ক্লাউড বা মেঘ তৈরি হয় অসংখ্য পানির ফোঁটা একত্রিত হয়ে। একইভাবে অসংখ্য ইন্টারনেট ব্যবহারকারী একত্রিত হয়ে যে সার্ভিস ব্যবহার করে, তাকে বলে ক্লাউড কম্পিউটিং। সহজ কথায় নিজের কম্পিউটারে ফাইল-পত্র না রেখে ইন্টারনেটে বা নেটওয়ার্কে সংরক্ষণ করে রাখাকে বলা হয় ক্লাউড কম্পিউটিং। এমনকি, এ ব্যবস্থায় মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল, এক্সেসসহ কোন সফটওয়্যার-ই ব্যক্তিগত কম্পিউটারে থাকবে না। থাকবে ইন্টারনেটের কোন এক বা একাধিক সার্ভারে।
ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের সহজ উদাহরণ ও ব্যপক ব্যবহার রয়েছে আমাদের চোখের সামনেই। আপনি আমি-সহ বিশ্বের ৫০ কোটি মানুষ যে ফেইসবুক ব্যবহার করে, তা হলো ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের উদাহরণ। ইয়াহু অথবা জিমেইলে আমরা যখন ইমেইল টাইপ করি, তখন কিন্তু এটি কম্পোজ করার জন্য এমএস ওয়ার্ড ব্যবহার করি না। আবার মেইলটি Send হওয়ার পর, এটি Sent – বক্সে গিয়ে জমা হয়। এই Sent বক্সটিও আমাদের কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক ব্যবহার করে না।
এটি জমা হয় সার্ভারের কোন এক জায়গায়। তাই ইয়াহু, জিমেইল, হটমেইল বা অন্য যেকোন ওয়েব-মেইল সার্ভিস হল ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের উদাহরণ।
অন্যান্য উদাহরণের মধ্যে রয়েছে, টুইটার, ইউটিউব, ফ্লিকার, গুগল ডক, মাইক্রোসফটের স্কাইড্রাইভ ইত্যাদি। অনলাইন ক্রয়-বিক্রয়ের সাইট ই-বে (E-bay) ও ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের আওতায় পরে। কারন, এর প্রায় সব প্রক্রিয়াই সম্পন্ন হয় ইন্টারনেটে এবং এর রয়েছে অসংখ্য ইন্টারনেট ব্যবহারকারী।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী ২০২০ সাল নাগাদ অধিকাংশ মানুষ তাদের কম্পিউটারের সফটওয়্যারের পরিবর্তে ইন্টারনেট সফটওয়্যার ব্যবহার করবে। এছাড়াও তারা স্মার্টফোন ব্যবহারের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়বে। অনেকে মনে করেন, ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের আওতায় শুধু সাধারণ ব্যবহারকারীই থাকবে না, থাকবে আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহৃত জিনিষ-পত্রও। যেমন, টিভি, এসি, ওভেন, বাতিসহ অন্যান্য অনেক বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি। এগুলো আমরা দূর থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন করতে পারব।
কেন ব্যবহার করব ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যবস্থা:
এ প্রযুক্তিটি এখনো এর শৈশবকাল অতিক্রম করছে। আর এর অসংখ্য প্রায়োগিক ব্যবহারের অধিকাংশই আমাদের অজানা। যতই দিন যাবে ততই এর ব্যবহারের ক্ষেত্র বাড়বে। তবে এখন আমরা যেসব কারনে এ ব্যবস্থা বা প্রযুক্তিটি ব্যবহারের জন্য আগ্রহী সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, খরচ কমানো, শেয়ারিং এবং নিরাপত্তা।
খরচ: হার্ডডিস্কের পরিবর্তে আমরা ইন্টারনেটের স্পেস ব্যবহার করতে পারব।
এতে অধিক ক্ষমতা সম্পন্ন হার্ডডিস্ক কেনার খরচ বাঁচবে।
শেয়ারিং: এ ব্যবস্থার মাধ্যমে একাধিক ব্যক্তি একই ফাইল দেখতে ও ওই ফাইল নিয়ে কাজ করতে পারবে। তাই কোন একটি ফাইল নিয়ে অফিসের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজ করতে হলে ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের কোন বিকল্প নেই।
নিরাপত্তা: আমাদের ব্যক্তিগত হার্ডডিস্ক যেকোন মুহুর্তে ক্র্যাশ করতে পারে। কিন্তু ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের বেলায় ফাইল থাকবে এক বা একাধিক সার্ভারে।
প্রতিটি সার্ভারের নিরাপত্তার জন্য থাকবে বিশেষ সতর্ক ব্যবস্থা। তাই এখানে ফাইল হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
ক্লাউড কম্পিউটিং শিঘ্রই ব্যপক জনপ্রিয়তা লাভ করবে। তবে, অনেকের মতে, ডেস্কপট কম্পিউটিং এখনি হারিয়ে যাবে না। বরং আমরা আমাদের জীবনের সাথে ক্লাউড এবং ডেস্কটপ কম্পিউটিংয়ের একটি সমন্বিত রূপ যুক্ত হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।