আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অপহরণকারীদের চিনে ফেলবে তাই...

মুক্তিপণের ১লাখ টাকা নেওয়ার পরও শুধু অপরহণকারীদের চিনে ফেলবে এ আশংকায় মাত্র সাড়ে ৪ বছর বয়সী এক শিশুকে ঘুমন্ত অবস্থায় নদীতে নিক্ষেপ করেছে মানুষরূপী একদল পিশাচ। ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুর আর পৈশাচিক এ ঘটনায় জড়িত ৬জনকে আটক করেছে র‌্যাব। শিশুটির সন্ধানে র‌্যাবের ডুবুরিদল এখন কাঁচপুর ব্রিজের নিচে শীতলক্ষ্যা নদীতে অভিযানে রত আছে। মাত্র ৪ বছর ৫ মাস বয়সের হতভাগ্য শিশুটির নাম মোহাম্মদ জিহাদ। তার প্রবাসী বাবা আক্তার হোসেন সকালে সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকা এসে পৌঁছানোর পর পুত্রশোকে স্ট্রোকে আক্রান্ত হন বলে জানা গেছে।

রোববার রাতে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার ধর্মগঞ্জ এলাকার নিজ বাড়ি থেকে অপহরণের শিকার জিহাদকে একদিন আটকে রাখার পর সোমবার রাতে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয় অপহরণকারীরা। মঙ্গলবার বিকেল সোয়া ৭টায় এ রিপোর্ট আপডেট করার সময় পর্যন্ত নিখোঁজ জিহাদের সন্ধানে নদীতে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছিল র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) সদস্যরা। ধারণা করা হচ্ছে, শিশুটি আর বেঁচে নেই। অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১ নারীসহ ৬জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তারা হলো নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার ধর্মগঞ্জ বেপারীপাড়া এলাকার মৃত ফয়েজউদ্দিন বেপারীর ছেলে ওয়াসিম, একই এলাকার কাদের মিয়ার ছেলে সাদেক, ধর্মগঞ্জ চটলার মাঠ এলাকার ইয়াকুব আলীর ছেলে স্বপন, ইবরাহিমের ছেলে শাকিল, ফতুল্লা থানার ভূঁইগর এলাকার লাকি আক্তার ও বরিশাল জেলার গলাচিপা থানার গিলাবাড়ি এলাকার মুসলিম মিয়ার ছেলে সালাম।

মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের পুরাতন কোর্টে অবস্থিত র‌্যাব-১১ এর স্পেশাল ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানি (সিপিসি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত রোববার রাত ৭টায় নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার ধর্মগঞ্জ এলাকার আকতার হোসেনের ছেলে জিহাদকে বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয়। এরপর অপহরণকারীরা জিহাদের মা মাসুদা আক্তারের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। বিষয়টি মাসুদা আক্তার র‌্যাব-১১ কে জানালে তারা জিহাদকে উদ্ধারে তৎপরতা শুরু করে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টায় অপহরণকারীরা জিহাদের মুক্তিপণ হিসেবে শহরের চাষাঢ়া এলাকা থেকে মাসুদা বেগমের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা আদায় করে।

ওই সময়ে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা র‌্যাব-১১ এর একটি বিশেষ অপারেশন দল মুক্তিপণ নিতে আসা ওয়াসিম, সালাম ও সাদেককে আটক করে। পরে তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক আটক করা হয় অপহরণকারী চক্রের অপর তিন সদস্য স্বপন, মোহাম্মদ শাকিল ও লাকি আক্তারকে। অপারেশনের নেতৃত্ব দেন লে. কমান্ডার মাহবুবুল আলম ও সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) নাজির আহমেদ খান। ঢাকায় র‌্যাবের প্রেস ব্রিফিং ঢাকায় র‌্যাব-২ এর শেরে বাংলা নগরস্থ কার্যালয়ে বিকেল সোয়া ৫টায় আয়োজিত এক প্রেস বিফিংয়ে র‌্যাব-১১ এর কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল গাজী আহসানুল হক জানান, জিজ্ঞাসাবাদে অপহরণকারীরা স্বীকার করেছে যে, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী জিহাদকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে তারা। তাদের পরিচয় ফাঁস হয়ে যাবে এ ভয়ে তারা ঘুমন্ত জিহাদকে হত্যার উদ্দেশ্যে তোয়ালে দিয়ে মুড়িয়ে সোমবার রাত ৭টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর সেতুর ওপর থেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে নিক্ষেপ করে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত জিহাদের মা মাসুদা আক্তার ছেলের শোকে কাঁদতে কাঁদতে বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন। এ অবস্থায় তিনি সাংবাদিকদের জানান, অপহরণকারী দলের সদস্য স্বপন তাকে বিয়ে করতে চেয়ে ব্যর্থ হয়। মাসুদা আরও জানান, স্বপনের মা ও তার মা পরস্পর ধর্মবোন। অপরদিকে জিহাদের সিঙ্গাপুরপ্রবাসী বাবা আক্তার হোসেন ছেলের অপহরণের সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার ভোরে দেশে এসে পৌঁছানোর পর স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। তিনি হাসপাতালে চিকিসাধীন আছেন।

এদিকে র‌্যাব কর্মকর্তা লে. কমান্ডার মাহবুবুল আলম সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার দুপুর থেকে র‌্যাব নিজস্ব ডুবুরি দিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীতে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে। অপহরণকারীদের দেখানো স্থানে তল্লাশি চলছে। তবে নদীতে অনেক স্রোত থাকায় অনুসন্ধান প্রচেষ্টা বিঘিœত হচ্ছে। ref:-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.