চারিদিকে দেখো চাহি হৃদয় প্রসারি আজকের আনন্দবাজার থেকে রিপোর্ট টি তুলে দেওয়া হল। রামরাজ্য বানাতে চান উমা ভারতী। আসুন হিন্দু মৌলবাদ, মুসলিম মৌলবাদ - সবের বিরুদ্ধে আমাদের সেকুলার গণতান্ত্রিক লড়াই তীব্র হোক।
ফিরলেন উমা, তবে ‘বন্দি’ উত্তরপ্রদেশেই
নিজস্ব সংবাদদাতা
দলের একাংশের অসন্তোষকে উপেক্ষা করেই উমা ভারতীকে দলে ফিরিয়ে আনলেন বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ী। দল থেকে বহিষ্কারের প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর পর বিজেপিতে ফিরলেও উমাকে উত্তরপ্রদেশের মধ্যেই বেঁধে রাখা হল।
দলের কৌশল, আপাতত তাঁকে চাপের মধ্যে রাখা এবং গো-বলয়ের সব থেকে বড় রাজ্যে রামমন্দিরের ভাবনা উস্কে দেওয়ায় এবং অনগ্রসর শ্রেণির ভোট টানতে তাঁকে কাজে লাগানো।
লখনউতে দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের ফাঁকেই গডকড়ী জানিয়েছিলেন, তিনি সকলের সঙ্গে কথা বলে শীঘ্রই উমাকে বিজেপিতে নিয়ে আসছেন। লখনউ থেকে ফেরার দু’দিনের মাথায় আজ সেই ঘোষণাই করলেন তিনি। তবে উমা ‘গঙ্গা বাঁচাও অভিযান’-এর দায়িত্ব ছাড়া এখনই বিজেপিতে কোনও পদ পেলেন না। বিজেপির এক শীর্ষ নেতার কথায়, “উত্তরপ্রদেশের মতো বড় রাজ্য যদি হাতছাড়া হয়, তা হলে পরের লোকসভায় এনডিএর ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা নেই।
তাই নেতৃত্বের সঙ্কটে দীর্ণ উত্তরপ্রদেশে উমার মতো একটি মুখ চাই। আবার উমাও অনেক দিন ধরে দলে ফিরতে আগ্রহী। তাই উমা ও বিজেপি, উভয়ের কাছেই এটি লাভজনক। তবে শর্ত একটাই, উমা যেন উত্তরপ্রদেশের গণ্ডি পেরোনোর চেষ্টা না করেন। ”
উমাকে ফেরানো নিয়ে যেমন সুষমা স্বরাজের মতো নেতাদের আপত্তি রয়েছে, তেমনই বহু দিন ধরে বাদ সেধেছিলেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান।
কিন্তু গডকড়ী বলেন, “সবার সঙ্গে কথা বলেই ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। ” শিবরাজ অবশ্য আজ এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর এই বক্তব্যের কারণও আছে। কারণ, একই সঙ্গে উমাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে, মধ্যপ্রদেশের রাজনীতিতে নাক গলালে ফের শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। উমাও জানেন, ফের দল থেকে বের করে দেওয়া হলে পাকাপাকি সন্ন্যাস নেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।
তা-ই উমাও সতর্ক। তিনি স্বীকারও করেন, “গত পাঁচ বছরে বিজেপির বাইরে থেকে আমি শিক্ষা নিয়েছি। বিজেপিই আমার একমাত্র জায়গা। এখন আমার প্রথম কাজ মৌনব্রত রাখা। দু’তিন দিন পর রণনীতি ঘোষণা করব।
” এ দিন গডকড়ীর পাশে বসে উমার বক্তব্য, “উত্তরপ্রদেশ রাম ও রুটির রাজ্য। রামমন্দির থেকে রামরাজ্য বানানোই আমার লক্ষ্য হবে। ”
তবে উমা ফেরায় অসন্তোষের আঁচ প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। উত্তরপ্রদেশে দলের নেতা (অনগ্রসর শ্রেণির নেতা এবং রামমন্দির আন্দোলনের মুখও বটে) বিনয় কাটিয়ার বলেন, “উত্তরপ্রদেশে নেতার অভাব নেই। আর একটি নতুন মুখ এলে পরিস্থিতি পাল্টাবে না।
আর উমা ভারতী উত্তরপ্রদেশের থেকে মধ্যপ্রদেশে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য। ” উমা আসায় তাঁর জায়গা চলে যাওয়ার হতাশা স্বভাবতই গোপন থাকেনি।
তবে গডকড়ী এ সবের পরোয়া করছেন না। লালকৃষ্ণ আডবাণীও অনেক দিন ধরে উমাকে আনার পক্ষপাতী ছিলেন। উমাকে আনতে দেরি হওয়ায় সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতও উষ্মা প্রকাশ করেন।
শেষ পর্যন্ত লখনউয়ের বৈঠকের ফাঁকেই নাগপুর গিয়ে ভাগবতের সঙ্গে বৈঠকের পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন গডকড়ী। তাঁর মতে, মায়াবতীকে টক্কর দিতে উমা যোগ্য ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠবেন। বিশেষ করে বুন্দেলখণ্ড এলাকায় লোধ ভোট টানতে তিনি সক্রিয় হবেন। কল্যাণ সিংহের পর বিজেপিতে এই ভোট টানার ক্ষেত্রে শূন্যস্থান তৈরি হয়েছিল। আগামী বছর উত্তরপ্রদেশে ভোটের পর সে রাজ্য থেকেই লোকসভা নির্বাচনে লড়ার প্রস্তুতি নিতে পারেন উমা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।