপর লাঠি দিয়ে বাড়ি মারছে ওরা। ’ মাথার হেলমেট হয়ে গেল শেক্সপিয়ারের রচনা হ্যামলেট। ছোট বাচ্চারা যেমন করে মিল দিয়ে কথা বলতে ভালো বাসে, তেমনি আমরাও এখন থেকে বলব, ‘হেলমেটের ভাই হ্যামলেট।
’ মটরসাইকেল আরোহীকে বিপদ থেকে মাথাকে রা করে হেলমেট কিন্তু এদেশকে কী শেক্সপিয়ারের হ্যামলেট রা করতে পারবে? হায় আমরা কাদের হাতে তুলে দিয়েছি আমাদের এই দেশটাকে, কারা চালায় আমাদের মত বোকা মানুষগুলোকে?
কেউ বলে, ‘বাজারে কম যান। কম খাবেন। তাহলেই দ্রব্যমূল্যের দাম কমবে । ’ ইচ্ছা হয় গিয়ে বক্তার বাসার সবকটা ফ্রিজ থেকে ব্যাগ ভরে বাজার নিয়ে আসি। তারপর তার মুখের কাছ থেকে ভাতের থালাটা সরিয়ে নিয়ে আসি।
এবার তারই চোখের সামনে বসে ভাত খেতে খেতে বলি, ‘কম খাবেন। আর কম কিভাবে খেতে হয় শিখেন। ’
অন্যদিকে একজন সূফীসাধক অনেকদিনই চুপচাপ ছিলেন কিন্তু শয়তান তাকে খোঁচাতে লাগল,‘তোমার কলিগরা তো বিভিন্ন বানী দিয়ে দেশজুড়ে নাম করে ফেলছে, তুমি মিয়া চুপকরে বসে রয়েছো কেন? কিছু একটা বল। আলোচিত হয়। যাও বেটা যাও, আমার তোমার মান নাম রাখ।
’ তো হঠাৎ করেই এই সুফী মানুষটা বলে বসলেন, ‘ অকালমৃত্যু বলে কোন কিছু নেই। ’ হায় তবে কী আমরা এখন তাকে অকালমৃত্যু নমুনা দেখাবো? কীভাবে অকালমৃত্যু হয়?
এদিকে ‘ড্রাইভার হওয়ার জন্য বেশি শিতি হওয়া লাগে না। কেননা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি যে চালায় সেও নাকি মাত্র ফাইভ পাশ। ’ এই মহান বাণীটি দিয়েছেন খোদ কম পাশ সাইকেল মন্ত্রী। অবৈধ লাইন্সেস দেওয়ার জন্য যেখানে এই মন্ত্রী আদেশ দেয় সেখানে র্দূনীতি হোতাদের খোঁজার জন্য কেন র্দূনীতির কমিশনের দিন-রাত খেটে মরছে? চোখের সামনেই তো অপরাধী ঘুরে বেড়াচ্ছে।
হায় মাথামোটা কী করে জানবে, পড়াশুনা জানা আর না জানার মধ্যে পার্থক্য? যদি জানত তবে তো আর কেউ হেলমেটকে হ্যামলেট বলে না। আর আমাদেরও আর বলতে হয় না, ‘হেলমেটরা দুই ভাই। হেলমেট আর হ্যামলেট। ’ না জানি শেক্সপিয়ার সাহেব আকাশের উপর থেকে মুচকী হাসছেন না চোখের পানিতে বুক ভাসাচ্ছেন?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।