২. ব্যক্তির চেতনা একটু হলেও লুপ্ত হয় যখন সে কোন প্রতিষ্ঠানে যুক্ত থাকে। ১. যদি চতুর্দিক বন্ধ নিরেট পাথরের ভিতরেও কেউ ভাল কাজ করে, তবু সেটার কল্যাণ পৃথিবীতে ছড়াবেই। (এটি হাদিস। ) ০.সাপের মাথা বাদে বাকি পুরোটাই লেজ। সো, লেঞ্জা ইজ কোয়াইট ইম্পসিবল টু হাইড।
মার্শাল আর্টের প্রতি একটা চোরাগোপ্তা প্রেমের বিষয়ে আমরা সবাই যদিও একই রকম, কিন্তু ঠিক এখানেই হোঁচট খাই সেই শুরু থেকে।
রাস্তাঘাটে চলতি ফিরতি পথে ঠিক কোন মার্শাল আর্টটা আমাকে পুরোপুরি জিতিয়ে দিতে পারে?
হোক না, সিএনজি দিয়ে যাচ্ছি নির্জন কোথাও, বা রাস্তায় জনা দশেক ছিনতাইকারী ধরল! অথবা রীতিমত আমার সাথে কারো শত্রুতা চলছে। অথবা, আপনি ব্লগের কোন মহান বিবেক। এই বিবেককে...
'ছাগু' মওকামত পেয়ে গেল মগবাজারে...
বা 'ভাদা' বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে,
এবং একইভাবে 'আস্তিক' / 'ধর্মগাধা' / 'কমুনিস্ট'/ 'ছাগীয়তাবাদী' বা 'নাস্তিক' যথাক্রমে , বায়তুল মুকাররামের গেইট, চরমোনাই পীর সাহেবের মাহফিল, আজিজ মার্কেট, মতিঝিলের আশপাশ, বইমেলা, অথবা এমনকি সেন্টমার্টিন যাবার পথে জামাতী তরী কেয়ারী সিন্দাবাদে!
তখন সম্মিলিত পাগলাটে শত্রুর সামনে ঠিক কোন মার্শাল আর্টটা জানা থাকলে কতটুকু জুত করতে পারব, এ ভাবনা কি আমাদের মনে নেই?
আছে। বিলক্ষণ আছে।
তাইতো এই মার্শাল আর্টের রাঙ্কিঙের আয়োজন!
এ পর্বে একটা চমৎকার অফটপিকে হাঁচড়াপাঁচড়ি করি... এ ছাড়া যে হয় না!
শাওলিন টেম্পল ও বোধিধর্মা
শাওলিন মঠের কাহিনী রীতিমত রোমাঞ্চকর।
বিংশতিতম বুদ্ধের (মহামতি বুদ্ধের পর প্রধানকেও বুদ্ধ বলা হত সে আমলে) পরে আসেন আরেকজন। নাম তার বোধিধর্মা। তিনি কালক্রমে প্রধান হয়ে ওঠেন চৈনিক বৌদ্ধধর্মে। কিন্তু এই ভিক্ষুদের তখন আরো একটা তীব্র অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থার ভিতর দিয়ে যেতে হত।
তাঁরা সর্ব অহিংসার আকর। তাতে কী, পৃথিবী তো অহিংস নয়। তাঁরা নিরস্ত্র, আর পৃথিবীর অস্ত্রপাতি বেড়েই চলেছে। বোধিধর্মা দিনের পর দিনের পর দিন ভেবে ঠিক করলেন, এম্নিতেও শরীরচর্চা প্রয়োজন। বৌদ্ধধর্মে ততদিনে শারীরিক সুস্থতার প্রতি একটু বেশিই নজর দেয়া হচ্ছে।
সেইসাথে প্রয়োজন নিজেকে রক্ষা করা।
ব্যস, চ্যান বুদ্ধিস্ট বা ধ্যানী নামে পরিচিত বৌদ্ধ ঘরানায় যুক্ত হল খালিহাতে আত্মরক্ষার কৌশল। কারা-তে ও কুংফু নামে যা আরো অনেকদিন পর পরিচিত পাবে, পাবে প্রতিষ্ঠা সারা পৃথিবীতে। এমনকি শাওলিন মঠের ছাত্ররা তো রীতিমত বুদ্ধের কাছে আরাধনা না করে আরাধনা করে বোধিধর্মার কাছে।
আর তাই শাওলিনের দেয়ালে দেয়ালে বোধিধর্মার ছবি।
তাঁর মূর্তি। কে এই বোধিধর্মা, যিনি অতি প্রাচীণ কালে পৃথিবীর সবচে জনপ্রিয় ধারার মার্শাল আর্টের সক্রিয় জন্মদাতা ছিলেন? তিনি তো শুধু কারাতে আর কুংফুর জনক নন। সিলাত, উইং চান, আইকিদো, জুদো, সিস্টেমা, জিউজিতসু, নিনজুতসু, এমসি ম্যাপ, ক্রাভ মাগা বা হালের অন্য নব্বই শতাংশ মার্শাল আর্টের জন্ম হয়েছে এই এক বোধিধর্মার মূল মার্শাল আর্ট- কুংফু ও কারাতে থেকে!
বোধিধর্মা শুধু শাওলিন টেম্পলে পূজিত এক মহামানব নন। তিনি শুধু পৃথিবীর সবচে জনপ্রিয় দুই ধারা কুংফু ও কারাতের জনক নন, তিনি তাই মূলধারার সকল মার্শাল আর্টেরই জনক। বোধিধর্মা এক নতুন যুগের প্রবর্তক- অনাক্রমণ রীতির কারণে ভবিষ্যত পৃথিবীতে যা হতে চলেছে সবচে জনপ্রিয় পদ্ধতি।
আত্মরক্ষা। পরের পর্বে চলে আসবে কারাতের কথা। আর তাঁকে স্মরণ না করে তো হয় না। বোধিধর্মা চীনে গিয়েছিলেন সুদূর বুদ্ধভূমি থেকে। তিনি কথা বলতেন বুদ্ধভাষায়।
তিনি এই বাংলার মানুষ।
বংশপরম্পরা
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।