১.
রমণীর নরোমহাতের রঙের মতো রাত এলে
তারাগুলো আমি গেঁথে তুলি তার আঁচলে
সমস্তরোমকূপে ফুটিয়ে তুলি গরম নোনা শিশিরদানাগুলো_
সেই তো সেরা উপহার বলে হাসে সে।
একটা শিখা পৃথিবীকে কঠিন রাতে বলো
কতটা আর আলোকিত করতে পারে বলে
যে-দীর্ঘশ্বাস দহন করে আমাদের সেই শিখা নিভিয়ে দিই আমি_
তার মুখ ধবধবে চাঁদের মতো আঁধারকে
করে দেয় আরো নরোম আরো নরোম, আরো নরোম।
২.
তারপর সকালে
এক উঁচুনিচু কঠিন পৃথিবীর ভেতর দিয়ে ছুটি আর ছুটি
যেনো শিশু হরিণ।
আর আমার ঘাড়ের দিকে ছুটে আসা বাঘ দেখে হতবম্বো হয়ে পড়ি
যেনো জীবনে প্রথম দেখছি তাকে_
অচেনার আত্মঘাতী এক বিস্ময় থমকে দেয় বারবার আমাকে।
৩.
তেমন রাত তারপর কেন যে আমি বারবার চাই
খুঁড়ে তুলতে চাই তার ভেতর থেকে সেই বিস্ময়
আমাকে পাবার
সেই কুমারী বিস্ময়_ কিছুই অবশিষ্ট নেই, তাকি শুধু একটি রাতের!
৪.
রমনীর নরোম হাতের রঙের মতো রাত এলে
তাকে বলবো আবার বলবো_ যে জীবন তোমাকে হাসতে দেয়নি
তাকে অস্বীকার করে হাসো।
হাজারো আগুনের অভিজ্ঞতায় পোড়ামুখ জানি না
আর হাসতে পারবে কি না।
‘হাসা কি এতো সহজ’ বলে হয়তো হুহু হেসে উঠবে_
আমি ঠিক বুঝবো না, শিখাটা নিভিয়ে দেবো কি দেবো না
যে শিখা দীর্ঘশ্বাসের
যে শিখা আমার ছায়ার মতো
পিছু নেয় আর পোড়ায় আমাদের।
আর চাইলেই কি নেভাতে পারবো_ জানি না আর!
জীবনের বৃত্ত থেকে কে পারে ছুটে বেরিয়ে যেতে_ এতো সহজ কি, বলো?
সে হয়তো কাঁদবে, আবারো আবারো কাঁদবে,
তারপর থেমে
শান্ত সঙ্গমের দিকে এগিয়ে আসবে_
শুধু ধবধব করতে থাকা অসহ্য উদভ্রান্ত স্নায়ুগুলোকে
আরো একবার ঘুমের উপযোগী করবে বলে_
এর বেশি কিছুই নয়!
৫.
আমি টের পাবো তার মুখ, চিবুক, ঠোঁট
আমার বুকে আবার আছড়ে পড়েছে
গরম অশ্র“ফোঁটাগুলো বুকের চুলের ভেতর দিয়ে
ধীরে ধীরে নিচে নামছে_
আমাদের কি এর বেশি কিছু পাবার ছিলো না ধ্বস্ত এক বিছানায়?
৬.
দাউ দাউ পুড়তে থাকা বাড়ির সামনে যেমন মালিক বেহুশ হয়ে পড়ে_
এ হয়তো তারই এক কোমল রূপের দিকে
এগিয়ে যাওয়ার আয়োজন।
নিজেদের বিপর্যয়ের সামনে রোজ ঘুমিয়ে পড়া_
কিন্তু বাড়িটা?বাড়িটা ঠিকই, পুড়তে থাকে!
৭.
বাহির পৃথিবীতে আশ্রয়হীন হতে হতে নিজেদের ভেতরেও কখন যে আশ্রয়হীন হয়ে গেছি আমরা_
আমাদের নিঃস্বতা ঠেকাতে পারিনি আর_
যেভাবে বাঁশের সাঁকো ধীরে অনিচ্ছায় মুছে যায় কোনো শুকনো খালের ওপর।
৮.
সকালে এক উঁচুনিচু কঠিন পৃথিবীর ভেতর দিয়ে ছুটি আর ছুটি
যেনো হরিণ।
আমার ঘাড়ের দিকে ছুটে আসা বাঘ দেখে আর দাঁড়িয়ে পড়ি না,
ছুটি আর ছুটি, হতবম্ব হই না আর,
প্রতিবারই কিভাবে যে বেঁচে যাই, জানি না,
শুধু থাবার বাইরে এসে মনে হয়,
জীবনে আরো একবার পালাতে পারলাম_ চেনার আত্মঘাতী এক বিস্ময়
থমকে রাখে কিছুটা সময়
প্রতিবারই আমাকে।
পুড়ে খাক হতে পারে জীবন_ কিন্তু বিস্ময় দেখি মরে না।
৯.
মনে হয় রোজ, সূর্য অস্ত যায় ঠিকই_ কিন্তু পৃথিবী
পরিবর্তত হয় না_
শুধু পাক খাই আর পাক খাই আমি, জীবনকে ঘিরে।
১০.
রমনীর নরোম হাতের রঙের মতো রাত দ্বিতীয়বার আর আসে না _
এমন একটা এপিটাফ
কবরের কপালে লিখে রাখতে পারতাম যদি
কিন্তু তারও তো খরচা পাতি আছে_
শুনেছি_ তিনমাস পর শবদেহ কবর ছেড়ে উঠে যায় ট্রাকে
সে খবর না নেয়াই ভাল নয় কি!
১১.
শুধু পাক খাই আর পাক খাই আমি, জীবনকে ঘিরে।
রোজ সূর্য ওঠে...
২৫.০৬.২০১১
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।