আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

৩০ বছরে পার্সোনাল কম্পিউটার

পৃথিবীর কাছে তুমি হয়তো কিছুই নও, কিন্তু কারও কাছে তুমিই তার পৃথিবী" বর্তমান সময়কে বলা হয় তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। আর তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারে যে ডিভাইসটির ভূমিকা সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, তা হলো পার্সোনাল কম্পিউটার। চলতি সপ্তাহেই ৩০ বছর পূর্ণ হলো পার্সোনাল কম্পিউটারের। বিশ্বখ্যাত প্র্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইবিএম প্রথম পৃথিবীকে পরিচয় করিয়ে দেয় এই অভাবনীয় ডিভাইসের সাথে। প্রথম সেই পার্সোনাল কম্পিউটার, তার ইতিহাস আর সংশ্লিষ্ট কিছু তথ্য নিয়ে এই প্রতিবেদন।

লিখেছেন মোজাহেদুল ইসলাম ১২ আগস্ট ১৯৮১ অর্থাত্ আজ থেকে ৩০ বছর আগের দিনটি প্রযুক্তি বিশ্বের ইতিহাসের একটি স্মরণীয় দিন। পৃথিবী জুড়ে আজ যে তথ্যপ্রযুক্তির প্রসার এবং রাজত্ব, তাতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এই দিনের। আজ যেভাবে কম্পিউটার, ইন্টারনেট ছড়িয়ে পড়েছে ঘরে ঘরে, তার সূচনা বলা যায় এই দিনটাকেই। পিসি বা পার্সোনাল কম্পিউটার নামের যে শব্দটি আমাদের নিকট আজ বহুল পরিচিত এবং বহুল ব্যবহূতও বটে, সেই পার্সোনাল কম্পিউটারের সূচনা লগ্নের দিন ১২ আগস্ট। শতবর্ষের পুরোনো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইবিএম এর হাত ধরে বাজারে প্রবেশ করে এই প্রযুক্তি পণ্য।

তারপরের ইতিহাস সকলেরই জানা। ধীরে ধীরে সবচেয়ে বেশী ব্যবহূত পণ্যটির নামই পিসি। এক ঝলকে কম্পিউটারের ইতিহাস কম্পিউটারের সাধারণ অর্থ গণক যন্ত্র। তবে ধীরে ধীরে এর ব্যবহার বিস্তৃত হতে থাকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। চ্যার্লস ব্যাবেজের সময় থেকে শুরু করে প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটার বলতে ছিলো বিভিন্ন গবেষণার ক্ষেত্রে ব্যবহূত বিশেষ যন্ত্র।

সেসব কম্পিউটারের আকৃতিও ছিল দশাসই। চার্লস ব্যাবেজের ডিজাইন করা অ্যানাইটিক্যাল ইঞ্জিনকে বলা যায় প্রথম আধুনিক কম্পিউটারের সূচনা। সেটি ১৮৩৭ সালের ঘটনা। উনবিংশ শতাব্দী থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধেও বিজ্ঞানীরা মেকানিক্যাল বা ইলেকট্রিক্যাল সমস্যা নির্ভর কম্পিউটিং এর দিকে ঝুঁকে ছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় অ্যাটোনাসফট বেরি কম্পিউটারকেই (সংক্ষেপে এবিসি নামে পরিচিত) বলা যায় প্রথম ইলেকট্রিক ডিজিটাল কম্পিউটিং ডিভাইস।

এটি তৈরি হয় ১৯০৭ সালে। পরবর্তীতে ১৯৪১ সালে তৈরি হওয়া জেড থ্রিকে বলা হয় বিশ্বের প্রথম প্রোগ্রামযোগ্য এবং সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় কম্পিউটিং ডিভাইস। ১৯৪৬ সালে তৈরি হওয়া এনিয়াককে বলা হয় প্রথম ‘জেনারেল পারপাস’ ইলেকট্রনিক কম্পিউটার। এসব কম্পিউটার সিস্টেমের সবগুলোর আকৃতিই আজকের দিনের সুপার কম্পিউটারের মতো বিশাল। ধীরে ধীরে সেমিকন্ডাক্টার প্রযুক্তির উন্নয়নে ছোট হয়ে আসতে থাকে কম্পিউটারের আকার এবং একসময় একটি কম্পিউটার সিস্টেম স্থান পায় একটি টেবিলে যাকে বলা হচ্ছে ডেস্কটপ বা কম্পিউটার।

ডেস্কটপ কম্পিউটারের কথা ডেস্কটপ কম্পিউটার হিসেবে প্রথম সফল যন্ত্র বলা যায় এইচপি’র ৯৮০০ সিরিজের ৯৮১০এ কে। এর আবির্ভাব ১৯৭১ সালে। পরে ১৯৭৫ সালে আইবিএম বাজারে আনে ৫১০০ পোর্টেবল কম্পিউটার। ডেস্কটপ কম্পিউটারের শুরুর দিকের আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ডিভাইস হচ্ছে কমোডোর ইন্টারন্যাশনাল এর কমোডোর পিইটি (পার্সোনাল ইলেকট্রনিক ট্রানজ্যাকটর) যা বের হয় ১৯৭৭ সালে, অ্যাপল এর অ্যাপল ২ (১৯৭৭) এবং অ্যাটারি ৮ বিট ফ্যামিলি (১৯৭৯)। ডেস্কটপ কম্পিউটারের এসব মডেল কম্পিউটারকে অল্প একটু স্থানে জায়গা করে দিলেও এগুলো মূল্যের দিক থেকে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরেই ছিলো।

যেমন আইবিএম-এর ৫১০০ এর মূল্য ছিলো বেসিক পোগ্রামিং ল্যংগুয়েজ এবং ১৬ কিলোবাইট মেমোরিসহ প্রায় ৯,০০০ ডলার। আর বেসিক এবং এপিএল প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ এবং ৬৪ কিলোবাইট মেমোরিসহ মডেলের মূল্য ছিলো ২০ হাজার ডলার। তাই বহনযোগ্য ডেস্কটপ কম্পিউটার হওয়া সত্ত্বেও এগুলো পার্সোনাল কম্পিউটার হয়ে উঠতে পারেনি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।