আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

♣♣ ছোট গল্পঃ প্রাণবন্ত জলরঙ ♣♣

যা বিশ্বাস করি না, তা লিখতে-বলতে চাই না, পারবোও না। কিন্তু যা বিশ্বাস করি, তা মুখ চেপে ধরলেও বলবো, কলম কেড়ে নিলেও লিখবো, মারলেও বলবো, কাটলেও বলবো, রক্তাক্ত করলেও বলবো। আমার রক্ত বরং ঝরিয়েই দাও, ওদের প্রতিটি বিন্দুর চিৎকার আরও প্রবল শূনতে পাবে। ল্যাপটপ সামনে রেখে মেয়েটি বসে রয়েছে পড়ার টেবিলে। সামনের জানালাটা হাট করে খোলা।

একটু হেলে রয়েছে স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে। তার মসৃণ ঘন কালো অবাধ্য চুলগুলো বাতাসে দুলছে মৃদু। তবে ঠিক ঠাহর করা যায় না, জানালা দিয়ে আসা বাতাসে নাকি ফ্যানের বাতাসে উড়ছে চুলগুলো। একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে বটে, কিন্তু কিছু দেখছে কিনা তা বোঝা যাচ্ছে না। আঙ্গুলগুলো কীবোর্ডময় নড়েচড়ে বেরোচ্ছে কিন্তু কোথাও চাপ দিচ্ছে না, লিখতে চেয়েও কি এক সংকোচের বাঁধনে তারা যেন আবদ্ধ! ওয়ার্ড ফাইলটা মিনিমাইজ করে ফেসবুকে লগ ইন করলো অরিত্রা।

খুব অভ্যস্ত হাতে সার্চ অপশনে একটি পরিচিত নাম লিখলো। নাহ! পেলো না আজকেও। প্রতিদিনের মতোই এ নামে কোন আইডি খুঁজে পেলো না সার্চ ইঞ্জিন। ডিলেট করে আবারও লিখে সার্চ দিলো, ফলাফল অপরিবর্তনীয়, তবু প্রতিবার তাকানোতে একটু আশার বাড়তি আলো অযথাই মেয়েটার চোখে ঝিলিক দিয়ে যায়। অর্থহীন এই আলোটা অরিত্রা মনের মাঝেও অনুভব করতে পারে।

তবে সেকেন্ডেই তা দপ করে নিভে যায়, সেখানে যায়গা নেয় হতাশা। ফোঁস করে একটা শ্বাস নিয়ে উঠে পড়লো ও, ল্যাপটপ স্ক্রীন নামিয়ে রেখে ওটার দিকে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে থেকে জানালাটার পাশে এসে দাঁড়ালো। পর্দাটা আরও একটু মেলে দিয়ে বিকেলটা দেখছিল আনমনেই। এটা শুধু আজকের ঘটনা নয়, বিগত ক’ সপ্তাহ ধরে মেয়েটির কমবেশী এমনই কাটছে বিকেলগুলো। চুপচাপ একা মানুষটা আরও একটু বেশী চুপচাপ, একা হয়ে পড়েছে যেন।

অকারনেই বিষণ্ণতাগুলো আরেকটু বিষণ্ণ ধূসর বর্ণ ধারন করেছে। সাদা পর্দা নাড়িয়ে দিয়ে আসা বাতাসগুলো ঘরময় মুক্ত নেচে বেরোচ্ছে! যেন তার মন খারাপকে উপহাস করছে তার সব উচ্ছলতা দিয়ে। একদৃষ্টিতে বাহিরের সবুজের বিস্তৃতি আর একটু দূরে পথের নাগরিক ব্যাস্ততার দিকে তাকিয়ে রয়েছে সে, এখন নিশ্চিত করেই বলা যায়, মৃদু বাতাসাটাই তার চুল নাড়িয়ে দেবার জন্য দায়ী। কিছু চুল মুখের উপর এসে পড়ছে কিন্তু সরিয়ে দেবার কোন আগ্রহ দেখা গেলো না ওর মাঝে। ওর চোখদুটো এখন কেউ দেখছে না এই পৃথিবীর, যদি দেখতো হয়ত বুঝতে পারতো ও কিছুই দেখছে না, শুধু তাকিয়ে আছে, আর চোখদুটো ঈষৎ আর্দ্র।

হঠাতই সৎবিত ফিরে পাবার মতো একটু চমকে ধীরে ধীরে ঘুরে তাকালো অরিত্রা। টেবিলের কোনায় পড়ে থাকা খয়েরী চামড়ায় মোড়ানো ব্যাক্তিগত ডায়েরীটা চোখে পড়লো। মাসখানেক হাত দেয়া হয় নি প্রতিদিন যত্ন করে দিনলিপি লিখে রাখার ডায়েরীটাতে। হাতে নিয়ে পাতাগুলো উল্টাতে থাকলো। লেখাগুলোর দিকে তাকালে যে কেউ বলতে পারবে ধীরে ধীরে দুঃখ পেয়ে বসেছে এর মালিককে।

তারপরে হঠাত কিছু নেই! ঠিক এক মাস আগের লেখাটি রয়ে গেছে, তার পরে শুধুই শুন্যতা.. একমাস আগের লেখাটি পড়তে গিয়েও থেমে গেলো অরিত্রা। কী হবে পড়ে! শুধু শুধু ব্যাথাগুলোকে বাড়ানোর মানে হয়! তবে কিছু লিখতে ইচ্ছে করছে ওর। তারিখ দিয়ে লিখতে শুরু করলো অরিত্রা, ‘গল্পটা লিখতে বসে আজও পারলাম না। আমি লিখতে বসেছিলাম, সত্যিই ফাঁকি দেই নি এতোটুকু। চেষ্টা করেছি শব্দের পরে শব্দের মালা গাঁথতে কিন্তু অবুঝ হাত আমার মানেনি কথা! ঘটনা জানা ছিল, কাল পাত্র সব ছিল হাতের মুঠোয় তবু কি এক অদৃশ্য শক্তি রোধ করেছে সব চিন্তা আমার।

আমি লিখতে পারিনি সেই প্রতিটি শব্দ যা আমার ঠোঁটের কোনে নিঃশব্দে প্রতি মুহূর্তে উচ্চারিত হতে থাকে! ওরা যেন অভিশপ্ত! আমাতে থেকেও আমার সাথেই বিদ্রোহে করে বসেছে, পারছিনা বশ করতে তাদের অবাধ্যতা! বরং ভীত হচ্ছি শব্দগুলোর দুঃসাহসে! হতাশ হচ্ছি, যেন আমাকে দিয়ে হবে না, যেমন হয় নি আরও অনেক কিছু। এ শব্দগুলোকে মনে হচ্ছে ধরে রাখতে পারবো না, যেমন পারি নি আরও অনেক কিছু। ওদের সাথেও যেন ঝগড়া হয়ে আড়ি হয়ে গেছে সেদিন, যেদিন আড়ি হয়েছে মনের কিছু আনন্দ-হাঁসির সাথে। না, সবটা আনন্দ-হাঁসি-কান্না অনুভূতির সাথে। সে দিনটা ভেজা ছিল, মনটা শুষ্ক।

আজ বাহ্যিকতা আমায় আর ছোঁয় না, শুধু ভেতরে তাকাই, সেখানে যন্ত্রণা আর কান্না ছাড়া আর কিছু নেই। ওই বৃষ্টি যেন আমায় চিরআর্দ্র করে দিয়ে গেছে। এ চোখ শুকোবার নয়... না সে ক্ষত!’ অশ্রু ঝরছে অরিত্রার দু’চোখ বেয়ে। ডায়েরীর পাতায় কয়েক ফোঁটা পড়লো। আর লিখতে ইচ্ছে করছে না, বন্ধ করে রেখে দিলো ডায়েরীটা।

দরজায় কেউ টোকা দিচ্ছে, সাড়া দিলো না অরিত্রা। বিগত একমাসে সে একটি শব্দও কাউকে বলে নি। কোন ফোন কলস না, এমন কি বাড়ির সবাইও জিজ্ঞেস করে ক্লান্ত হয়ে গেছে। ও কিছুই বলে নি কাউকে। শুধু মাঝে মাঝে ইচ্ছে হলে খেয়ে নেয় টেবিলে বসে।

একা একা, আনমনে। বাকীটা সময় ঘরে আবদ্ধ করে রাখে নিজেকে। কি এক অজানা অভিমান পেয়ে বসেছে ওকে। কি এক ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করছে যেন প্রতিনয়ত। একটা গল্প লিখতে হবে ওকে, ওর গল্পই! তাড়নাটা প্রচণ্ড, কিন্তু বাঁধাটা প্রবলতর।

হচ্ছেনা কিছুই। প্রতিদিন বসে থাকে ল্যাপটপের সামনে, শূন্য- অর্থহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে, আঙ্গুলগুলো অসাড় হয়ে পড়ে ওর, একটি শব্দও যেন ও কোনদিন লিখতে পারবে না! এমন তো হবার কথা নয়! গল্পই তো তার জগত। সত্য-মিথ্যে-কল্পনা সব কথা, অনুভূতিগুলো যে গল্পেই প্রতিনিয়ত এঁকে এসেছে, তবে আজ নয় কেন? ওর ভেতরটা ফেটে যেতে চায় যেন। গল্পগুলো যেন ভেদ করে বেরিয়ে আসতে চায় প্রতিটি রোমকূপ হয়ে, তবু কালির বাঁধনে আবদ্ধ হতে এতো বিতৃষ্ণা কেন ওদের? ঘুম-স্বপ্ন সব হারিয়ে গেছে যেন হঠাতই। ছেলেটাকে খুব ভালোবাসতো অরিত্রা।

ভালোবাসা! হ্যাঁ এখানেই থমকে গেছে অরিত্রা। কিন্তু আজ তো তাকে ঘৃণা করার কথা প্রচণ্ড! ভালোবাসার মুল্য তো সে দেয় নি! সামান্য কথা দিয়ে যে রাখে না সে তো ভালোবাসার যোগ্যই না, সে বিশ্বাসভঙ্গ করেছে, প্রচণ্ড বাজেভাবে আঘাত দিয়েছে, তাকে ভুলে যেতেই হবে। অরিত্রা গল্প লিখতে পছন্দ করতো, করতো বলছি কারণ অনেকদিন সে লেখেনি কিছু। ছেলেটি মুগ্ধ ছিল সে সব সৃষ্টিতে! আর অরিত্রায়। ছেলেটার কাব্যময়তাও তাকে প্রচণ্ড টানতো।

কি করে যেন দুজনে দুজনের অজান্তেই অনেকটা কাছে এসে পড়ে। এতো কাছে যেখান থেকে ফেরা দুস্কর। লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে আবারও ল্যাপটপের সামনে বসে পড়লো, জেদ চেপে গেছে, ও লিখবেই মনের কথাগুলো, ওগুলো নিভৃতে গুমরে কাঁদছে যে! আর কাঁদাচ্ছে ওকেও। ‘মানুষ মরে গেলে কোথায় চলে যায় বলতে পারো? যেখানেই যাক, হারিয়ে যায় এটুকু সত্য! আমি তোমাকে হারাতে চেয়েছি এ কথাটি সত্য নয়। এতো বেশী মিথ্যে যে আজ তার সামনে নিজেকেই অলীক, অবাস্তব, অপার্থিব মনে হচ্ছে।

তোমাকে এতো বেশী ভালোবেসে ফেলেছি কখন বুঝতেই পারিনি। কি জানি, হয়ত ততটা ভালোই বাসিনি! আগে কখনও যে এ অনুভূতি আমায় ছোঁয় নি, তাই জানিনা তার স্পর্শের প্রতিক্রিয়া কি হওয়া উচিৎ। তোমার প্রতিটি শব্দ আমার মুগ্ধ করতো। তোমার মিষ্টতা, আমার সৃষ্টির প্রতি ভালোবাসা, আমার প্রতি যত্ন বিমোহিত করেছে প্রতি মুহূর্তে.........’ ব্যাকস্পেস দিয়ে পুরোটা কেটে দিলো অরিত্রা। হচ্ছেনা, যা লিখতে চাচ্ছে তা পারছে না লিখতে।

আর ব্যর্থ শব্দের আস্তাকুড়ই ঠিকানা! উঠে পড়লো অরিত্রা। মানে হয় না এসবের! ডায়েরীটা আবার হাতে নিলো সে শেষ লেখা পাতাটার ভাঁজে কিছু একটা গোঁজা রয়েছে, অতোটা খেয়াল করলো না অরিত্রা। কলমটা সহ ওয়াশরুমে চলে গেলো সরাসরি। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখতে লাগলো। মুখখানা বিধ্বস্ত দেখাচ্ছে, চোখের নীচে কালচে ভাবটা সুস্পষ্ট।

অযত্নের ছাপগুলো থুঁতনি বেয়ে গলার কাছে গিয়ে কিছুটা কমতির দিকে। সৃষ্টিকর্তা অনেক যত্ন করে বানিয়েছেন বিধায় মেয়েটির স্বেচ্ছাচারিতা, অবহেলাও তার বাহ্যিক সৌন্দর্যের প্রাবল্য এতোটুকু কমতে দেন নি। খানিকটা ম্লান হয়ত হয়েছে, হলদে আলো তার শরীরের সমস্তটা ছুঁয়ে ঠিকড়ে বেরোন আলোচ্ছটা ছড়িয়ে দিচ্ছে চারপাশ। সোনালী শরীরটা তাকে পুলকিতই করতো, কিন্তু আজ করলো বিষণ্ণ! ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো অরিত্রা! তার খুব গাইতে ইচ্ছে করছে প্রিয় একটা গান, কিন্তু গলার মাঝে কষ্ট যেন দলা পাকিয়ে রয়েছে। ডায়েরীটা নিয়ে বাথটাবের হিমশীতল পানিতে অরিত্রা নেমে পড়লো।

ডায়েরীটা পাশে রেখে দুপাশে হাত ছড়িয়ে বুক পর্যন্ত ভাসিয়ে বসলো। প্রচণ্ড ঠান্ডা পানিতে ওর শরীরে কাঁটা দিতে লাগলো, থরথর করে কাপছে ওর ঠোঁট। কিছুক্ষন পর একটু সয়ে গেলো, এখন ভালোই লাগছে ওর। ডায়েরীটা আর কলম হাতে নিলো, কি লিখবে জানা নেই তবু ওর লিখতে ইচ্ছে করছে, গল্প ! ‘গল্প আর ঘটনা কি এক? গল্প লিখতে না পারলেও কি ঘটনা লেখা সম্ভব?’ আনমনে ভাবছে অরিত্রা। বাথটাবের এক পাশে ডায়েরীটা রেখে বুকে ভর দিয়ে পাতাগুলো ওলটাতে শুরু করলো, শেষ যেখানে লিখেছে সেখানেও একটা কলম রয়েছে মনে হচ্ছে, সেটা পাশে রেখে লিখতে শুরু করলো অরিত্রা, আবারও! ‘তোমাকে ডেকেছি, তুমি আসতে চেয়েও আসোনি! এক বছরের অপেক্ষা ছিল, এতো সহজে কি আর সে অপেক্ষাকে বঞ্ছিত হতে দিতে পারতাম? তোমার কি না কি সমস্যা হয়েছিল, আসতে পারো নি।

ভেবেছিলাম এতো জঘন্যভাবে আমাকে ঘন্টার পর ঘন্টা অনিশ্চয়তার মাঝে রেখে অপেক্ষা করাবার জন্য তোমাকে কোনদিন ক্ষমা করতে পারবো না, ভেবেছিলাম পরিচয়ের পর থেকে একটি বছর অনলাইনে যে “শব্দ দুটির” সাথে ভালোবাসার “অভিনয়” করেছি, সে দুটো শুধুই শব্দ, পেছনের মানুষটা অস্তিত্বহীন! অলীক! শুভ্র, মেনে নিচ্ছি, তবু তুমি চলে যাও এ চাইনি, অন্তত মন থেকে না! তবুও তোমাকে চলে যেতে বলেছি, বলেছি আর কোনদিন দেখতে চাই না তোমার মুখ! এতো অভিমান কেন পুষে রেখেছিলে বলতে পারো? চলে যেতে বললেই চলে যেতে হবে? তুমি কি করে পারলে এভাবে চিরতরে হারিয়ে যেতে?’ শব্দ শুনে বুঝতে পারলো বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছে! কতোদিন পরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। হু হু করে কেঁদে উঠলো অরিত্রা। অনেক হালকা লাগছে এখন। বোঝাটা যেন সরে গিয়েছে। শুভ্র অনেক কষ্ট পেয়েছিল, অরিত্রার প্রথমবারের মতো প্রচণ্ড রেগে যাওয়াটা ঠিক সামলে উঠতে পারেনি হয়ত।

সে আর ফেরেনি। তাদের মাঝের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ফেসবুকটা ডিএকটিভ করে হারিয়ে গেলো শুভ্র। চিরতরে! ভোজবাজির মতো পূর্ণ জীবনটা শুন্য হয়ে গেলো অরিত্রার। শুভ্র কে অরিত্রার ঘৃণা করা উচিৎ ছিল, প্রচণ্ড ঘৃণা করা উচিৎ ছিল তার কাপুরুষতাকে, অযোগ্যতাকে। কিন্তু অরিত্রা পারেনি, প্রতিনিয়ত প্রবল হয়ে বসেছে তার স্মৃতি, ছন্দময়তা, কথার মিষ্টতা! ডায়েরীটা পাশে রাখতে গিয়ে অরিত্রা খেয়াল করলো, ডায়েরীর ভেতরে গুঁজে রাখা “কলমটা” আসলে একটা ছোট পেপার কাটার।

হাতে নিয়ে পরখ করতে লাগলো। ডান হাতে পেপার কাটারটি ধরে বাম হাতের ধমনী-শিরা সহ নিখুঁত এবং গভীর একটা ক্ষত করলো। আশ্চর্য ভাবে কোন বোধ, বিকার কিছুই হচ্ছে না ওর! সমস্ত স্বত্বা যেন অবশ হয়ে গেছে। রক্তের প্রচণ্ড ধারা ছুটতে লাগলো। বাথটাবের পানিগুলো লাল রক্তে রক্তাক্ত হচ্ছে, আর অরিত্রা হচ্ছে চির শুদ্ধ! চোখ খোলা রেখে মাথাটা ডুবিয়ে ফেলল ও পানিতে।

পানিতে পড়া হলদে আলোয় অপূর্ব একটা দৃশ্য দেখতে পেলো ও, রক্তকণা আলোর বিপরীতে জলের মাঝে বিস্তার লাভ করছে, একটু একটু করে গ্রাস করছে জলের রঙটা। জলের ক্যানভাসে রক্তের জলরঙে আঁকা ছবিটা দেখছে অরিত্রা এখন, সে খুব উপভোগ করছে রক্তের চিত্রকর্ম, নির্বাক বিস্ময়ে! চলে যাওয়া মানে প্রস্থান নয়। কিন্তু যে চলে যেতে চায় ফিরে না তাকাবার প্রতিজ্ঞা নিয়ে তার হয়ত অনেক কিছুই দেখা হয় না। অরিত্রাও হয়ত দেখতে পারবে না ঠিক সেই মুহূর্তে বেশ কিছুটা দূরে, অজানা এক ঠিকানায় বসে কেউ একজন তাকে প্রচণ্ড মিস করছিল... মনস্থ করছিল আজ অরিত্রার সাথে কথা না বললে সে আর বাঁচবে না! এই প্রশ্নগুলোর মীমাংসা কোনদিনই হয়ত হবে না, হয়ত হয়ে যাবে! কিন্তু তাতে বাথটাবের সেই জলরঙে আঁকা চিত্রকর্মের শিল্পীর আর কিছু যায় আসে না...  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।