মুনাফিক্ব কাকে বলে?
ইসলামী পরিভাষায় প্রকাশ্যে নিজেকে মুসলমান ও ইসলামের হিতাকাংখী হিসেবে প্রকাশ করা এবং গোপনে কুফরী করা ও ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাব পোষন করাকে নেফাক্বী বা মুনাফিক্বী বলে।
নিফাক্ব দুই প্রকার:১। বড় নিফাক্ব ২। ছোট নিফাক্ব।
বড় নিফাক্ব ছয় প্রকার।
১। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা।
২। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর প্রতি যে দিন এসেছে তার কিছু অংশকে অবিশ্বাস বা মিথ্যা প্রতিপন্ন করা।
৩।
(রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর প্রতি শত্রুতা ও হিংসা বিদ্ধেষ প্রকাশ করা।
৪। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর প্রতি যে দিন এসেছে তার কিছু অংশের প্রতি হিংসা বিদ্ধেষ রাখা।
৫। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর দ্বীনের অবনতিতে খুশী ও আনন্দিত হওয়া।
৬। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর দ্বীনের বিজয়কে অপছন্দ করা।
ছোট নিফাক্ব:
ছোট নিফাক্ব যা আমল বা কর্মগত মুনাফিক্বী অর্থাৎ যা বিশ্বাসে নয় বরং কাজ-কর্মের মধ্যে হয়ে থাকে। এ প্রকার এমন কাজ যা মুনাফিক্বদের কোনো কোনো কাজের সাদৃশ্য। অন্তরে ঈমান থাকা একজন ঈমানদার ব্যক্তির কাছ থেকে হতে পারে।
এ ধরনের নিফাক্বী কাজের মাধ্যমে মুসলিম মিল্লাত থেকে বের হয়ে যাবে না। তবে ঐ পর্যন্ত পৌঁছার মাধ্যম। এ প্রকার নিফাক্বের কারনে তার মধ্যে একই সংগে ঈমান ও নিফাক্ব দু টিই পাওয়া যাবে। তবে তার মধ্যে নিফাক্বের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে এর কারনে সে খাটি মুনাফিক্বে পরিনত হবে। এর প্রমান (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর বানী: এক হাদীসে তিনটি ও অপর হাদীসে চারটি আলামতের কথা বলা হয়েছে।
১। যখন কথা বলে তখন মিথ্যা বলে। ২। যখন ওয়াদা করে তখন তা ভংগ করে। ৩।
আমানত রাখলে তা খিয়ানত করে। ৪। ঝগড়া লাগলে অশ্লীল ভাষায় গালাগালী করে।
বড় নিফাক্ব ও ছোট নিফাক্বের মধ্যে পার্থক্য:
১। বড় নিফাক্বের কারনে ব্যক্তিকে মুসলিম মিল্লাত থেকে বের করে দেয়, আর ছোট নিফাক্বের কারনে ব্যক্তি দ্বীন থেকে বহির্ভূত হয় না।
২। বড় নিফাক্ব বিশ্বাসের মধ্যে,মুখে ও অন্তরে বিপরীতমুখী হওয়াকে বলা হয় আর ছোট নিফাক্ব বিশ্বাসগত বিষয়ে নয় বরং আমল বা কর্মগত বিষয়ে প্রকাশ্য ও গোপনে বিপরীতমুখী হওয়া।
৩। বড় মুনাফিক্বী ঈমানদারের পক্ষ থেকে প্রকাশ পায় না কিন্তু ছোট মুনাফিক্বী ঈমানদার ব্যক্তির কাছ থেকে প্রকাশিত হয়ে থাকে।
৪।
বড় মুনাফিক্বিতে লিপ্ত ব্যক্তি অধিকাংশ সময় তাওবাহ করা থেকে বিরত থাকে, আর তাওবাহ যদিও করে থাকে বিচারকের নিকট তার তাওবাহ গ্রহন হওয়ার বিষয়ে ওলামাদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। ছোট মুনাফিক্বীতে লিপ্ত ব্যক্তি কখন ও কখন ও তাওবাহ করে থাকে এবং তার তাওবাহ আল্লাহর নিকট গ্রহন হতে পারে। আল্লাহ পাক বড় নিফাক্বীতে লিপ্ত ব্যক্তি সম্পর্কে এরশাদ করেন:
﴿إِنَّ الْمُنَافِقِينَ فِي الدَّرْكِ الْأَسْفَلِ مِنَ النَّارِ وَلَن تَجِدَ لَهُمْ نَصِيرًا﴾
১৪৫) নিশ্চিত জেনো, মুনাফিকরা জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে চলে যাবে এবং তোমরা কাউকে তাদের সাহায্যকারী হিসেবে পাবে না৷ (নিসা-১৪৫)
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে মুনাফিক্বী চরিত্র থেকে বেরিয়ে এসে খাটি মুসলিম হওয়ার তাওফিক্ব দান করুন। আমিন!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।