বাংলাদেশের প্রয়াত অভিনেতা ওয়সিমুল বারি রাজীব এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, "আমি অভিনেতা হিসেবে বলছি, শেখ হাসিনার মতো অভিনয় আমি এখনও করতে শিখিনি"। তিনি ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের আগে হজ্ব শেষে মাথায় বড় পট্টি লাগিয়ে হাতে তসবি হাতে শেখ হাসিনা যে অভিনয়টি করেছিলেন, সে প্রসঙ্গে এ কথার অবতারণা করেছিলেন। রাজীব বলেছিলেন, সেক্যুলার রাজনীতিবিদ কখনও এমন আচরণ করতে পারেন না, এটি নিছক অভিনয়।
ভারতের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এর আসন্ন ঢাকা সফর উপলক্ষে নানা ধরনের খবর, বিশ্লেষণ ও গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ প্রকাশিত হচ্ছে গণমাধ্যমে।
তিস্তা নদীর পানি বন্টনসহ নানা বিষয়ে ওই সফরে চুক্তি হবে এবং চুক্তি স্বাক্ষরের সময় উপস্থিত থাকবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
এমনকি গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, মমতা বলেছেন, শেখ হাসিনা তার পুরনো বন্ধু। এমনকি তারা যখন কেউই ক্ষমতায় ছিলেন না, তখনও তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা ছিল। কাজেই সেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের টানে (?) মমতা ছুটে আসবেন ঢাকায়।
সেই মমতাই এখন বেঁকে বসেছেন। বলেছেন, তিস্তার পানি (জল) নাকি বাংলাদেশকে বেশি দিয়ে দেয়া হচ্ছে! আহারে রাজনীতি!? আহারে অভিনয়?!
Click This Link
ইতিহাসে এসব ঘটনা স্বাক্ষী হয়ে থাকবে।
হয়তো এখন থেকে ৫০ বা ১০০ বছর পর, অথবা ৫০০ বছর পর ফাঁস হবে, কি অভিনয়টা করলেন হাসিনা ও মমতা মিলে!
কী প্রয়োজন ছিল, দু'দিন আগে আহলাদিত কণ্ঠে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা বলার, আর এখন তিস্তার অজুহাত তুলে ঢাকা সফর বাতিল করার? তিস্তা চুক্তিতে কি থাকবে আর কি থাকবে না, তা তো আজ বা গতকালের কথা নয়। অনেক আগেই নির্ধারিত হয়েছে। এমনকি মনমোহন সিং মমতার সঙ্গে গত সপ্তাহে যখন সাক্ষাত করেন, তখনই তাকে জানিয়ে দেয়া হয়, তিস্তার পানি কোন দেশ কতটা পাবে এবং তারপরই মমতা ঢাকায় আসার তীব্র আগ্রহ প্রকাশ করেন।
কারণ, বিবিসি'র বরাত দিয়ে গত শনিবার ঢাকার অধিকাংশ পত্রিকায় ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিব শঙ্কর মেননের একটি বক্তব্য ছাপা হয়, যেখানে মেনন বলেছেন, ভারত এখন তিস্তা নদীর পানি নেয় ৩৯ শতাংশ (তার মানে চুক্তি ছাড়াই বাংলাদেশ পাচ্ছে ৬১ শতাংশ) । বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি হলে ভারত পাবে ৭৫ শতাংশ আর বাংলাদেশ পাবে ২৫ শতাংশ।
Click This Link
রাজনীতিবিদরা সব সময় দেশের জনগণকে গাধা মনে করেন। আমাদের দুই দেশের নেতানেত্রীরা বোঝালেন, তারা যে অভিনয়টা করলেন, তা কেউ বোঝেনি।
এখন আমাদের নেত্রী গলা ফাটাবেন- "দেখুন, আমরা কতটা আদায় করেছি ভারতের কাছ থেকে। এত বেশি আদায় করেছি যে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছেন"।
মমতা যতই অভিনয় করুন না কেন, তিনি কিন্তু একটি সঠিক কথা বলেছেন- 'শেখ হাসিনার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে'।
সেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক অব্যাহত রাখার স্বার্থেই তিনি শেখ হাসিনার একটি অনুরোধ রক্ষা করেছেন তিস্তার পানি কম পাওয়ার অজুহাত তুলে বাংলাদেশ সফর বাতিল করে।
ধন্য অভিনেত্রী মমতা ব্যানার্জি। ধন্য শেখ হাসিনা। জয় বাংলা, জয় হিন্দ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।