এইসব ভালো লাগে... ১।
থ্রি টুর পশ্চাদ্দেশে লাথি শুরু হইয়াছে। পড়াশুনা শিকেয় ছিলো। ভাবিতেছি ঝাড়িয়া ঝুড়িয়া পাড়িয়া লইবো পাস করিবার নিমিত্ত। কিন্তু একি! রোজ রাতে আমার জানু-য়ারি সোনুর রুমে গিয়া ভীষণ শীত করিয়া আসিতো।
পড়া যত না হইতো খুনসুঁটি হইতো তার চৌদ্দগুন! শীত লাগা আর জ্বরো জ্বরো খেলা চলিলো চারিটি পরীক্ষা জুড়িয়া। শেষ পরীক্ষা ছিলো পানিসম্পদ এর হাইড্রোলজির উপরে। উহাতে আর পারিনা। শরীর পুরাই লাচার। জ্বর বাড়িয়া গেলো।
আমি সাত ফিট বাই ৩ ফিট বিছানায় শুইয়া কু কু করি। আর আমার বিভীষণ রুমমেট ফারহান পড়িয়া কোপাইয়া ফেলিতে লাগিলো। নাপা এক্সট্রা গিলিয়া কোনমতে কাম সারিলাম। পরদিন ই রওয়ানা হইলাম বাটি অভিমুখে। বাড়ি পৌঁছিয়াই না খাইয়াই আছড়াইয়া পড়িলাম বিছানায়।
সে রাতে বাসার কেউ বোঝেনাই আমার জ্বর কতখানি বাড়িয়া গিয়াছে। রাতে আধোঘুম আধোজাগরণে দেখিলাম আমি পলাশীর প্রান্তরে ধুতি পরিয়া বাঁশ লইয়া ইংরেজদের সাথে পানির জন্য যুদ্ধ করিতেছি! প্রচণ্ড তেষ্টাতে এমন স্বপ্ন-মাখা ঘোর অমূলক নয়। যুদ্ধে দেখিলাম পানি পানি করিয়া মারা যাইতেছি।
২।
পরদিন ১০৪ এ জ্বর ঠেকিলো কোথায় ২৭ রমজান, কোথায় কি নামাজ রোজা সবই গিয়াছে জ্বরের নিচে চাপা পড়িয়া।
মোবাইল অফ রাখিতাম, জগত হইতে বিচ্ছিন্ন। মনে পড়ে মহামহিম কে ডাকিয়া কহিতাম খালি এ যাত্রায় বাঁচাইয়া দাও দেখিয়ো আমি কেমন গোপাল হইয়া যাই! ডাক্তারি পরীক্ষায় টাইফয়েড ধরা পড়িলো। কড়া এন্টিবায়োটিক চলিল কদিন। সাথে ঢুস ও মারা হইতো জ্বর একশত পাঁচাপাঁচি করিতে লাগিলেই। তিনদিন চলিবার পর আবার এক ঘোরে স্বপ্ন দেখিলাম আমি কুরানের হেফজ হইয়াছি।
স্মরণ হইলো অতো জোরের স্মরণশক্তি আমার কোনোকালেই হয়নাই। এন্টিলজিক হিসেবে ছিলো মানুষকে তো সবি জানাইয়া দুনিয়াতে পাঠানো হইয়াছিলো সুতরাং হেফজ না করিয়াও জাতিস্মর হইয়া হেফজ হওয়া অসম্ভব নয়। ভ্রাতাকে ডাকিয়া কুরানের কোন এক সুরার কোন এক আয়াত আগে তিলাওয়াত করিয়া কইলাম মিলাইয়া দেখিতে। মিল তো দূরে থাক ধার দিয়াও গেলো না, আমার কামেল পীর হইবার সাধ জ্বরের তাপের সাথে বাষ্পীভূত হইলো। আমাকে দুনিয়াতে রাখিতে আমার চাচা, বাবা বরফযুক্ত ঠাণ্ডা পানির নহর মাথায় বহাইলেন, গাত্রে চিলতে ন্যাকড়া রাখিয়া সমস্তই মুছিতে লাগিলেন।
এক্তু মুছিয়া একটু থামিতেই জ্বর বাড়িয়া যাহা তাহাই হইয়া যাইতে লাগিতো।
৩।
ঠিক ঠিক সাতদিন পর অর্থাৎ ঈদ উল ফিতর ২০০৯ এর পরদিন জ্বর সারিয়া গেলো... এরপর হইতো শরীর দূর্বল, আর বমন আর সমানে দাস্ত। ইহা সারিতে আরো ৭দিন লাগিলো।
সারিয়া উঠিয়া কোথাকার কিসের পণ? আবার শেখ সাহেব হইয়া দুনিয়াতে পাপ কামাইতে লাগিলাম...
উৎসর্গ করিতেছি ইয়াফিকে।
দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক সে। আমিন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।