আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধর ধর... বলে মওদুদের দিকে এগিয়ে যায় একদল জাতীয়তাবাদী আইনজীবী

তাশফী মাহমুদ প্রথম দফায় দুই গ্রুপের তর্কাতর্কি, হাতাহাতি ও মারামারির পর জাতীয়তাবাদী আইনজীবীদের মানববন্ধন প- হয়ে গেলেও এক ঘণ্টা পর বিএনপির সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে আপোসরফার পর দ্বিতীয় দফায় একসঙ্গেই মানববন্ধন করলেন তাঁরা। সংসদ সদস্য আশিফা আশরাফি পাপিয়াসহ দলীয় তিন আইনজীবী গ্রেফতারের প্রতিবাদে শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি সমর্থক জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম এ মানববন্ধনের আয়োজন করে। সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পূর্বনির্ধারিত মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করতে এসে দুই গ্রম্নপের আইনজীবীরা আলাদা আলাদা ব্যানার ও মাইক স্থাপন করে। এ সময় দুই গ্রম্নপকেই খুব উত্তেজিত মনে হচ্ছিল। মানববন্ধনে কোন্ গ্রুপ কোথায় দাঁড়াবে এ নিয়ে প্রথমে দুই গ্রুপের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও বাগবিত-া শুরম্ন হয়।

একপর্যায়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের গ্রুপের সঙ্গে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ঢাকা বার ইউনিটের সভাপতি এ্যাডভোকেট সানাউলস্নাহ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট খোরশেদ আলমের নেতৃত্বাধীন গ্রম্নপ প্রথমে তর্কাতর্কি এবং পরে হাতাহাতি ও মারামারিতে লিপ্ত হয়। এ পরিস্থিতিতে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হলে ঢাকা বার ইউনিটের আইনজীবীরা মওদুদকে উদ্দেশ করে 'ধর শালাকে, এর জন্যই আজ এই অবস্থা' বলে তাঁকে ধাওয়া করে। তাঁরা ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলামকেও ধমকাতে থাকে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে এক পর্যায়ে বেলা সোয়া ১১টায় ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ দ্রম্নত জাতীয় প্রেসক্লাবের ভেতর চলে যান। এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরম্নল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আসেন।

তিনি দুই গ্রম্নপের নেতৃস্থানীয় জাতীয়তাবাদী আইনজীবীদের নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের কৰে বৈঠকে বসেন। প্রেসক্লাবের ভেতরে বৈঠক চললেও বাইরে দুই গ্রুপই মাইক লাগিয়ে বক্তব্য চালিয়ে যাচ্ছিল। বৈঠক চলাকালে ক'জন আইনজীবী উত্তেজিত কণ্ঠে পরস্পরবিরোধী গ্রম্নপকে দোষারোপ করে বক্তব্য দিতে থাকলে মির্জা ফখরম্নল তাঁদের শানত্ম করেন। বৈঠকে উপস্থিত দু'পক্ষের সংঘর্ষে নেতৃত্বদানকারী ডজনখানেক আইনজীবীকে নিজেদের মধ্যকার অনৈক্য ভুলে গিয়ে কর্মসূচী পালনের নির্দেশ দেন মির্জা ফখরম্নল। উভয় গ্রম্নপের আইনজীবীদের বক্তব্য শোনে আপোষরফা করার পর প্রায় ১ ঘণ্টা পর দুপুর সোয়া ১২টায় আবার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের দু'গ্রম্নপ একসঙ্গে মানববন্ধনে অংশ নেয়।

তবে এ সময়ও কিছু আইনজীবী বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব তাঁদের ধমক দিয়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে দেন। জানা যায়, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ঢাকা বার ইউনিটের নবগঠিত কমিটিকে অনুমোদন না দেয়াকে কেন্দ্র করে মানববন্ধনে সংঘর্ষ বাধে। ঢাকা বার ইউনিটকে অনুমোদন না দেয়ায় বেশ ক'দিন ধরে ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের নেতৃত্বাধীন গ্রম্নপের সঙ্গে ঢাকা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট সানাউলস্নাহ মিয়া ও বিএনপির কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদারের নেতৃত্বাধীন অন্য গ্রম্নপের বিবাদ চলে আসছে। এ্যাডভোকেট সানাউলস্নাহ মিয়াকে সভাপতি ও এ্যাডভোকেট খোরশেদ আলমকে সাধারণ সম্পাদক করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ঢাকা বার ইউনিটের যে কমিটি গঠন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি তার অনুমোদন দিচ্ছে না। এ বিষয়টি বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে জানানোর পরও সুরাহা করা হয়নি।

আর এ কারণেই শনিবার এই হাতাহাতির ঘটনা ঘটে এবং দুই গ্রম্নপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষ চলাকালে ফোরামের দুটি অংশের একটির নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি সানাউলস্নাহ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম। অন্য পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা জেলা দায়রা জজ আদালতের সাবেক পিপি মহসিন মিয়া ও ঢাকা বারের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন। মানববন্ধন শেষে ঢাকা আইনজীবী সমিতির বিগত নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী মাসুদ আহমেদ তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, দুটি ব্যানার ও মাইক থাকায় এ নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল। তবে তার সমাধান হওয়ায় পরে এক সঙ্গেই মানববন্ধন হয়েছে।

সানাউলস্নাহ মিয়া আলাদা ব্যানার রাখার কথা বললে ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন একটি মাইক হাতে নিয়ে বলেন, এই মানববন্ধন কর্মসূচী কেন্দ্রীয় কমিটির আয়োজনে। এখানে অন্য কারও ব্যানার থাকতে পারে না, অন্য মাইকও চলবে না। মাইক বন্ধ করম্নন। আপোসরফার পর দুই গ্রম্নপের উপস্থিতিতে সোয়া ১২টায় আবার মানববন্ধন শুরম্ন হলেও বৃষ্টির কারণে সংক্ষিপ্ত মানববন্ধন হয়। মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন, সাধারণ সম্পাদক বদরম্নদ্দোজা বাদল, সিনিয়র আইনজীবী এ্যাডভোকেট মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, জয়নুল আবেদিন, নিতাই রায় চৌধুরী প্রমুখ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।