আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক পরিমল কারাগারে, লক্ষ পরিমল ঘরে ঘরে

নৌকা আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে সোনার বাংলার খোয়াব দেখা আর মান্দার গাছ লাগিয়ে জলপাইর আশা করা একই! বিস্ময়ের ব্যাপার হল দিনের পর দিন আমরা তাই করছি!! লজিং মাস্টার রাখা হল লায়লাকে পড়ানোর জন্য। স্থানীয় মাদ্রাসার আলিম পর্যায়ের তালিবআলেম। নিখাদ চরিত্র! ক'দিন পড়েই লায়লা মা'কে বলে বসল এ হুজুরের কাছে আর পড়বেনা। কারণও বলেনা। মায়ের অনেক টেপাটেপির পর মুখ খুলল লায়লা।

'হুজুরে পায়ে পা লাগায় খালি। ' যা বুঝার গৃহকত্রী বুঝলেন। বিদায় হল হুজুর। তবে অত সহজ হয়নি উক্ত হুজুরের বড় ভাইয়ের বিদায়। স্থানীয় মসজিদের ইমাম ছিলেন।

মাদ্রাসার মোদারেসীর পাশাপাশি ইমামতির বেতন, ফাতেহা, কবর জেয়ারত, মিলাদ, তাবিজ, তুমার করে ভালই চলছিল ব্যাচেলর কামিল পাশ মাওলানার দুনিয়াবী কায়কারবার। কপালে বেশী সুখ সয়না। মাতবর কিসিমের এক মহল্লাবাসীর ঘরে বেশী বেশী যাতায়ত করেন। এ নিয়ে কোনো কোনো মুসল্লীর খেদ। অনেকে নাকি তাকে পাক ঘরে মাতবরের বউয়ের লগে হা হা হি হি করতে দেখেছে।

শেষতক অন্য একদিন.. । জুমাবার। হুজুর এবসেন্ট। কারণ উদঘাটিত হল- মাতবরের বৌ হাসপাতালে। উনি দেখতে গেছেন! ঐদিন ব্যাপক হৈ চৈ এর মধ্যদিয়ে হুজুরের চাকরি নট।

তুচ্ছ গ্রাম্য মৌলভীর 'ঝাপসা' কারণে চাকরি নট হলেও চাকরি আরো পাকাপোক্ত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনৈক লুচ্চা প্রভাষকের। তখন তিনি নব্য প্রভাষক। আর ছাত্রীটি শেষবর্ষে। ঘুরিয়ে, পেঁচিয়ে, ইনিয়ে, বিনিয়ে ক্লাশে, ক্লাশের ফাঁকে সরল কিসিমের মেয়েটিকে চুড়ান্ত উত্যক্ত করে ছাড়ছেন। সাইন্স সাবজেক্ট।

প্র্যাকটিকেল, ভাইবা, ফিল্ডট্যুর, রিসার্চ পেপার অনেক কিছুতে 'হাওয়াই' মার্কস আছে। তাই শক্ত প্রতিবাদও করা সম্ভব হয়নি। শেষতক মুষলধারে বৃস্টি হয় এমন একদিন তিনি ছাত্রীটিকে নিজ কক্ষে জড়িয়েই ধরেন! এক পরিমল কারাগারে। লক্ষ পরিমল ঘরে ঘরে। স্কুল, মক্তব, মাদ্রাসা, কলেজ, কোচিং কোথায় নেই পরিমল বাবু।

পরিমলরা আছে অফিসে, স্যুটিং স্পটে, কারখানায়, বাসে, ট্রেনে, লঞ্চে সবখানে। সুযোগের অভাবে অনেকে সাধুর গেরুয়া বেশ ধারন করে বসে থাকলেও কায়দামত পরিমলের চরিত্রে মঞ্চে নেমে পড়েন। পরিমল আছে আওয়ামীলীগে, আছে বি এন পি তে এমনকি জামায়াতের রোকন পদেও! তারা ছাত্রলীগ, তারা ছাত্রফ্রন্ট, তারা ছাত্রশিবির ও অ-ছাত্র। আর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানইতো বড় পরিমল। পরিমল হিন্দু, পরিমল মুসলিম, পরিমল অগ্নি উপাসক, পরিমল নাস্তিক।

পরিমল সাহিত্যিক, পরিমল নাট্যকার, পরিমল পরিচালক, পরিমল শাসক, পরিমল অর্থনীতিবিদ, পরিমল বাসের কন্ডাকটর! কোচিং সেন্টার বন্ধ হলে পরিমলরা পালিয়ে যাবে এমনটা ভাবা বোকামী। তারা ওৎ পেতে থাকবে ক্লাশরুমে, ব্ল্যাকবোর্ডের পেছনে, বেন্চির তলায়, স্কুলের টয়লেটে। সদ্যযৌবনা ছাত্রী বা যুবতী সহকর্মী বা গতযৌবনা আয়া দেখলেও তড়াক করে লাফ দিয়ে উঠতে পারে কোনো এক হিংস্র পরিমল। তাহলে উপায় কি? উপায় আছে- গেরুয়ার ভেতরের পরিমলকে মানুষ করা; অন্তত: মেকি সাধু বানিয়ে রাখা; যতদুর সম্ভব পরিমল অ-বান্ধব কর্মস্থল তৈরী; যার যার মত পরিমলের খপ্পড়ে না পড়ার ব্যবস্থা; কোনোরূপ লুকোছাপা নয় ঘটনা ঘটামাত্র পরিমল উৎখাতে নেমে পড়া; ধরাপড়া পরিমলদের প্রকাশ্য শাস্তি। আশা করা যায় যারযার অবস্থান থেকে শক্ত পদক্ষেপ নিলে পরিমলের সংখ্যা হ্রাস পাবে।

পুরো লুপ্ত না হোক!  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।