আমি সততা ও স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করি। বয়স্ক ভাতা কি তা জানা নেই সুলেখার। শুধু সুলেখাই নয়, এমনিভাবে অনেক অজপারাগায়ের মহিলারাও জানেনা বয়স্কভাতা কেন এবং কিভাবে পাওয়া যায়! অনেক পরিবারের পুরুষরাও খেয়াল রাখেন না এসবের দিকে। গ্রাম বাংলার এমন হতদরিদ্র অসহায় পরিবারের দিকে ফিরে তাকাবার সময় নেই কারো। এলাকার জনপ্রতিনিধিরাও চলছেন গা-ছাড়া ভাবে।
একইভাবে চলছে সরকারি অফিসগুলোও।
৭৯ পেরিয়ে ৮০ ঘরে পা রেখেছেন সুলেখা রানী দাস। মৃত্যুর দোয়ারে দাঁড়িয়ে প্রহর গুণছেন এই মহিলা। আথচ আজ পর্যন্ত তার বয়স্ক ভাতার কোন নামগন্ধ নেই। সরকারি নিয়ম অনুযায়ি ৬৫ বছরের পর যে কোন পুরুষ বা মহিলা বয়স্কভাতা পাওয়ার আওতায় আসলেও বিগত ১৫ ধরে তার ভাগ্যে জোটেনি বয়স্কভাতা।
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার ২নং ভূনবীর ইউনিয়নের ভীমশী গ্রামে তার বাস। স্বামী যোগেশ দাসের মৃত্যুর পর গত ১০ বছর ধরে মেয়ের বাড়িতে বসবাস করছেন সুলেখা। সুলেখার তিন মেয়ে, কোন ছেলে নেই। স্বামীর মৃত্যুর পর নিতান্ত অসহায় হয়ে পড়েন তিনি। অসহায় অবস্থায় সুলেখাকে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে আসে তার বড় মেয়ে সাথী রানী দাস।
জামাতা সুখময় দাস দিন মজুরের কাজ করে সংসার চালায়। তবুও যেন শাশুড়ির সেবাযতেœ একটুও ম্লান নন তিনি। সংসারের শত অভাব-অনটনের মধ্যেও মায়া মমতায় আগলে রেখেছেন শাশুড়িকে।
উপজেলার এই পরিবারের সদস্যরা বয়স্কভাতা সম্পর্কে অজ্ঞ। স¤প্রতি একই গ্রামের বাসিন্দা সমাজসেবক বিজয় কৃষ্ণ দাশগুপ্ত ভানু’র কাছ থেকে এ খবর জানা যায়।
সুখময়ের বাড়িতে গিয়ে সুলেখার সাথে আলাপচারিতার এক পর্যায়ে তিনি আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, “গোবিন্দের নাম নিয়ে কোন রকমে মরতে চাই। মেয়ে আর মেয়ের জামাইয়ের উপর আর কতোদিন বোঝা হয়ে থাকবো। ” সুলেখার এমন উক্তি বিবেকের দরজায় নাড়া দেবার কথা। সুলেখার মেয়ের জামাই সুখময় দাস বলেন, “আমরা অশিতি, মুর্খ। বয়স্ক ভাতা কিতা আমরা কি আর বুঝি নি।
শুনছি সরকারে বযস্করারে টেকা দেয়। কিন্তু টেকা কেমনে পাইমো, আমরা তো নিয়ম জানিনা। ”
এমনিভাবে গ্রাম বাংলার অনেক পরিবারের সদস্যরা অবহেলা আর তাচ্চিল্যে জীবন কাটাচ্ছে। এদের খোঁজ নেওয়া দূরে থাক এলাকার জনপ্রতিধিরাও পর্যন্ত কাছে ঘেঁষে না। কেবল শিা আর আমান্য সহযোগীতার অভাবে সুলেখার মতো আরো অনেকেই বঞ্চিত রয়েছেন বয়স্কভাতা থেকে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।