তোমার আমার ঠিকানা,পদ্মা-মেঘনা-যমুনা একটি নদ বড়াল, চার জেলার জীবনের অস্তিত্ব আর উত্তরের গর্ব চলনবিলের বাঁচা-মরা আজ একসূত্রে গ্রথিত। নদটি প্রায় মৃত; সঙ্গে মারা যাচ্ছে চলনবিলকেন্দ্রিক প্রধান নদ আত্রাইসহ ১৬টি নদ-নদী। নদীর দেশ বাংলাদেশ নদীমৃত্যুরও দেশ। মানুষ মারা গেলে সাড়াশব্দ হয় অথচ নদীর মৃত্যু ঘটে নীরবে-অবহেলায়। মানুষ হত্যা হয় গোপনে কিন্তু নদীকে হত্যা করা হচ্ছে প্রকাশ্যে সবার চোখের সামনে।
একে গোপন করা সম্ভব না হলেও নদীমৃত্যুর সংবাদ বিস্ময়করভাবে আলোড়ন তোলে না। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাবে দেশের ১৭টি নদী মরে গেছে। আরও অনেক নদী মরমর অবস্থায়। নদীমাতৃক বাংলাদেশ কি এভাবে মাতৃহত্যা চালিয়ে যেতে দেবে?
চলনবিল এলাকা কেবল পানি ও মাছের আধার নয়, এই অঞ্চল জীববৈচিত্র্যের ভান্ডার। এর ওপর নির্ভরশীল হাজার হাজার জলজীবী এবং লাখ লাখ কৃষক।
এক কথায়, চলনবিল এবং এর প্রধান পানিপ্রবাহ বড়াল নদের মৃত্যু চার জেলার ৫০ লাখ মানুষের পানিসংকটসহ বিরাট পরিবেশ বিপর্যয়ও ডেকে আনছে। অথচ ২৫ বছর আগেও চলনবিল ও বড়াল ছিল গতিশীল এবং গভীর এক জলদেহ।
পরিবেশবিজ্ঞানীদের তরফে এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী করা হচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অদূরদর্শী বাঁধ ও জলকবাটকে। আর পাউবোর প্রতিনিধিরা দোষ দিচ্ছেন গঙ্গা ব্যারাজকে। দুটি কারণই দায়ী।
এ কথা কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না যে দেশের বহু জায়গাতেই পাউবোর কার্যকলাপে হয় জলাবদ্ধতা, নয়তো পলি ভরাটের মাধ্যমে নদ-নদীর ক্ষতি হয়েছে।
সম্প্রতি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় পানি ফোরামের এক গবেষণা প্রতিবেদনেও বাংলাদেশের পানিনিরাপত্তা সংকটজনক বলা হয়েছে। নদীমৃত্যু, পানিসংকট ইত্যাদি কেবল জলবায়ু বিপর্যয়ই নয়, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা বিপর্যয়ও ঘটাতে সক্ষম। সুতরাং নদী রক্ষার প্রশ্নকে অন্যতম জাতীয় অগ্রাধিকারে পরিণত না করে কোনো উপায় নেই। কিন্তু সরকার ও তার নীতিনির্ধারকদের এ ব্যাপারে বিশেষ তৎপরতা আছে বলে মনে হয় না।
Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।