‘ভোরের সূর্য সব সময় দিনের সঠিক পূর্বাভাস দেয় না’। কাল ক্রিকেট-তীর্থ লর্ডসে অস্ট্রেলিয়া বাক্যটির মর্মার্থ উপলব্ধি করল আরেকবার। দিনের প্রথম বলেই টিম ব্রেসনানকে আউট করে উল্লাসে মেতে ওঠা অস্ট্রেলিয়ানরা অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টটা প্রায় খুইয়ে বসেছে যে দ্বিতীয় দিনেই। সিরিজের ধারা ধরে রেখে স্টুয়ার্ট ব্রড ও গ্রায়েম সোয়ানের শেষ জুটি ৪০ বলে ৪৮ রান যোগ করে ইংল্যান্ড অলআউট হওয়ার আগে প্রথম ইনিংসে করেছে ৩৬১ রান। এরপর অস্ট্রেলিয়াকে ১২৮ রানে অলআউট করে প্রথম ইনিংসে ২৩৩ রানের লিড।
৫ উইকেট নিয়েছেন অফ স্পিনার গ্রায়েম সোয়ান। অস্ট্রেলিয়াকে ফলোঅন করায়নি ইংল্যান্ড। আবার ব্যাট করতে নেমে অবশ্য স্বস্তিতে নেই স্বাগতিকেরা। যদিও ৩ উইকেটে ৩১ রান নিয়ে দিন শেষ করে এখনই ২৬৪ রানে এগিয়ে গেছে অ্যালিস্টার কুকের দল।
ছন্নছাড়া ব্যাটিং, সঙ্গে ডিআরএসের যথেচ্ছ ব্যবহার দুইয়ে মিলেই একেবারে লেজেগোবরে অবস্থা অস্ট্রেলিয়ার।
মাইকেল ক্লার্কের দল লাঞ্চের আগেই হারিয়ে ফেলে শেন ওয়াটসনকে। টিম ব্রেসনানের বলে লাইনের আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে পরিষ্কার এলবিডব্লু। তার পরও কী বুঝে রিভিউ চাইলেন ইনিংস-সর্বোচ্চ ৩০ রান করা ওয়াটসন, সেটা তিনিই জানেন। ব্যর্থ ওই রিভিউয়ের পরই লাঞ্চ (৪২/১)। খেয়েদেয়ে আসার পর ইংল্যান্ডের বোলার-ফিল্ডাররা যেন আরও দুর্বার হয়ে ওঠেন।
প্রায় সব ধরনের আউটের পসরা সাজিয়েই অস্ট্রেলিয়ানদের নাকাল করে দ্বিতীয় সেশনে ৬ উইকেট তুলে নেওয়া। অবশ্য এর মধ্যে ক্রিস রজার্সের উইকেটটি আম্পায়ারের সৌজন্যেই পেয়েছে ইংল্যান্ড।
ট্রেন্ট ব্রিজে আগের টেস্টে চারে ব্যাট করে ব্যর্থ হওয়া ক্লার্ক কাল নেমেছিলেন তাঁর প্রিয় জায়গা পাঁচে। ‘পাপ’ খেলছিলেনও নিজের মতো। অন্যরা যখন রান তুলতে হিমশিম খাচ্ছেন, ক্লার্ক স্বচ্ছন্দেই ৪০ বলে তুলে ফেলেন ২৮ রান।
৪১ নম্বর বলটাতেই সর্বনাশ। স্টুয়ার্ট ব্রডের প্রায় ইয়র্কার লেংথের সোজা বলটা ভুল লাইনে খেলতে গিয়ে এলবিডব্লু। অস্ট্রেলিয়ার স্কোর তখন ৬ উইকেটে ৯১। ৫ রান পর রানআউট প্রথম টেস্টের ‘ব্যাটিং হিরো’ অ্যাশটন অ্যাগার।
এর আগে ৭ উইকেটে ২৮৯ রান নিয়ে দিন শুরু করা ইংল্যান্ড প্রথম বলেই হারায় ব্রেসনানকে।
রায়ান হ্যারিসের বলে উইকেটকিপার ব্র্যাড হাডিনকে ক্যাচ দেন ব্রেসনান। ২৪ রান পর হ্যারিস-হাডিন জুটির শিকার হয়েই ফিরে যান জেমস অ্যান্ডারসন। আর এই উইকেটটি নিয়েই লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম লিখিয়েছেন একসময় ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার চিন্তাভাবনা করা হ্যারিস। বাবার জন্ম ইংল্যান্ডে, এই সূত্রে চাইলেই ইংল্যান্ডের পাসপোর্ট পেয়ে যেতে পারতেন ৩৩ বছর বয়সী পেসার।
ব্রড-সোয়ানের ৪৮ রানের মারকাটারি শেষ জুটিতেই সাড়ে তিন শ পেরোয় ইংল্যান্ড।
ট্রেন্ট ব্রিজে ওয়াক না করে হইচই ফেলে দেওয়া ব্রড কালও করেছেন নাটক। প্যাটিনসনের বলে হাডিনের হাতে ক্যাচ হয়ে ফিরেছেন। আম্পায়ার আউট দিয়ে দিলেও রিভিউ চেয়ে বসেন। কিন্তু তাতে শেষরক্ষা হয়নি ব্রডের। তথ্যসূত্র: ক্রিকইনফো ও স্টার ক্রিকেট।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।