জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পপসম্রাট আজম খান। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁর হার্ট অ্যাটাক হয়। এরপর তাঁকে স্কয়ার হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে রাখা হয়। আজ সকালের দিকে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখ হয়। তিনি চিকিত্সক কামরুজ্জামান চৌধুরীর (রেডিওলোজিস্ট) তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।
এদিকে আজ সন্ধ্যায় আজম খানের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে জরুরি এক সংবাদ ব্রিফিং এ মৃত্যুর সংবাদটি নাকচ করে দিয়ে কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আজম খানকে কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস যন্ত্রের সাহায্যে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে, এটা সত্যি। তবে তাঁর মৃত্যুর সংবাদটি সত্যি নয়। আজ সকাল থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার বেশ অবনতি ঘটে। তারপর আমরা কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস যন্ত্রের সাহায্য নিই। বর্তমানে তাঁর ফুসফুস ছাড়া বাকি সব কিছুই এখনো কাজ করছে।
আমরা আশা করছি, এ অবস্থার উন্নতি ঘটবে। ’ কামরুজ্জামান আরও বলেন, তবে এটা ঠিক, তাঁর অবস্থা এ মুহূর্তে জটিল।
এদিকে আজম খানের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে দ্রুত হাসপাতালে ছুটে আসেন তাঁরই ভাই আলম খান, ব্যান্ড তারকা আইয়ুব বাচ্চু, মডেল অভিনেতা মুকিতসহ অনেক ভক্ত-গুণগ্রাহী ও সংবাদকর্মী। আইসিইউতে আজম খানকে দেখার পর আইয়ুব বাচ্চু প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি নিজেও টিভির স্ক্রলে খবর দেখে ছুটে এসেছি। এখন আজম ভাইকে দেখে এলাম।
সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার মনজুর সাহেবের সঙ্গেও কথা হয়েছে। উনি এখনো আমাদের মনে আশার আলো জ্বালিয়ে রেখেছেন। আমার বিশ্বাস উনি আমাকে না বলে এভাবে চলে যাবেন না। দু-চার দিনের মধ্যে গুরু ঠিকই চোখ মেলবেন। আসুন আমরা তাঁর সুস্থতার জন্য দোয়া করি।
’
আইয়ুব বাচ্চু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘গণমাধ্যমগুলো পুরো জাতিতে এভাবে বিভ্রান্ত না করলেও পারত। যেখানে স্বয়ং বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররাই খবরটা শুনে অবাক হয়েছেন, সেখানে অনেকগুলো গণমাধ্যম মৃত্যুর সংবাদটি প্রকাশ করে দিল। এটা খুবই দুঃখজনক। ’
এদিকে হাসপাতালে আইসিইউতে আজম খানের পাশে সার্বক্ষণিকভাবে রয়েছেন তাঁর মেয়ে ইমা খান ও ছেলে হূদয় খান। দুজনেই ভেঙে পড়েছেন।
এদিকে কর্তব্যরত চিকিত্সক সূত্রে জানা যায়, এরই মধ্যে আজম খানের মুখগহ্বরের ক্যানসার হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়েছে। যার অন্যতম কারণ গেল চার মাসে আজম খান নিয়মিত শরীর চেকআপ করাননি, থেরাপিও নেননি। মূলত এ কারণেই তাঁর শারীরিক অবস্থা অনেকখানিই জটিল রূপ নিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২২ মে আজম খান তাঁর বাঁ-হাতে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন। ওই দিনই তাঁকে দ্রুত রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
এর আগে গত বছর জুলাই এর প্রথম সপ্তাহে আজম খানের মুখগহ্বরে-জিহ্বার নিচে ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর ১৪ জুলাই উন্নত চিকিত্সার জন্য শিল্পীদের সম্মিলিত উদ্যোগে পাঠানো হয় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে। তারপর ২০ জুলাই মাউন্ট এলিজাবেথ মেডিকেল সেন্টারের ইএনটি হেড-নেক সার্জন বিভাগের প্রধান অ্যান্ড্রু লয় হেং চেংয়ের তত্ত্বাবধানে আজম খানের মুখে সফল অস্ত্রোপচার করা হয়।
সর্বশেষ ২৭ ডিসেম্বর ২০১০ এ ২১টি টমোথেরাপি (রেডিওথেরাপি) ও একটি কেমোথেরাপি নেওয়ার পর কয়েকটি থেরাপি বাকি রেখেই দেশে ফিরে আসেন তিনি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।