হাছা কইতাছি ভাই। নেট চালাই অইজে কি না, এয়ারটেল নাকি কেরাসিন তেল কি জানি নাম অইটা দিয়া। উদ্দেশ্য একটাই, চালাই নোকিয়া স্মার্টফোন দিয়া। তাইলে মুপাইলেও চালান জায় লেপটুপেও চালান জায়। যার কারনে আর মডেম দিয়া কুনো ঝামেলা করন লাগে না।
তালা দিয়া শাড়ি আর চুড়ি পরাইয়া অইটারে সাজাইয়া রাখছি। এখন আসল কথায় আসি।
ইলিশ মাছ পানির উপরে উইঠা যেমন কুত্তার মত কইরা ফাল দিয়া উঠে, এয়ারটেল এর নেট ও অইরকম। বিশ্বাস করেন, আমাদের এলাকায় গতি এই ৩০-৩৫ এর মত থাকে। খুব ভাল চলে।
হঠাত কইরা কিছুই নাই। নাই তো নাই!!! নাই!!! মুবাইল পকিটে ভরি, খাটের তলায় ঢুকাই, হাতে নিয়া বাংলা ছবির নায়কগো মত কইরা নাচানাচি করি। কিন্তু নেট নাই। হালার মুবাইলো একখান। আমার চাইতেও ঘাউরা।
ষ্টীল বডি বইলা কথা। দেয়ালে ঠুকাই, ফ্লোরে আছার মারি। নাহ, কিছুই হয় না।
গত সপ্তাহে অদের নেট টানা দুইদিন অকেজো ছিল। ফোন মারলাম মূর্খ কেয়ারে।
কয় কাজ চলে। আমি কই কাজ তো হারা দেশেই চলে। বি এন পি কাজ চালায়, জামাত চালায়, আর আওয়ামীলীগের পিডা পিডি তো আছে। র্যাব পুলিশ বুনাস। কিন্তু নেট চলে না ক্যান?? এইবার কয় টাউয়ারে কাজ চলে।
আমি কইলাম, নিচে খারায়া টাউয়ারে কাম করলে হইব না। লোকজন নিয়া উইঠা জাউ। কয় ওকে।
কাহিনিতো এইহানে না। আসল ব্যাপার আইজকা সন্ধায়।
ফাইল আপলোড দেই, অয় না। মাগার পেজ সব ডাউনলোড অয়। বুঝি না ব্যপার। গতি মাত্র ৫-১০ এর মদ্ধে। বায়ার বইসা রইছে ফাইলের লাইগা।
খালি মেইল পাডায়, মিয়া ইন্দুরের লাগান কি কর। তাড়াতাড়ি কর। আমি তো বহুতখন টেরাই মারলাম। নাহ, অয় না। বুকে কাপন শুরু অইয়া গেছে।
হালার বায়ার যদি আবার খারাপ কনো ফীডব্যাক দেয়, তাইলে তো পুরাই সর্বনাশ। আমি শেষ। এইবার লজ্জা শরমের মাথা খাইয়া দৌড়াইয়া গেলাম পাশের ঘরে। আংকেল, প্লিজ আপ্নের সিটিসেল জুম টা একটু দেন। মাত্র ৫ মিনিট।
আমি জাস্ট একটা ফাইল আপলোড দেবো। “ওকে নিয়া জাউ। আমিতো হাফ ছাইরা বাচলাম। লাগ্লো ঘড়ি ধইরা আড়াই মিনিট। দিয়া আসলাম।
জাক বায়াররে তো বিদায় করলাম। আল্লাহ্, একটু পরে আবার মেইল। বায়ার কয়, এইবার প্লিজ এই ডিজাইন টা বানাউ। আমি কইলাম ঠিক আছে। এক ঘন্টা লাগলো।
এর মধ্যে আর কুনো ঝামেলা হয় নাই। নেটই চালানো লাগে নাই। ঝামেলা হইবো কি? কাজ শেষে যখন ডিজাইনের ফাইলটা আপলোড মারছি, আর তো হয় না। পেরায় ২০ মিনিট হইয়া গেছে। হয় না, হয় না।
এইদিকে সমানে খুচা খুচি করতাছে। নাহ। এইবার তো আর পাশের ঘরে জাইতে পারুন না। মইরা গেলেও না। জদিও আংকেলে কইছিল ভাতিজা আবার আইসো।
না জাউন জাইবো না।
এইবার মাতায় অন্ন বুদ্ধি আইলো। আমার জিপি সিম আছে। কিন্তু টাকা নাই। আর কই রাখছি আল্লাহ্ ছাড়া কেউ জানে না।
সো অইটা বাদ। আব্বুর মুবাইল টান মাইরা লইয়া সিম লাগাইয়া অন্ধের মত কানেক্ট দিলাম। কতকতাইয়া ফাইল আপলোড হইতাছে। এইটা দেইখা আমি আর নিজেরে ধইরা রাখতে পারলাম না। এক কথায় চারদিকে অন্ধকার দেখতে লাগলাম।
শালার এয়ারটেল। আব্বুর মুবাইলে আমার সিম লাগাইয়া দিলাম ফোন মূর্খের কেয়ারে। ধরল এক রাম গাধা, নাম তার দিলীপ। শুরু করলাম কথা। নিচে প্রায় হুবহু তুইলা ধরলাম।
(সব তো আর মনে নাই)
দিল্লুঃ শুভ সন্ধ্যা স্যার, আমি দিলীপ বলছি এয়ারটেল কাস্টমার কেয়ার থেকে।
আমিঃ আপ্নাদের নেটওয়ার্কের প্রবলেমটা কি??
দিল্লুঃ কি রকম প্রবলেম স্যার?
আমিঃ আমি নেট চালাতে পারছি না।
দিল্লুঃ বাট স্যার, আমি তো দেখতে পাচ্ছি আপনি আজ সারাদিন নেট চালিয়েছেন, , , , , ,
আমিঃ (আমার মাথায় রক্ত উইঠা গেল। চিল্লাইয়া উঠলাম পুরা) আরে রাখেন মিয়া, সারাদিন নেট চালাইছি, আমি কি আপ্নেরে সারাদিন ফোন দিছি?? আমি এখন চালাইতে পারতেছিনা, এখন, , , এখন। এক ফোটা কাজ অইতাছে না।
পুরা সব হ্যাং মারছে। (ঢাকাইয়া ভাষা, শুদ্ধ শেষ) কই আপ্নেগো নেটওয়ার্ক। মিয়া সারাদিনের হিসাব করেন??
দিল্লুঃ অহ সরি স্যার, কি ধরনের প্রবলেম স্যার? একটু বলবেন কি?
আমিঃ (এবার ভাল করে) কোন প্রবলেম নেই। এভ্রিথিং ইজ ওকে। আমার ল্যাপটপ ঠিক আছে, মডেম ঠিক অ্যান্ড মোবাইল ও ঠিক।
বাট ঠিক নেই শুধু আপনার নেট। কিছুই করতে পারছি না আমি।
দিল্লুঃ আসলে স্যার, , , , , ,
আমিঃ (সুযোগ না দিয়ে, একটু জোরে বললাম) কি বলবেন আপনি?? আমার মডেম নস্ট?? মোবাইল নস্ট?? অইদিন তো আরেকজন বলল ১২ টাকা না থাকলে নেট চলবে না। কই এখন তো আর টাকার প্রবলেম নেই। তাহলে সমস্যা কিসের বলুন?
দিল্লুঃ স্যার আপনার কনফিগারেশন একটু চেক করুন প্লিজ।
আমিঃ (এইবারও আমি পুরা শেষ, যদি পারতাম শালারে একটা বকা দিতে, , ) আরে রাখেন মিয়া, আমারে মূর্খ গাই বাছুর পাইছেন?? আমি কি ঘাস খাই মিয়া ফালতু? কি শিখাইবেন আপ্নে আমারে হ্যা? কনফিগারেশন মারান মিয়া হ্যা? (আমার আর কোন দিশা ঠিক নাই। )
এই দেশে যদি ব্যাবসা করার ইচ্ছা না থাকে তাইলে কন এখনি আপ্নের সিম ঠিল দিয়া নর্দমায় ফালায়া দেই। (একাটানা বলতে লাগলাম হেরে কোন সুযোগ দিয়া) আপ্নের চাইতে বহুত ভাল কোম্পানি আছে বাংলায়। আপ্নেগো এই নাম্বারটা সবাই জানে দেইহা এখনও রাখছি। নাইলে কবেই এইসব আগাছার বেইল আছিল না।
জত্তসব, , , ,
দিল্লুঃ স্যার আমি একটু বলি। (এইখানে থামলাম। দেখি শালায় কি কয়) আপনি একটা ছোট কাজ করুন, আপনার পিসির কুকিজ ক্লিন করুন, আশা করি ঠিক, , , ,
আমিঃ (এই কথা শুনার পর আমার তো মনে হইলো রাগের চোটে অজ্ঞান হইয়া জামু, চরমভাবে চিল্লাইয়া উঠলাম) অই মিয়া স্টুপিড থামো। (জি ভাই, সত্তিই তারে স্টুপিড কইছি, একবার না কয়েকবার) কইবার পারেন না আপ্নেগো নেটওয়ার্ক প্রবলেম। মিয়া ফাইজলামি মারান কাস্টমারের লগে?? আবার ফুটাঙ্গি মারাইয়া নাম পাল্ডাইছেন উয়ারিদ থেইকা এয়ারটেল।
আমার কচুডা কাটছেন না আপনেরা। ব্যাটা স্টুপিড কোনজায়গার। কন মিয়া আপ্নগো নেট এ প্রবলেম। আবার আমার পিসি ঠিক করবার কন না??
দিল্লুঃ (এইবার দিল্লু মিয়ার চেতন ফিরা আইলো) অহ, জি স্যার আমাদের নেট প্রবলেম। আসলে সারা দেশে কাজ চলছেতো তাই একটু সমস্যা হচ্ছে।
আমিঃ এই জনমে আর নেট ঠিক হইবো না। ফোন কাটেন। আমার টাকা কাটতেছে।
দিল্লুঃ (মিন মিনায়া কয়) স্যার আপনাকে আমি আর কোন ভাবে সহযোগিতা করতে পারি?
আমিঃ (চিল্লানি দিলাম আবার) মিয়া ফোন কাটেন কইতাছি।
টুট টুট টূট শেষ।
কাহিনিরে কাহিনী। পুরাই বাঙালি আমরা। যেমন আমগো দেশ। তেমন আমরা। শালার গুষ্ঠি কিলাই
কাহনিীটা আমার নয়, আসল কাহিনী এখানে ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।