সরকার এবং দেশি-বিদেশি মহলের প্রশ্রয়ধন্য শাহবাগি আন্দোলন বাংলাদেশের ৫৬ হাজার বর্গমাইলে প্রয়োজনীয় এক প্রবল ঝাঁকুনি দিয়ে অভূতপূর্ব সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সূচনা করেছে। আন্দোলনের নামে পিকনিকের উদ্যোক্তারা শুধু এ কারণেই আমাদের কাছ থেকে অবশ্যই ধন্যবাদ দাবি করতে পারেন। গত সপ্তাহের মন্তব্য প্রতিবেদনে স্বাধীন বাংলাদেশকে পুনরায় পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী ৪২ বছর ধরে পরিচালিত ভারতীয় ও পশ্চিমবঙ্গীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের গতি-প্রকৃতি নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছিলাম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক, বিশিষ্ট পণ্ডিত এডওয়ার্ড সাইদ তার Culture and Imperialism বইতে সংস্কৃতি ও সাম্রাজ্যবাদ সম্পর্কে বলেছেন, There is in all nationally defined cultures, I believe, an aspiration to sovereignty, to sway, and to dominate. (আমার বিশ্বাস, প্রতিটি জাতীয়তাবোধসঞ্জাত সংস্কৃতির মধ্যে সার্বভৌমত্বের আকাঙ্ক্ষা থাকে যা একাধারে প্রভাবিত এবং কর্তৃত্ব করার বাসনা পোষণ করে। ) এডওয়ার্ড সাইদ জেরুজালেমে জন্মগ্রহণকারী, খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী ছিলেন।
এবং পরবর্তী জীবনে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে লেখাপড়া ও অধ্যাপনা করেছেন। প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের মধ্যকার সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্বের স্বরূপ বিশ্লেষণের কাজটি ভিন্ন সংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠা, অনন্য মেধাসম্পন্ন এডওয়ার্ড সাইদ অনবদ্যভাবে করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
একবিংশ শতাব্দীর বিশ্বায়নের পটভূমিতে ভিনদেশের সংস্কৃতির মিলেমিশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় এক দেহে লীন হওয়ার সুযোগ ও সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেলেও মানুষের কর্তৃত্ব করার আদিম আকাঙ্ক্ষার অদ্যাবধি নিবৃত্তি হয়নি। সংস্কৃতির আধিপত্যবাদী ও দ্বান্দ্বিক চরিত্রও মানুষের সেই আকাঙ্ক্ষা থেকেই উদ্ভূত হয়েছে। বাংলাদেশের চিহ্নিত অতি-ধর্মনিরপেক্ষ (Ultra-secular), ভারতপ্রেমিক গোষ্ঠী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে প্রায় দেবতাজ্ঞানে পূজা করে থাকেন।
বাংলা ভাষার কবিদের মধ্যে তিনি আমারও অত্যন্ত প্রিয়। তার পুরস্কার কবিতাটিকে অতি সামান্য ভাষা ও কাব্যজ্ঞানে আমি যে কোনো ভাষার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবিতা রূপে বিবেচনা করি। কিন্তু ওই পর্যন্তই। আমার কাছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মর্যাদা বাংলা সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত একজন অসামান্য কবির ঊর্ধ্বে নয়। সেই রবীন্দ্রনাথের দু’টি কবিতা থেকে অংশবিশেষ উদ্ধৃত করলেই পাঠক এডওয়ার্ড সাইদের ব্যাখ্যা অনুসারে সংস্কৃতির মাধ্যমে অন্যের ওপর প্রভুত্ব করার মানবমনের আগ্রাসী বাসনার খানিকটা হয়তো উপলব্ধি করবেন।
ভারতের জাতীয় সঙ্গীত তারই ভারতবিধাতা কবিতা থেকে নেয়া হয়েছে। সেই কবিতায় বিশ্বকবি বলছেন,
হিন্দু বৌদ্ধ শিখ জৈন পারসিক মুসলমান খৃষ্টানী
পূরব পশ্চিম আসে তব সিংহাসন-পাশে
প্রেমহার হয় গাঁথা।
অর্থাত্ তার কল্পনার ভারতবর্ষ সব ধর্ম ও অঞ্চলের মানুষের মধ্যে প্রেমের বন্ধন সৃষ্টির মাধ্যমে এক শান্তির আবাসভূমি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। এখানে সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মানবদরদী বিশ্বকবিকে খুঁজে পেতে আমাদের সমস্যা হচ্ছে না। অথচ, সেই একই কবি শিবাজী উত্সব কবিতায় পাঠকের সামনে সম্পূর্ণ ভিন্ন মতাদর্শের ব্যক্তি রূপে আবির্ভূত হয়েছেন।
তিনি লিখছেন,
সেদিন শুনি নি কথা—আজ মোরা তোমার আদেশ
শির পাতি লব।
কণ্ঠে কণ্ঠে বক্ষে বক্ষে ভারতে মিলিবে সর্বদেশ
ধ্যানমন্ত্রে তব।
ধ্বজা করি উড়াইব বৈরাগীর উত্তরীবসন
দরিদ্রের বল।
‘এক ধর্মরাজ্য হবে এ ভারতে’ এ মহাবচন
করিব সম্বল।
শিবাজী উত্সব কবিতায় রবীন্দ্রনাথ সব ধর্মের মানুষের রাষ্ট্রের পরিবর্তে ভারতকে ‘এক ধর্মরাজ্যে’ পরিণত করতে ব্যাকুল।
এই কবিতাটি লেখা হয়েছিল বঙ্গভঙ্গ রদ আন্দোলনের কয়েক মাস আগে, অর্থাত্ ১৯০৪ সালে। হিন্দু সাম্প্রদায়িকতা যখন পশ্চিমবঙ্গকে গ্রাস করেছে, সেই সময় কলকাতার বর্ণহিন্দু নেতৃবর্গ প্রথমবারের মতো মারাঠা অঞ্চলের অনুকরণে সেখানে শিবাজী উত্সব পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতাটি সেই অনুষ্ঠান উপলক্ষেই বিশেষভাবে লেখা হয়েছিল। কেবল শিবাজী উত্সব কবিতাতেই নয়, হোরিখেলা ও বন্দীবীর কবিতার লেখক ব্রাহ্ম ধর্মাবলম্বী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতে এক ধর্মরাজ্য তথা হিন্দু রাজ্য প্রতিষ্ঠার পক্ষেই প্রচারকের ভূমিকা নিয়েছেন। একমাত্র শা-জাহান কবিতা ছাড়া তার কবিতা, গল্প, উপন্যাসে উল্লেখ করার মতো কোনো মুসলমান চরিত্র আমি অন্তত খুঁজে পাইনি।
অথচ তিনি জমিদারি করেছেন মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্ববঙ্গে। হয়তো কবি হওয়া সত্ত্বেও একজন জমিদারের দৃষ্টিতে মুসলমান প্রজাকে তিনি মানুষ হিসেবে দেখতে পাননি। বিশ্বকবির রচনা থেকেই বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতও গ্রহণ করা হয়েছে। গত সপ্তাহেই লিখেছি সেই গানখানিও প্রকৃতপক্ষে পূর্ববঙ্গের বিরোধিতা করেই রচিত হয়েছিল। জাতীয় সঙ্গীতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণকালে সম্ভবত আবেগের আতিশয্যে আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবর্গ সেসব ইতিহাস বিস্মৃত হয়েছিলেন।
যাই হোক, সংস্কৃতির যে আধিপত্যবাদী চরিত্রের কথা এডওয়ার্ড সাইদ তার গ্রন্থে লিখেছেন, তারই প্রাসঙ্গিক উদাহরণ হিসেবেই রবীন্দ্রনাথের কবিতা নিয়ে আমার এই আলোচনা।
বাংলাদেশের চলমান সাংস্কৃতিক বিপ্লবের কথায় ফিরে আসি। শাহবাগ আন্দোলনের প্রথম দুই সপ্তাহে কথিত প্রজন্ম চত্বরে সর্বক্ষণ বাঙালিত্বের জয়গান করা হয়েছে। তাদের স্লোগান ও প্রচারণার ধরনে মনে হয়েছে, পাকিস্তানি আমলের ধাঁচে বাংলাদেশে নতুন করে বাঙালি জাতির সঙ্গে অন্য কোনো ভাষাভিত্তিক জাতিগোষ্ঠীর লড়াই সংগ্রাম বোধহয় শুরু হয়েছে। সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন উত্থাপিত হতে পারতো শাহবাগি চেতনার আলোকে চাকমা, মারমা, গারো, সাঁওতাল ও বাংলাদেশের অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অবস্থান কোথায় থাকবে।
তবে কোনো মিডিয়াই এমন বেয়াড়া প্রশ্ন করার প্রয়োজন বোধ করেনি। আমার দেশ এবং আর দু-একটি হাতে গোনা পত্রিকা ছাড়া দেশের সব ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া শাহবাগজ্বরে কমপিটিশন দিয়ে প্রায় এক মাস ধরে থরথর করে কেঁপেছে। বস্তুনিষ্ঠতা শব্দটি অভিধান থেকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে এক একটি টেলিভিশন ও প্রিন্ট মিডিয়া কমপক্ষে অর্ধডজন থেকে এক ডজন সাংবাদিক, ফটো সাংবাদিক সেখানে সার্বক্ষণিক রাখার বন্দোবস্ত করেছে। বিশাল সব ক্রেন দিয়ে আকাশে ক্যামেরা ওঠানো হয়েছে, বিনে পয়সায় শাহবাগিদের মধ্যে বিশেষ আদর্শের পত্রিকা বিলি করা হয়েছে, বিভিন্ন মিডিয়া হাউস এবং শেয়ারবাজার লুটেরা ভূমিদস্যুদের কোম্পানি থেকে বেহিসাব বিরিয়ানি ও অন্যান্য খাদ্য-পানীয়ের প্যাকেট গেছে, সে এক এলাহি বন্দোবস্ত!
এমনও অনেক সময় গেছে যখন ব্লগার, আওয়ামী ও বাম সংগঠনগুলোর মিলিত জমায়েতের জনসংখ্যার চেয়ে উপস্থিত মিডিয়াকর্মীদের সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি থেকেছে। অভূতপূর্ব গণজাগরণের নামে এই হাস্যকর নাটক চলাকালে কাঁপা কাঁপা গলায় যতখানি আবেগ আনা সম্ভব, প্রাণান্তকর চেষ্টায় তার চেয়েও বেশি আবেগ ঢেলে টেলিভিশনে দিন-রাত ধারাবিবরণী চলেছে।
ওখানে কে যে সাংবাদিক আর কে শাহবাগি অ্যাক্টিভিস্ট, সাধারণ দর্শকের পক্ষে সেটা বুঝবার পর্যন্ত কোনো উপায় ছিল না। ভারতীয় সংস্কৃতির পূজারি সাংবাদিকের ছদ্মাবরণে সেসব অ্যাক্টিভিস্ট এখন অবশ্য কেটে পড়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর ইরাক আগ্রাসনের সময় আক্রমণকারীদের পক্ষাবলম্বনকারী তথাকথিত embedded journalism-এর বাংলাদেশী রূপ আমরা দেখেছি শাহবাগের মঞ্চে।
এরই মধ্যে আওয়ামী নেতাকর্মীদের প্ররোচনায় ও নেতৃত্বে জেলায় জেলায় ভিন্নমতের পত্রিকা পোড়ানোর উত্সব চলেছে। ঢাকায় নয়া দিগন্ত পত্রিকা অফিসে আগুন দেয়া হয়েছে এবং চট্টগ্রামে আমার দেশ ও দিগন্ত টেলিভিশনের আঞ্চলিক কার্যালয়ে পুলিশের চোখের সামনে সরকারি দলের নেতাকর্মীরা তাণ্ডব চালিয়ে পুরো অফিস ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।
পত্রিকা সম্পাদনা ও লেখালেখিতে স্বাধীন মত প্রকাশের অপরাধে আমাকে প্রথমে খতমের ঘোষণা এবং পরবর্তীতে একাধিকবার গ্রেফতারের আলটিমেটাম দেয়া হয়েছে। জনমনে ধারণা জন্মেছে শেখ হাসিনার বাংলাদেশে আল্লাহ, রসুল (সা.), ইসলামের বিরুদ্ধে যত ইচ্ছা অশ্লীল বিষোদ্গার করতে কোনো সমস্যা নেই; কিন্তু শাহবাগিদের সম্পর্কে একটি নেতিবাচক বাক্যও কোথাও লেখা অথবা উচ্চারণ করলে খবর আছে। টেলিভিশন এবং সংবাদপত্রে প্রচারণার মাত্রাজ্ঞান দর্শনে দেশবাসীর ভিরমি লাগার জোগাড় হয়েছে। শাহবাগ এবং শেখ হাসিনার অন্ধ সমর্থক এক দালাল শ্রেণীর পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠার পুরোটা জুড়ে মোমবাতি হাতে তরুণ-তরুণীদের ঢাউস ছবি দেখার বিরল সৌভাগ্যে আন্দাজ করছি, পত্রিকাটির পাঠককুল বিশেষভাবে পুলকিত হয়েছেন! আমার জানামতে, বাংলাদেশের ৪২ বছরের ইতিহাসে কোনো জাতীয় পত্রিকায় কোনো ইস্যু নিয়ে এ ধরনের আদেখলামি দেখার সুযোগ কখনও ঘটেনি।
অবশ্য কেবল একটি পত্রিকার মাত্রাজ্ঞানের সমালোচনা করলে অন্যায় হবে।
একই ইস্যু নিয়ে দিনের পর দিন অন্তত এক ডজন পত্রিকায় ৭-৮ কলামব্যাপী লিড স্টোরি ছাপা হওয়া এদেশের সংবাদপত্রের ইতিহাসে নিঃসন্দেহে এক অদ্ভুত নজির স্থাপন করেছে। দেশের অধিকাংশ নাগরিকেরই বদ্ধমূল ধারণা—একটি বিশেষ রাষ্ট্রের দূতাবাস, সরকার এবং মিডিয়ার যৌথ পরিকল্পনাতেই শাহবাগ সৃষ্টি করা হয়েছিল। মিডিয়ার একতরফা প্রচারে দেশবাসী তো বটেই, এমনকি প্রধান বিরোধী দল পর্যন্ত বিভ্রান্ত বোধ করেছে। এই নজিরবিহীন সর্বব্যাপী সাংস্কৃতিক আগ্রাসনকে কেবল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির blitzkrieg (ব্লিত্সক্রিগ)-এর সঙ্গে তুলনা করা চলে। সেই বিশ্বযুদ্ধের প্রথম বছরে জার্মানির বিদ্যুত্গতির সামরিক কৌশলের কাছে পুরো ইউরোপ পরাজিত হয়েছিল।
বাংলাদেশের ব্লিত্সক্রিগে সৌভাগ্যক্রমে অবশ্য গুলি, বোমা ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়নি। মারণাস্ত্রের পরিবর্তে পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে এবং টেলিভিশনের পর্দায় চালানো হয়েছে ভারতীয় সংস্কৃতির বীভত্স ঝটিকা আক্রমণ।
সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের এদেশীয় দালাল মিডিয়া পরিচালিত ব্লিত্সক্রিগের সামনে দৈনিক আমার দেশ প্রায় একাকী পাঠককে বস্তুনিষ্ঠভাবে প্রকৃত অবস্থা জানানোর যথাসম্ভব চেষ্টা করেছে। রাষ্ট্র ও জনগণের প্রতি দায়িত্ব বোধ থেকেই আমরা এক অসম লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছিলাম। ভিন্নমতের এক দীনহীন পত্রিকার ঔদ্ধত্যে কুপিত হয়ে চিহ্নিত সব মিডিয়া মালিক এবং সম্পাদককুল আমাকে গ্রেফতার এবং আমার দেশ-এর কণ্ঠরোধের সর্বপ্রকার ষড়যন্ত্রে শামিল হয়েছে।
কিন্তু ন্যায়যুদ্ধে মহান আল্লাহ আমাদের সহায় ছিলেন। ঘটনার একপর্যায়ে ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখে চরম ইসলামবিদ্বেষী ব্লগার রাজীব অজ্ঞাত খুনিদের হাতে নিহত হয়েছে। এরপর তার ব্লগের সব অশ্লীল পোস্ট সংক্রান্ত ঘটনাবলি জনসমক্ষে এসেছে। সেসব পোস্টে আমাদের মহানবী (সা.) সম্পর্কে যেসব কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য পাওয়া গেছে, ইসলাম ও তার নবীর বিরুদ্ধে এর সমতুল্য নোংরা আক্রমণ আজ পর্যন্ত পৃথিবীর কোথাও দেখা যায়নি।
রাজীবের অপকর্ম প্রমাণিত হওয়ার পর তার অন্যান্য শাহবাগি সঙ্গী-সাথীদের চরিত্রও ক্রমান্বয়ে উন্মোচিত হয়েছে।
আওয়ামী সরকার বরাবরের মতোই পুরো বিষয়টিকে মিথ্যা অপপ্রচার বলে উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে। ধর্মদ্রোহী রাজীবকে কথিত দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ আখ্যা দিয়ে সংসদে এবং সংসদের বাইরে প্রকৃত শহীদদের চূড়ান্ত অসম্মান করা হয়েছে। বিমূঢ় জনগণের সংবিত্ ফিরে পেতে খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়নি। দেশের সম্মানিত আলেমবৃন্দ বিশেষত হাটহাজারী মাদরাসার প্রাণপুরুষ আল্লামা শফী নব্বই বছর বয়সে রসুল (সা.)-এর মর্যাদা রক্ষায় আওয়াজ তুলেছেন, রোগাক্রান্ত, অশক্ত শরীর নিয়েও মাঠে নেমেছেন। আলেমদের দায়িত্ব যে কেবল প্রতিদিন পাঁচওয়াক্ত এবং জুমার নামাজ পড়ানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধে চরম অবক্ষয় নেমে এলে জনগণকে সঠিক পথে প্রত্যাবর্তন করানোর ক্ষেত্রেও যে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে, সেটা জাতিকে আল্লামা শফী পুনরায় স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
কিছুসংখ্যক মোনাফেক ছাড়া বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মপ্রাণ মুসলমান আল্লামা শফীর নেতৃত্বে হেফাজতে ইসলামের আহ্বানে সাড়া দিয়ে জেলায় জেলায় প্রতিবাদ বিক্ষোভের আয়োজন করেছেন। চট্টগ্রামের প্রকৃত গণজাগরণ দ্রুততম সময়ে সারাদেশে ব্যাপৃত হয়েছে। ইসলামবিদ্বেষী মহাজোট সরকারের বাঙালিত্ব এবং ইসলামকে পরস্পরের প্রতিপক্ষ রূপে দাঁড় করানোর চার বছরের অপচেষ্টা শাহবাগকে কেন্দ্র করে চূড়ান্ত সাফল্যের একেবারে দ্বারপ্রান্তে এসেও দেশপ্রেমিক, ধর্মপ্রাণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত গণপ্রতিরোধে পরাজিত হয়েছে।
২০০৮ সালের নির্বাচনে বিস্ময়কর জয়লাভ করার পর থেকেই ক্ষমতাসীন মহলের কর্তাব্যক্তিরা বিদেশি প্রভুদের ইন্ধনে ইসলামের বিরুদ্ধে ক্রমাগত আক্রমণ শানিয়েছে। সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের শীর্ষ নেতা মেজর জেনারেল (অব.) কেএম শফিউল্লাহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অপব্যাখ্যা করে বলেছেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নাকি বিসমিল্লাহ, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম এবং ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিরুদ্ধে সংঘটিত হয়েছে।
বর্তমান সরকারের মন্ত্রী এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা অব্যাহতভাবে ইসলামকে আক্রমণ করে বক্তব্য রেখেছেন। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম অসংকোচে সাংবাদিকদের কাছে বলেছেন, তিনি হিন্দু বা মুসলিম কোনো ধর্মাবলম্বীই নন। এই সরকারের আমলে পবিত্র কোরআন শরিফের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করার মতো ধৃষ্টতাও দেখানো হয়েছে। সংবিধান থেকে অবলীলাক্রমে আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে শতকরা অন্তত ৮৫ ভাগ মুসলমান জনগোষ্ঠীর দেশে অনেক আগেই যে গণবিক্ষোভ দানা বেঁধে ওঠা উচিত ছিল, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতৃত্বের দুর্বলতায় সেটি হয়নি।
জনগণের এই দুর্বলতা দৃষ্টে সরকার সম্ভবত ধরে নিয়েছিল যে, এদেশে ইসলামের চেতনা চিরতরে নির্বাপিত হয়েছে এবং বাঙালিত্বের নামে ভারতীয় ও পশ্চিমবঙ্গের চূড়ান্ত সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চালানোর এটাই প্রকৃষ্ট সময়। আগ্রাসনের এই চূড়ান্ত পর্যায়ে বাংলাদেশ পরাজিত হলে এদেশে কেবল ইসলাম ধর্মই নয়—আমাদের রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতাও অবধারিতভাবে বিপন্ন হয়ে পড়তো। প্রবল পরাক্রান্ত শত্রুপক্ষের বিরুদ্ধে সংগ্রামে পরাজয়ের সমূহ আশঙ্কা আছে জানা সত্ত্বেও আমার দেশ ৪২ বছর দেরিতে হলেও আল্লাহর ওপর ভরসা করে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের ডাক দেয়ার সাহস করেছে। আমাদের পত্রিকার স্লোগান, ‘আমার দেশ স্বাধীনতার কথা বলে’ শুধু যে কথার কথা নয়, সেটি প্রমাণ করতে এখানে কর্মরত সাংবাদিকরা সমবেতভাবে ঝুঁকি নিয়েছেন।
দেশের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ, আলেম সমাজ এবং আমার দেশ পত্রিকার ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ অবশেষে ধর্মদ্রোহীদের ভীতসন্ত্রস্ত করতে সক্ষম হয়েছে।
যে শাহবাগ চত্বরে দিনের পর দিন ইসলামকে হেয় করা হয়েছে, জবাই ও ফাঁসি ছাড়া অন্য কোনো স্লোগান ওঠেনি, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বন্ধের দাবি উঠেছে, সেই একই স্থানে মাত্র সপ্তাহ দুয়েকের ব্যবধানে আজান ও নামাজের বিরতি দেয়া হয়েছে, কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়েছে। সেই থেকে প্রতিটি অনুষ্ঠানের শুরুতেই শাহবাগি নেতাদের বলতে হচ্ছে যে তারা নাস্তিক কিংবা ইসলামবিরোধী নয়। বিরূপ জনমত সপক্ষে আনতে কথিত আধুনিক, সেক্যুলার তরুণ প্রজন্মের জমায়েতের মাঝখানে হঠাত্ করে টুপি-দাড়িঅলা বৃদ্ধ ও তরুণ এবং হেজাব পরিহিত নারীদের আমদানি করতে হয়েছে। মতিঝিলের এক অনুষ্ঠানে তো রীতিমত ওয়াজ করা হয়েছে বলে লোকমুখে শুনেছি। ঘাদানিক নেতা শাহরিয়ার কবির পর্যন্ত সরকারপন্থী হুজুরদের হঠাত্ গজিয়ে ওঠা সংগঠন আশেকিনে আউলিয়া ঐক্যপরিষদ বাংলাদেশ-এর সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে নব্য আশেকিন সেজেছেন।
শাহবাগি আন্দোলনের একপর্যায়ে স্পিকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে যে ছয় দফা দাবিনামা পেশ করা হয়েছিল, তার তিন নম্বরে পরিষ্কারভাবে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বন্ধের কথা বলা হলেও এখন কথিত দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধের ‘জাতির পিতা’ রাজাকার বংশোদ্ভূত ইমরান সরকার পিছু হটে বলছেন যে, তারা নাকি কখনও ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিপক্ষে নন। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে অর্থমন্ত্রী মাল মুহিতও সম্প্রতি সিলেটে বলেছেন, সংবিধানে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের বিধান নেই। ক’দিন আগপর্যন্ত ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের একজন প্রবল সমর্থক মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানও এখন সরকারের সুরেই গান গাইবার কসরত করছেন।
বর্তমান সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত শোলাকিয়ার ইমাম, আওয়ামীপন্থী বিতর্কিত আলেম মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদ পর্যন্ত নাস্তিকদের সাজা প্রদানের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছেন। অথচ এই মাওলানাই কিছুদিন আগে শাহবাগিদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে রাজীবের মতো ধর্মদ্রোহী, নষ্ট তরুণের জন্য দোয়া করে এসেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নবাণের মুখে তার দ্বিমুখী চরিত্রের পক্ষে দুর্বল, ক্রুদ্ধ সাফাইগুলো করুণা ও হাস্যরসের উদ্রেক করেছে। আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন আওয়ামী ওলামা লীগ শাহবাগিদের প্রধান নেতা ব্লগার ইমরানসহ সব নাস্তিক তরুণের বিচারের দাবি নিয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করতে বাধ্য হয়েছে। সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের দালালদের এই ভোল পাল্টানোর ব্যর্থ চেষ্টার মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সাংস্কৃতিক বিপ্লবের প্রাথমিক বিজয় অর্জিত হয়েছে।
শাহবাগি নেতৃত্ব এবং ভারতীয় ও মার্কিন স্বার্থের ধ্বজাধারী মিডিয়ার কর্তাব্যক্তিরা যখন সমস্বরে আমাকে খতম ও গ্রেফতারের হুংকার দিচ্ছিলেন, তখন নিজ অফিসে অবরুদ্ধ থেকে সংবাদ সম্মেলনে আমি জোরের সঙ্গে বলেছিলাম, বাংলাদেশের সাধারণ খেটে খাওয়া, বিশ্বাসী মানুষ যে অনন্যসাধারণ সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সূচনা করেছেন, তা অপ্রতিরোধ্য। আমার গ্রেফতার এমনকি হত্যাও সেই বিপ্লবের বিজয়ের সামনে বাধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।
আমার দেশ যে আদর্শের কথা প্রচার করছে, বাংলাদেশের অন্তত তিন-চতুর্থাংশ জনগণ মনেপ্রাণে সেই আদর্শকেই ধারণ করেন। রাজধানীর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভরকেন্দ্র থেকে অনেক দূরে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দরিদ্র মানুষগুলোর অবস্থান হলেও আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাসে বলীয়ান এবং ব্যক্তিজীবনে সত্ জীবনযাপনকারীদের পরাভূত করা বিদেশি শক্তির পদলেহনকারী কোনো দুর্নীতিপরায়ণ জালিম শাসকশ্রেণীর পক্ষেই যে সম্ভব হয় না, তার প্রমাণ ইতিহাসের পাতায় পাতায় ছড়িয়ে আছে। আমাদের মহানবী (সা.) আরবের সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করলেও সারা জীবন বঞ্চিতদের হক আদায়ের লক্ষ্যে লড়াই করেছেন। বিদায় হজের ভাষণেও প্রকৃত মুসলমানদের প্রতি জীবনযাপনের যে দিকনির্দেশনা তিনি দিয়ে গেছেন সেখানেও কালো-সাদা, আরব-অনারব, ধনী-গরিবের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ রাখেননি। সাম্যের ধর্ম ইসলামে তাই জাত-পাতের কোনো স্থান নেই।
হাজার বছর ধরে ইসলাম ধর্ম বাংলাদেশের জনগণের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে রয়েছে। ইসলামের সেই সাম্য ও ইনসাফের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়েই পাকিস্তানি পুঁজিপতি ও তাদের রক্ষক জালিম সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলাম। মুক্তিযুদ্ধ ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ছিল—এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য কোনো মুসলমানের পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়। বাংলাদেশের বর্তমান জুলুমবাজ সরকারও পাকিস্তানি শাসকদের মতোই সাধারণ জনগণের ওপর শোষণ ও নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে।
পাকিস্তানিরা আমার মায়ের ভাষা বাংলা ভুলিয়ে আমাদের ওপর উর্দু চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল।
দিল্লির তাঁবেদাররা প্রায় অভিন্ন কৌশলে দীর্ঘদিন ধরে ইসলাম ভুলিয়ে এদেশের জনগণের ওপর সেক্যুলারিজম চাপানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশের নিজস্ব সংস্কৃতিতে ইসলাম এবং বাংলা উভয়ই যার যার অবস্থানে অটল রয়েছে। সেই বৈশিষ্ট্যপূর্ণ সাংস্কৃতিক পরিচয় নিয়েই আমরা জাতি হিসেবে বিকশিত হবো, বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবো। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা যেমন করে বিজয়ী হয়েছিলাম, ইনশাল্লাহ ২০১৩ সালের সাংস্কৃতিক লড়াইয়েও এদেশের কৃষক, শ্রমিকসহ মেহনতি জনগণই জয়লাভ করবে। তবে কুচক্রিদের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সবার সার্বক্ষণিকভাবে সজাগ থাকা আবশ্যক।
সরকারি এজেন্ট প্রবেশ করিয়ে আলেম-ওলামাদের মধ্যে ভাঙন ধরানোর অপচেষ্টা ইতোমধ্যেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টায় সরকার ও ভারতপন্থী হুজুররাও তাদের তত্পরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, শাহরিয়ার কবির গং যুগের পর যুগ ধরে ইসলামি আদর্শ ও চিন্তা-চেতনার সর্বাত্মক বিরোধিতা করে এখন অবস্থা বেগতিক বুঝতে পেরে ভোল পাল্টানোর চেষ্টা করছে। তারা হঠাত্ নিজেদের মুসলমান দাবি করার প্রয়োজনীয়তা বোধ করলেও আজ পর্যন্ত মহানবী (সা.) ও ইসলামের বিরুদ্ধে কুত্সা রটনাকারী ব্লগারদের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি কিংবা তাদের অপকর্মের নিন্দা জানাননি। এমন ব্যক্তি কী করে প্রকৃত মুসলমান হতে পারে, যার অন্তর মহানবী (সা.) এবং ইসলামের বিরুদ্ধে কুত্সা শুনেও ব্যথিত ও ক্রুদ্ধ হয় না?
এদের সম্পর্কেই আল্লাহতায়ালা পবিত্র গ্রন্থ কোরআন শরিফের সুরা আল বাক্কারাহ্র ১৪ নম্বর আয়াতে বলেছেন, “আর তারা যখন ঈমানদারদের সাথে মেশে, তখন বলে, আমরা ঈমান এনেছি।
আবার যখন তারা শয়তানের সাথে একান্তে সাক্ষাত্ করে, তখন বলে, আমরা তোমাদের সাথে রয়েছি—আমরা তো (মুসলমানদের সাথে) উপহাস করি মাত্র। ” এই মোনাফেকদের উদ্দেশ্য ও কৌশল সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। ১৯৭১ সালে পিন্ডির রাজাকাররা যেমন আমাদের বিজয় বাধাগ্রস্ত করতে পারেনি একইভাবে প্রকৃত দেশপ্রেমিক, আলেম-ওলামা এবং ইসলামে বিশ্বাসী জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে দিল্লির সেবাদাসরাও শেষ পর্যন্ত ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু বাঙালি ও ভারতীয় রামরাজ্য থেকে ভিন্নতর সাংস্কৃতিক চেতনার আলোকে একটি স্বাধীন দেশের উপযোগী বাংলাদেশী জাতিসত্তা গড়ে তোলার সংগ্রামে চূড়ান্ত বিজয়ের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সুসংহত হবে। এটাই হোক আমাদের চলমান সাংস্কৃতিক বিপ্লবের মর্মবাণী।
ইমেইল :
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।