আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এসপির মাথায় ঘোল না ঢেলে ঢাকায় গেলেন সেই মেয়র

এসপির মাথায় ঘোল না ঢেলে সদলবলে ঢাকা গেলেন মেহেরপুরের গাংনীর সেই বহুল আলোচিত মেয়র আহম্মদ আলী। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ সোমবার মেহেরপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শাহরিয়ার এবং গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিমল কৃষ্ণ মল্লিককে মাথায় ঘোল ঢেলে বিদায় করার কথা ছিল তাঁর। সেই সঙ্গে ছিল পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি। কিন্তু গভীর রাতে ওই কর্মসূচি বাতিল করে তাঁর বদলে আজ দলবল নিয়ে ঢাকায় চলে গেছেন মেয়র আহম্মদ আলী। মেয়র আহম্মদ আলীর ওই কর্মসূচি মোকাবিলায় পুলিশের প্রস্তুতি ছিল ব্যাপক।

রাতভর এই কর্মসূচি নিয়ে মেহেরপুর শহরে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে। মেয়রের কর্মসূচি সফল করতে প্রায় ৪০০ নছিমন, করিমন ও ইঞ্জিনচালিত গাড়ি ভাড়া করা হয়েছিল। শত শত লোক ব্যানার ও মিছিল নিয়ে এসপিকে ঘেরাও করার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব বাতিল করে দলবল নিয়ে ঢাকায় চলে গেলেন মেয়র আহম্মদ আলী। এ ব্যাপারে আহম্মদ আলী বলেন, ‘মাথায় ঘোল ঢেলে এসপিকে বিদায় করার বদলে এসপিকে বদলি করতে এখন নেতাদের নিয়ে ঢাকা এসেছি।

’ মেহেরপুর সদর থানার ওসি হাসান হাফিজুর রহমান বলেন, এসপি অফিস ঘেরাও কর্মসূচির নামে আওয়ামী লীগের একাংশ শহরকে অশান্ত করতে চেয়েছিল। তাই পুলিশ ওই কর্মসূচিতে বাধা দিতে খুলনা থেকে পুলিশ, র্যাব ও ম্যাজিস্ট্রেট এনেছিল। কিন্তু কর্মসূচি আহ্বানকারীরা পিছিয়ে যাওয়ায় পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি হয়নি। মেহেরপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গভীর রাতে মেহেরপুরের সহকারী পুলিশ সুপারের (সার্কেল) সঙ্গে তাঁর নেতৃত্বে দলের কয়েকজন নেতার দুই ঘণ্টার বৈঠক হয়। বৈঠকে পুলিশ মেহেরপুরের রিপন হত্যা মামলা সিআইডি থেকে পুলিশের কাছে হস্তান্তরের উদ্যোগ, আজিজুল হক হত্যা মামলার মূল আসামিদের তিন দিনের মধ্যে গ্রেপ্তার করার আশ্বাস দেন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। মেহেরপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) শাহেদ আকবর খান বলেন, গতকাল রোববার রাতে মেহেরপুর শহর আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে কর্মসূচির নেতিবাচক দিক এবং নেতাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা হয়। তাই এসপি অফিস ঘেরাও কর্মসূচি হয়নি। মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আবদুল মান্নান বলেন, দুর্নীতিবাজ নেতাদের আহ্বানে এসপি অফিস ঘেরাও কর্মসূচিতে গ্রামের কর্মীরা সমর্থন দেননি।

তাই মেয়র এসপির মাথায় ঘোল ঢেলে তাঁকে মেহেরপুর থেকে বিদায় করার কর্মসূচি থেকে সরে গেছেন। ঢাকায় অবস্থানরত মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (পিপি) মিয়াজান আলী বলেন, নিজেরা দুর্নীতি করে এসপির দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াটা খুবই হাস্যকর। তাই দলের মাঠপর্যায়ের কর্মীরা গাংনী মেয়রের কর্মসূচি প্রত্যাখ্যান করেছেন। প্রসঙ্গত, গত ৯ সেপ্টেম্বর গাংনী মেয়র শহরের ত্রিমোনী মোড়ে এক সমাবেশে ঘোষণা দেন, দুর্নীতির দায়ে এসপি ও ওসিকে ঘেরাও করে তাঁদের মাথায় ঘোল ঢেলে মেহেরপুর থেকে বিদায় করা হবে। নানা কারণে এই মেয়র বরাবরই আলোচিত।

তাঁর প্রধান বৈশিষ্ট্য তিনি শুধুই মারেন। কেউ তাঁঁর অবাধ্য হলে কিংবা সুপারিশ না শুনলে তাঁকেই মারেন। তাঁর হাতে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক, চিকিত্সক, শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা, নারীসহ এ পর্যন্ত প্রায় ১৯ জন গত এক বছরে মার খেয়ে হেনস্তা ও লাঞ্ছিত হয়েছেন। তাঁকে কেউ লৌহমানব কিংবা ফাটা কেষ্ট বলে ডাকলে তিনি খুশি হন। সূত্রঃ প্রথম আলো ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।