বাঙলা কবিতা ।। কবিত্বলাভ // পাবলো নেরুদা ।। আর এটা ছিলো সে-ই বয়সের ঘটনা... কবিত্ব এসেছিলো আমার খোঁজে, আমি জানতাম না, জানতাম না আমি, শীতকাল নাকি কোনও একটা নদী, কোত্থেকে এসেছিলো সে। না, কোনও কণ্ঠস্বরের সমাহার ছিলো না সেটা, শব্দগুচ্ছও নয়, এমনকী, নয় কোনও নৈঃশব্দ্যও। কিন্তু পরোয়ানা জারি ক'রে পথ থেকেই তুলে আনা হলো আমাকে, শাখা-প্রশাখায় বিস্তৃত রাত্রির ভেতর থেকে, অপ্রত্যাশিতভাবে অন্য সবাইকে ছেড়ে এসে, গনগনে আগুনের মধ্যে ঢুকে পড়া কিংবা নিঃসঙ্গ ফিরে আসবার মতই ছিলো সেই ঘটনা, সেখানে আমি ছিলাম কোনও কারও মুখদর্শনহীন আর সে স্পর্শ করলো আমাকে। আমি জানতাম না কী বলা যেতে পারে, আমার স্বর কোনও নাম পর্যন্ত উচ্চারণের উপায় হারিয়ে ফেললো আমার চোখ জোড়া হয়ে পড়লো জ্যোতিহীন, আর আমার আত্মার গভীরে কী যেন শুরু হলো, জ্বর নাকি বিস্মৃত ডানাগুলির যন্ত্রণা, আর আমি আমার উপায় খুঁজে বের করলাম, সংকেতলিপির মত সেই আগুনের পাঠোদ্ধার ক'রে আমি লিখে ফেললাম এই জীবনের ভীরু ভীরু প্রথম পংক্তিটি, অস্পষ্ট, বিষয়বস্তুহীন, খাঁটি আবোল-তাবোল পদ, যেন এমন কারও নির্ভেজাল প্রজ্ঞার প্রকাশ যে আদৌ জানে না কিছুই, এবং হঠাৎ আমি দেখলাম সবগুলো বেহেস্ত আলগা করলো বাঁধন আর খুলে গেল, গ্রহগুলি, স্পন্দিত আবর্তনশীল অস্থির তারকাপুঞ্জ, ছায়া ছিদ্রকারী, অজস্র তীর, অগ্নি আর পুষ্পে চালনির মত ঝাঁঝরা করে দিলো হাওয়ার রাতকে, গোটা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে। আর আমি, সামগ্রিক সেই পরিবেশের প্রেক্ষাপটে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র এক প্রাণের মত তারকাখোচিত সেই অসীম শূন্যতার সংস্পর্শে মোহাবিষ্ট মাতাল হয়ে গেলাম, প্রতিমূর্তি, রহস্যময়তার প্রতিমা, সেই অতল গহ্বরের যথার্থ অংশীদার হিসেবে নিজেকে অনুভব করলাম আমি, নক্ষত্রপুঞ্জের সাথে আমি আবর্তিত হতে থাকলাম, হৃৎপিণ্ড আমার চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে স্বাধীনভাবে উড়তে লাগলো খোলা আকাশে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।