আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাইক্রোসফটে ফিরছেন বিল গেটস?

মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস কি আবারও মাইক্রোসফট পরিচালনার ভার নিয়ে ফিরে আসছেন? অস্ট্রেলিয়ান ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমসের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, হয়তো আবারও মাইক্রোসফট পরিচালনার ভার নিজের কাঁধে নিয়ে ফিরে আসতে পারেন বিল গেটস। প্রতিবেদনটি বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও ব্লগে বিল গেটসের ফিরে আসার সম্ভাবনা নিয়ে নানা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
অবশ্য সম্প্রতি প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট সিনেটের প্রযুক্তিবিষয়ক লেখক ম্যারি জো ফলি গেটসের ফিরে আসার এ সম্ভাবনাকে স্পষ্ট ভাষায় নাকচ করেই দিয়েছেন।
ম্যারি লিখেছেন, মাইক্রোসফটে আর ফিরবেন না বিল গেটস।

মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহীর পদ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার ভার নেওয়ার কাজ তিনি আর করবেন বলে মনে হয় না।
বর্তমান সিইও স্টিভ বলমারের হাতে মাইক্রোসফট পরিচালনার ভার ছেড়ে দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন বিল গেটস। বর্তমানে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের হয়ে বিভিন্ন দাতব্য কাজে ব্যস্ত তিনি। বর্তমানে খুব কমই প্রযুক্তি বিষয়ে আলোচনা করেন। মাইক্রোসফট পরিচালনার ভার ছেড়ে দিয়ে তিনি এর বোর্ড সামলাচ্ছেন।

এর আগেও মাইক্রোসফটে বিল গেটস ফিরবেন কি না, তা তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তখনও তিনি যেমন মাইক্রোসফট পরিচালনায় ফিরতে অপারগতার কথা জানিয়েছিলেন, এখনো তিনি হয়তো সেটাই বলবেন।

ফিরে আসার সম্ভাবনা
বিশ্বের বৃহত্তম সফটওয়্যার নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের চেয়ারম্যান বিল গেটস প্রতিষ্ঠানটির প্রযুক্তিপণ্য উদ্ভাবনের নানা বিষয় নিয়েই নাখোশ। গত কয়েক বছরে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে মাইক্রোসফট পিছিয়ে পড়ায় খুশি হতে পারেননি বলেই সাম্প্রতিক এক সাক্ষাত্কারে জানিয়েছেন তিনি। সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে মাইক্রোসফটের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিল গেটস জানিয়েছেন, কয়েক বছর ধরে মাইক্রোসফটের উদ্ভাবন সক্ষমতা তাঁকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি।


এদিকে, মাইক্রোসফটের নতুন পণ্যের উদ্ভাবন নিয়ে বর্তমান প্রধান নির্বাহী স্টিভ বলমারের অনেক সমালোচনা হচ্ছে। এ সমালোচনা প্রসঙ্গে বিল গেটস বলেন, স্টিভ বলমার তাঁর এক যুগের বেশি সময়ে মাইক্রোসফটের জন্য অনেক কিছু করেছেন। আমার মতো স্টিভ বলমারও মাইক্রোসফটের সাম্প্রতিক উদ্ভাবন নিয়ে খুশি নন।
প্রসঙ্গত, মাইক্রোসফট সর্বশেষ উইন্ডোজ ৮ সফটওয়্যার, সারফেস ট্যাবলেটের মতো পণ্য বাজারে এনেছে। তবে আশানুরূপ ফল না হওয়ায় বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে এসে রেকর্ড পরিমাণ লোকসান গুনতে হয়েছে মাইক্রোসফটকে।

তবে গত এক দশকে মাইক্রোসফটের শেয়ারের দাম গড়ে ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। আর এ অবস্থা মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতার নাখোশ হওয়ার কারণ হতে পারে। মাইক্রোসফটে নতুন ধারায় ফেরাতে আবারও তাঁর ফিরে আসা নিয়ে তৈরি হয়েছে শোরগোল।
বাজার বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, উইন্ডোজ আটের আপডেট ৮.১সহ আরও নতুন পণ্য উদ্ভাবন করতে যাচ্ছে মাইক্রোসফট। যার মধ্যে রয়েছে পরিধেয় প্রযুক্তিপণ্য, হাতঘড়ি, চশমার মতো পণ্য।



২০১১ সালের গুঞ্জন
বিল গেটস কি আবারো মাইক্রোসফটের দায়িত্ব নিয়ে ফিরে আসছেন? এ প্রশ্নটির বিশ্লেষণ করে প্রভাবশালী সাময়িকী ‘ফরচুন’ ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। তার ফলেই বিল গেটসের ফেরা না ফেরা নিয়ে প্রযুক্তির ব্লগগুলোয় তাঁর ফেরা নিয়ে নানা আলোচনা হয়েছিল। ‘ফরচুন’ সাময়িকীর ওই প্রতিবেদনে মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস আবারও দায়িত্ব নিয়ে ফেরার কথা ভাবছেন বলে জানানো হয়েছিল। ২০০৮ সালে মাইক্রোসফটের সিইও এবং চিফ সফটওয়্যার আর্কিটেক্টের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান বিল গেটস। ‘ফরচুন’-এর প্রতিবেদনের পর সব গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে বিল বলেছিলেন, ‘আর ফিরছি না’।

সিডনির এক পারিবারিক অনুষ্ঠানে বিল গেটস ওই সময় জানিয়েছিলেন যে ‘মাইক্রোসফটের পুরো দায়িত্ব নিয়ে ফিরে আসার বিষয়ে যে গুঞ্জন রটেছে, তা সত্য নয়। বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের কাজ নিয়েই আমি পুরোপুরি ব্যস্ত। আর আমার বাকি জীবনটা এ নিয়েই কাটবে। ’ বিল গেটস আরো জানিয়েছিলেন, ‘আমি মাইক্রোসফটের হয়ে পার্ট-টাইম কাজ করি। কিছু বিষয়ে পরামর্শ দিই।

বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা ফাউন্ডেশনের জন্য আমার সময় বরাদ্দ করা আছে আর এ প্রতিষ্ঠানটি নিয়েই কাজ করে যেতে চাই। ’

ফিরে আসা কি সম্ভব?
বিল গেটসের মতো দক্ষ ও ঝানু প্রযুক্তিবিদের পক্ষে আবারও মাইক্রোসফটের হাল ধরা হয়তো কঠিন কিছু নয়। তবে প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা বলছেন, ২০০৮ সালে যে মাইক্রোসফটের দায়িত্ব ছেড়েছেন তিনি, প্রতিষ্ঠানটি এখন আর সেরকম নেই। প্রতিযোগিতা বেড়েছে, নতুন নতুন উদ্ভাবনের চাহিদা বেড়েছে, ভোক্তাদের রুচিতে পরিবর্তন এসেছে। তাই স্টিভ বলমারের বিদায়ের পর আবার পুরোনো ধারায় মাইক্রোসফটকে ফিরিয়ে নিতে বিল গেটসের ফিরে আসার সম্ভাবনা কম।

হয়তো, মাইক্রোসফটে নতুন মুখ দেখা দিতে পারে।

নতুন মুখ জুলি
একসময় মাইক্রোসফট থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন জুলি লারসন গ্রিন। সেই জুলিই এখন মাইক্রোসফটের শীর্ষ কর্মকর্তাদের একজন হয়ে প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যত্ দেখবেন। উইন্ডোজ ও হার্ডওয়্যার বিভাগের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। এবার শুধু একটা পদই বাকি, মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী!
জুলি লারসন গ্রিন মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ বিভাগের প্রধান।

সম্ভবত তিনিই হতে যাচ্ছেন মাইক্রোসফটের ভবিষ্যত্ প্রধান।

মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী?
প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ প্রযুক্তিবাজারের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম সফটওয়্যার নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট। উইন্ডোজ ৮-এর জনপ্রিয়তায় ধীরগতি, হার্ডওয়্যার বিভাগে মাইক্রোসফটের দূরদর্শিতার অভাব—এ ধরনের সমালোচনায় বিতর্কিত হয়ে পড়েছেন মাইক্রোসফটের বর্তমান প্রধান নির্বাহী স্টিভ বলমার। এই পরিস্থিতিতে সবার নজর কেড়েছেন জুলি। মাইক্রোসফটের প্রকৌশলী থেকে হঠাত্ করে উইন্ডোজ বিভাগের প্রধান হয়ে যাওয়ার পর তাঁকেই ভাবা হচ্ছে মাইক্রোসফটের ভবিষ্যত্ প্রধান নির্বাহী হিসেবে।


সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।