আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দস্যিপনা-৩: Operation FAKE Hunt

জীবন বদলায়, রূপকথা বদলায় না...... সবে মাত্র ভার্সিটি জীবনে পা রেখেছি তখন। যা দেখি সবই ভালো লাগে। ফ্রেন্ডদের দেখাদেখি ফেবুতে নতুন করে একাউন্ট খুললাম এক ফ্রেন্ডের কাছ থেকে শিখে নিয়ে (হাহা...এখন আমারও ফেবুতে একাউন্ট আছে এমন একখান ভাব )। সারা দিন-রাত ফেবু নিয়ে সে কি গবেষনা!!! ফোন করে মুমুকে (আমার ফ্রেন্ড) বললাম, “দোস্ত, আমিতো ফেবুতে একাউন্ট খুলছি ( এমন একখান ভাব যেন জুকারবার্গের মতো আমিই ফেবু বানাইছি)”। শুনে ও বলে, “দোস্ত, আমারেও একখান একাউন্ট খুলে দিতে হবে।

তুই সময় করে বাসায় আসিস। (আহ!!!শুনে ভাবখানা যেন আরো একটু বেড়ে গেল। )“। এর কিছুদিন পর মুমুদের বাসায় গেলাম। ওকে একাউন্ট খুলে দিয়ে সবকিছু শিখিয়ে পড়িয়ে বাসায় ফিরলাম।

মাসখানেক পরে ও একদিন আমাদের বাসায় আসলো। এসে আমার পিসিতে বসে ওর প্রোফাইল চেক করছিল। একটা মেয়ের ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট এক্সেপ্ট করে দুজনে মিলে ঐ মেয়ের ওয়ালে গেলাম। গিয়ে দেখি ঐ মেয়ের সাথে মুমু অলরেডী ফ্রেন্ড। আমি বলি, “কি রে তুই না মাত্র ফ্রেন্ড হইলি, তাহলে এটা কে?”।

ও তো অবাক। তারপর মুমু নামের ঐ আইডি তে গিয়ে দেখি...কেউ একজন একই নাম, একই প্রোফাইল পিক, এমন কি একই ইনফো দিয়ে মুমুর নামে একটা ফেক আইডি খুলছে। এই ঘটনা দেখে মুমু তো কাঁদবার অবস্থা। কে এই কাজ করতে পারে সেটা ভেবে ভেবে ওর মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড়। অতঃপর অনেক কষ্টে ওকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে শান্ত করলাম আর বললাম, ”তুই ভাবিস না।

আমি তো আছি। আমি ঠিক খুঁজে বের করবো(লেডি শার্লোক হোমস থাকতে কিসের চিন্তা )। “ ওকে শান্ত করে বাসায় পাঠিয়ে দিলাম। অতঃপর শুরু হল মিশন – Operation FAKE Hunt ওই ফেক আইডিতে আমি ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠালাম। আর বাছাধন ফাঁদে পা দিয়ে রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করলো।

তারপর বন্ধুর কাছে পাঠালাম একখানা বিশাল আবেগঘন মেসেজ। মেসেজটা হুবহু তুলে দিলাম - কিরে কি খবর তোর? কেমন আছিস? অনেক দিন দেখা হয় না। don't u miss me.............. এতো বদ হয়ে গেছিস কেন তুই? কোন যোগাযোগ রাখিস না... অতঃপর রিপ্লাই এর অপেক্ষা... রিপ্লাই আসলো পরদিনই... i m sorry to inform u that im not the real MUMU . I JUST made fake ID to test my BUET FRIENDS. but truely speaking i like ur id,walls..... and can confirm u i'll never forget u as real mumu! promise. NOW ITS UP TO U whether u become my friend or not! (মেসেজের নিচে নামটা ছিল, সে সত্যিই এখন আমার ফ্রেন্ড কিনা তাই দিলাম না, তাতে অনেকেই চিনে ফেলতে পারে। ) মেসেজ পেয়ে মনে মনে বললাম আহা কি পেয়ারের কথা!!!এবার বুঝবা ঠেলা... সেদিনই কিছুক্ষণ পর সে তার রিয়েল আইডি থেকে আমাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠালো। এক্সেপ্ট করার পর যখন চ্যাটিং করলাম তখন তাকে বলে দিলাম যে আসলে পুরোটাই একটা চালাকি ছিল।

সেই কথা শোনার পর তার তো সেই রকম কাহিল অবস্থা। অনেক রিকুয়েস্ট করলো আমাকে যাতে আমি মুমুকে কিছু না বলি। সে ঐ আইডি অফ করে দিবে...ব্লাহ ব্লাহ...। আমি বললাম আমি তো মুমুকে বলে দিছি। সে এই কথা শুনে ভীষন ঘাবড়ে গেল।

অতঃপর মুমুকে বললাম, তুই এই নামে কাউকে চিনিস। তখন নতুন ভর্তি হওয়াতে ও অনেককেই চিনতো না। জিজ্ঞেস করলো, “কেন?”। আমি কথা ঘুড়িয়ে বললাম এমনি। কিন্তু ব্যাপারটা মুমু ঠিকই ধরতে পারলো।

ওর জোড়াজুড়িতে তাই শেষ পর্যন্ত বলে দিলাম। ও ওর ফ্রেন্ডদের সবকিছু বলার পর সবাই মিলে সেই ফেক মুমুকে ধোলাই দিতে চাইলো। কিন্তু আমি আবার খুব দয়ালু কিনা, কথা দিয়েছিলাম যে ওকে কেউ ধোলাই-টোলাই দিবে না(বেচারা ধরা পড়ে খুব কান্নাকাটি করেছিল কিনা )। যাইহোক আমার কথাটা মুমু শেষ পর্যন্ত রাখলো। আর শেষ করলাম... Operation FAKE Hunt ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।