চলো এগিয়ে যাই নয় বছরের শিশুকে ২২ বছরের যুবক বানিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ সদর থানার পুলিশের উপপরিদর্শক শেখ আবদুল্লাহ। এই অপরাধে গতকাল বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জের আমল গ্রহণকারী বিচারিক হাকিম মো. আয়েজ উদ্দিন আগামী ১১ অক্টোবর শেখ আবদুল্লাহকে সশরীরে হাজির হওয়ার এই নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ জুন কিশোরগঞ্জ শহরের নগুয়ার মোড় এলাকায় মৃত আ. শহিদের ছেলে মো. মতিউর রহমান একই এলাকার রাজু, সেন্টু ও কাইয়ুমের বিরুদ্ধে চুরি করার চেষ্টার অভিযোগ এনে কিশোরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। এ মামলার এজাহারে কাইয়ুম, পিতা কুদ্দুস, সাং নগুয়া বাসস্ট্যান্ড, থানা ও জেলা কিশোরগঞ্জের নাম থাকলেও তার বয়স উল্লেখ ছিল না। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেখ আবদুল্লাহ অভিযোগপত্রে কাইয়ুমের বয়স ২২ উল্লেখ করেন।
১৪ জুন কাইয়ুম আদালতে হাজির হয়ে তার জন্মনিবন্ধন সনদসহ জামিন প্রার্থনা করে। জন্মনিবন্ধনে তার জন্মতারিখ ২০০২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি। জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী ঘটনার সময় তার প্রকৃত বয়স ছিল নয় বছর। এ বিষয়ে বিচারিক হাকিম ২৮ জুলাই নির্ধারিত তারিখে মামলার শুনানিতে বিচারক বিব্রতবোধ করে আদেশপত্রে লেখেন বিচারকাজকে বিব্রত করা হয়েছে এবং সঠিকভাবে মামলাটি তদন্ত করা হয়নি। এ ব্যাপারে আদেশে কারণ দর্শাতে বলা হয়।
এ খবর জানতে পেরে গতকাল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাটি অধিকতর তদন্তের আবেদন জানিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদন পাওয়ার পর আদালত তাঁকে ১১ অক্টোবর সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শাতে নির্দেশ দেন।
শিশুটির বাবা কদ্দুস মিয়া সাংবাদিকদের জানান, তাঁর শিশুপুত্রের প্রকৃত বয়স নয় বছর। ছেলেকে মামলার আসামি করায় তিনি অবাক হয়েছেন। গরিব মানুষ, তাই কোনো কিছু করার সামর্থ্য নেই তাঁর।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক শেখ আবদুল্লাহ মুঠোফোনে বলেন, ‘একটি হত্যা মামলার সাক্ষ্য দিয়ে ঢাকা থেকে ফিরছি। এ ব্যাপারে এই মুহূর্তে কথা বলা বা কোনো বক্তব্য দিতে পারছি না। ’
মামলার আইনজীবী আবদুস ছালাম জানান, পুলিশ যথাযথ তদন্ত না করায় বিচারপ্রার্থী জনগণ প্রায়ই বিভিন্ন মামলায় অযথা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
মানবাধিকার আইনজীবী জেসমিন আরা রোজী জানান, নয় বছরের শিশুকে মামলার আসামি করে অভিযোগপত্র দায়ের করা সম্পূর্ণ মানবাধিকার পরিপন্থী। কারণ, চুরির অপরাধও নয়।
চুরির চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। নয় বছরের শিশুকে কীভাবে ২২ বছরের যুবক বানানো হলো, তা খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কারণ, আইও পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।