আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বদরনেতা মুজাহিদের ফাঁসি!!!

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা... ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় কৃত যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষনেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আজ বুধবার দুপুর একটার কিছুক্ষণ আগে বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে অপরাধ ট্রাইবুনাল-২ এ রায় দেন। মুজাহিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাতটির মধ্যে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। রায়ে বলা হয়েছে, প্রথম, তৃতীয়, পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। দ্বিতীয় ও চতুর্থ অভিযোগ প্রমাণ করতে পারে রাষ্ট্রপক্ষ।

মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, বুদ্ধিজীবী হত্যা ও গণহত্যা, লুণ্ঠন, অপহরণ, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন এবং এসব অপরাধে সহযোগিতা, প্ররোচনা, উস্কানি দেওয়াসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ৩৪টি ঘটনায় ৭টি অভিযোগের মধ্যে ৫টি অভিযোগই প্রমাণিত হয়। মুজাহিদের বিরুদ্ধে সাত অভিযোগ: মুজাহিদের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ: একাত্তরে ইত্তেফাক-এর তত্কালীন কার্যনির্বাহী সম্পাদক সিরাজুদ্দীন হোসেনকে অপহরণ ও হত্যা। দ্বিতীয় অভিযোগ: ফরিদপুরের হিন্দু-অধ্যুষিত তিনটি গ্রাম বৈদ্যডাঙ্গি, মাঝিডাঙ্গি ও বালাডাঙ্গিতে হামলা ও অর্ধশতাধিক হিন্দুকে হত্যার সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা। তৃতীয় ও চতুর্থ অভিযোগ হলো: ফরিদপুরের রথখোলা গ্রামের রণজিত্ নাথ ও গোয়ালচামট খোদাবক্সপুর গ্রামের মো. আবু ইউসুফকে নির্যাতন। পঞ্চম অভিযোগ অনুসারে: একাত্তরের ৩০ আগস্ট মতিউর রহমান নিজামীকে (জামায়াতের বর্তমান আমির) নিয়ে মুজাহিদ ঢাকার নাখালপাড়ার পুরোনো এমপি হোস্টেলে পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে যান।

সেখানে আটক সুরকার আলতাফ মাহমুদ, বদি, রুমি, জুয়েল, আজাদকে দেখে একজন পাকিস্তানি ক্যাপ্টেনকে বলেন, রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আগে এঁদের মেরে ফেলতে হবে। ওই সিদ্ধান্ত অনুসারে মুজাহিদ সঙ্গীদের সহযোগিতায় তাঁদের অমানবিক নির্যাতন করে হত্যা করেন। ষষ্ঠ অভিযোগ: মোহাম্মদপুরের ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে (বর্তমানে শারীরিক শিক্ষা কলেজ) পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে মুজাহিদ দলীয় নেতাদের নিয়ে বাঙালি নিধনের পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র করতেন। সপ্তম অভিযোগ:, একাত্তরের ১৩ মে পাকিস্তানি সেনা ও স্থানীয় রাজাকারদের নিয়ে মুজাহিদ ফরিদপুরের হিন্দু-অধ্যুষিত বাকচর গ্রামে হামলা চালান। সেখানে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

মুজাহিদের পরিচিতি: মুজাহিদের বিরুদ্ধে সাত অভিযোগ গঠনের আদেশে তাঁর পরিচিতিতে বলা হয়, ১৯৪৮ সালের ২ জানুয়ারি ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার পশ্চিম খাবাসপুর গ্রামে মুজাহিদ জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে ভর্তি হন। সেখানেই তিনি ইসলামী ছাত্রসংঘে (জামায়াতের তত্কালীন ছাত্রসংগঠন) যোগ দেন। ১৯৭০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। ওই বছর তিনি ঢাকা জেলা ছাত্রসংঘের সভাপতি এবং আগস্ট-সেপ্টেম্বরের দিকে তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রসংঘের সাধারণ সম্পাদক হন।

একাত্তরের অক্টোবরে তিনি ছাত্রসংঘের প্রাদেশিক সভাপতি ও আলবদর বাহিনীর প্রধান হন। ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও জয়লাভ করেননি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.