আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কথা পরিষ্কার না শুনলে ভীষণ বিপদ

ঘোল বড়ই মজার লাগে যদি তা বোরহানি রূপে আপনার খাবার টেবিলে আসে। আমার ছোট বেলায় দেখেছি দাদা-নানাদের কোল্ড ড্রিংক মানে ‘সেভেন আপ’ খাওয়াতে গেলে একটু লবণ উনারা দিতেনই। এতে নাকি বেশ ঝাঁঝ বেড়ে যেতো, পেটটাও বড়ই আরাম লাগতো মুরগি-মোসাল্লাম খাবার পর। বড্ড হাসতাম দাদা করে কি! বলতাম- দাদা আমারেও একটু দাও! দাদা বলতেন- খাইস না দাদা বড্ড ঝাঁঝ তুই তো ছোট। তুই লবণ ছাড়াই খেয়ে নে।

দাদি-নানী-চাচিরা এক্কেবারেই গ্রাম্য আবহে থাকতেন বলে, উনাদের জোর করে কোল্ড ড্রিংক খাওয়াতে গেলে, খেতেন ঠিকই চেহারা করতেন এমন যে, পৃথিবীর সবচেয়ে বিস্বাদ কিন্তু মজার ( দিল্লিকা লাড্ডুর মতন) একটি জিনিষ খাচ্ছেন। আবারও হাসতাম, তবে সব কিছুতেই থাকতো অসাধারণ নির্মল আনন্দেরই বহিঃপ্রকাশ। এরকম সরল মানুষ এখনও বাংলাদেশে বেশি বলেই আমি অধম মনে করি। আরে তাদের নিয়েই গুজব নিয়ে খেলতে থাকা চক্র বেশ শক্তিশালী ভূমিকায়। সে অর্থে আমরা যেন এক্কেবারেই হাত-গুটিয়ে বসে আছি! আমার পোষ্টের শিরোনামের কথাটি হালের – ‘সেরম পরিষ্কার’ নেটওয়ার্ক ‘রবি’ প্রচারিত বিজ্ঞাপনের।

বিজ্ঞাপনটি আমার কাছে বেশ লাগে। এর চেয়েও ভালো লাগে রবির আরেকটি বিজ্ঞাপন,যেখানে দাদু বয়সী একজন মডেলের আক্ষেপ-‘কইছিলাম না বাধ ভাইঙ্গা যাইব। ‘সে বিজ্ঞাপনের নির্মাতার সাথে যদি দেখা করার সৌভাগ্য হতো, তাহলে কৃতজ্ঞচিত্তে বলতাম- একমাত্র আপনি শুধু বুঝতে পেরেছেন ২০১৩ এর বাংলাদেশীদের মনের ব্যথা। জামাত-শিবির এর শিকার ‘চাঁদে সাঈদি গুজব- বগুড়া’ যদি তাদের ট্রায়াল হয়ে থাকে। এ নিয়ে করতে করতে এক সময় সত্যি সত্যি সুযোগে একটি বড় ঘটনা ঘটিয়ে ফেলবে জামায়াত-শিবির চক্র।

আমি অধম এভাবেই ভাবছি। সরকারের এত বড় একটি কর্মসূচী এ-প্লাস টিকা, এ সময়ে এসে এভাবে ‘কাইত’ করে ফেললো প্রশাসনের সবাইকে! গুজব শুনতে শুনতে সত্যিকারের বাঘ রূপে যখন এসে পড়বে কোণ ঘটনা। তখন মিথ্যেবাদী রাখাল আর বাঘের গল্পর মতনই পরিণতি হবে আমাদের। একজন সাধারণ বাংলাদেশি হিসেবে এ অবশ্য আমার একান্তই শঙ্কা। কেউ সমর্থন করুক আর নাই করুক, ভাবনাটা আমার।

‘গুগল’ মামুর সাহায্য নিয়া কিঞ্চিত জানতে পারলাম, এ দেশে জামায়াতে ইসলামীর যতটা ভোট অথবা পক্ষের মানুষ, তার চেয়েও অনেক অনেক বেশি এ দেশে হিন্দু ধর্মালম্বিগন। তার সাথে যদি যোগ হয় অন্যান্য ধর্মালম্বিদের সংখ্যা। তাদেরকে সংখ্যালঘু বলে যেভাবে তাণ্ডব চালিয়ে পরিকল্পনা মাফিক ধংসযজ্ঞ চালাল জামাত-শিবির চক্র। হাস্যকর ব্যাপার হল, সে ক্ষেত্রে তাদেরকে আমার রাষ্ট্র কিছুই করতে পারে নাই! অরাজকতা যারা করছে তারা তাদের ভবিষ্যৎ কার্যক্রমে আরও বেগবান হবেই। কোন অপরাধী যখন দেখে সে অপরাধ করার পরও কেউই কিছু বলছে না, তখন সে দিগুণ উৎসাহ নিয়ে তার চেয়েও ভয়ংকর কিছু করতে তাদের বুকে বাধবে না।

কৌতুকের ব্যাপার, জামাতের যে নেতা মতিঝিল এ সর্বসন্মুখে ঘোষণা দিয়েছিল- দেশের গৃহযুদ্ধর আগাম ঘোষণা। তাকে বিশেষ আটকাদেশে এর জামিন মাত্র এক লাখ টাকায় খালাস! বিএনপি তাদের সমাবেশে বোমা মেরেছে নিজেরাই, তাই বলিয়া তাদের সব নেতা-কর্মীদের আটক করা হয়। কিন্তু জামাত-শিবির চক্র দেশে অরাজকতা ঘটিয়ে এক লাখ টাকা জরিমানা গুনে বের হয়ে যায় দোর্দণ্ড প্রতাপে! এ দেশেই আমরা দেখেছি, সন্দেহের জায়গা থেকে প্রতিবন্ধীদের পিটিয়ে সাধারন মানুষ মেরে ফেলেছে, আইন তুলে নিয়েছে নিজের হাতে! এ দেশেই আমরা দেখেছি, একজন নাগরিক রুপি শয়তান, আরেকজন নাগরিকদের নিঃস্ব করে দিচ্ছে। এ দেশেই এখন প্রায়ই দেখি গ্রাম এর সাথে আরেকটি গ্রাম এর সহিংস যুদ্ধ। এ দেশেই যখন শুনি, ক্ষমতায় থাকা নেতার বেয়াইকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আটকাদেশ দেন এবং তার জন্য তাকে অপমান হতে হয় পরিশেষে তিনি লজ্জায় পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

এ দেশে যখন দেখি একাত্তরের দেশ দ্রোহীদের পক্ষ নেয় প্রিয় প্রধান বিরোধী দল! এ দেশে যখন শুনি- রাজনৈতিক অপরাধের শাস্তি হয় না! এ দেশে যখন সরকার প্রধানের বেয়াই বলে পরিচিত পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারি মানুষটিকে দেশ দরদী আখ্যা দেয়া হয়। সে দেশে সহিংসতা-কারী, অরাজকতা সৃষ্টির পায়তারায় থাকা পক্ষ, দেশের ক্ষমতা লোভী পক্ষ, সুবিধাভোগী আমলা, সুবিধাভোগী প্রশাসন, সুবিধাভোগী রাজনীতিবিদ, সুবিধাবাদী সুশীল, সময়ে ভোল পালটানো মানবাধিকার সংগঠনগুলো তো তাদের সুবিধা এবং উদ্দেশ্য হাসিল করবেই। এ ধারা পাল্টাতে হলে, আর যাই হোক চুপ করে ঘরে বসে থাকলে তাদেরই জয় হবে, যারা চায় এ দেশটার কাঁধে বন্দুক রেখে গুলি চালাতে। তাদেরই উত্থান হবে। ‘সম্মিলিত সর্বোচ্চ চেষ্টা’ ছাড়া, সব ব্যাপারে মোকাবেলা করার আর কোণ উপায় নাই।

 ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।