ফরিদপুর সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত চরাঞ্চল গোলাপবাগ গ্রামের প্রবাসী দুই ভাই আকতারুজ্জামান খান ও আবদুর রশিদ খান হারুন নিজ উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন একাধিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সেবা কেন্দ্র।
অবহেলিত এ চরাঞ্চলের দরিদ্র শত শত পরিবার এসব কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন পাচ্ছে তাদের জরুরি সেবা। প্রবাসী আক্তার ও হারুন তাদের মা-বাবার নামে নিজ এলাকায় একের পর এক গড়ে তুলেছেন গোলাপবাগ লতিফুন্নেছা রেজিস্ট্রি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোলাপবাগ লতিফুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, লতিফুন্নেছা উইমেন্স কলেজ, গোলাপবাগ জামে মসজিদ, গোলাপবাগ লতিফুন্নেছা চিকিত্সালয়, গোলাপবাগ লতিফুন্নেছা এতিমখানা, গোলাপবাগ লতিফুন্নেছা ইসলামী পাঠাগার, গোলাপবাগ লতিফুন্নেছা বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র, গোলাপবাগ লতিফুল উলুম মাদ্রাসা, গোলাপবাগ লতিফুন্নেছা হাফিজিয়া মাদ্রাসা।
এ প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে নারী শিক্ষার কোনো সুযোগ-সুবিধা ছিল না। চরমাধবদিয়া, ঈশান গোপালপুর, নর্থচ্যানেল ও ডিক্রিরচর এই ৪টি ইউনিয়নে ছিল না কোনো বালিকা বিদ্যালয় ও মহিলা কলেজ।
অবহেলিত চরাঞ্চলের নারী শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে দুই ভাই সর্বপ্রথম ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেন লতিফুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও লতিফুন্নেছা উইমেন্স কলেজ। সুদীর্ঘ ২২ বছর কেটে গেলেও প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে ঘোরাঘুরি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুটিকে এমপিওভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। প্রতিষ্ঠাতাদের ধারণা, রাজনৈতিক কোনো বলয়ে না থেকে নিরপেক্ষ থাকার কারণে আজ তাদের এ ভোগান্তি হচ্ছে।
দুর্গম এ চরাঞ্চলের ২০ কিলোমিটারের মধ্যে ছিল না কোনো চিকিত্সা কেন্দ্র। নারী-শিশু রোগগ্রস্ত বিপদাপন্ন মানুষের জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও ছিল না কোনো ডাক্তার, কোনো চিকিত্সার ব্যবস্থা।
ছিল না অসচেতন জনগোষ্ঠীর মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা। আজ এ অবহেলিত জনপদে উদ্যোমী দুই ভাই গড়ে তুলেছেন প্রাথমিক চিকিত্সা কেন্দ্র। যেখানে দরিদ্র অসহায় মানুষকে একজন এমবিবিএস ডাক্তারের মাধ্যমে বিনামূল্যে দেয়া হয় চিকিত্সাসেবা ও ওষুধ। সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে বার বার ধরনা দিয়েও তারা পায়নি ডাক্তারদের কোনো সহযোগিতা, এমনকি কোনো ওষুধ।
একইসঙ্গে এলাকার যুবসমাজের জ্ঞান অর্জনের জন্য তারা গড়ে তুলেছেন পাঠাগার, ধর্মীয় শিক্ষা সম্প্রসারণের জন্য আলিয়া ও হাফিজিয়া মাদরাসা, মুসুল্লিদের নামাজের জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল মসজিদ, এলাকার কৃষক শ্রমিক বয়স্ক নিরক্ষর মানুষের জন্য বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র, এলাকার এতিম দুস্থদের জন্য পরিচালনা করছেন এতিমখানা।
এসব প্রতিষ্ঠানে এলাকার শতাধিক মানুষের হয়েছে কর্মসংস্থান। সব মিলিয়ে এ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সেবা কেন্দ্রে প্রবাসী এ দুই ভাইয়ের নেতৃত্বে চলছে বিশাল সমাজ উন্নয়ন কর্মতত্পরতা। সরকারের সহযোগিতা পেলে এ অবহেলিত জনপদ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সেবা কেন্দ্রগুলো অনুকরণীয় দৃষ্টান্তে পরিণত হতে পারে, যা সারাদেশে একটি দৃষ্টান্ত হতে পারে বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মহল। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।