আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাছরাঙার অনুষ্ঠানমালার দৈন্যদশা

চলতি বছরের ৩১তম সপ্তাহে প্রকাশিত টেলিভিশন রেটিং পয়েন্টে (টিআরপি) দেখা যাচ্ছে নাটক প্রচারের ক্ষেত্রে মাছরাঙার অবস্থান ১২তম। যা মাইটিভির চেয়ে পাঁচ ধাপ নিচে। সিনেমা প্রচারের ক্ষেত্রে চ্যানেলটির অবস্থান ১০ নম্বরে। এ ক্ষেত্রে চ্যানেলটি মাইটিভির চেয়ে একধাপ নিচে। নিউজের ক্ষেত্রে মাছরাঙার অবস্থান ১৪তম।

এটিএন নিউজ ১৩তম। মাইটিভি ১২তম। আর ১১তম অবস্থানে আছে দেশ টিভি। টক শো’র ক্ষেত্রে এর অবস্থান ১২তম। দিগন্তের চেয়ে তিন ধাপ পেছনে।

টপ রেটেড ২৫ প্রোগ্রামের মধ্যে মাছরাঙার একটি অনুষ্ঠানও নেই। সার্বিক দিক থেকে চ্যানেলটির অবস্থান ১৫তম। এ ক্ষেত্রে ইন্ডিপেনডেন্ট থেকে একধাপ এগিয়ে আছে মাছরাঙা। টিআরপি তৈরির প্রতিষ্ঠানটি মাছরাঙাকে নবাগত চ্যানেল হিসেবে উল্লেখ করেছে। পূর্ণাঙ্গ সম্প্রচারের দু’সপ্তাহের মধ্যেই মাছরাঙা টেলিভিশনের অনুষ্ঠান বিভাগের দৈন্যদশা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

দর্শক ধরে রাখার মতো কোনো অনুষ্ঠানই নেই চ্যানেলটির প্রচারসূচিতে। পুরো প্রচারসূচিজুড়ে রয়েছে বিভিন্ন ধারার সংগীতানুষ্ঠান। নাটকের ক্ষেত্রেও অনুল্লেখ্য নাট্যকার পরিচালকদের প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। ফলাফল যা হওয়ার তা-ই হচ্ছে। দর্শকরা মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছেন চ্যানেলটি থেকে।

অন্য একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র একজন কর্মকর্তা বার্তা ২৪ ডটনেটকে জানান, মাছরাঙার অনুষ্ঠান বিভাগের এ অবস্থার জন্য দায়ী এর অনুষ্ঠান পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা। চ্যানেলটির অনুষ্ঠানপ্রধান হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল নিজে কখনো কোনো নাটক বা সিনেমা তৈরি করেননি। একুশে টেলিভিশনে ‘মিউজিক ক্যাফে’ নামের একটি অনুষ্ঠান নির্মাণ করে ব্যাপক আলোচনায় আসেন তিনি। তবে, নাটক বা সিনেমার ধারে-কাছে যাননি। কর্তৃপক্ষ ধারণা করেছিল, নতুনত্ব আনতে হলে নতুন চিন্তা প্রয়োজন।

জুয়েল সে নতুনত্ব আনতে পারবেন বলে বিশ্বাস ছিল তাদের। তার এই বক্তব্য সমর্থন করেছেন মাছরাঙারই একজন কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন, “বিষয়টির সমাধানে আমরা কাজ করছি। আশা করি এ অবস্থা থাকবে না। ” এদিকে, হাসান আবিদুর রেজা জুয়েলের ডেপুটি হিসেবে চ্যানেলটিতে যোগ দেন রেজা গালিব।

প্রথম প্রজন্মের একুশে টেলিভিশনের সাবেক এই কর্মী সমসাময়িক ঘটনাবলি নিয়ে অনুষ্ঠান তৈরি করেছেন বেশি। এই কিছুদিন আগেও তিনি কাজ করেছেন বিবিসি সংলাপ অনুষ্ঠানে। প্রজেক্টটি শেষ হয়ে যাওয়ার পর তাকে চ্যানেলটিতে নিয়ে আসেন হাসান আবিদুর রেজা জুয়েলসহ একুশের সাবেক একজন কর্মী। রেজা গালিব কবে কোন নাটক তৈরি করেছেন তা কেউ জানেন না। সিনেমা তৈরি করেছেন বলেও কেউ কখনো শোনেননি।

মাছরাঙার অনুষ্ঠান বিভাগে ম্যানেজার আরিফুর রহমান। প্রথম প্রজন্মের একুশে টেলিভিশনে ভিডিও এডিটর হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় দফায় একুশে যাত্রা শুরু করার পর তিনি কারিগরি সমন্বয়কের দায়িত্ব পান। তাকে মাছরাঙা কী করে এমন একটি পদে নিয়োগ দিলো, সে বিষয়টি কারো কাছে স্পষ্ট নয়। শোনা যায়, এ পদের জন্য অনেকেই প্রার্থী ছিলেন।

এদের মধ্যে সাংবাদিক-নাট্যকার-নির্মাতা নরেশ ভূঁইয়া, আহসান কবীর, মাসুদুজ্জামান প্রমুখের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। সবাইকে টপকে আরিফুর রহমান চাকরি পেয়ে যান। অনুষ্ঠানপ্রধান এবং কমিশনিং এডিটর পুরো অনুষ্ঠান পরিকল্পনার ব্যাপারে তার ওপর নির্ভরশীল বলে জানিয়েছে মাছরাঙার একটি সূত্র। মাছরাঙা টেলিভিশনের অনুষ্ঠানের দিকে তাকালেই এর হতশ্রী অবস্থার প্রমাণ পাওয়া যাবে। প্রতিদিন সকালে চ্যানেলটি ‘রাঙা সকাল’ নামে দুই ঘণ্টার একটি অনুষ্ঠান প্রচার করছে।

অনুষ্ঠানটিকে অনেকে ‘বিরক্তিকর’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এতে সংবাদ ছাড়া থাকছে বিভিন্ন ব্যক্তির সাক্ষাৎকার। সকালবেলা দু’ঘণ্টার এ আয়োজন অন্য কোনো চ্যানেলের প্রভাতী অনুষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পেরে উঠছে না। মজার ব্যাপার হচ্ছে, চ্যানেলটি মধ্যরাতে শিশুতোষ অনুষ্ঠান পুনঃপ্রচার করছে। বিষয়টি হাস্যকর এবং দেশের সম্প্রচার ইতিহাসে যা নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করেছেন টিভি অনুষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।